alt

শেরপুরে বাঙালী নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে তিনটি গ্রাম

প্রতিনিধি, শেরপুর (বগুড়া) : মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

শেরপুর (বগুড়া): বাঙালী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হতে চলেছে উপজেলার তিনটি গ্রাম -সংবাদ

বগুড়ার শেরপুরে বাঙালী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হতে চলেছে উপজেলার তিনটি গ্রাম। অপরিকল্পিত নদী খননের প্রভাবে উপজেলার সীমাবাড়ি ইউনিয়নের ঘাশুড়িয়া ও নলুয়া এবং সুঘাট ইউনিয়নের চকপাহাড়ি গ্রাম এখন নদীগর্ভে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমেও এমন ভয়াবহ ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদীপারের শত শত পরিবার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এক বছর আগে বাঙালী নদী খনন করা হয়। মানচিত্র অনুযায়ী মূল নদী বর্তমান অবস্থান থেকে অন্তত ৬০০ ফুট উত্তরে ছিল। কিন্তু খননকাজ পরিচালনার সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টরা মূল সীমানা না মেনে নদীর দক্ষিণ পাড় ঘেঁষে, অর্থাৎ লোকালয় ও ফসলি জমির পাশ দিয়ে গভীর করে খনন চালায়। সে সময় গ্রামবাসী, জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। অপরিকল্পিত সেই খননের বিরূপ প্রভাবেই আজ বসতভিটা ও আবাদি জমি হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে সীমাবাড়ি ইউনিয়নের ঘাশুড়িয়া গ্রাম। গত দুই মাসে এই গ্রামের অন্তত ৫০টি পরিবারের বসতভিটা নদীতে হারিয়ে গেছে। নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে প্রায় ১৫ বিঘা আবাদি জমি। বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব দিনমজুর আব্দুস সাত্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, নদী যেখানে ছিল সেখানে খনন করলে আজ আমার এই দশা হতো না। চোখের সামনে নিজের বাড়ি নদীতে চলে গেল। এখন অন্যের জমিতে ছাপড়া তুলে থাকছি। সাত্তারের মতো তার ভাই আব্দুস সালামসহ গ্রামের অনেক কৃষক এখন ভূমিহীন। ভাঙনের কবলে পড়েছে সুঘাট ইউনিয়নের চকপাহাড়ি গ্রামও। নদীর তীরবর্তী ১১টি বাড়ির পাশাপাশি এখানকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪টি ঘর চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। প্রকল্পের বাসিন্দারা জানান, মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয়টুকু রক্ষায় তারা এখন চরম দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন। এছাড়া সীমাবাড়ি ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামেও ভাঙন ছড়িয়ে পড়েছে।

কৃষকরা জানান, নদী থেকে সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে পানি তুলে ওই তিন গ্রামের অন্তত ৫০০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করা হতো। কিন্তু ভাঙনের ফলে সেচ ঘরগুলো নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে আসন্ন মৌসুমে ফসল উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঘাশুড়িয়া গ্রামের কৃষক নূরে আলম ও আফছার আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসন যদি সময়মতো আমাদের অভিযোগ গুরুত্ব দিত, তবে আজ গ্রামগুলো ধ্বংসের মুখে পড়ত না। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানানো হবে। অন্যদিকে, বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, তিনি কর্মস্থলে নতুন যোগদান করায় বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন না। তবে দ্রুত সরেজমিনে পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

ছবি

দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে অর্থ প্রদান

বোয়ালখালীতে মাইক্রোবাস চালকের মরদেহ উদ্ধার

জয়পুরহাটে ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারে ৩ মৃত্যু

ছবি

সৈয়দপুরে ভবন নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

ছবি

দশমিনায় আমন ধানের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসি

ছবি

নিখোঁজের দুই মাস পরে কিশোরের কঙ্কাল মিলল জঙ্গলে

ছবি

পদ্মার ১ কাতল ৪৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি

ছবি

ঝুঁকিপূর্ণ চার বেইলি ব্রিজে জনদুর্ভোগ, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

ছবি

ইজিবাইক-প্রাইভেটকার মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ৮

ছবি

কক্সবাজার থেকে শুরু হলো সেন্টমার্টিন যাত্রা, ছেড়ে গেছে ৩টি জাহাজ

ময়মনসিংহে নির্যাতনবিরোধী সনদ ও প্রোটোকল বিষয়ে আলোচনা সভা

ছবি

খুঁটির জায়গা বাদে সড়কের কাজ সম্পন্ন থেমে গেছে

ছবি

বরগুনার বিষখালীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বিদ্যালয়, ঝুঁকিতে শতাধিক পরিবার

ছবি

ভোমরাকে কাস্টমস হাউজ ঘোষণা দিলেও অবকাঠামো সংকটে থেমে আছে বন্দরের উন্নয়ন

ছবি

সিংড়ায় বেলজিয়াম জাতের হাঁস পালনে লাখপতি

সান্তাহারে প্যানেল চেয়ারম্যানের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ৬০ মণ মাছ নিধন

