রামপুরা ব্রিজের পাশে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
সড়কের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব হলে সড়কেও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তাই সড়কে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আজ দুপুরে রামপুরা ব্রিজ এলাকায় লাল কার্ড প্রদর্শন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রামপুরা ব্রিজের পশ্চিম পাশে অবস্থান নিয়ে এ ঘোষণা দেন। কর্মসূচিতে খিলগাঁও মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, পশ্চিম খিলগাঁও উচ্চবিদ্যালয়, ফয়েজুর রহমান আইডিয়াল ইনস্টিটিউটসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও কর্মসূচিতে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পোশাক পড়ে আসেন। নিরাপদ সড়কসহ ১১ দফা দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাদের এই অবস্থানের কারণে ছুটির দিনেও সড়কে কিছুটা যানজট দেখা দেয়। কর্মসূচি ঘোষণা করে দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে সরে যান।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাহাগী সামিয়া বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাব। তিনি বলেন, সড়কের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে, আমরা সড়কে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লাল কার্ড প্রদর্শনের কর্মসূচি ঘোষণা করছি। এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেই চিন্তা মাথায় নিয়ে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রশাসনকে ঘুষ দিয়ে চালকের লাইসেন্স ও ফিটনেস ছাড়া গাড়ি চলছে অভিযোগ করে সামিয়া বলেন, এসব গাড়ি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। এসব বন্ধ করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে জুরাইন থেকে রামপুরায় আসা অভিভাবক মিজানুর রহমান বলেন, তার তিন মেয়ে। দুইজন অনার্স ও একজন স্কুলে পড়ে। সাম্প্রতিক সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় তিনি উদ্বিগ্ন। তাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে তিনি একাত্মতা প্রকাশ করছেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে চলাফেরা করতে তাদের তেমন সমস্যা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
এদিকে আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, তার গায়ে পুলিশ হাত তুলেছে। তার গলায় চাপ দিয়ে পুলিশ বলেছে, তোকে রিমান্ডে নেয়া হবে। রামপুরা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ইমন হোসেন দুপুরের দিকে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেন। ইমন হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, রাইদা পরিবহনের একটি বাসের কাগজপত্র যাচাই করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশ আমার গায়ে হাত তুলেছে। গলায় চাপ দিয়ে পুলিশ বলেছে, রাস্তার পাশে চল, তোকে রিমান্ডে নেয়া হবে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে শিক্ষার্থীদের শান্ত করেন। আন্দোলন ঘিরে রামপুরার ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। অভিযোগ প্রসঙ্গে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ করেছে, তা সঠিক নয়।
এদিকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নামে একটি ফেইসবুক পেজ থেকে প্রচারিত লাইভ ভিডিওর অংশবিশেষ ব্যবহার করে ফেইসবুকে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে থানায় অভিযোগ করেছেন এক শিক্ষার্থী। অভিযোগকারী আবদুল্লাহ মেহেদী দীপ্ত নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তিনি। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাতে রামপুরা থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগে তিনি বলেছেন, তার ফেইসবুক লাইভের ভিডিও কপি করে জামায়াত-শিবির সংশ্লিষ্ট ফেইসবুক পেজ থেকে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, তারা অভিযোগ পেয়েছেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আবদুল্লাহ মেহেদী দীপ্ত বলেন, এক মিনিট ৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিও বাশের কেল্লা ও অণুবীক্ষণসহ বিভিন্ন ফেইসবুক পেজ থেকে গুজব ছড়াতে ও অপপ্রচারে ব্যবহার করা হচ্ছে। সে জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে থানায় অভিযোগ করেছি। শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার আন্দোলনের মধ্যেই গত ২৯ নভেম্বর রামপুরা এলাকায় বাসচাপায় মৃত্যু হয় একরামুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মাঈনউদ্দিনের। এর জেরে সেই রাতে অন্তত আটটি বাসে অগ্নিসংযোগ ও তিনটি বাসে ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। ওই ঘটনা নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নামের ফেইসবুক পেজ থেকে লাইভে আসেন আবদুল্লাহ মেহেদী।
সেদিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, ওইদিন রাতে খিলক্ষেত থেকে আমি ব্যক্তিগত কাজ শেষে রামপুরার বাসায় ফিরছিলাম। রাত সাড়ে ১০টার দিকে রামপুরা ব্রিজে এসে নামি। সেখানে নেমে শুনতে পাই রামপুরা বাজারের পাশে ঝামেলা হচ্ছে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই, এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ায় বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। বাস ভাঙচুর করার একটি দৃশ্য আমি লাইভ করেছি। সেখানে বাসে কোন আগুনের দৃশ্য ছিল না। আরও পরে বাসে আগুন লাগানো হয়েছে। এখন ওই লাইভ ভিডিও নিয়ে এডিট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ভিডিওটির অংশবিশেষ কেটে কেটে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
এ বিষয়টি অবহিত করতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানী থানায় যান আবদুল্লাহ মেহেদী। থানার কর্মকর্তাদের পরামর্শে সেখান থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) যান। এরপর ডিবি অফিস থেকে ঘটনাস্থল রামপুরা থানা এলাকায় যেতে বলতে সেখানে অভিযোগ দেন তিনি। রামপুরা থানার ওসি রফিকুল বলেন, ওই ভিডিওটি বাঁশের কেল্লাসহ আরও কয়েকটি পেজে দেখা গেছে, এই বিষয়টি নিয়ে সাইবার টিম তদন্ত করছে। তদন্তের পর যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাঁশের কেল্লা বা অনুবীক্ষণের মতো পেজের সঙ্গে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কোন সম্পর্ক নেই দাবি করে এর আহ্বায়ক মোস্তফা রিজওয়ান রাহাত অপপ্রচারে জড়িত পেজগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, নিরাপদ সড়ক ও বাসে অর্ধেক ভাড়াসহ কয়েকটি দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীতে বিক্ষোভ করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় আন্দোলন আরও জোরালো হতে থাকে। চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে কয়েক দিন ধরে তারা রামপুরা ব্রিজ এলাকায় জড়ো হয়ে কর্মসূচি পালন করছেন। শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীতে বাসে অর্ধেক ভাড়ার দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দেয় পরিবহন মালিক সমিতি। তবে সেটিও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।
রামপুরা ব্রিজের পাশে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
শুক্রবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২১
সড়কের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব হলে সড়কেও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তাই সড়কে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আজ দুপুরে রামপুরা ব্রিজ এলাকায় লাল কার্ড প্রদর্শন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রামপুরা ব্রিজের পশ্চিম পাশে অবস্থান নিয়ে এ ঘোষণা দেন। কর্মসূচিতে খিলগাঁও মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, পশ্চিম খিলগাঁও উচ্চবিদ্যালয়, ফয়েজুর রহমান আইডিয়াল ইনস্টিটিউটসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও কর্মসূচিতে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পোশাক পড়ে আসেন। নিরাপদ সড়কসহ ১১ দফা দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাদের এই অবস্থানের কারণে ছুটির দিনেও সড়কে কিছুটা যানজট দেখা দেয়। কর্মসূচি ঘোষণা করে দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে সরে যান।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাহাগী সামিয়া বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাব। তিনি বলেন, সড়কের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে, আমরা সড়কে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লাল কার্ড প্রদর্শনের কর্মসূচি ঘোষণা করছি। এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেই চিন্তা মাথায় নিয়ে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রশাসনকে ঘুষ দিয়ে চালকের লাইসেন্স ও ফিটনেস ছাড়া গাড়ি চলছে অভিযোগ করে সামিয়া বলেন, এসব গাড়ি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। এসব বন্ধ করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে জুরাইন থেকে রামপুরায় আসা অভিভাবক মিজানুর রহমান বলেন, তার তিন মেয়ে। দুইজন অনার্স ও একজন স্কুলে পড়ে। সাম্প্রতিক সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় তিনি উদ্বিগ্ন। তাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে তিনি একাত্মতা প্রকাশ করছেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে চলাফেরা করতে তাদের তেমন সমস্যা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
