বুধবার ৩ ডিসেম্বর বরগুনা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এদিনে চূড়ান্ত বিজয়ের আগে হানাদারমুক্ত হয় বরগুনাবাসী। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৯ নং সেক্টরের বুকাবুনিয়া সাব-সেক্টরের অধীনে ছিল বরগুনা জেলা।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের জন্য যে যার অস্ত্র নিয়ে বরগুনায় ফিরে আসেন। পরে মুক্তিযোদ্ধা হেড কোয়ার্টারের নির্দেশনায় নবম সেক্টর বুকাবুনিয়ার বরগুনা ও ঝালকাঠির ২১ জন মুক্তিযোদ্ধা রাত তিনটার দিকে তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সত্তার খানের নেতৃত্বে নৌকাযোগে বরগুনার খাকদোন নদীর পোটকাখালীতে অবস্থান নেন। ফজরের আজানকে যুদ্ধ শুরুর একটি সংকেত হিসেবে ব্যবহার করেন তারা। আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কিনারে ওঠে বরগুনার ৬টি স্থানে ভাগ হয়ে একত্রে গোলাগুলি শুরু করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
দ্বিতীয় দফায় গোলাগুলি করতে করতে তারা বরগুনার জেলখানার দিকে আগাতে থাকেন। পরে জেলখানায় অবস্থানরত পুলিশ ও রাজাকারদের আত্মসমর্পণ করিয়ে এসডিও অফিসের সামনে নিয়ে আসেন। তৎকালীন এসডিও আনোয়ার হোসেনকে আত্মসমর্পণ করান। দুপুর ১২টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা বরগুনাকে পাকবাহিনীর হাত থেকে দখলমুক্ত করে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে বুকাবুনিয়া সাব সেক্টর হেডকোয়াটারে ফিরে যান।
এ অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালিব গাজী বলেন, ডিসেম্বর মাস বাঙালির কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মাস। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ মুক্ত হলেও বরগুনা মুক্ত হয় ৩ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালে এ দিন ভোররাতে বরগুনার তিনদিক থেকে গোলাগুলির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা বরগুনায় অবস্থানরত কিছু রাজাকার ও পুলিশকে আত্মসমর্পণ করান। বাকিরা বরগুনা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তরুণ প্রজন্মের কাছে আজকের দিনটিকে তুলে ধরতে বরগুনার বেশ কয়েকটি সংগঠন প্রতিবছর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন মনোয়ার বলেন, বরগুনাকে মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সত্তার খানের নেতৃত্বে সেদিনের পরিকল্পনা অনুযায়ী নবম সেক্টরের বুকাবুনিয়া উপ-সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে সশস্ত্রভাবে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের আত্মসমর্পণ করানোর মাধ্যমে বরগুনাকে হানাদার মুক্ত করা হয়। দিবসটি পালন উপলক্ষে বরগুনায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। এবছরও বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
বুধবার ৩ ডিসেম্বর বরগুনা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এদিনে চূড়ান্ত বিজয়ের আগে হানাদারমুক্ত হয় বরগুনাবাসী। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৯ নং সেক্টরের বুকাবুনিয়া সাব-সেক্টরের অধীনে ছিল বরগুনা জেলা।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের জন্য যে যার অস্ত্র নিয়ে বরগুনায় ফিরে আসেন। পরে মুক্তিযোদ্ধা হেড কোয়ার্টারের নির্দেশনায় নবম সেক্টর বুকাবুনিয়ার বরগুনা ও ঝালকাঠির ২১ জন মুক্তিযোদ্ধা রাত তিনটার দিকে তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সত্তার খানের নেতৃত্বে নৌকাযোগে বরগুনার খাকদোন নদীর পোটকাখালীতে অবস্থান নেন। ফজরের আজানকে যুদ্ধ শুরুর একটি সংকেত হিসেবে ব্যবহার করেন তারা। আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কিনারে ওঠে বরগুনার ৬টি স্থানে ভাগ হয়ে একত্রে গোলাগুলি শুরু করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
দ্বিতীয় দফায় গোলাগুলি করতে করতে তারা বরগুনার জেলখানার দিকে আগাতে থাকেন। পরে জেলখানায় অবস্থানরত পুলিশ ও রাজাকারদের আত্মসমর্পণ করিয়ে এসডিও অফিসের সামনে নিয়ে আসেন। তৎকালীন এসডিও আনোয়ার হোসেনকে আত্মসমর্পণ করান। দুপুর ১২টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা বরগুনাকে পাকবাহিনীর হাত থেকে দখলমুক্ত করে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে বুকাবুনিয়া সাব সেক্টর হেডকোয়াটারে ফিরে যান।
এ অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালিব গাজী বলেন, ডিসেম্বর মাস বাঙালির কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মাস। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ মুক্ত হলেও বরগুনা মুক্ত হয় ৩ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালে এ দিন ভোররাতে বরগুনার তিনদিক থেকে গোলাগুলির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা বরগুনায় অবস্থানরত কিছু রাজাকার ও পুলিশকে আত্মসমর্পণ করান। বাকিরা বরগুনা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তরুণ প্রজন্মের কাছে আজকের দিনটিকে তুলে ধরতে বরগুনার বেশ কয়েকটি সংগঠন প্রতিবছর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন মনোয়ার বলেন, বরগুনাকে মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সত্তার খানের নেতৃত্বে সেদিনের পরিকল্পনা অনুযায়ী নবম সেক্টরের বুকাবুনিয়া উপ-সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে সশস্ত্রভাবে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের আত্মসমর্পণ করানোর মাধ্যমে বরগুনাকে হানাদার মুক্ত করা হয়। দিবসটি পালন উপলক্ষে বরগুনায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। এবছরও বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।