কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে এক কৃষকের দুটি পুকুরের মাছ প্রকাশ্যে লুটের অভিযোগ উঠেছে। দিনের বেলায় সন্ত্রাসী কায়দায় শ্যালো মেশিনে সেচ দিয়ে পুকুরের পানি শুকিয়ে পাঁচ লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট করা হয়েছে। পুকুরের মালিক প্রতিবাদ করলে খুন জখমের হুমকী দিয়েছে লুটকারীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিষেধ করলেও মাছ লুট বন্ধ করতে পারেনি। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক নূর মোহাম্মদ ওরফে নূর মিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ।
পুলিশ ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিরি জাওয়ার মৌজার পশ্চিম শান্তিপুর গ্রামের কৃষক নূর মোহাম্মদ ওরফে নূর মিয়া পৈতৃকসূত্রে পাওয়া দুই একর ৬০ শতক জমিতে দুটি পুকুর খনন করে মাছের চাষ করে আসছেন। দুটি পুকুরে এবছর ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার মাছের পোনা ছেড়েছেন। পুকুরে মাছও ভালোভাবে বাড়তে ছিল। পূর্ববিরোধের জেরে পুর্ব জাওয়ার গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে আজিজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ গত ২৮ নভেম্বর থেকে থেকে পুকুর থেকে প্রকাশ্যে মাছ লুট করা শুরু করে। সন্ত্রাসীরা স্যালো মেশিন দিয়ে পানি সেচে একটি পুকুর শুকিয়ে সে পুকুরের সকল মাছ লুট করেছে। আবার আরেকটি পুকুরে ডোগাজাল ও ছাবাজাল দিয়ে মাছ তুলে নিয়ে সেসব মাছ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেছে। খবর পেয়ে রবিবার রাতে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে সেচকার্যে ব্যবহৃত স্যালো মেশিন বন্ধ করেন। এতে সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ চলে আসার পর স্যালো মেশিনের মালিক আকিব উদ্দিন খানকে মারধর করে। বুধবার বিকেলে সন্ত্রাসীরা আবারো পানিভর্তি পুুকুরের স্যালো মেশিন দিয়ে সেচে পানি শুকানোর কাজ শুরু করে। কৃষক নূর মিয়া ৯৯৯ ফোন করলে আবারো সেখানে পুলিশ যায়। এসময় লুটকারীরা চলে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে আবারো স্যালো মেশিন বসিয়ে পুকুরের পানি সেচে মাছ লুট করেছে।
পুকুরের মালিক ক্ষতিগ্রস্থ নূর মোহাম্মদ ওরফে নূর মিয়া জানান, দিনের বেলায় প্রকাশ্যে স্যালো মেশিন বসিয়ে পানি সেচে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মাছ লুট করা হয়েছে। মাছ ধরতে নিষেধ করলে তাকে খুন জখমের হুমকী দেয়া হচ্ছে। তাড়াইল থানা পুলিশ ও ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়েও মাছ লুট ঠেকাতে পারেনি বলে তিনি জানান।
এদিকে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় কৃষকের দুটি পুকুরের মাছ লুটের ঘটনায় এলাকার অনেকেই হতবাক হয়েছেন। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকার মানুষ অসহায়বোধ করছেন। এলাকার আব্দুল লতিফ জানান, নূর মিয়ার পুকুরের পাড়ে ঘর বেধে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। সন্ত্রাসীরা তার ঘরটিও পুড়িয়ে দিয়েছে বলে তিনি জানান।
তাড়াইল থানার ওসি মোহাম্মদ সাব্বির রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান।