alt

দামুড়হুদায় পুঁইশাকের মেঁচুড়ি চাষে চমক ফেলেছে আব্দুল হাকিম

প্রতিনিধি, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) : মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

দেশের বহুবিধ সবজির মধ্যে অন্যতম এবং অধিকতর পরিচিত পুঁইশাক। আনাচে কানাচে, মাচায়, ঘরের চালে, উঠানে, বিভিন্ন গাছের ডালে পুঁইশাক এর লকলকে ডগা বিচরন করে। গ্রামীণ জনপদে বাড়ীর সবজির চাহিদা মেটাতে পুঁইশাক চাষ করা হলেও সময়ের ব্যবধানে আর বাস্তবতার নিরিখে পুঁইশাকের অর্থনৈতিক মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সাম্প্রতিক বছর গুলোতে বানিজ্যিক ভাবে এই চাষ হচ্ছে এবং চাষিরা অধিকতর লাভবান হচ্ছে।পুঁইশাক বানিজ্যিক ভাবে চাষ শুরু হয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে। অপেক্ষাকৃত কম খরচে এবং অধিক লাভবান হওয়ায় পুঁইশাক চাষে চাষীরা আগ্রহী হচ্ছে। আমাদের দেশে এই শাঁক অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং মূল্য ও অপেক্ষাকৃত কম। তবে সময়ের ব্যবধানে বর্তমান সময়ে পুঁইশাকের মেঁচুড়ি চাষ করে ইতো মধ্যে সাড়া ফেলেছে আব্দুল হাকিম। সে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নতুন বাস্তুপুর গ্রামের মৃত শুকুর আলীর ছেলে।

পূঁইশাকের মেঁচুড়ি চাষী আঃ হাকিম বলেন, গ্রামের বাড়ীর অদুরে খড়ের মাঠে ৪ কাঠা জমিতে পলীক্ষা মুলক ভাবে পূঁইশাকের মেঁচুড়ি আবাদের পরিকল্পনা করি। আশ্বিন মাসে ভাল জাতের পূঁইশাকের বীজ রোপন করে চারা তৈরী করি । পূঁইশাকের সেচ আর সার দিয়ে ৫টি কাটাল বা বাণে তুলে দেয় পূঁইশাকের লতা । শীত পড়তেই শুরু হয় মেঁচুড়ি ধরা। অল্প খরচে অধিক লাভ। রোগ বালাই নেই। সারা বছর উৎপাদিত সবজি হিসাবে পরিচিত আর কার্তিক মাসে মেচুড়ির ফলন শুরু হয়। প্রথম প্রথম প্রতি কেজি চুয়াডাঙ্গা পাইকারি বাজারে ১শ’১৫টাকা কেজি ধরে বিক্রি করেছি। বর্তমান উপজেলা সদর ও দর্শনা মোকামে পাইকারি বিভিন্ন সময়৬০ টাকা থেকে ৭৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি । বাজারে এই মেঁচুড়ি ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । ফলন পাওয়ার আগে বান সহ খরচ হয়েছে ৩/৪ হাজার টাকা । আতো মধ্যে ১০ হাজার টাকার মেঁচুড়ি বিক্রি করেছি । আবহওয়া অনুকুলে থাকলে রোগ বালাই না হলে এবং বাজার দর ভাল হলে চ্এৈ মাস পর্যন্ত প্রায় ৮০হাজার টাকার মেঁচুড়ি বিক্রির আশা করছি।হাটবাজার গুলোতে পূঁইশাক পাওয়া যায় কিন্তু মেঁচুড়ির আভাব থাকে । এবার অনেকে চাষ করবে পরিকল্পনা করেছে । সপ্তাহে একদিন বাজার জাত করা হয় । অত্যান্ত লাভবান এই চাষ সামনে আরও বড় পরিসারে করার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামার চিন্তা ভাবনা রয়েছে ।চাকুরীর অবসর সময়ে এই চাষ করে লাভবান হচ্ছি।

দর্শনা কাঁচা মোকামের আড়ৎতদার লাভলু বলেন।মৌসুমের শুরু ফাগুন চৈএ মাসে পূঁইশাক চাষীরা ভাল দরে বিক্রি হয় । বর্ষা শুরু হলে বাজার পড়ে যায । বর্তমানে পূঁইশাকের মেঁচুড়ির বাজার দর ভাল প্রকার ভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে পাইকারি বিএি হচ্ছে । এই জাতীয় সবজির বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ।

