গাইবান্ধা : ফুলছড়ির উজালডাঙ্গা চরের মাশকালাই গাছে পোকার আক্রমণ -সংবাদ
উত্তরাঞ্চলের তিস্তা-ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চল জুড়ে মাশকলাই গাছে ভয়াবহ পোকার আক্রমণে চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। গাছের ফুল ও ফলন অংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পুরো মৌসুমের স্বপ্ন এখন ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে।
কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার চরাঞ্চলে প্রায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে মাশকলাই চাষ হয়েছে। বন্যা শেষে পলি জমে উর্বর মাটিতে চাষিরা সাধারণত একবার চাষ করেই বীজ ছিটিয়ে ফসল ফলান। শুরুতে গাছের বৃদ্ধি ভালো থাকলেও বর্তমানে বিভিন্ন প্রজাতির পোকার আক্রমণে গাছের ফুল ও ডোগা খেয়ে ফেলছে, ফলে ফলন মারাত্মকভাবে হ্রাস পাচ্ছে।
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উজালডাঙা চরের চাষি সাদ্দাম হোসেন বলেন, চার বিঘা জমিতে মাশকলাই চাষ করেছিলাম। সার ও শ্রম খরচ অনেক গেছে, গাছও ভালো হয়েছিল। কিন্তু পোকার আক্রমণে সব শেষ হয়ে গেছে। এখন মনে হচ্ছে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।
একই উপজেলার গুপ্তমণি চরের রাজা মিয়া জানান, কোন ধরণের পোকার আক্রমণ বুঝতে পারিনি। কৃষি অফিসের কেউ চরে নিয়মিত আসে না। সময়মতো ওষুধ দিলে হয়তো গাছগুলো রক্ষা করা যেত।
সাঘাটার দিঘলকান্দি চরের সালেহা বেগমের কণ্ঠেও হতাশা এত ক্ষতি হবে তা ভাবিনি। এখন শুধু লোকসানই গুনতে হবে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার আব্দুল করিম জানান, ফলন না থাকায় জমি ভেঙে, মরিচ ও পিয়াজ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
কৃষিবিদ ড.মোজাম্মেল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পোকার প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। সময়মতো প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা না থাকায় কৃষকরা এসব পরিস্থিতি সামলাতে পারছেন না। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখনই মাঠপর্যায়ে সক্রিয় হতে হবে।
ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার মিন্টু মিয়া বলেন, মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের রোগ প্রতিরোধে প্রতিষেধক এর জন্য পরামর্শ দিচ্ছে।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিকুল ইসলাস জানান,“চরের বিচ্ছিন্ন এলাকায় কর্মকর্তাদের পৌঁছানো কঠিন হলেও আমরা চেষ্টা করছি পরামর্শ ও প্রতিষেধক ব্যবস্থাপনা পৌঁছে দিতে। আমি সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ের যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দিবো যাতে দ্রুত কৃষকদের সাথে কথা বলে।
স্থানীয় কৃষকদের দাবি, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে এ অঞ্চলের চাষিরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। অনেকেই এখন বিকল্প ফসলের চিন্তায় রয়েছেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
গাইবান্ধা : ফুলছড়ির উজালডাঙ্গা চরের মাশকালাই গাছে পোকার আক্রমণ -সংবাদ
বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
উত্তরাঞ্চলের তিস্তা-ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চল জুড়ে মাশকলাই গাছে ভয়াবহ পোকার আক্রমণে চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। গাছের ফুল ও ফলন অংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পুরো মৌসুমের স্বপ্ন এখন ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে।
কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার চরাঞ্চলে প্রায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে মাশকলাই চাষ হয়েছে। বন্যা শেষে পলি জমে উর্বর মাটিতে চাষিরা সাধারণত একবার চাষ করেই বীজ ছিটিয়ে ফসল ফলান। শুরুতে গাছের বৃদ্ধি ভালো থাকলেও বর্তমানে বিভিন্ন প্রজাতির পোকার আক্রমণে গাছের ফুল ও ডোগা খেয়ে ফেলছে, ফলে ফলন মারাত্মকভাবে হ্রাস পাচ্ছে।
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উজালডাঙা চরের চাষি সাদ্দাম হোসেন বলেন, চার বিঘা জমিতে মাশকলাই চাষ করেছিলাম। সার ও শ্রম খরচ অনেক গেছে, গাছও ভালো হয়েছিল। কিন্তু পোকার আক্রমণে সব শেষ হয়ে গেছে। এখন মনে হচ্ছে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।
একই উপজেলার গুপ্তমণি চরের রাজা মিয়া জানান, কোন ধরণের পোকার আক্রমণ বুঝতে পারিনি। কৃষি অফিসের কেউ চরে নিয়মিত আসে না। সময়মতো ওষুধ দিলে হয়তো গাছগুলো রক্ষা করা যেত।
সাঘাটার দিঘলকান্দি চরের সালেহা বেগমের কণ্ঠেও হতাশা এত ক্ষতি হবে তা ভাবিনি। এখন শুধু লোকসানই গুনতে হবে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার আব্দুল করিম জানান, ফলন না থাকায় জমি ভেঙে, মরিচ ও পিয়াজ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
কৃষিবিদ ড.মোজাম্মেল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পোকার প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। সময়মতো প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা না থাকায় কৃষকরা এসব পরিস্থিতি সামলাতে পারছেন না। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখনই মাঠপর্যায়ে সক্রিয় হতে হবে।
ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার মিন্টু মিয়া বলেন, মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের রোগ প্রতিরোধে প্রতিষেধক এর জন্য পরামর্শ দিচ্ছে।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিকুল ইসলাস জানান,“চরের বিচ্ছিন্ন এলাকায় কর্মকর্তাদের পৌঁছানো কঠিন হলেও আমরা চেষ্টা করছি পরামর্শ ও প্রতিষেধক ব্যবস্থাপনা পৌঁছে দিতে। আমি সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ের যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দিবো যাতে দ্রুত কৃষকদের সাথে কথা বলে।
স্থানীয় কৃষকদের দাবি, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে এ অঞ্চলের চাষিরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। অনেকেই এখন বিকল্প ফসলের চিন্তায় রয়েছেন।