alt

সিরাজগঞ্জে জমে উঠেছে মানুষ বিক্রির হাট

জেলা বার্তা পরিবেশক, সিরাজগঞ্জ : শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

সিরাজগঞ্জ : শ্রম বিক্রির হাটে মানুষ -সংবাদ

প্রাচীন ও মধ্যযুগে দাস প্রথার প্রচলন ছিল সে সময় মানুষ বেচা কেনা হতো। কিস্তু আধুনিক এই যুগে দাস প্রথা না থকলেও হাটে মানুষ বিক্রী হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় শ্রম বিক্রীর হাটে এই মানুষ গুলি দিন হাজিরা হিসাবে বিক্রী হয়ে থাকে । ধান কাটার এই সময় কামলার (কৃষিশ্রমিক) চাহিদা বেশী থাকায় । সিরাজগঞ্জ জেলার শিয়ালকোল, কান্দাপাড়া, কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া, আলমপুর, পানাগাড়ি, রতনকান্দি ও সোনামুখী এলাকায় এই শ্রমজীবী মানুষের হাট এখন জমজমাট। এই সব এলাকার নিদৃষ্ট স্থানে হাট ও বাজারে ধারে বসে এমন এক ব্যতিক্রমী মানুষের হাট। কাক ডাকা ভোর হতে এ সব এলাকায় ভিড় জমে মানুষের, যারা নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে আসেন দিনের মজুরিতে। কামলাদের (শ্রমিকদের) চোখে একটাই প্রত্যাশা-আজ যেন কোনো কাজ মেলে, যাতে পরিবারের সদস্যদের মুখে ভাত তুলে দেওয়া যায়। হাট গুলিতে শ্রম বিক্রি হয় দিনে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়। তবে অনেক সময় বিক্রী হতে না পারলে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যান । বিভিন্ন হাটে দেখা যায়, কারো হাতে বাঁশের তৈরি বাইং, কারো হাতে ব্যাগ। ব্যাগে হালকা কাপড়-চোপর আর কাঁচি। কেউ বসে আছে, কেউ দাঁড়িয়ে। হাটের ভেতরে ঢুকতেই কতিপয় শ্রমিক বলেন ‘মামা কামলা লাগবো? কত কইরা দিবেন?

নাটুয়া পাড়া হাটে রংপুর জেলা থেকে আসা শ্রমিক আবু হোসেন (৫০) বলেন, পরিবারের অবস্থা ভালো না থাকায় লেখাপড়া করতে পারিনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে বছরের ধান কাটার সময় এখানে আসি। দিন হিসাবে কখনো ৫০০, কখনো ৭০০ টাকায় জমির মালিকেরা আমাদের কিনে নিয়ে যায় । কিন্তু এত দুর থেকে এসে অনেক সময় কোনো কাজ পাই না তখন মনে খুব কষ্ট লাগে। তবে মৌসুমের সময় আসলে কাজ পাওয়া যায় । তাছাড়া আমরা প্রতি বছরই এখানে আসি ফলে জমির মালিকদের সাথে একটা সম্পর্ক তৈরী হয়েছে।আমরা যখন আসি তাদের বাড়িতেই কাজ করি । সদর উপজেলার শিয়ালকোল গ্রামের শ্রমিক আবদুর রশিদ (৪৫) সহ সাতজনের একটি দল হাটে আসেন। এ সময় সে জানায়, সংসারে বিধবা মা, ৩টি বোন সহ স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে রয়েছে। তাদের ভরণপোষনের জন্য তাকে কর্মের পথ বেচে নিতে হয়েছে। ১৭ বছরের কিশোর জেলহক জানায়, আমার বাড়িতে বিধবা মা রয়েছে। তাকে ভরণপোষনের জন্য এই কর্মের পথ বেচে নিতে হয়েছে। ছোট বলে কেউ আমাকে কিনতে চায় না। অল্প দামে বিক্রি হতে হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকাল থেকেই হাটে মালিকেরা এসে শ্রমিক বেছে নেন। অভিজ্ঞতা দেখে দর হাঁকেন। কারও দাম ওঠে ৪০০, কারও ৬০০ টাকা। দাম নির্ধারণ হয় তাদের দক্ষতা অনুযায়ী ।

নাটুয়া পাড়া হাটে কামলা নিতে আসা আব্দুস ছামাদ জানান, চাহিদামত নিদৃষ্ট সময়ের জন্য তাদের দর দাম মিটিয়ে নেই কামলাদের। স্থানীয়দের একবেলা এবং দুরে শ্রমিকদের তিন বেলা খেতে দিতে হয়। প্রতিটা বাড়িতে প্রতি মৌসুমে ২/৩ মাস কাজ হয় । কাজ শেষে শ্রমিকেরা নিজি নিজ এলাকায় চলে যান । তবে মুজুরীর ক্ষেত্রে কোন এলাকায় নগদ আবার কোন এলাকায় ধান দেয়া হয় ।

কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া হাট বাজার ইজারাদার আব্দুল লতিফ সরকার জানান, বহু বছর ধরে এই হাটে মানুষ বেচাকেনার হাট বসে। এখান থেকে প্রতিদিন মালিকেরা এসে কামলা কিনে নিয়ে যায়।

ছবি

বিপন্ন প্রজাতির ছাতিম ফুলের তীব্র ঘ্রাণে বিমোহিত পথচারী

ছবি

মধুপুর গড়ের লাল মাটিতে কমলা চাষ

ছবি

ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষা কর্মকর্তার ডিমোশন

ছবি

লাখাই উপজেলায় আমন ধান ঘরে তোলার অপেক্ষায়

ছবি

বরগুনা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়ক যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই

ছবি

ঝুলে যাচ্ছে চট্টগ্রাম চেম্বার নির্বাচন, এবার বাদীকে আদালত অবমাননার নোটিশ

বাগেরহাটে সামাজিক জবাবদিহিতার টুলস বিষয়ক প্রশিক্ষণ

বাগেরহাটের মোল্লাহাটে এগ্রো ফার্মে চুরি

ছবি

গোয়ালন্দে যৌন উত্তেজক ঔষধ খেয়ে যুবকের মৃত

ছবি

গজারিয়ায় জনবল ঔষধ ও উপকরণ সংকটে পরিবার পরিকল্পনা সেবা ব্যাহত

ছবি

৩৮ বছরেও নেই অগ্রগতি, উদ্যোক্তা সংকটে ধুঁকছে লালমনিরহাটের বিসিক শিল্পনগরী

ছবি

কক্সবাজারের হোটেল কক্ষে পর্যটকের মৃতদেহ উদ্ধার

ছবি

টঙ্গীবাড়ীতে কাঠের পুল ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ

ছবি

ডিমলায় ভূমি দস্যদের অবৈধ দখলে নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে নদীগুলো

ছবি

কলারোয়ায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি

ছবি

অল্পের জন্য রক্ষা শতশত মানুষের প্রাণ

ঘুষ নিয়েও নথির দিতে অস্বীকার : সেবাগ্রহীতাকে মারধর

চট্টগ্রামে প্রতারণার মামলায় ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

উলিপুরে হাতিয়া গণ-হত্যা দিবস পালিত

চান্দিনায় দেশীয় অস্ত্রসহ ৪ ডাকাত গ্রেপ্তার

নাজিরপুরে গাজাঁসেবির ৬ মাসের কারাদণ্ড

ছবি

নড়াইলে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা মাসুদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

কলমাকান্দায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে ছাগল ও উপকরণ বিতরণ

ছবি

বোয়ালখালীতে আমন ধানের নমুনা শস্য কর্তন ও মাঠ পরিদর্শন

ছবি

মানিকগঞ্জে স্কুল বাসে আগুন, দগ্ধ চালক

ছবি

পলাশে এখনো চোখে পড়ে পরিবেশ বান্ধব মাটির ঘর

ছবি

সংযোগ সড়ক সংকীর্ণ, সুফল মিলছে না ভাসানী সেতুর

গলাচিপায় বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত

ছবি

লালপুরে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের হাসি

ছবি

উঠে যাচ্ছে চিঠি লেখার চল

চট্টগ্রামে শান্ত লকডাউনে সাড়া মেলেনি মাঠে ছিল বিএনপি-জামায়াত

ছবি

লালমনিরহাটে ভেজাল বীজ বিক্রির দায়ে ৪ ব্যবসায়ীকে জরিমানা

দোহারে বিশেষ স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

ছবি

ভোলায় সিমেন্ট বোঝাই ট্রলার জব্ধ আটক ১২

ছবি

লালপুরে এলাকাবাসীর দাবি অবৈধ ইটভাটা বন্ধের

ছবি

পোরশায় ইটভাটা বন্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন

tab

সিরাজগঞ্জে জমে উঠেছে মানুষ বিক্রির হাট

জেলা বার্তা পরিবেশক, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জ : শ্রম বিক্রির হাটে মানুষ -সংবাদ

শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

প্রাচীন ও মধ্যযুগে দাস প্রথার প্রচলন ছিল সে সময় মানুষ বেচা কেনা হতো। কিস্তু আধুনিক এই যুগে দাস প্রথা না থকলেও হাটে মানুষ বিক্রী হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় শ্রম বিক্রীর হাটে এই মানুষ গুলি দিন হাজিরা হিসাবে বিক্রী হয়ে থাকে । ধান কাটার এই সময় কামলার (কৃষিশ্রমিক) চাহিদা বেশী থাকায় । সিরাজগঞ্জ জেলার শিয়ালকোল, কান্দাপাড়া, কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া, আলমপুর, পানাগাড়ি, রতনকান্দি ও সোনামুখী এলাকায় এই শ্রমজীবী মানুষের হাট এখন জমজমাট। এই সব এলাকার নিদৃষ্ট স্থানে হাট ও বাজারে ধারে বসে এমন এক ব্যতিক্রমী মানুষের হাট। কাক ডাকা ভোর হতে এ সব এলাকায় ভিড় জমে মানুষের, যারা নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে আসেন দিনের মজুরিতে। কামলাদের (শ্রমিকদের) চোখে একটাই প্রত্যাশা-আজ যেন কোনো কাজ মেলে, যাতে পরিবারের সদস্যদের মুখে ভাত তুলে দেওয়া যায়। হাট গুলিতে শ্রম বিক্রি হয় দিনে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়। তবে অনেক সময় বিক্রী হতে না পারলে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যান । বিভিন্ন হাটে দেখা যায়, কারো হাতে বাঁশের তৈরি বাইং, কারো হাতে ব্যাগ। ব্যাগে হালকা কাপড়-চোপর আর কাঁচি। কেউ বসে আছে, কেউ দাঁড়িয়ে। হাটের ভেতরে ঢুকতেই কতিপয় শ্রমিক বলেন ‘মামা কামলা লাগবো? কত কইরা দিবেন?

নাটুয়া পাড়া হাটে রংপুর জেলা থেকে আসা শ্রমিক আবু হোসেন (৫০) বলেন, পরিবারের অবস্থা ভালো না থাকায় লেখাপড়া করতে পারিনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে বছরের ধান কাটার সময় এখানে আসি। দিন হিসাবে কখনো ৫০০, কখনো ৭০০ টাকায় জমির মালিকেরা আমাদের কিনে নিয়ে যায় । কিন্তু এত দুর থেকে এসে অনেক সময় কোনো কাজ পাই না তখন মনে খুব কষ্ট লাগে। তবে মৌসুমের সময় আসলে কাজ পাওয়া যায় । তাছাড়া আমরা প্রতি বছরই এখানে আসি ফলে জমির মালিকদের সাথে একটা সম্পর্ক তৈরী হয়েছে।আমরা যখন আসি তাদের বাড়িতেই কাজ করি । সদর উপজেলার শিয়ালকোল গ্রামের শ্রমিক আবদুর রশিদ (৪৫) সহ সাতজনের একটি দল হাটে আসেন। এ সময় সে জানায়, সংসারে বিধবা মা, ৩টি বোন সহ স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে রয়েছে। তাদের ভরণপোষনের জন্য তাকে কর্মের পথ বেচে নিতে হয়েছে। ১৭ বছরের কিশোর জেলহক জানায়, আমার বাড়িতে বিধবা মা রয়েছে। তাকে ভরণপোষনের জন্য এই কর্মের পথ বেচে নিতে হয়েছে। ছোট বলে কেউ আমাকে কিনতে চায় না। অল্প দামে বিক্রি হতে হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকাল থেকেই হাটে মালিকেরা এসে শ্রমিক বেছে নেন। অভিজ্ঞতা দেখে দর হাঁকেন। কারও দাম ওঠে ৪০০, কারও ৬০০ টাকা। দাম নির্ধারণ হয় তাদের দক্ষতা অনুযায়ী ।

নাটুয়া পাড়া হাটে কামলা নিতে আসা আব্দুস ছামাদ জানান, চাহিদামত নিদৃষ্ট সময়ের জন্য তাদের দর দাম মিটিয়ে নেই কামলাদের। স্থানীয়দের একবেলা এবং দুরে শ্রমিকদের তিন বেলা খেতে দিতে হয়। প্রতিটা বাড়িতে প্রতি মৌসুমে ২/৩ মাস কাজ হয় । কাজ শেষে শ্রমিকেরা নিজি নিজ এলাকায় চলে যান । তবে মুজুরীর ক্ষেত্রে কোন এলাকায় নগদ আবার কোন এলাকায় ধান দেয়া হয় ।

কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া হাট বাজার ইজারাদার আব্দুল লতিফ সরকার জানান, বহু বছর ধরে এই হাটে মানুষ বেচাকেনার হাট বসে। এখান থেকে প্রতিদিন মালিকেরা এসে কামলা কিনে নিয়ে যায়।

back to top