১৯৭১ সালের এই দিনে পাকবাহিনীর গণহত্যা থেকে গজারিয়াবাসী মুক্ত হয়। ৭১ সালের মে মাসে পাকবাহিনী নৌপথ ও স্থলপথে প্রবেশ করে এলাকায় হামলা চালায়। নৌপথে যাতায়াত অসুবিধা হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যুদ্ধের প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছিল। পাকিস্থানী বাহিনী তৎকালীন মেঘনা ও বাউসিয়া ফেরিঘাটে ক্যাম্প স্থাপন করে এবং মহাসড়কের প্রতিটি সেতুর পাশে ব্যাংকার তৈরি করে অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয়। এখান থেকে তারা রাজাকারদের সহযোগিতায় এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, বসতঘরে অগ্নিসংযোগ ঘটায়।
গজারিয়া হানাদার মুক্ত দিবস বিষয়ে একাধিক মুক্তিযোদ্ধা জানান, ১৯৭১ সালের ৯ মে হানাদার বাহিনী গজারিয়া থানার গজারিয়া ইউনিয়নের একাধিক গ্রামে আক্রমন শুরু করে। ওই দিন গজারিয়ার ফুলদী নদীর উপকণ্ঠের গ্রামগুলোতে গণহত্যা অভিযান পরিচালনা করে পাক বাহিনী। এরপর একই দিনের মুন্সীগঞ্জে ফন্টটিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টের মেজর আব্দুস সালামের নেতৃত্বে এলআইসি এলাকার দখল নেয়ার চেষ্টা করে। শুরু হয়ে যায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিরোধ যুদ্ধ। দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় মুক্তিযুদ্ধে গজারিয়ার অনন্য অবদানের কারণ হচ্ছে ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়ক।
কারণ মহাসড়ক গজারিয়ার ওপর দিয়ে গেছে ১৩ কিলোমিটার। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এমএসআর রোড বা পাকিস্তানি সামরিক ভাষায় এটাকে বলা হতো মেইন সাপ্লাই রোড। চট্টগ্রাম পোর্ট থেকে হানাদার বাহিনীর সমস্ত রসদ আসত এই মহাসড়ক পথে, ফলে এই এলাকার যারা মুক্তিসংগ্রামী বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তাদের মূল কাজ ছিল এই সড়কের কালভার্ট ব্রিজকে উড়িয়ে দেওয়া। যখনই এই জনপদের মুক্তিবাহিনী ব্রিজ কালভার্ট ভেঙে দিয়েছে তখনই পাকিস্তনি হানাদার বাহিনীর খড়গ এসে নেমেছে গজারিয়াবাসীর ওপর। গজারিয়ায় ৯ মাসে মানুষের স্বাভাবিক জীবন ছিল না এর অন্যতম কারণ বাংলাদেশর প্রত্যেকটি থানায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী একটি করে ক্যাম্প ছিল। তবে গজারিয়ায় ছিল ৩ টি ক্যাম্প এবং ৪টি সেমি ক্যাম্প। যেহেতু ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক মেঘনা এবং গোমতী নদীর ওপর দিয়ে বয়ে গেছে তাই হানাদাররা থানা সদরে ১টি মেঘনা আর গোমতী নদী পারে ২টি আর আর ব্রিজ কালভার্টগুলোর সামনে বাকি ৪টি সেমি ক্যাম্প স্থাপন করেছিল। ফলে গজারিয়া মানুষ যেমন নির্যাতিত হয়েছে তেমন বীর মুক্তিযোদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসে অনন্য ভুমিকা রাখার সুযোগ পেয়েছে।
বাংলাদেশ লিবানেশন ফোর্স (বিএলএফ) কমান্ডার একেএম নজরুল ইসলাম কিরণ, এফএফ কমান্ডার রফিকুল ইসলাম (বীর প্রতিক), বিএফ কমান্ডার আব্দুল খালেক আলো ও থানা কমান্ডার তানেস উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা, সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা এলাকায় চোরাগোপ্তা অপারেশন চালায় পাকসেনাদের ওপর। ৭ ডিসেম্বর থেকে পাকসেনাদের প্রতিটি ব্যাংকারের ওপর আক্রমণ চালায়। মহাসড়কের ভাটেরচর সেতুটি মাইনের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় মুক্তিযোদ্ধারা। পাকবাহিনী আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ে। ৯ ডিসেম্বর প্রত্যুষে বাউসিয়া ফেরিঘাটে মুক্তিযোদ্ধারা আবার তুমুল আক্রমণ চালিয়ে পাকবাহিনীদের ছত্রভঙ্গ করলে পাকবাহিনী এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। কিছু মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পড়লে তাদের হত্যা করা হয়। মুক্ত হয় গজারিয়া।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: ইডটকো ও টেশিস এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
সারাদেশ: মাগুরায় ২ সার ডিলারকে জরিমানা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: মোবাইল ফটোগ্রাফিতে টেলিফটো অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করেছে ভিভো এক্স৩০০ প্রো
সারাদেশ: এনসিপি রাজশাহীতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারী