alt

বোয়ালখালীতে বিলুপ্ত প্রায় কালোজিরা ধানের আবাদ

প্রতিনিধি, বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) : মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) : ধান কাটছেন কৃষক -সংবাদ

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে কৃষকের ঐতিহ্যবাহী কালোজিরা ধানের আবাদ।

এক সময় উপজেলার কৃষকরা বিভিন্ন ধানের পাশাপাশি এই কালো জিরা ধানের চাষও করত। অন্যান্য ধানের চেয়ে খরচ বেশি ও ফলন কম হওয়ায় কালো জিরা ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকরা। ফলে এই কালো জিরা ধানের জায়গা দখল করে নিয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান। আধুনিক উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বীজের অভাবেও এই ঐতিহ্যবাহী ধানের আবাদ হ্রাস পাচ্ছে বলে জানান উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা। তবে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা কিংবা প্রদর্শনী পাওয়া গেলে ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথ থেকে ফেরানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা। বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, আমন মৌসুমে সর্বত্রই চাষ হয়েছে বিভিন্ন জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের। কালো জিরা ধানের চাষ একে বারেই নেই বললেই চলে। তবে সুখের কথা, বিচ্ছিন্নভাবে কম পরিমাণে হলেও বিলুপ্তপ্রায় কালোজিরা ধানের চাষ করেছেন সারোয়াতলি ইউনিয়নের খিতাপচর এলাকার কৃষক মো মঞ্জুর মোর্শেদ, আমুচিয়া এলাকার কৃষক মো আবদুল জলিল ও পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার কৃষক মো সাইফুল।

মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, একসময় প্রতিটি কৃষক পরিবারের ঐতিহ্য ছিলো সুগন্ধিযুক্ত কালোজিরা, বিন্নী, কাশিয়াবিন্নি, সরুসহ নানান জাতের ধান। এ ধান কাটার সময়কে ঘিরে গ্রাম বাংলা মেতে উঠত নবান্নের উৎসবে। এ চিকন চাল দিয়ে পিঠা-পুলি, পোলাও, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, ক্ষির, পায়েস, ফিরনি ও জর্দাসহ আরও সুস্বাদু মুখরোচক নানা ধরনের খাবার তৈরী করে খাওয়ানো হতো পাড়া প্রতিবেশীদের। আবহমান বাংলার ঐতিহ্য অনুযায়ী শ্বশুরবাড়িতে জামাই এলে জামাই পাতে সুগন্ধিযুক্ত চিকন চালের ভাত দিয়ে আপ্যায়ন করা হতো। বর্ণাঢ্য পরিবার থেকে শুরু করে নিন্ম মধ্যবিত্ত হলেও একবেলা অবশ্যই এই চালের ভাত রান্না করা হতো। সেইসব এখন অতীত দিনের স্মৃতি। ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা মেটাতে সারাদেশ থেকেই হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতিবান্ধব এ সমস্ত জাতের দেশি ধান। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালোজিরা ধানের ফলন হয় কম। কানিপ্রতি অন্য জাতের ধান যেখানে ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ আড়ি উৎপাদন হয় সেখানে এ জাতের ফলন হয় সর্বোচ্চ ৩০ আড়ি পর্যন্ত। তবে বাজারে দাম দ্বিগুণ পাওয়া যায়। প্রতি কেজি চাল ৮০ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি করা যায়। লাভের কথা মাথায় রেখে কৃষকেরা আমন ধানে বেশি আগ্রহী হলেও এখনও গ্রামের গৃহস্থ পরিবারের কাছে এ ধানের কদর রয়েছে।

আর তাছাড়া হাট বাজারে এখন আর এই চাল পাওয়া যায় না। এখন প্রায় বিলুপ্তের পথে ঐতিহ্যবাহী এসব সুগন্ধি ধান। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, গত ৫ বছর পূর্বে বোয়ালখালীতে ২৫ হেক্টর কৃষি জমিতে কালোজিরা ধান চাষ হতো। বর্তমানে ৫ হেক্টর জমিতে এ ধানের চাষ করেছেন কৃষকেরা। স্থানীয়ভাবে কালোজিরা ধানের আবাদ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বোয়ালখালীতে নব যোগদানকৃত উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. শাহানুর ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমন ধানের অনেক উচ্চ ফলনশীল জাত রয়েছে, যে গুলোর ফলন অনেক বেশী এবং রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। অন্যান্য উচ্চ ফলনশীল জাতের তুলনায় কালোজিরা ধানের ফলন কম হয়। ফলন কম হলেও বাজারে এর দাম বেশি থাকে, খরচ বেশি হওয়ার কারণে কৃষকরা এ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

ছবি

দামুড়হুদায় পুঁইশাকের মেঁচুড়ি চাষে চমক ফেলেছে আব্দুল হাকিম

ছবি

সাপাহার সীমান্তে মালিকবিহীন অবস্থায় ৮০ পিস ট্যাবলেট উদ্ধার

ছবি

চাটখিলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৩

ছবি

দুই পা হারালেও হার মানেননি রহিম

ছবি

রাজশাহীর আকাশপথ নিরাপদ রাখতে শাহমখদুম বিমানবন্দরে নিরাপত্তা মহড়া

ছবি

দুর্গাপুর যত্রতত্র সিএনজি-অটোরিক্সা স্ট্যান্ড ভোগান্তিতে পথচারীরা

ছবি

ডিমলায় বিজিবির পৃথক অভিযানে ভারতীয় গরু ও মাদক আটক

ছবি

লাল গালিচার রাজ্যে পর্যটকের ঢল

ছবি

চুয়াডাঙ্গায় যুবককে গলা কেটে হত্যা

ছবি

চান্দিনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান গুঁড়িয়ে দেয়া ২০ হাজার ফুট পাইপ

ছবি

ডিমলায় বিদ্যালয়ের জমি জবর দখলের অভিযোগ

ছবি

বরুড়ায় ৫ বছরেও শেষ হয়নি ব্রিজ নির্মাণ, ২০ গ্রামবাসীর দুর্ভোগ

ছবি

সিংগাইরে শারফিন হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

ছবি

জামালপুরে জমিতে প্রবেশে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

ছবি

সিলেটে ইয়াবা বিক্রির টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে হত্যা

ছবি

উপজেলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দের সাথে ইউএনও’র মতবিনিময় সভা

ছবি

নওগাঁর লিটন ব্রিজের নিচ মিললো অজ্ঞাত মরদেহ

ছবি

বুধবার বরগুনা হানাদারমুক্ত দিবস

ছবি

শীতের আগমনে শাহজাদপুরে ব্যস্ততা বাড়ছে লেপ-তোষক কারিগরদের

ছবি

ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন অফিস ভাঙচুর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

ছবি

সুন্দরবনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ২০ বনদস্যু বাহিনী

ছবি

সুন্দরবনের গল্পের সিনেমা ‘নাভা’য় শ্বেতা

ছবি

ডোমারে অভ্যন্তরীণ আমন ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন

ছবি

রায়গঞ্জে নিখোঁজের চার দিন পর মিলল শিশুর লাশ

ছবি

শিবপুরে মোটরসাইকেল ও সিএনজির সংঘর্ষে প্রাণ গেলো দুই বন্ধুর

ছবি

দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে অর্থ প্রদান

ছবি

বোয়ালখালীতে মাইক্রোবাস চালকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

জয়পুরহাটে ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারে ৩ মৃত্যু

ছবি

সৈয়দপুরে ভবন নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

ছবি

দশমিনায় আমন ধানের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসি

ছবি

নিখোঁজের দুই মাস পরে কিশোরের কঙ্কাল মিলল জঙ্গলে

ছবি

পদ্মার ১ কাতল ৪৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি

ছবি

শেরপুরে বাঙালী নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে তিনটি গ্রাম

ছবি

ঝুঁকিপূর্ণ চার বেইলি ব্রিজে জনদুর্ভোগ, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

ছবি

ইজিবাইক-প্রাইভেটকার মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ৮

ছবি

কক্সবাজার থেকে শুরু হলো সেন্টমার্টিন যাত্রা, ছেড়ে গেছে ৩টি জাহাজ

tab

বোয়ালখালীতে বিলুপ্ত প্রায় কালোজিরা ধানের আবাদ

প্রতিনিধি, বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম)

বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) : ধান কাটছেন কৃষক -সংবাদ

মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে কৃষকের ঐতিহ্যবাহী কালোজিরা ধানের আবাদ।

