অক্টোবরে শেষ হবে সড়কের, সার্বিক অগ্রগতি ৮৬ শতাংশ
পদ্মা সেতুর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো শেষ হয়েছে। বাকি আছে ২২৮টি রোড স্ল্যাব। যা আগামী অক্টোবরের মধ্যে শেষ হবে। করোনা মহামারী ও বর্ষার মধ্যেও পুরোদমে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ। লক্ষ্য ২০২২ সালের জুন। এই সময়ের মধ্যে পুরো কাজ শেষ করে বাস ও ট্রেন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এ পর্যন্ত সেতুর সার্বিক অগ্রগতি ৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে মূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৯৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। এছাড়া নদী শাসনের কাজ শেষ হয়েছে ৮২ দশমিক ৫০ শতাংশ। লক্ষ্য পূরণে প্রাণপণ চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
প্রকল্প সূত্র জানায়, রোববার (২০ জুন) সেতুর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচলের জন্য ২ হাজার ৯৫৯টি স্ল্যাব বসানো হয়েছে। এসব রেলওয়ের স্ল্যাবের উপর রেল কর্তৃপক্ষ আরও একটি স্ল্যাব বসিয়ে রেলওয়ে পাত বসানো হবে। রেলওয়ে পাত বসানোর জন্য ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে তা হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া সেতুতে ২৯১৭টি রোড স্ল্যাব বসানো হবে। এর মধ্যে রোববার পর্যন্ত ২ হাজার ৬৮৯টি রোড স্ল্যাব বসানো হয়েছে। আর মাত্র ২২৮টি রোড স্ল্যাব বাকি আছে যা আগামী অক্টোবরের মধ্যে শেষ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
এ বিষয়ে পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ২০২২ সালের জুনের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করা লক্ষ্য ধরা হয়েছে। এর আগেই রেলওয়ের কাজ শেষ করার জন্য রেল কর্তৃপক্ষের কাছে তা হস্তান্তর করা হবে। ইতোমধ্যে আমাদের পক্ষ থেকে রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া রোড স্ল্যাব ও অন্যান্য কাজ চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প মোট ৮ ভাগে নির্মাণ হচ্ছে। এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ, ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ, সার্ভিস এরিয়া-২ নির্মাণ, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল সেতু, ১৪ কিলোমিটার নদী শাসন, ইঞ্জিনিয়ারিং সাপোর্ট এবং সেফটি, কন্সট্রাকশন সুপারভিশন, পুনর্বাসন- পরিবেশগত কার্যক্রম ও ম্যানেজমেন্ট সাপোর্ট। এ পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে মূল সেতু ৯৩ দশমিক ৫০ শতাংশ ও নদী শাসন ৮২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া সংযোগ সড়ক, সার্ভিস এরিয়া ও সুপারভিশনসহ অন্যান্য কার্যক্রম শতভাগ শেষ হয়েছে। গত বছর ১০ ডিসেম্বর মূল সেতুতে ৪১টি স্প্যান (ইস্পাতের কাঠামো) বসানো শেষ হয়। ৪২টি পিয়ারে ৪১ স্প্যান বসানো হয়েছে। প্রতিটি স্প্যানের ওজন ৩ হাজার ২০০ টন। দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দ্বিতল পদ্মা সেতুর উপরে চলবে গাড়ি আর স্প্যানের ভিতর দিয়ে চলবে ট্রেন। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ২০০৭ সালে রেলপথ ছাড়া একনেকে প্রকল্প অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা। ২০১১ সালে রেলপথ যুক্ত করে প্রথম দফায় প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি করা হয় দ্বিগুণের বেশি। তখন ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। দ্বিতীয় দফায় ২০১৬ সালে ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। তৃতীয় দফায় ২০১৮ সালে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঋণের টাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প। ১ শতাংশ হারে সুদসহ ৩৫ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
অক্টোবরে শেষ হবে সড়কের, সার্বিক অগ্রগতি ৮৬ শতাংশ
রোববার, ২০ জুন ২০২১
পদ্মা সেতুর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো শেষ হয়েছে। বাকি আছে ২২৮টি রোড স্ল্যাব। যা আগামী অক্টোবরের মধ্যে শেষ হবে। করোনা মহামারী ও বর্ষার মধ্যেও পুরোদমে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ। লক্ষ্য ২০২২ সালের জুন। এই সময়ের মধ্যে পুরো কাজ শেষ করে বাস ও ট্রেন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এ পর্যন্ত সেতুর সার্বিক অগ্রগতি ৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে মূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৯৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। এছাড়া নদী শাসনের কাজ শেষ হয়েছে ৮২ দশমিক ৫০ শতাংশ। লক্ষ্য পূরণে প্রাণপণ চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
প্রকল্প সূত্র জানায়, রোববার (২০ জুন) সেতুর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচলের জন্য ২ হাজার ৯৫৯টি স্ল্যাব বসানো হয়েছে। এসব রেলওয়ের স্ল্যাবের উপর রেল কর্তৃপক্ষ আরও একটি স্ল্যাব বসিয়ে রেলওয়ে পাত বসানো হবে। রেলওয়ে পাত বসানোর জন্য ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে তা হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া সেতুতে ২৯১৭টি রোড স্ল্যাব বসানো হবে। এর মধ্যে রোববার পর্যন্ত ২ হাজার ৬৮৯টি রোড স্ল্যাব বসানো হয়েছে। আর মাত্র ২২৮টি রোড স্ল্যাব বাকি আছে যা আগামী অক্টোবরের মধ্যে শেষ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
এ বিষয়ে পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ২০২২ সালের জুনের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করা লক্ষ্য ধরা হয়েছে। এর আগেই রেলওয়ের কাজ শেষ করার জন্য রেল কর্তৃপক্ষের কাছে তা হস্তান্তর করা হবে। ইতোমধ্যে আমাদের পক্ষ থেকে রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া রোড স্ল্যাব ও অন্যান্য কাজ চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প মোট ৮ ভাগে নির্মাণ হচ্ছে। এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ, ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ, সার্ভিস এরিয়া-২ নির্মাণ, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল সেতু, ১৪ কিলোমিটার নদী শাসন, ইঞ্জিনিয়ারিং সাপোর্ট এবং সেফটি, কন্সট্রাকশন সুপারভিশন, পুনর্বাসন- পরিবেশগত কার্যক্রম ও ম্যানেজমেন্ট সাপোর্ট। এ পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে মূল সেতু ৯৩ দশমিক ৫০ শতাংশ ও নদী শাসন ৮২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া সংযোগ সড়ক, সার্ভিস এরিয়া ও সুপারভিশনসহ অন্যান্য কার্যক্রম শতভাগ শেষ হয়েছে। গত বছর ১০ ডিসেম্বর মূল সেতুতে ৪১টি স্প্যান (ইস্পাতের কাঠামো) বসানো শেষ হয়। ৪২টি পিয়ারে ৪১ স্প্যান বসানো হয়েছে। প্রতিটি স্প্যানের ওজন ৩ হাজার ২০০ টন। দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দ্বিতল পদ্মা সেতুর উপরে চলবে গাড়ি আর স্প্যানের ভিতর দিয়ে চলবে ট্রেন। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ২০০৭ সালে রেলপথ ছাড়া একনেকে প্রকল্প অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা। ২০১১ সালে রেলপথ যুক্ত করে প্রথম দফায় প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি করা হয় দ্বিগুণের বেশি। তখন ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। দ্বিতীয় দফায় ২০১৬ সালে ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। তৃতীয় দফায় ২০১৮ সালে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঋণের টাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প। ১ শতাংশ হারে সুদসহ ৩৫ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।