বরুড়া (কুমিল্লা) : এভাবেই পড়ে আছে অসমাপ্ত ব্রিজের গার্ডার -সংবাদ
কুমিল্লার বরুড়ায় চিতড্ডা ইউনিয়নের মুকুন্দপুর নামক এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর সংযোগ কার্জন নদীর উপর প্রায় আড়াই কোটি টাকার ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের গার্ডার ব্রিজ দুই দফায় দরপত্র পরিবর্তন করে ও নির্মানকাজ ৫ বছরে শেষ না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকার ২০টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ প্রত্যেহ যাতায়াতের দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠির যাতায়াতের পথ সুগম করার লক্ষ্যে চান্দিনা উপজেলার নবাবপুর থেকে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার ফেনুয়া নামক সড়কের বরুড়ার চিতড্ডা ইউনিয়নের মুকুন্দপুর নামক এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর সংযোগ কার্জন নদীর উপর এলজিইডির বৃহত্তর কুমিল্লা ৩ প্রকল্পের ২কোটি ৪১ লাখ ২৭ হাজার ৩ শত ৮৪ টাকা অর্থায়নে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের পিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মানের দরপত্রের মাধ্যমে বিগত ২০২০ সালের ২২ শে মার্চ নির্মান কাজ পান ডন কর্পোরেশন নামে এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ অনুযায়ী কোন কাজ না করে কালেক্ষেপণ করায় ২০২৩ সালের ৩রা এপ্রিল ব্রিজ নির্মানের চুক্তিপত্র বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় দফায় এলজিইডি বৃহ্ত্তর কুমিল্লা ৩ প্রকপ্লের আওতায় ওই ব্রিজটি নির্মানের পুনরায় দরপত্রের আহবান করা হয়। ওই প্রেক্ষিতে ২ কোটি ৮৯ লাখ টাকায় ব্রিজটি নির্মাণ কাজ পান মেসার্স হারুন এন্ড সন্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০২৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ব্রিজটি নির্মান কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উক্ত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্রিজটির ৩টি পিসি গার্ডারের মধ্যে ১টি গার্ডার নির্মান এবং বাদবাকী শুধু রড বাইন্ডিং এর কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদার লাপাত্তা। যার ফলে ব্রীজ নির্মান অসম্পন্ন থেকে যায়।
এদিকে চলতি বছরের জুন মাসে ব্রিজটি নির্মাণের অর্থযোগানদাতা প্রতিষ্ঠান এলজিইডির বৃহ্ত্তর কুমিল্লা ৩ প্রকল্পের মেয়াদকাল ও শেষ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় জনগুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজটি অসম্পন্ন অবস্থায় পরে থাকে। যার ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার দুই পাড়ের ২০টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াতে গত প্রায় ৫ বছর যাবৎ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে মো. খলিলুর রহমান, মো. স্বপন মিয়া, নবী নেওয়াজ, আবুল কাসেমসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন দুই দফায় ঠিকাদারদের মধ্যে প্রথম জন এলাকায় প্রথম এসে দেখে যান। এর পর তিনি লাপাত্তা হন। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনেরা ব্রিজ নির্মানের কিছু কাজ করে চলে যাওয়ার পর আর তাদেরকেও দেখা যায়নি। এছাড়া ব্রিজ নির্মানকালে নদী পারাপারে বিকল্প ব্যবস্থা না করায় ওই নদী পারপারের সময় একজন পথচারীর মর্মান্তিক মৃত্যু এবং আরো দুই পথচারী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ এ গার্ডার ব্রিজটি নির্মান কাজ অসমাপ্ত থেকে যায়। স্থানীয়রা আরোও অভিযোগ করে বলেন ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এ অঞ্চলের পাশ্ববর্তী উপজেলার চান্দিনার নবাবপুর, বরুড়ার চিতড্ডা, মুকুন্দপুর, ভঙ্গুয়া, জাঙ্গালিয়া, নোয়াপাড়াসহ ২০টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ গত প্রায় ৫ বছর যাবৎ যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। দুই পাড়ের বাসিন্দাদের বাড়ি ঘর সহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মান কাজের মালামাল, ফসল উৎপাদন, ক্রয় বিক্রয় পরিবহণসহ নানাক্ষেত্রে অন্য এলাকা দিয়ে বিকল্প পথে যাতায়াতে একদিকে সময় ও অপরদিকে অর্থের অপচয় হচ্ছে। নির্মানাধীন ব্রিজটির পূর্বপাড়টিও ভেঙ্গে বিলীন হয়ে গেছে নদীতে। এলাকার বাসিন্দাদের ছেলেমেয়েদের স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসায় আসা যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অসুস্থ রোগীদের নিয়ে পড়তে হয় চরম বিপাকে। জনদুর্ভোগ নিরসনে ব্রিজটি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মান কাজ সম্পন্ন করার জন্য ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী সৈয়দ জাকির হোসেন জানান, নবাবপুর থেকে ফেনুয়া (মুকুন্দপুর) গার্ডার ব্রিজটির অসমাপ্ত অংশ নির্মান কাজ শেষ করার জন্য এলজিইডির কুমিল্লা চাঁদপুর বি-বাড়িয়া প্রজেক্টে ১ কোটি ৬৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা চাহিদা চেয়ে প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে ব্রিজ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে এই প্রকৌশলী জানিয়েছেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বরুড়া (কুমিল্লা) : এভাবেই পড়ে আছে অসমাপ্ত ব্রিজের গার্ডার -সংবাদ
মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
কুমিল্লার বরুড়ায় চিতড্ডা ইউনিয়নের মুকুন্দপুর নামক এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর সংযোগ কার্জন নদীর উপর প্রায় আড়াই কোটি টাকার ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের গার্ডার ব্রিজ দুই দফায় দরপত্র পরিবর্তন করে ও নির্মানকাজ ৫ বছরে শেষ না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকার ২০টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ প্রত্যেহ যাতায়াতের দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠির যাতায়াতের পথ সুগম করার লক্ষ্যে চান্দিনা উপজেলার নবাবপুর থেকে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার ফেনুয়া নামক সড়কের বরুড়ার চিতড্ডা ইউনিয়নের মুকুন্দপুর নামক এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর সংযোগ কার্জন নদীর উপর এলজিইডির বৃহত্তর কুমিল্লা ৩ প্রকল্পের ২কোটি ৪১ লাখ ২৭ হাজার ৩ শত ৮৪ টাকা অর্থায়নে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের পিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মানের দরপত্রের মাধ্যমে বিগত ২০২০ সালের ২২ শে মার্চ নির্মান কাজ পান ডন কর্পোরেশন নামে এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ অনুযায়ী কোন কাজ না করে কালেক্ষেপণ করায় ২০২৩ সালের ৩রা এপ্রিল ব্রিজ নির্মানের চুক্তিপত্র বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় দফায় এলজিইডি বৃহ্ত্তর কুমিল্লা ৩ প্রকপ্লের আওতায় ওই ব্রিজটি নির্মানের পুনরায় দরপত্রের আহবান করা হয়। ওই প্রেক্ষিতে ২ কোটি ৮৯ লাখ টাকায় ব্রিজটি নির্মাণ কাজ পান মেসার্স হারুন এন্ড সন্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০২৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ব্রিজটি নির্মান কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উক্ত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্রিজটির ৩টি পিসি গার্ডারের মধ্যে ১টি গার্ডার নির্মান এবং বাদবাকী শুধু রড বাইন্ডিং এর কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদার লাপাত্তা। যার ফলে ব্রীজ নির্মান অসম্পন্ন থেকে যায়।
এদিকে চলতি বছরের জুন মাসে ব্রিজটি নির্মাণের অর্থযোগানদাতা প্রতিষ্ঠান এলজিইডির বৃহ্ত্তর কুমিল্লা ৩ প্রকল্পের মেয়াদকাল ও শেষ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় জনগুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজটি অসম্পন্ন অবস্থায় পরে থাকে। যার ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার দুই পাড়ের ২০টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াতে গত প্রায় ৫ বছর যাবৎ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে মো. খলিলুর রহমান, মো. স্বপন মিয়া, নবী নেওয়াজ, আবুল কাসেমসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন দুই দফায় ঠিকাদারদের মধ্যে প্রথম জন এলাকায় প্রথম এসে দেখে যান। এর পর তিনি লাপাত্তা হন। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনেরা ব্রিজ নির্মানের কিছু কাজ করে চলে যাওয়ার পর আর তাদেরকেও দেখা যায়নি। এছাড়া ব্রিজ নির্মানকালে নদী পারাপারে বিকল্প ব্যবস্থা না করায় ওই নদী পারপারের সময় একজন পথচারীর মর্মান্তিক মৃত্যু এবং আরো দুই পথচারী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ এ গার্ডার ব্রিজটি নির্মান কাজ অসমাপ্ত থেকে যায়। স্থানীয়রা আরোও অভিযোগ করে বলেন ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এ অঞ্চলের পাশ্ববর্তী উপজেলার চান্দিনার নবাবপুর, বরুড়ার চিতড্ডা, মুকুন্দপুর, ভঙ্গুয়া, জাঙ্গালিয়া, নোয়াপাড়াসহ ২০টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ গত প্রায় ৫ বছর যাবৎ যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। দুই পাড়ের বাসিন্দাদের বাড়ি ঘর সহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মান কাজের মালামাল, ফসল উৎপাদন, ক্রয় বিক্রয় পরিবহণসহ নানাক্ষেত্রে অন্য এলাকা দিয়ে বিকল্প পথে যাতায়াতে একদিকে সময় ও অপরদিকে অর্থের অপচয় হচ্ছে। নির্মানাধীন ব্রিজটির পূর্বপাড়টিও ভেঙ্গে বিলীন হয়ে গেছে নদীতে। এলাকার বাসিন্দাদের ছেলেমেয়েদের স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসায় আসা যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অসুস্থ রোগীদের নিয়ে পড়তে হয় চরম বিপাকে। জনদুর্ভোগ নিরসনে ব্রিজটি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মান কাজ সম্পন্ন করার জন্য ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী সৈয়দ জাকির হোসেন জানান, নবাবপুর থেকে ফেনুয়া (মুকুন্দপুর) গার্ডার ব্রিজটির অসমাপ্ত অংশ নির্মান কাজ শেষ করার জন্য এলজিইডির কুমিল্লা চাঁদপুর বি-বাড়িয়া প্রজেক্টে ১ কোটি ৬৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা চাহিদা চেয়ে প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে ব্রিজ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে এই প্রকৌশলী জানিয়েছেন।