ছবি

শান্তি চুক্তির পর বদলেছে পাহাড়ের দৃশ্যপট, স্থায়ী শান্তি আসেনি

শরণখোলায় ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে চর্ম রোগ

শাহরাস্তিতে খাদ্য শস্য সংগ্রহ অভিযান কার্যক্রম উদ্বোধন

ছবি

শাহজাদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষিকা নিহত

ছবি

পটিয়া ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি, অসহায় পরিবহন শ্রমিকরা

ছবি

রায়গঞ্জে পুকুরে অজ্ঞাত শিশুর মরদেহ উদ্ধার

ছবি

সাঘাটায় সাতদিন ধরে নিখোঁজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী

ছবি

মীরসরাইয়ে গোলমরিচ প্রসেসিং অপারেটর প্রশিক্ষণ

ছবি

ভূমিকম্পে দামুড়হুদায় নালা ধসে সেচ কার্যক্রম বন্ধ, দুশ্চিন্তায় কৃষক

ছবি

দশমিনায় খালগুলোতে কচুরিপানায় পূর্ণ, ব্যাহত হচ্ছে পানি প্রবাহ

ছবি

নোয়াখালীতে সুদের টাকার জন্য ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ১

ছবি

শীতের আগমনে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

ছবি

সিলেটে তুচ্ছ ঘটনায় ফের যুবক খুন

ছবি

সাগর কুলের দ্বীপগুলো প্রকৃতির সৌন্দর্য

মহেশপুরে ছিনতাইচক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার

ছবি

পালিয়ে যাওয়া দুই কিশোরীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর

ছবি

খেজুর রসের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা দুমকিতে নেই পর্যাপ্ত গাছিয়া

ছবি

সভাপতি মোমেন সম্পাদক রোবেল

ছবি

গোয়ালন্দে পূর্ব বিরোধেকে কেন্দ্র করে পরিবারের ওপর হামলায় আহত ৫

ছবি

রূপগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

tab

শেরপুরে বাঙালী নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে তিনটি গ্রাম

প্রতিনিধি, শেরপুর (বগুড়া)

শেরপুর (বগুড়া): বাঙালী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হতে চলেছে উপজেলার তিনটি গ্রাম -সংবাদ

মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

বগুড়ার শেরপুরে বাঙালী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হতে চলেছে উপজেলার তিনটি গ্রাম। অপরিকল্পিত নদী খননের প্রভাবে উপজেলার সীমাবাড়ি ইউনিয়নের ঘাশুড়িয়া ও নলুয়া এবং সুঘাট ইউনিয়নের চকপাহাড়ি গ্রাম এখন নদীগর্ভে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমেও এমন ভয়াবহ ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদীপারের শত শত পরিবার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এক বছর আগে বাঙালী নদী খনন করা হয়। মানচিত্র অনুযায়ী মূল নদী বর্তমান অবস্থান থেকে অন্তত ৬০০ ফুট উত্তরে ছিল। কিন্তু খননকাজ পরিচালনার সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টরা মূল সীমানা না মেনে নদীর দক্ষিণ পাড় ঘেঁষে, অর্থাৎ লোকালয় ও ফসলি জমির পাশ দিয়ে গভীর করে খনন চালায়। সে সময় গ্রামবাসী, জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। অপরিকল্পিত সেই খননের বিরূপ প্রভাবেই আজ বসতভিটা ও আবাদি জমি হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে সীমাবাড়ি ইউনিয়নের ঘাশুড়িয়া গ্রাম। গত দুই মাসে এই গ্রামের অন্তত ৫০টি পরিবারের বসতভিটা নদীতে হারিয়ে গেছে। নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে প্রায় ১৫ বিঘা আবাদি জমি। বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব দিনমজুর আব্দুস সাত্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, নদী যেখানে ছিল সেখানে খনন করলে আজ আমার এই দশা হতো না। চোখের সামনে নিজের বাড়ি নদীতে চলে গেল। এখন অন্যের জমিতে ছাপড়া তুলে থাকছি। সাত্তারের মতো তার ভাই আব্দুস সালামসহ গ্রামের অনেক কৃষক এখন ভূমিহীন। ভাঙনের কবলে পড়েছে সুঘাট ইউনিয়নের চকপাহাড়ি গ্রামও। নদীর তীরবর্তী ১১টি বাড়ির পাশাপাশি এখানকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪টি ঘর চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। প্রকল্পের বাসিন্দারা জানান, মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয়টুকু রক্ষায় তারা এখন চরম দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন। এছাড়া সীমাবাড়ি ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামেও ভাঙন ছড়িয়ে পড়েছে।

কৃষকরা জানান, নদী থেকে সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে পানি তুলে ওই তিন গ্রামের অন্তত ৫০০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করা হতো। কিন্তু ভাঙনের ফলে সেচ ঘরগুলো নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে আসন্ন মৌসুমে ফসল উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঘাশুড়িয়া গ্রামের কৃষক নূরে আলম ও আফছার আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসন যদি সময়মতো আমাদের অভিযোগ গুরুত্ব দিত, তবে আজ গ্রামগুলো ধ্বংসের মুখে পড়ত না। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানানো হবে। অন্যদিকে, বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, তিনি কর্মস্থলে নতুন যোগদান করায় বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন না। তবে দ্রুত সরেজমিনে পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

back to top