চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় বারো মাসি কাঁঠাল বাগান করে রীতিমত চমক সৃষ্টি করেছে রানা হোসেন নামের এক যুবক। ইতোমধ্যে এলাকাজুড়ে তার বারোমাসি কাঁঠাল বাগান নিয়ে চারিদিকে হৈচৈ পড়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ এ বাগান পরিদর্শন করেছেন এবং সবসময় পরামর্শ দিচ্ছে। চলতি বছরে বাগানে দেখা দিয়েছে ফলনের সম্ভবনা। ফলন শুরু হলে পাল্টে যাবে তার জীবন চিত্র। বারোমাসি কাঁঠাল বাগান তাকে দিচ্ছে নতুন দিগন্তের হাত ছানি। সে উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে রানা বলেন, উপজেলার জয়রামপুর কুমারী দোয়া নামক মাঠে এক বিঘা জমিতে ভিয়েতনাম জাতের কাঁঠাল গাছের চারা দেড় বছর আগে ২শ’২০ টাকা থেকে ২শ’৫০ টাকায় নিজ উদ্যেগে সংগ্রহ করি। ৭টি লাইনে মোট একশটি গাছ রোপন করি। সারিবদ্ধভাবে লাগানো ১০-১২ ফুট দীর্ঘ গাছগুলোর গোড়ায় মাটিতে থোকায় থোকায় কাঁঠাল ধরতে শুরু করেছে। কাঁঠালের ওজনে গাছ যেন ভেঙে না যায়, সেজন্য বাঁশের খুঁটি দিয়ে গাছগুলো বেঁধে দেওয়া হবে। গাছগুলো নিয়মিত দেড় বছর পরিচর্চা করার পরএবারই প্রথম গাছে ফলনো দেখা দিয়েছে। আশা করছি এ বছরের সব গাছে পর্যায় ক্রমে ফলন আসবে। গাছের কচি ফলগুলোর প্রতি নজরদারি করা হচ্ছে। সাথে নিয়মিত পরিচর্চার কোন ত্রুটি নেই। এ যাবত এক লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে। আশা করছি আবহওয়া অনুকুলে থাকলে আসন্ন রমজানে নতুন এই জাতের কাাঁঠাল ফল বাজার জাত করতে সক্ষম হবো। যেহেতু নতুন জাতের এই ফল রমজানে বাজারে এলে বাজার দর ভালা পাওয়া যাবে। প্রতিটি কাঁঠাল তিন থেকে পাঁচ কেজি ওজন হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। আঠা বিহীন এ জাতের কাঁঠাল বারো মাসএর ফলন পাওয়া যাবে। চারিদিকে থেকেএ বাগান দেখতে লোকজন আসছে। ভাগ্য সহায় হলে লাভবান হবো। উপজেলা কৃষি বিভাগ এ বাগান পরিদর্শন করেছেনএবং সব সময় পরামর্শ দিচ্ছে। এলাকার হামিদুল ছাওারসহ একাধিক চাষী বাগান করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তারা কেবল অপেক্ষা করছে কেমন ফলন হয় তা দেখার জন্য ।
পেয়ারা তলার বিসমিল্লাহ ফল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারি বলেন, দেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল। এটি মৌসুমি ফল। এ জনপদে বারো মাসি কাঁঠালের কোন বাগান নেই। তবে আমারা জানতে পেরেছি দামুড়হুদা উপজেলায় বারো মাসি ভিয়েতনামি কাঁঠাল বাগানে এবার ফলন এসেছে। এ মোকামে সারা দেশের ফল ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে ফল কিনে দেশের বিভিন্ন মোকামে চালান করে। বারোমাসি এই কাঁঠাল রমজানে বাজারে এলে প্রচুর চাহিদার কারনে আকাশ ছোঁয়া দরে দ্রুত বিক্রি হয়ে যাবে।
কৃষি বিভাগের একাধিক সুত্রে জানা গেছে, দেশি কাঁঠালের আঠা ও গন্ধের কারণে বিশ্ববাজারে দেশি কাঁঠালের চাহিদা একেবারেই কম। তাই ফলটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব কম ছিল। তবে দেশিয় কৃষি বিজ্ঞানীরা নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা রোধ করে কাঁঠালের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বাড়াতে কাজ শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় বারোমাসি কাঁঠালের তিনটি জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীরা। কাঁঠাল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় হলেও আমাদের দেশি কাঁঠালের মান ও প্রকৃতির কারণে বিশ্ববাজারে এই কাঁঠালের গুরুত্ব কম ছিলো। এখন সেই বাধা দূর করে বিশ্বমানের কাঁঠাল উৎপাদনে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের এই দেশ। দেশে কৃষি গবেষক ও উদ্ভিদ প্রেমীদের আগ্রহ ও চেষ্টায় দেশে বারোমাসি কাঁঠাল উৎপাদন শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ববাজারে চাহিদা আছে এমন কাঁঠাল উৎপাদনে উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট।
উপজেলা সহকারি কৃষি কর্মকতা অভিজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে এ ধরনের কাঁঠাল চাষ সম্প্রসারণের কার্যক্রম। এতে নতুন সম্ভাবনা জেগেছে কাঁঠাল চাষ ঘিরে। বারির বিজ্ঞানীরা প্রাথমিক পর্যায়ে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে উচ্চফলনশীল বারোমাসি জাতের কাঁঠাল চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্পের অধীন এ ধরনের কাঁঠাল চাষ সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে। এ জাতের কাাঁঠাল চাষীরা বাগান করলে সারা বছর ফলন পেলে তারা লাভবান হবে। বাজারে এ জাতের কাঁঠালের চাহিদা থাকার কারনে কাঁঠাল চাষীদের দ্রুত ভাগ্য পরিবর্তন হবে। কৃষি বিভাগের দরজা সব চাষের পরামর্শের জন্য খোলা আছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় বারো মাসি কাঁঠাল বাগান করে রীতিমত চমক সৃষ্টি করেছে রানা হোসেন নামের এক যুবক। ইতোমধ্যে এলাকাজুড়ে তার বারোমাসি কাঁঠাল বাগান নিয়ে চারিদিকে হৈচৈ পড়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ এ বাগান পরিদর্শন করেছেন এবং সবসময় পরামর্শ দিচ্ছে। চলতি বছরে বাগানে দেখা দিয়েছে ফলনের সম্ভবনা। ফলন শুরু হলে পাল্টে যাবে তার জীবন চিত্র। বারোমাসি কাঁঠাল বাগান তাকে দিচ্ছে নতুন দিগন্তের হাত ছানি। সে উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে রানা বলেন, উপজেলার জয়রামপুর কুমারী দোয়া নামক মাঠে এক বিঘা জমিতে ভিয়েতনাম জাতের কাঁঠাল গাছের চারা দেড় বছর আগে ২শ’২০ টাকা থেকে ২শ’৫০ টাকায় নিজ উদ্যেগে সংগ্রহ করি। ৭টি লাইনে মোট একশটি গাছ রোপন করি। সারিবদ্ধভাবে লাগানো ১০-১২ ফুট দীর্ঘ গাছগুলোর গোড়ায় মাটিতে থোকায় থোকায় কাঁঠাল ধরতে শুরু করেছে। কাঁঠালের ওজনে গাছ যেন ভেঙে না যায়, সেজন্য বাঁশের খুঁটি দিয়ে গাছগুলো বেঁধে দেওয়া হবে। গাছগুলো নিয়মিত দেড় বছর পরিচর্চা করার পরএবারই প্রথম গাছে ফলনো দেখা দিয়েছে। আশা করছি এ বছরের সব গাছে পর্যায় ক্রমে ফলন আসবে। গাছের কচি ফলগুলোর প্রতি নজরদারি করা হচ্ছে। সাথে নিয়মিত পরিচর্চার কোন ত্রুটি নেই। এ যাবত এক লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে। আশা করছি আবহওয়া অনুকুলে থাকলে আসন্ন রমজানে নতুন এই জাতের কাাঁঠাল ফল বাজার জাত করতে সক্ষম হবো। যেহেতু নতুন জাতের এই ফল রমজানে