এক সময় উপজেলার কৃষকরা বিভিন্ন ধানের পাশাপাশি এই কালো জিরা ধানের চাষও করত। অন্যান্য ধানের চেয়ে খরচ বেশি ও ফলন কম হওয়ায় কালো জিরা ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকরা। ফলে এই কালো জিরা ধানের জায়গা দখল করে নিয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান। আধুনিক উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বীজের অভাবেও এই ঐতিহ্যবাহী ধানের আবাদ হ্রাস পাচ্ছে বলে জানান উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা। তবে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা কিংবা প্রদর্শনী পাওয়া গেলে ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথ থেকে ফেরানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা। বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, আমন মৌসুমে সর্বত্রই চাষ হয়েছে বিভিন্ন জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের। কালো জিরা ধানের চাষ একে বারেই নেই বললেই চলে। তবে সুখের কথা, বিচ্ছিন্নভাবে কম পরিমাণে হলেও বিলুপ্তপ্রায় কালোজিরা ধানের চাষ করেছেন সারোয়াতলি ইউনিয়নের খিতাপচর এলাকার কৃষক মো মঞ্জুর মোর্শেদ, আমুচিয়া এলাকার কৃষক মো আবদুল জলিল ও পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার কৃষক মো সাইফুল।

মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, একসময় প্রতিটি কৃষক পরিবারের ঐতিহ্য ছিলো সুগন্ধিযুক্ত কালোজিরা, বিন্নী, কাশিয়াবিন্নি, সরুসহ নানান জাতের ধান। এ ধান কাটার সময়কে ঘিরে গ্রাম বাংলা মেতে উঠত নবান্নের উৎসবে। এ চিকন চাল দিয়ে পিঠা-পুলি, পোলাও, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, ক্ষির, পায়েস, ফিরনি ও জর্দাসহ আরও সুস্বাদু মুখরোচক নানা ধরনের খাবার তৈরী করে খাওয়ানো হতো পাড়া প্রতিবেশীদের। আবহমান বাংলার ঐতিহ্য অনুযায়ী শ্বশুরবাড়িতে জামাই এলে জামাই পাতে সুগন্ধিযুক্ত চিকন চালের ভাত দিয়ে আপ্যায়ন করা হতো। বর্ণাঢ্য পরিবার থেকে শুরু করে নিন্ম মধ্যবিত্ত হলেও একবেলা অবশ্যই এই চালের ভাত রান্না করা হতো। সেইসব এখন অতীত দিনের স্মৃতি। ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা মেটাতে সারাদেশ থেকেই হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতিবান্ধব এ সমস্ত জাতের দেশি ধান। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালোজিরা ধানের ফলন হয় কম। কানিপ্রতি অন্য জাতের ধান যেখানে ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ আড়ি উৎপাদন হয় সেখানে এ জাতের ফলন হয় সর্বোচ্চ ৩০ আড়ি পর্যন্ত। তবে বাজারে দাম দ্বিগুণ পাওয়া যায়। প্রতি কেজি চাল ৮০ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি করা যায়। লাভের কথা মাথায় রেখে কৃষকেরা আমন ধানে বেশি আগ্রহী হলেও এখনও গ্রামের গৃহস্থ পরিবারের কাছে এ ধানের কদর রয়েছে।

আর তাছাড়া হাট বাজারে এখন আর এই চাল পাওয়া যায় না। এখন প্রায় বিলুপ্তের পথে ঐতিহ্যবাহী এসব সুগন্ধি ধান। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, গত ৫ বছর পূর্বে বোয়ালখালীতে ২৫ হেক্টর কৃষি জমিতে কালোজিরা ধান চাষ হতো। বর্তমানে ৫ হেক্টর জমিতে এ ধানের চাষ করেছেন কৃষকেরা। স্থানীয়ভাবে কালোজিরা ধানের আবাদ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বোয়ালখালীতে নব যোগদানকৃত উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. শাহানুর ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমন ধানের অনেক উচ্চ ফলনশীল জাত রয়েছে, যে গুলোর ফলন অনেক বেশী এবং রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। অন্যান্য উচ্চ ফলনশীল জাতের তুলনায় কালোজিরা ধানের ফলন কম হয়। ফলন কম হলেও বাজারে এর দাম বেশি থাকে, খরচ বেশি হওয়ার কারণে কৃষকরা এ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

back to top