মহিমা, সবেদা, রিয়াসহ একাধিক গৃহবধূ বলেন, জনপ্রিয় এই শাক অনান্য শাক অপেক্ষা সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর, পুঁইশাকের কচি ডগা রান্নার পর বিশেষ স্বাদ এর সৃষ্টি করে। এক সময়ের বাড়ীর ছাদে, মাচানে পতিত জায়গায়, রান্নার ঘরের ছেচেতে যে পুঁইশাক হতো তা আজ বানিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে যা সবজি উৎপাদনের এক মহাক্ষেত্র। পুঁইশাকের পাশাপাশি পুঁইশাকের দানা অতি লোভনীয় আর স্বাদের সবজি, বাজারে যখন পূঁইশাকের মেঁচুড়ি ওঠে তখন বাজারের সর্বাপেক্ষা দামী সবজির তালিকায় থাকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্র ডাঃ সোহরাব হোসেন বলেন, পুঁইশাক পুষ্টিকারক ও তৃপ্তিকারক। পাতাসহ সমগ্র গাছ ভেষজ গুণাবলি সম্পন্ন। পাতা মূত্রকারক। গনোরিয়া রোগে এটি উপকারী।পুঁইশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে দেহের বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে নির্গমনে সাহায্য করে। এই শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’, যা ত্বকের রোগজীবাণু দূর করে। এ ছাড়া শরীরের বৃদ্ধিকেও ত্বরান্বিত করে। পাশাপাশি চোখ ও চুল ভালো রাখে এই শাক। অল্প দরে অধিক ভিটামিন যুক্ত এই সবজি মানব দেহের জন্য উপকারি ।

উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার অভিজিত কুমার বিশ্বাস বলেন,পুঁইশাক এক ধরনের লতাজাতীয় সবজি। পুঁইগাছের পাতা ও লতা শাক হিসেবে খাওয়া হয় বলে সচরাচর একে পুঁইশাক হিসাবে উল্লেখ করা হয়। পুঁইশাক সাধারণত বসতবাড়ির আঙিনার বেড়ায় বা মাচায় জন্মাতেপারে।এ ছাড়া ব্যাবসায়িক ভিত্তিতেও এর চাষ করা হয়। দেশে, এই শাক প্রচুর পরিমাণে চাষ করা হয়।লাল ও সবুজ পুঁইশাক নামের এই শাকের দুটি জাত আছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা কর্তৃক উদ্ভাবিত বারি-১, বারি-২ নামের দুটি জাত আছে।পুঁইশাক নরম বহু শাখাযুক্ত উদ্ভিদ। এর মাংসল লতা দৈর্ঘ্যে ১০ মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। পাতা মোটা, মসৃণ, রসালো এবং মৃদু সুগন্ধ যুক্ত। লাভ আকৃতির পাতার দৈর্ঘ্য মাঝারি।লাল পুঁইয়ের পূর্ণবয়স্ক কান্ড লালচে বেগুনি রঙের হয়, যা লাল পুঁই ডাঁটা হিসেবে পরিচিত। পুঁইয়ের ফুল সাদা ও লাল। ফল মটরের দানার মতো। পাকা ফল বেগুনি রঙের।মার্চ-এপ্রিল মাসে পুঁইশাকের বীজ বপন করতে হয়। পুইশাকের ডোগা রোপন করলে অতি সহজেই গাছের জন্ম সৃষ্টি হয়। পুইশাক ক্ষেতে জো না থাকলে পানি সেচ দিতে হয় আর উক্ত পানি সেচ যেন কোন ভাবেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না করে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ইতিপূর্বে শুধুমাত্র স্থানীয় পর্যায়ের সার অর্থাৎ গোবর খইল, বর্তমান সময়ে বানিজ্যিক ভাবে পূইশাক চাষে ইউরিয়া, টিএসপি সহ বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে। সব মিলে পুইশাক চাষে অনেকে আর্থিক ভাবে স্বচ্ছলতার মুখ দেখছেন।বীজ ও শাখা কলম দিয়ে পুঁইয়ের চাষ করা যায়।

পুঁইয়ের জমিতে খরার সময় নিয়মিত পানি সেচ দিতে হয়। তবে জমিতে যাতে পানি না জমে সে দিকে খেয়াল রাখতে হয়। পুঁইশাকের ডগা মাঝে মাঝে কেটে দিতে হয়। এতে শাক খাওয়াও হয়, আবার গাছে নতুন ডগাও বের হয়।পুঁইশাকে বিটল বা ফ্লি বিটল ছাড়া আর কোনো পোকা তেমন ক্ষতি করে না। এই পোকা পুঁইশাকের পাতায় ছোট ছোট ছিদ্র করে ছত্রাকনাশক স্প্রে করে এসব রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তাছাড়া আশ্বিন মাসে ফুল ফল আসতে শুরু করে । তা স্থানীয় ভাবে মেঁচুড়ি নামে অধিক পরিচিত।

ছবি

সাপাহার সীমান্তে মালিকবিহীন অবস্থায় ৮০ পিস ট্যাবলেট উদ্ধার

ছবি

চাটখিলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৩

ছবি

দুই পা হারালেও হার মানেননি রহিম

ছবি

বোয়ালখালীতে বিলুপ্ত প্রায় কালোজিরা ধানের আবাদ

ছবি

রাজশাহীর আকাশপথ নিরাপদ রাখতে শাহমখদুম বিমানবন্দরে নিরাপত্তা মহড়া

ছবি

দুর্গাপুর যত্রতত্র সিএনজি-অটোরিক্সা স্ট্যান্ড ভোগান্তিতে পথচারীরা

ছবি

ডিমলায় বিজিবির পৃথক অভিযানে ভারতীয় গরু ও মাদক আটক

ছবি

লাল গালিচার রাজ্যে পর্যটকের ঢল

ছবি

চুয়াডাঙ্গায় যুবককে গলা কেটে হত্যা

ছবি

চান্দিনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান গুঁড়িয়ে দেয়া ২০ হাজার ফুট পাইপ

ছবি

ডিমলায় বিদ্যালয়ের জমি জবর দখলের অভিযোগ

ছবি

বরুড়ায় ৫ বছরেও শেষ হয়নি ব্রিজ নির্মাণ, ২০ গ্রামবাসীর দুর্ভোগ

ছবি

সিংগাইরে শারফিন হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

ছবি

জামালপুরে জমিতে প্রবেশে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

ছবি

সিলেটে ইয়াবা বিক্রির টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে হত্যা

ছবি

উপজেলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দের সাথে ইউএনও’র মতবিনিময় সভা

ছবি

নওগাঁর লিটন ব্রিজের নিচ মিললো অজ্ঞাত মরদেহ

ছবি

বুধবার বরগুনা হানাদারমুক্ত দিবস

ছবি

শীতের আগমনে শাহজাদপুরে ব্যস্ততা বাড়ছে লেপ-তোষক কারিগরদের

ছবি

ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন অফিস ভাঙচুর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

ছবি

সুন্দরবনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ২০ বনদস্যু বাহিনী

ছবি

সুন্দরবনের গল্পের সিনেমা ‘নাভা’য় শ্বেতা

ছবি

ডোমারে অভ্যন্তরীণ আমন ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন

ছবি

রায়গঞ্জে নিখোঁজের চার দিন পর মিলল শিশুর লাশ

ছবি

শিবপুরে মোটরসাইকেল ও সিএনজির সংঘর্ষে প্রাণ গেলো দুই বন্ধুর

ছবি

দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে অর্থ প্রদান

ছবি

বোয়ালখালীতে মাইক্রোবাস চালকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

জয়পুরহাটে ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারে ৩ মৃত্যু

ছবি

সৈয়দপুরে ভবন নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

ছবি

দশমিনায় আমন ধানের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসি

ছবি

নিখোঁজের দুই মাস পরে কিশোরের কঙ্কাল মিলল জঙ্গলে

ছবি

পদ্মার ১ কাতল ৪৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি

ছবি

শেরপুরে বাঙালী নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে তিনটি গ্রাম

ছবি

ঝুঁকিপূর্ণ চার বেইলি ব্রিজে জনদুর্ভোগ, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

ছবি

ইজিবাইক-প্রাইভেটকার মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ৮

ছবি

কক্সবাজার থেকে শুরু হলো সেন্টমার্টিন যাত্রা, ছেড়ে গেছে ৩টি জাহাজ

tab

দামুড়হুদায় পুঁইশাকের মেঁচুড়ি চাষে চমক ফেলেছে আব্দুল হাকিম

প্রতিনিধি, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা)

মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

দেশের বহুবিধ সবজির মধ্যে অন্যতম এবং অধিকতর পরিচিত পুঁইশাক। আনাচে কানাচে, মাচায়, ঘরের চালে, উঠানে, বিভিন্ন গাছের ডালে পুঁইশাক এর লকলকে ডগা বিচরন করে। গ্রামীণ জনপদে বাড়ীর সবজির চাহিদা মেটাতে পুঁইশাক চাষ করা হলেও সময়ের ব্যবধানে আর বাস্তবতার নিরিখে পুঁইশাকের অর্থনৈতিক মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সাম্প্রতিক বছর গুলোতে বানিজ্যিক ভাবে এই চাষ হচ্ছে এবং চাষিরা অধিকতর লাভবান হচ্ছে।পুঁইশাক বানিজ্যিক ভাবে চাষ শুরু হয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে। অপেক্ষাকৃত কম খরচে এবং অধিক লাভবান হওয়ায় পুঁইশাক চাষে চাষীরা আগ্রহী হচ্ছে। আমাদের দেশে এই শাঁক অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং মূল্য ও অপেক্ষাকৃত কম। তবে সময়ের ব্যবধানে বর্তমান সময়ে পুঁইশাকের মেঁচুড়ি চাষ করে ইতো মধ্যে সাড়া ফেলেছে আব্দুল হাকিম। সে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নতুন বাস্তুপুর গ্রামের মৃত শুকুর আলীর ছেলে।

পূঁইশাকের মেঁচুড়ি চাষী আঃ হাকিম বলেন, গ্রামের বাড়ীর অদুরে খড়ের মাঠে ৪ কাঠা জমিতে পলীক্ষা মুলক ভাবে পূঁইশাকের মেঁচুড়ি আবাদের পরিকল্পনা করি। আশ্বিন মাসে ভাল জাতের পূঁইশাকের বীজ রোপন করে চারা তৈরী করি । পূঁইশাকের সেচ আর সার দিয়ে ৫টি কাটাল বা বাণে তুলে দেয় পূঁইশাকের লতা । শীত পড়তেই শুরু হয় মেঁচুড়ি ধরা। অল্প খরচে অধিক লাভ। রোগ বালাই নেই। সারা বছর উৎপাদিত সবজি হিসাবে পরিচিত আর কার্তিক মাসে মেচুড়ির ফলন শুরু হয়। প্রথম প্রথম প্রতি কেজি চুয়াডাঙ্গা পাইকারি বাজারে ১শ’১৫টাকা কেজি ধরে বিক্রি করেছি। বর্তমান উপজেলা সদর ও দর্শনা মোকামে পাইকারি বিভিন্ন সময়৬০ টাকা থেকে ৭৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি । বাজারে এই মেঁচুড়ি ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । ফলন পাওয়ার আগে বান সহ খরচ হয়েছে ৩/৪ হাজার টাকা । আতো মধ্যে ১০ হাজার টাকার মেঁচুড়ি বিক্রি করেছি । আবহওয়া অনুকুলে থাকলে রোগ বালাই না হলে এবং বাজার দর ভাল হলে চ্এৈ মাস পর্যন্ত প্রায় ৮০হাজার টাকার মেঁচুড়ি বিক্রির আশা করছি।হাটবাজার গুলোতে পূঁইশাক পাওয়া যায় কিন্তু মেঁচুড়ির আভাব থাকে । এবার অনেকে চাষ করবে পরিকল্পনা করেছে । সপ্তাহে একদিন বাজার জাত করা হয় । অত্যান্ত লাভবান এই চাষ সামনে আরও বড় পরিসারে করার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামার চিন্তা ভাবনা রয়েছে ।চাকুরীর অবসর সময়ে এই চাষ করে লাভবান হচ্ছি।

দর্শনা কাঁচা মোকামের আড়ৎতদার লাভলু বলেন।মৌসুমের শুরু ফাগুন চৈএ মাসে পূঁইশাক চাষীরা ভাল দরে বিক্রি হয় । বর্ষা শুরু হলে বাজার পড়ে যায । বর্তমানে পূঁইশাকের মেঁচুড়ির বাজার দর ভাল প্রকার ভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে পাইকারি বিএি হচ্ছে । এই জাতীয় সবজির বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ।