এদিকে আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, তার গায়ে পুলিশ হাত তুলেছে। তার গলায় চাপ দিয়ে পুলিশ বলেছে, তোকে রিমান্ডে নেয়া হবে। রামপুরা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ইমন হোসেন দুপুরের দিকে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেন। ইমন হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, রাইদা পরিবহনের একটি বাসের কাগজপত্র যাচাই করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশ আমার গায়ে হাত তুলেছে। গলায় চাপ দিয়ে পুলিশ বলেছে, রাস্তার পাশে চল, তোকে রিমান্ডে নেয়া হবে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে শিক্ষার্থীদের শান্ত করেন। আন্দোলন ঘিরে রামপুরার ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। অভিযোগ প্রসঙ্গে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ করেছে, তা সঠিক নয়।
এদিকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নামে একটি ফেইসবুক পেজ থেকে প্রচারিত লাইভ ভিডিওর অংশবিশেষ ব্যবহার করে ফেইসবুকে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে থানায় অভিযোগ করেছেন এক শিক্ষার্থী। অভিযোগকারী আবদুল্লাহ মেহেদী দীপ্ত নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তিনি। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাতে রামপুরা থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগে তিনি বলেছেন, তার ফেইসবুক লাইভের ভিডিও কপি করে জামায়াত-শিবির সংশ্লিষ্ট ফেইসবুক পেজ থেকে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, তারা অভিযোগ পেয়েছেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আবদুল্লাহ মেহেদী দীপ্ত বলেন, এক মিনিট ৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিও বাশের কেল্লা ও অণুবীক্ষণসহ বিভিন্ন ফেইসবুক পেজ থেকে গুজব ছড়াতে ও অপপ্রচারে ব্যবহার করা হচ্ছে। সে জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে থানায় অভিযোগ করেছি। শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার আন্দোলনের মধ্যেই গত ২৯ নভেম্বর রামপুরা এলাকায় বাসচাপায় মৃত্যু হয় একরামুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মাঈনউদ্দিনের। এর জেরে সেই রাতে অন্তত আটটি বাসে অগ্নিসংযোগ ও তিনটি বাসে ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। ওই ঘটনা নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নামের ফেইসবুক পেজ থেকে লাইভে আসেন আবদুল্লাহ মেহেদী।
সেদিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, ওইদিন রাতে খিলক্ষেত থেকে আমি ব্যক্তিগত কাজ শেষে রামপুরার বাসায় ফিরছিলাম। রাত সাড়ে ১০টার দিকে রামপুরা ব্রিজে এসে নামি। সেখানে নেমে শুনতে পাই রামপুরা বাজারের পাশে ঝামেলা হচ্ছে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই, এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ায় বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। বাস ভাঙচুর করার একটি দৃশ্য আমি লাইভ করেছি। সেখানে বাসে কোন আগুনের দৃশ্য ছিল না। আরও পরে বাসে আগুন লাগানো হয়েছে। এখন ওই লাইভ ভিডিও নিয়ে এডিট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ভিডিওটির অংশবিশেষ কেটে কেটে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
এ বিষয়টি অবহিত করতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানী থানায় যান আবদুল্লাহ মেহেদী। থানার কর্মকর্তাদের পরামর্শে সেখান থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) যান। এরপর ডিবি অফিস থেকে ঘটনাস্থল রামপুরা থানা এলাকায় যেতে বলতে সেখানে অভিযোগ দেন তিনি। রামপুরা থানার ওসি রফিকুল বলেন, ওই ভিডিওটি বাঁশের কেল্লাসহ আরও কয়েকটি পেজে দেখা গেছে, এই বিষয়টি নিয়ে সাইবার টিম তদন্ত করছে। তদন্তের পর যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাঁশের কেল্লা বা অনুবীক্ষণের মতো পেজের সঙ্গে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কোন সম্পর্ক নেই দাবি করে এর আহ্বায়ক মোস্তফা রিজওয়ান রাহাত অপপ্রচারে জড়িত পেজগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, নিরাপদ সড়ক ও বাসে অর্ধেক ভাড়াসহ কয়েকটি দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীতে বিক্ষোভ করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় আন্দোলন আরও জোরালো হতে থাকে। চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে কয়েক দিন ধরে তারা রামপুরা ব্রিজ এলাকায় জড়ো হয়ে কর্মসূচি পালন করছেন। শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীতে বাসে অর্ধেক ভাড়ার দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দেয় পরিবহন মালিক সমিতি। তবে সেটিও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।