বাজারে এলে বাজার দর ভালা পাওয়া যাবে। প্রতিটি কাঁঠাল তিন থেকে পাঁচ কেজি ওজন হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। আঠা বিহীন এ জাতের কাঁঠাল বারো মাসএর ফলন পাওয়া যাবে। চারিদিকে থেকেএ বাগান দেখতে লোকজন আসছে। ভাগ্য সহায় হলে লাভবান হবো। উপজেলা কৃষি বিভাগ এ বাগান পরিদর্শন করেছেনএবং সব সময় পরামর্শ দিচ্ছে। এলাকার হামিদুল ছাওারসহ একাধিক চাষী বাগান করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তারা কেবল অপেক্ষা করছে কেমন ফলন হয় তা দেখার জন্য ।
পেয়ারা তলার বিসমিল্লাহ ফল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারি বলেন, দেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল। এটি মৌসুমি ফল। এ জনপদে বারো মাসি কাঁঠালের কোন বাগান নেই। তবে আমারা জানতে পেরেছি দামুড়হুদা উপজেলায় বারো মাসি ভিয়েতনামি কাঁঠাল বাগানে এবার ফলন এসেছে। এ মোকামে সারা দেশের ফল ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে ফল কিনে দেশের বিভিন্ন মোকামে চালান করে। বারোমাসি এই কাঁঠাল রমজানে বাজারে এলে প্রচুর চাহিদার কারনে আকাশ ছোঁয়া দরে দ্রুত বিক্রি হয়ে যাবে।
কৃষি বিভাগের একাধিক সুত্রে জানা গেছে, দেশি কাঁঠালের আঠা ও গন্ধের কারণে বিশ্ববাজারে দেশি কাঁঠালের চাহিদা একেবারেই কম। তাই ফলটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব কম ছিল। তবে দেশিয় কৃষি বিজ্ঞানীরা নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা রোধ করে কাঁঠালের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বাড়াতে কাজ শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় বারোমাসি কাঁঠালের তিনটি জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীরা। কাঁঠাল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় হলেও আমাদের দেশি কাঁঠালের মান ও প্রকৃতির কারণে বিশ্ববাজারে এই কাঁঠালের গুরুত্ব কম ছিলো। এখন সেই বাধা দূর করে বিশ্বমানের কাঁঠাল উৎপাদনে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের এই দেশ। দেশে কৃষি গবেষক ও উদ্ভিদ প্রেমীদের আগ্রহ ও চেষ্টায় দেশে বারোমাসি কাঁঠাল উৎপাদন শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ববাজারে চাহিদা আছে এমন কাঁঠাল উৎপাদনে উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট।
উপজেলা সহকারি কৃষি কর্মকতা অভিজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে এ ধরনের কাঁঠাল চাষ সম্প্রসারণের কার্যক্রম। এতে নতুন সম্ভাবনা জেগেছে কাঁঠাল চাষ ঘিরে। বারির বিজ্ঞানীরা প্রাথমিক পর্যায়ে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে উচ্চফলনশীল বারোমাসি জাতের কাঁঠাল চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্পের অধীন এ ধরনের কাঁঠাল চাষ সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে। এ জাতের কাাঁঠাল চাষীরা বাগান করলে সারা বছর ফলন পেলে তারা লাভবান হবে। বাজারে এ জাতের কাঁঠালের চাহিদা থাকার কারনে কাঁঠাল চাষীদের দ্রুত ভাগ্য পরিবর্তন হবে। কৃষি বিভাগের দরজা সব চাষের পরামর্শের জন্য খোলা আছে।