মহিমা, সবেদা, রিয়াসহ একাধিক গৃহবধূ বলেন, জনপ্রিয় এই শাক অনান্য শাক অপেক্ষা সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর, পুঁইশাকের কচি ডগা রান্নার পর বিশেষ স্বাদ এর সৃষ্টি করে। এক সময়ের বাড়ীর ছাদে, মাচানে পতিত জায়গায়, রান্নার ঘরের ছেচেতে যে পুঁইশাক হতো তা আজ বানিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে যা সবজি উৎপাদনের এক মহাক্ষেত্র। পুঁইশাকের পাশাপাশি পুঁইশাকের দানা অতি লোভনীয় আর স্বাদের সবজি, বাজারে যখন পূঁইশাকের মেঁচুড়ি ওঠে তখন বাজারের সর্বাপেক্ষা দামী সবজির তালিকায় থাকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্র ডাঃ সোহরাব হোসেন বলেন, পুঁইশাক পুষ্টিকারক ও তৃপ্তিকারক। পাতাসহ সমগ্র গাছ ভেষজ গুণাবলি সম্পন্ন। পাতা মূত্রকারক। গনোরিয়া রোগে এটি উপকারী।পুঁইশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে দেহের বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে নির্গমনে সাহায্য করে। এই শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’, যা ত্বকের রোগজীবাণু দূর করে। এ ছাড়া শরীরের বৃদ্ধিকেও ত্বরান্বিত করে। পাশাপাশি চোখ ও চুল ভালো রাখে এই শাক। অল্প দরে অধিক ভিটামিন যুক্ত এই সবজি মানব দেহের জন্য উপকারি ।

উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার অভিজিত কুমার বিশ্বাস বলেন,পুঁইশাক এক ধরনের লতাজাতীয় সবজি। পুঁইগাছের পাতা ও লতা শাক হিসেবে খাওয়া হয় বলে সচরাচর একে পুঁইশাক হিসাবে উল্লেখ করা হয়। পুঁইশাক সাধারণত বসতবাড়ির আঙিনার বেড়ায় বা মাচায় জন্মাতেপারে।এ ছাড়া ব্যাবসায়িক ভিত্তিতেও এর চাষ করা হয়। দেশে, এই শাক প্রচুর পরিমাণে চাষ করা হয়।লাল ও সবুজ পুঁইশাক নামের এই শাকের দুটি জাত আছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা কর্তৃক উদ্ভাবিত বারি-১, বারি-২ নামের দুটি জাত আছে।পুঁইশাক নরম বহু শাখাযুক্ত উদ্ভিদ। এর মাংসল লতা দৈর্ঘ্যে ১০ মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। পাতা মোটা, মসৃণ, রসালো এবং মৃদু সুগন্ধ যুক্ত। লাভ আকৃতির পাতার দৈর্ঘ্য মাঝারি।লাল পুঁইয়ের পূর্ণবয়স্ক কান্ড লালচে বেগুনি রঙের হয়, যা লাল পুঁই ডাঁটা হিসেবে পরিচিত। পুঁইয়ের ফুল সাদা ও লাল। ফল মটরের দানার মতো। পাকা ফল বেগুনি রঙের।মার্চ-এপ্রিল মাসে পুঁইশাকের বীজ বপন করতে হয়। পুইশাকের ডোগা রোপন করলে অতি সহজেই গাছের জন্ম সৃষ্টি হয়। পুইশাক ক্ষেতে জো না থাকলে পানি সেচ দিতে হয় আর উক্ত পানি সেচ যেন কোন ভাবেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না করে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ইতিপূর্বে শুধুমাত্র স্থানীয় পর্যায়ের সার অর্থাৎ গোবর খইল, বর্তমান সময়ে বানিজ্যিক ভাবে পূইশাক চাষে ইউরিয়া, টিএসপি সহ বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে। সব মিলে পুইশাক চাষে অনেকে আর্থিক ভাবে স্বচ্ছলতার মুখ দেখছেন।বীজ ও শাখা কলম দিয়ে পুঁইয়ের চাষ করা যায়।

পুঁইয়ের জমিতে খরার সময় নিয়মিত পানি সেচ দিতে হয়। তবে জমিতে যাতে পানি না জমে সে দিকে খেয়াল রাখতে হয়। পুঁইশাকের ডগা মাঝে মাঝে কেটে দিতে হয়। এতে শাক খাওয়াও হয়, আবার গাছে নতুন ডগাও বের হয়।পুঁইশাকে বিটল বা ফ্লি বিটল ছাড়া আর কোনো পোকা তেমন ক্ষতি করে না। এই পোকা পুঁইশাকের পাতায় ছোট ছোট ছিদ্র করে ছত্রাকনাশক স্প্রে করে এসব রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তাছাড়া আশ্বিন মাসে ফুল ফল আসতে শুরু করে । তা স্থানীয় ভাবে মেঁচুড়ি নামে অধিক পরিচিত।

back to top