স্বাস্থ্য সবার, সেবা সবার দোড় গোড়ায় কমিউনিটি ক্লিনিক গ্রামের সেবা এ স্লোগানকে সামনে রেখে গ্রামীন জনপদের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চত করনে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম চলমান থাকলেও বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ৫৬ টি কমিউনিটি ক্লিনিকের অধিকাংশ ক্লিনিক খোলা হচ্ছে ইচ্ছা মাফিক। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অনেক কেন্দ্র প্রধান (সি এইচ সি পি) সপ্তাহের ২/৪ দিন খুলছেন কমিউনিটি ক্লিনিক। আবার কর্ম দিবসের সকাল ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত কেন্দ্র খোলার নিয়ম থাকলেও তা মানছে না অনেকেই, আসছেন তাদের পছন্দ অনুযায়ী সময় নিয়ে। কোন কোন কেন্দ্রে দুপুর ১২ টায়ও মূল ফটকে ঝুলছে তালা। যাচ্ছেন নির্ধারিত সময়ের ২/১ ঘন্টা পূর্বেই। এরকম চিত্র দেখা গেছে উপজেলার প্রত্যান্ত গ্রামের একাধিক কমিউনিটি ক্লিনিকে। কর্মকর্তারা বলছেন মাঠ পর্যায়ে তদারকির কর্মকর্তাদের জনবল সংকট থাকায় পরিদর্শন হচ্ছে না নিয়মিত। স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত (সি এইচ সি পি) দের কর্মস্থল নিজ এলাকায় থাকায় ইচ্ছে মাফিক কেন্দ্র খুলছেন তারা। স্থানীয় গ্রামবাসিরা স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্ধতম কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।
শনিবার সরজমিনে মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের জানের খালপাড় পশ্চিম বিশারীঘাটা জহুরা খাতুন স্মৃতি কমিউনিটি ক্লিনিকে বেলা ১১:৪০ মিনিট মূল ফটকে ঝুলছে তালা। কেন্দ্র প্রধান (সি এইচ সি পি) মারুফ বিল্লাহ মুন্না নেই কেন্দ্রে। স্থানীয়রা বলছেন কেন্দ্রটি খোলা হয় ৩ দিন বাকী সময় অন্য কেন্দ্রর দায়িত্ব পালন করেন (সি এইচ সি পি)। নিশানবাড়িয়া বাদশারহাট কমিউনিটি ক্লিনিকের একই চিত্র মূল ফটকে ঝুলছে তালা। (সি এইচ সি পি) আতিকুর রহমান জানিয়েছেন সকালে তিনি কিছু সময় ছিলেন, তার নিকটতম আত্মীয় এর মৃত্যুতে সেখানে রয়েছেন। খাউলিয়ার দক্ষিন মানিকজোড় কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ অবস্থায়। আমতলী কমিউনিটি ক্লিনিকের মূল ফটকে তালা পাশেই লেখা রয়েছে (সি এইচ সি পি) আতিকুর রহমান প্রশিক্ষনে আছেন। গাবতলা কমিউনিটি ক্লিনিক সেখানেও তালা বদ্ধ অবস্থায়। এরকম গত বৃহস্পতিবার জিউধরা ইউনিয়নের বড়ইতলা কমিউনিটি ক্লিনিকে মূল ফটকে ঝুলছে তালা। চন্দনতলা ঘরামী বাড়ী কমিউনিটি ক্লিনিকে তালা বদ্ধ। স্থানীয়রা বলছেন সপ্তাহে ২/৩দিন ডাক্তার আসেন, আজকেও ঘন্টা ২ খোলা ছিল। উত্তর সুতালড়ী কমিউনিটি ক্লিনিক দুপুর ১১:৪৫ মিনিট মূল ফটকে তালা বদ্ধ। ১২টার দিকে দায়িত্বরত কেন্দ্র প্রধান (সি এইচ সি পি) সাইফুল ইসলাম কেন্দ্র খুলে সংবাদ কর্মীদেরকে জানান তিনি পাশেই এজন রুগীর পেশার পরিমাপ করতে গিয়েছিলেন। এরকম একাধিক কমিউনিটি ক্লিনিকের চিত্র একই। স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে ক্লিনিকের দায়িত্বরত ডাক্তার স্থানীয় বিধায় নিজেদের ইচ্ছা মাফিক কেন্দ্র খুলে থাকেন। গ্রামের অনেক দূর থেকে সাধারণ মানুষ সেবা নিতে এসে র্দীর্ঘক্ষন অপেক্ষা করেও ফিরে যাচ্ছেন। ক্লিনিকগুলোতে স্থানীয়দের না দিয়ে অন্য স্থানের (সি এইচ সি পি) দায়িত্ব দেওয়ার দাবী জানান তারা।
এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (এমটি পিআই) দিপক কুমার জানান, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো মাঠ পর্যায় তদারকির জন্য ১০ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক এ উপজেলায় রয়েছে। তবে জনবল সংকট থাকায় তাদের টিকা কর্মীর কাজ করতে হচ্ছে, যে কারনে কিছুটা তদারকির সাময়িকি সমস্যা হচ্ছে।
এ সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: কামাল হোসেন মুফতি বলেন, এ উপজেলায় ৫৬ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ৫২ জন (সি এইচ সি পি) কাজ করছেন। ক্লিনিকগুলোতে ওষুধ সংকট নেই। তিনি সদ্য যোগদান করায় প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে ইতি মধ্যে ওষুধের সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ সেবানিতে এসে কোনভাবেই ফিরে যাবে না। ২/১টি ক্লিনিকের (সি এইচ সি পি) কেন্দ্রে অনিয়মিতর বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করে উদ্ধতন কর্র্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।