স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত
আমিরজান বেগম। বয়স ৫৫ বছর। সদর উপজেলার ছিলারচর গ্রাম থেকে তিনি গত ৩ দিন ধরে কফ পরীক্ষা করানোর জন্য যক্ষ্মা হাসপাতালে আসছেন। কিন্তু ডাক্তার না থাকায় তিনি চিকিৎসা করাতে পারছেন না। গত ৪ বছর ধরে হাসপাতালের দুইজন চিকিৎকের পদ শূন্য রয়েছে। শূন্য পদের বিপরীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ডা. টি.এম শাহিন ইকবালকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হলেও তিনি সব সময় এখানে আসতে পারেন না। এ জন্য রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শুধু আমিরজান বেগমই নয়। শরীয়তপুর থেকে কবীর ফরাজী (৫০) দুই মাস ধরে কাশিতে ভুগছেন। তিনি বলেন, গত দুই মাস ধরেই তিনি এই হাসপাতালে শরীয়তপুর থেকে আসছেন। কিন্তু ডাক্তার না থাকায় এখানের ফার্মাসিস্ট মোস্তাফিজুর রহমান আমাদের দেখে চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ দেন। একই ধরনের কথা বললেন এক রোগীর স্বজন লিমা আক্তার।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বক্ষ্যব্যাধি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার পদে একজন, জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে একজন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও দুজনের পদই ৪ বছর ধরে শূন্য রয়েছে। এর ভেতরে জুনিয়র কনসালটেন্ট পদের চিকিৎসক পদ ২০১৭ সাল থেকেই শূন্য। অপরদিকে মেডিকেল অফিসার পদে ২০১৯ সাল থেকে চিকিৎসক নেই। এদের বিপরীতে ডা. টি.এম শাহিন ইকবালকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি তার নিয়মিত দায়িত্বর পাশাপাশি সময় সুযোগ মতো হাসপাতালে রোগী দেখতে আসেন। এছাড়া এম.টি. রেডিও গ্রাফার একজন, এম.টি ল্যাব একজন, ফার্মাসিস্ট একজন, সহকারী সেবক একজন, ড্রাইভার একজন, গৃহপরিদর্শিকা দুইজন, এমএলএসএস তিনজন, আয়া একজন এবং ঝাড়–দার একজনের পদ এসব পদে ৪ থেকে ৫ বছর ধরে খালি রয়েছে। এতে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
হাসপাতালে কর্মরত ফার্মাসিস্ট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে ৪ বছর ধরে কোন ডাক্তার নেই। হাসপাতালের ১৭ জনবলের বিপরীতে ডাক্তারসহ ৯ জনের পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া একজন রেডিওগ্রাফার নিয়োগ থাকলেও তিনি ডেপুটেশনে সদর হাসপাতালে ডিউটি করেন। একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান নিয়োগ থাকলেও তিনি বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেলে ডেপুটেশনে আছেন। হাসপাতালের যিনি সহকারী সেবক (নার্স) তিনি ডেপুটেশনে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছেন। এছাড়া একজন আয়ার পদে নিয়োগ থাকলেও তাকে রাজৈর উপজেলার কবিরাজপুর ২৫ শয্যার হাসপাতালে ডেপুটেশনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৪ জনের নিয়োগ যক্ষ্মা হাসপাতালে থাকলেও তারা অন্য প্রতিষ্ঠানে ডিউটি করেন। ফলে আমাদের এই হাসপাতালে চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
কালকিনি থেকে চিকিৎসা করাতে আসা এক রোগী স্বজন লিমা আক্তার বলেন, ‘যক্ষ্মা (বক্ষ্যব্যাধি) হাসপাতালটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখানে দ্রুত ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হলে মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলার কয়েক লাখ মানুষের যক্ষ্মার চিকিৎসা সেবা পেতে সুবিধা হবে। এই বিষয়ে ডা. টি.এম শাহিন ইকবাল জানান, আমি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রতি সপ্তাহে তিনদিন বক্ষ্যব্যাধিতে রোগীদের সেবা দেই।
মাদারীপুর জেলার সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহমেদ খান বলেন, ‘আমি মাদারীপুরে সিভিল সার্জন হিসেবে মাত্র কয়েক দিন হয়েছে যোগদান করেছি। এখনো বক্ষ্যব্যাধি হাসপাতালে যাইনি। দুইজন ডাক্তার নেই ৪ বছর ধরে। ইতোমধ্যে বক্ষ্যব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক ও অন্যান্য জনবল নিয়োগ প্রদানের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, হাসপাতালে দ্রুত সময়ের মধ্যেই জনবল দেয়া হবে। তাহলে চিকিৎসা সেবার মানও বেড়ে যাবে। সেই বিষয়ে আমি কাজ করে যাচিছ।’
স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত
মঙ্গলবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২১
আমিরজান বেগম। বয়স ৫৫ বছর। সদর উপজেলার ছিলারচর গ্রাম থেকে তিনি গত ৩ দিন ধরে কফ পরীক্ষা করানোর জন্য যক্ষ্মা হাসপাতালে আসছেন। কিন্তু ডাক্তার না থাকায় তিনি চিকিৎসা করাতে পারছেন না। গত ৪ বছর ধরে হাসপাতালের দুইজন চিকিৎকের পদ শূন্য রয়েছে। শূন্য পদের বিপরীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ডা. টি.এম শাহিন ইকবালকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হলেও তিনি সব সময় এখানে আসতে পারেন না। এ জন্য রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শুধু আমিরজান বেগমই নয়। শরীয়তপুর থেকে কবীর ফরাজী (৫০) দুই মাস ধরে কাশিতে ভুগছেন। তিনি বলেন, গত দুই মাস ধরেই তিনি এই হাসপাতালে শরীয়তপুর থেকে আসছেন। কিন্তু ডাক্তার না থাকায় এখানের ফার্মাসিস্ট মোস্তাফিজুর রহমান আমাদের দেখে চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ দেন। একই ধরনের কথা বললেন এক রোগীর স্বজন লিমা আক্তার।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বক্ষ্যব্যাধি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার পদে একজন, জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে একজন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও দুজনের পদই ৪ বছর ধরে শূন্য রয়েছে। এর ভেতরে জুনিয়র কনসালটেন্ট পদের চিকিৎসক পদ ২০১৭ সাল থেকেই শূন্য। অপরদিকে মেডিকেল অফিসার পদে ২০১৯ সাল থেকে চিকিৎসক নেই। এদের বিপরীতে ডা. টি.এম শাহিন ইকবালকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি তার নিয়মিত দায়িত্বর পাশাপাশি সময় সুযোগ মতো হাসপাতালে রোগী দেখতে আসেন। এছাড়া এম.টি. রেডিও গ্রাফার একজন, এম.টি ল্যাব একজন, ফার্মাসিস্ট একজন, সহকারী সেবক একজন, ড্রাইভার একজন, গৃহপরিদর্শিকা দুইজন, এমএলএসএস তিনজন, আয়া একজন এবং ঝাড়–দার একজনের পদ এসব পদে ৪ থেকে ৫ বছর ধরে খালি রয়েছে। এতে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
হাসপাতালে কর্মরত ফার্মাসিস্ট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে ৪ বছর ধরে কোন ডাক্তার নেই। হাসপাতালের ১৭ জনবলের বিপরীতে ডাক্তারসহ ৯ জনের পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া একজন রেডিওগ্রাফার নিয়োগ থাকলেও তিনি ডেপুটেশনে সদর হাসপাতালে ডিউটি করেন। একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান নিয়োগ থাকলেও তিনি বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেলে ডেপুটেশনে আছেন। হাসপাতালের যিনি সহকারী সেবক (নার্স) তিনি ডেপুটেশনে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছেন। এছাড়া একজন আয়ার পদে নিয়োগ থাকলেও তাকে রাজৈর উপজেলার কবিরাজপুর ২৫ শয্যার হাসপাতালে ডেপুটেশনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৪ জনের নিয়োগ যক্ষ্মা হাসপাতালে থাকলেও তারা অন্য প্রতিষ্ঠানে ডিউটি করেন। ফলে আমাদের এই হাসপাতালে চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
কালকিনি থেকে চিকিৎসা করাতে আসা এক রোগী স্বজন লিমা আক্তার বলেন, ‘যক্ষ্মা (বক্ষ্যব্যাধি) হাসপাতালটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখানে দ্রুত ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হলে মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলার কয়েক লাখ মানুষের যক্ষ্মার চিকিৎসা সেবা পেতে সুবিধা হবে। এই বিষয়ে ডা. টি.এম শাহিন ইকবাল জানান, আমি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রতি সপ্তাহে তিনদিন বক্ষ্যব্যাধিতে রোগীদের সেবা দেই।
মাদারীপুর জেলার সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহমেদ খান বলেন, ‘আমি মাদারীপুরে সিভিল সার্জন হিসেবে মাত্র কয়েক দিন হয়েছে যোগদান করেছি। এখনো বক্ষ্যব্যাধি হাসপাতালে যাইনি। দুইজন ডাক্তার নেই ৪ বছর ধরে। ইতোমধ্যে বক্ষ্যব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক ও অন্যান্য জনবল নিয়োগ প্রদানের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, হাসপাতালে দ্রুত সময়ের মধ্যেই জনবল দেয়া হবে। তাহলে চিকিৎসা সেবার মানও বেড়ে যাবে। সেই বিষয়ে আমি কাজ করে যাচিছ।’