জয়পুরহাটে ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারে ৩ মৃত্যু। সময় তখন দুপুর পেরিয়ে বিকেল গড়িয়েছে। জেলার সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের বড়মাঝিপাড়া গ্রামের বাড়িতে নেমে এসেছে বাকরুদ্ধ নিস্তব্ধতা। আপন আর স্বজনদের চাপা কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ। আঙ্গিনাই পাশাপাশি রাখা দুটি খাটিয়ার একটিতে নিথর হয়ে শুয়ে আছেন মা সালেহা বেগম (৬৫), তার আর ঠিক পাশেই অন্য খাটিয়ায় শুয়ে আছেন তারি মেয়ে বিলকিস বেগম (৩৮)।
এমন মৃত্যুর দৃশ্য দেখে স্তব্ধ হয়ে গেছেন বিলকিসের স্বামী ছানোয়ার হোসেন। প্রিয় স্ত্রী ও শাশুড়ির মরদেহের পাশে বসে তিনি বাকরুদ্ধ। পাশে চলছে কবর খোঁড়ার কাজ, যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন মা ও মেয়ে। এর আগে গত রোববার রাতে সালেহা বেগমের নাতি তুহিন হোসাইন (২৫) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মাত্র সাড়ে ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারে ৩ মৃত্যুতে এলাকায় যেন নেমে এসেছে হৃদয় বিদারক শোকের ছায়া।
সালেহা বেগম বড়মাঝিপাড়া গ্রামের মৃত খাজামদ্দিনের স্ত্রী। বিলকিস বেগম জর্ডান প্রবাসী ছিলেন.৩ বছর আগে দেশে ফেরেন। আর জয়পুরহাট সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তুহিন দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন।
স্বজন ও গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গেল গত শনিবার বিলকিসের শাশুড়ি শেফালী বেগম ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। বিলকিস তাকে দেখাশোনা করতে গিয়ে নিজেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন এবং গত রোববার সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিনই বিলকিসের মা সালেহা বেগমও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে একই ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসকের দাবি তারা ডায়রিয়ায় নয় মারা গেছেন শ্বাসকষ্টে।
এদিকে সালেহা বেগমের নাতি তুহিন হোসাইন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত রোববার রাত আনুমানিক ৮টার দিকে তিনি মারা যান এবং গতকাল সোমবার সকালে তাকে দাফন করা হয়। এরপর গতকাল সোমবার দুপুর আনুমানিক পৌনে ১টায় সালেহা বেগম হাসপাতালে মারা যান। মায়ের মৃত্যুর মাত্র ৩৫ মি: পর বিলকিস বেগমও মৃত্যুবরণ করেন। বিকেলে মা-মেয়ের মরদেহ আনা হয় বাড়িতে।
প্রতিবেশী রূবেল হোসেন জানান, মাত্র ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারে ৩জন মারা গেছেন। এর মধ্যে দুজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
নিহত বিলকিসের স্বামী ছানোয়ার হোসেন জানান, আমার মা, স্ত্রী ও শাশুড়ি ৩জনই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। মা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু আজ আমার শাশুড়ি ও স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩৫ মিনিটের ব্যবধানে মারা গেলেন। এর আগে গত রোববার রাতে হাসপাতালে আমার স্ত্রীর বড় ভাইয়ের ছেলে তুহিন মারা গেছেন।
জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: সরদার রাশেদ মোবারক জুয়ের বলেন, হাসপাতালে যে দুইজন মারা গেছেন, তারা মা ও মেয়ে। তারা ডায়রিয়ায় নয়, শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। তারা ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন না।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
জয়পুরহাটে ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারে ৩ মৃত্যু। সময় তখন দুপুর পেরিয়ে বিকেল গড়িয়েছে। জেলার সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের বড়মাঝিপাড়া গ্রামের বাড়িতে নেমে এসেছে বাকরুদ্ধ নিস্তব্ধতা। আপন আর স্বজনদের চাপা কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ। আঙ্গিনাই পাশাপাশি রাখা দুটি খাটিয়ার একটিতে নিথর হয়ে শুয়ে আছেন মা সালেহা বেগম (৬৫), তার আর ঠিক পাশেই অন্য খাটিয়ায় শুয়ে আছেন তারি মেয়ে বিলকিস বেগম (৩৮)।
এমন মৃত্যুর দৃশ্য দেখে স্তব্ধ হয়ে গেছেন বিলকিসের স্বামী ছানোয়ার হোসেন। প্রিয় স্ত্রী ও শাশুড়ির মরদেহের পাশে বসে তিনি বাকরুদ্ধ। পাশে চলছে কবর খোঁড়ার কাজ, যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন মা ও মেয়ে। এর আগে গত রোববার রাতে সালেহা বেগমের নাতি তুহিন হোসাইন (২৫) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মাত্র সাড়ে ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারে ৩ মৃত্যুতে এলাকায় যেন নেমে এসেছে হৃদয় বিদারক শোকের ছায়া।
সালেহা বেগম বড়মাঝিপাড়া গ্রামের মৃত খাজামদ্দিনের স্ত্রী। বিলকিস বেগম জর্ডান প্রবাসী ছিলেন.৩ বছর আগে দেশে ফেরেন। আর জয়পুরহাট সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তুহিন দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন।
স্বজন ও গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গেল গত শনিবার বিলকিসের শাশুড়ি শেফালী বেগম ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। বিলকিস তাকে দেখাশোনা করতে গিয়ে নিজেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন এবং গত রোববার সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিনই বিলকিসের মা সালেহা বেগমও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে একই ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসকের দাবি তারা ডায়রিয়ায় নয় মারা গেছেন শ্বাসকষ্টে।
এদিকে সালেহা বেগমের নাতি তুহিন হোসাইন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত রোববার রাত আনুমানিক ৮টার দিকে তিনি মারা যান এবং গতকাল সোমবার সকালে তাকে দাফন করা হয়। এরপর গতকাল সোমবার দুপুর আনুমানিক পৌনে ১টায় সালেহা বেগম হাসপাতালে মারা যান। মায়ের মৃত্যুর মাত্র ৩৫ মি: পর বিলকিস বেগমও মৃত্যুবরণ করেন। বিকেলে মা-মেয়ের মরদেহ আনা হয় বাড়িতে।
প্রতিবেশী রূবেল হোসেন জানান, মাত্র ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারে ৩জন মারা গেছেন। এর মধ্যে দুজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
নিহত বিলকিসের স্বামী ছানোয়ার হোসেন জানান, আমার মা, স্ত্রী ও শাশুড়ি ৩জনই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। মা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু আজ আমার শাশুড়ি ও স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩৫ মিনিটের ব্যবধানে মারা গেলেন। এর আগে গত রোববার রাতে হাসপাতালে আমার স্ত্রীর বড় ভাইয়ের ছেলে তুহিন মারা গেছেন।
জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: সরদার রাশেদ মোবারক জুয়ের বলেন, হাসপাতালে যে দুইজন মারা গেছেন, তারা মা ও মেয়ে। তারা ডায়রিয়ায় নয়, শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। তারা ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন না।