শাপলার লালিমায় জেগে ওঠা হাইল হাওর
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : হাইল হাওরে লাল শাপলা -সংবাদ
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের হাইল হাওরজুড়ে এখন লাল শাপলার রাজত্ব। ভোরের আলোয় বিস্তীর্ণ বিলজুড়ে হাজারো লাল শাপলার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নতুন ঠিকানা হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে শ্রীমঙ্গলের এই ‘লাল শাপলা বিল’।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও মৌলভীবাজার জেলা সদর উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত সুবিশাল হাইল হাওর। এই হাইল হাওরের আয়তন ১৪ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পড়েছে ১০ হাজার হেক্টর, আর বাকি ৪ হাজার হেক্টর পড়েছে মৌলভীবাজারের সদর উপজেলায়। হাওরের ১৪টি বিলের একটি সানন্দা বিল—বর্তমানে পরিচিত লাল শাপলা বিল নামে। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে মাথা তুলে দাঁড়ানো অসংখ্য লাল শাপলা যেন দূর থেকে লাল কার্পেট বিছিয়ে দিয়েছে পুরো জলাভূমিতে। এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন হাজারো মানুষ। ফলে মির্জাপুরের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলটি এখন হয়ে উঠেছে নতুন পর্যটনকেন্দ্র।
সিলেটের কানাইঘাট থেকে আসা পর্যটক জুবায়ের আহমদ বলেন, ‘পুরো সিলেটই প্রকৃতির সৌন্দর্যে ভরপুর। তবে শাপলা বিলে এসে অন্যরকম ভালো লাগল।’
শ্রীমঙ্গলের কলেজছাত্রী দীপান্বিতা দাশগুপ্তা বলেন, ‘একসঙ্গে এত লাল শাপলা আগে কখনও দেখিনি। আমরা মুগ্ধ।’
দর্শনার্থী ফাহিম আহমদ জানান, ‘এ বছর শাপলার সংখ্যা আশ্চর্যভাবে বেড়েছে। লাল শাপলার সঙ্গে পরিযায়ী পাখির কলতান—সব মিলিয়ে মন ভরে যায়।’
হবিগঞ্জের ব্যবসায়ী জমসেদ আলী বলেন, ‘শাপলা বিল সত্যিই পর্যটনের নতুন সংযোজন। আমার সন্তানরা এতটাই মুগ্ধ যে এখানেই থাকতে চায়।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, ‘শাপলা দেখতে এসে অনেকেই ফুল ছিঁড়ে নিচ্ছেন। আমরা চাই প্রকৃতির এই সৌন্দর্য অক্ষুণ্ণ থাকুক। সবাইকে অনুরোধ ফুল না ছেঁড়ার।’
নৌকার মাঝি তাহির মিয়া বলেন, ‘এখন মাছ ধরা বাদ দিয়ে নৌকা চালিয়েই ভালো আয় হচ্ছে।’
মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু আজম জানান, ‘লাল শাপলা রাতে ফোটে। তাই ভোরেই এলে পাওয়া যায় বিলের আসল রূপ।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, ‘লাল শাপলা এখন শ্রীমঙ্গলের অন্যতম আকর্ষণ। পর্যটকদের সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
প্রকৃতির রঙিন সাজে সজ্জিত লাল শাপলার এই রাজ্য শুধু পর্যটনকে সমৃদ্ধ করছে না, স্থানীয় অর্থনীতিকেও প্রাণ দিচ্ছে। অনাবিল এই সৌন্দর্য দেশের পর্যটন মানচিত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শাপলার লালিমায় জেগে ওঠা হাইল হাওর
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : হাইল হাওরে লাল শাপলা -সংবাদ
মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের হাইল হাওরজুড়ে এখন লাল শাপলার রাজত্ব। ভোরের আলোয় বিস্তীর্ণ বিলজুড়ে হাজারো লাল শাপলার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নতুন ঠিকানা হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে শ্রীমঙ্গলের এই ‘লাল শাপলা বিল’।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও মৌলভীবাজার জেলা সদর উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত সুবিশাল হাইল হাওর। এই হাইল হাওরের আয়তন ১৪ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পড়েছে ১০ হাজার হেক্টর, আর বাকি ৪ হাজার হেক্টর পড়েছে মৌলভীবাজারের সদর উপজেলায়। হাওরের ১৪টি বিলের একটি সানন্দা বিল—বর্তমানে পরিচিত লাল শাপলা বিল নামে। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে মাথা তুলে দাঁড়ানো অসংখ্য লাল শাপলা যেন দূর থেকে লাল কার্পেট বিছিয়ে দিয়েছে পুরো জলাভূমিতে। এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন হাজারো মানুষ। ফলে মির্জাপুরের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলটি এখন হয়ে উঠেছে নতুন পর্যটনকেন্দ্র।
সিলেটের কানাইঘাট থেকে আসা পর্যটক জুবায়ের আহমদ বলেন, ‘পুরো সিলেটই প্রকৃতির সৌন্দর্যে ভরপুর। তবে শাপলা বিলে এসে অন্যরকম ভালো লাগল।’
শ্রীমঙ্গলের কলেজছাত্রী দীপান্বিতা দাশগুপ্তা বলেন, ‘একসঙ্গে এত লাল শাপলা আগে কখনও দেখিনি। আমরা মুগ্ধ।’
দর্শনার্থী ফাহিম আহমদ জানান, ‘এ বছর শাপলার সংখ্যা আশ্চর্যভাবে বেড়েছে। লাল শাপলার সঙ্গে পরিযায়ী পাখির কলতান—সব মিলিয়ে মন ভরে যায়।’
হবিগঞ্জের ব্যবসায়ী জমসেদ আলী বলেন, ‘শাপলা বিল সত্যিই পর্যটনের নতুন সংযোজন। আমার সন্তানরা এতটাই মুগ্ধ যে এখানেই থাকতে চায়।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, ‘শাপলা দেখতে এসে অনেকেই ফুল ছিঁড়ে নিচ্ছেন। আমরা চাই প্রকৃতির এই সৌন্দর্য অক্ষুণ্ণ থাকুক। সবাইকে অনুরোধ ফুল না ছেঁড়ার।’
নৌকার মাঝি তাহির মিয়া বলেন, ‘এখন মাছ ধরা বাদ দিয়ে নৌকা চালিয়েই ভালো আয় হচ্ছে।’
মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু আজম জানান, ‘লাল শাপলা রাতে ফোটে। তাই ভোরেই এলে পাওয়া যায় বিলের আসল রূপ।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, ‘লাল শাপলা এখন শ্রীমঙ্গলের অন্যতম আকর্ষণ। পর্যটকদের সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
প্রকৃতির রঙিন সাজে সজ্জিত লাল শাপলার এই রাজ্য শুধু পর্যটনকে সমৃদ্ধ করছে না, স্থানীয় অর্থনীতিকেও প্রাণ দিচ্ছে। অনাবিল এই সৌন্দর্য দেশের পর্যটন মানচিত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।