দাঁড়িয়ে ও গাদাগাদি করে যাত্রীবহন
মালিক সমিতির সিদ্ধান্তই মানছে না পরিবহন মালিকরা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনে সরকারের নির্দেশনা ছিল। এতে ‘পরিবহন সংকট তৈরি হবে’ এই কারণ দেখিয়ে সিট অনুযায়ী যাত্রী পরিবহনের সুপারিশ করেছিল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। তাদের সুপারিশের আলোকে যত সিট তত যাত্রী পরিবহনে মৌখিক অনুমতি দেয় সরকার। যা শনিবার (১৫ জানুয়ারি) থেকে কার্যক্রম করা হয়।
কিন্তু রাজধানীর কোন বাস-মিনিবাসের এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করছে না। প্রতিটি গণপরিবহনে দাঁড়িয়ে ও গাদাগাদি করে পরিবহন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে যাত্রীরা। এছাড়া সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) বিধিনিষেধের ৫ দফা নির্দেশনার কোনটাই মানছে না পরিবহন চালকরা। প্রতিটি বাসের চালক ও সহকারীর টিকা সনদ থাকতে হবে। বাসের যাত্রী, চালক, সহকারী ও টিকেট বিক্রয়কারীর অবশ্যই মাস্ক থাকতে হবে। প্রতিবাসে হ্যান্ড সেনিটাইজার ও জীবাণুণাশক দিয়ে যাত্রীদের ব্যাগ ও জিনিসপত্র জীবাণুমুক্ত করতে হবে। পরিবহন ছাড়ার আগে ও পরে জীবাণুমুক্ত করা এই ৫ দফা নির্দেশনা ছিল বিআরটিএ’র।
এ বিষয়ে রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় সারোয়ার নামের এক যাত্রী বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী থেকে গুলিস্তান আসলাম শিকড় নামে একটি বাসে। এই বাসের নেই কোন স্বাস্থ্যবিধির বালাই। দাঁড়িয়ে ও গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে। চালক ও হেলপার কারো মুখেই মাস্ক ছিল না। মাস্ক ছাড়া যাত্রীদেরও কোন তদারকি করা হয়নি। এছাড়া বাসের সিটগুলো ছিল নোংরা ও ময়লাযুক্ত।’ পরিবহন মালিকরাই সিট অনুযায়ী যাত্রী পরিবহনের সুপারিশ করেছিল। কিন্তু এই সুপারিশ তারাই মানছে না বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে ট্রান্স সিলভা পরিবহনের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম খোকন সংবাদকে বলেন, ‘প্রতি বাসের চালক স্টাফকে বলা আছে সিটের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। কিন্তু বিভিন্ন স্টপেজে যাত্রীদের চাপ বেশি থাকার কারণে যাত্রীরা এই নির্দেশনা মানছে না। বাসের হেলপারকে ধাক্কা দিয়ে বাসে উঠে যায়। তখন আর নামনো যায় না। স্বাস্থ্যবিধির কথা বললে বাস স্টাফদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে যাত্রীরা।’
এ বিষয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার সংবাদকে বলেন, ‘গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে প্রতিদিন ১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। বিধি-নিষেধের নির্দেশনা অমান্য করলেই পরিবহনের চালক ও হেলপারকে জরিমানা করা হচ্ছে। এছাড়া মাস্ক ছাড়া যাতায়াত করলে যাত্রীদেরও জরিমানা করা হচ্ছে।’ এক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।
সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, কোন বাসেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। চালক ও হেলপার কেউ মাস্ক পরছে না। এছাড়া মাস্কবিহীন যাত্রীদেরও কোন তদারকি করা হচ্ছে না। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারি বিধিনিষেধ শুধু কাগছে-কলমে, বাস্তবে নেই বলে জানান যাত্রীরা।
রাজধানীর সাইনবোর্ড, যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, মালিবাগ হয়ে গাজীপুর পর্যন্ত চলাচল করে অনাবিল পরিবহন। সাজিদ নামের এই পরিবহনের চালক সংবাদকে বলেন, ‘যাত্রীদের নিষেধ করা হলেও অনেকেই উঠে পড়ে। দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন না করার বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু মানা যায় না। অফিসের সময় যাত্রীদের চাপ বেশি থাকে। তখন কিছু যাত্রী দাঁড়িয়ে যাতায়াত করে। তবে অন্য সময় কিছু ফাঁকা থাকে।’
মাস্ক না পরার বিষয়ে নয়ন নামের ট্রান্স সিলভা পরিবহনের এক হেলপার বলেন, ‘মাস্ক সব সময় পরা যায় না। কারণ মুখ ভিজে যায়। এছাড়া ভাড়া তোলার সময় যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে হয় মাস্ক খুলে।’ তবে মাস্ক সময় সব সময় সঙ্গে থাকে বলে জানান তিনি।
করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সরকার ১১ দফা বিধিনিষেধ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। সেখানে মাস্ক পরাকে জোর দিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশনা বেশির ভাগ মানুষ মানছে না।
দাঁড়িয়ে ও গাদাগাদি করে যাত্রীবহন
রোববার, ১৬ জানুয়ারী ২০২২
মালিক সমিতির সিদ্ধান্তই মানছে না পরিবহন মালিকরা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনে সরকারের নির্দেশনা ছিল। এতে ‘পরিবহন সংকট তৈরি হবে’ এই কারণ দেখিয়ে সিট অনুযায়ী যাত্রী পরিবহনের সুপারিশ করেছিল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। তাদের সুপারিশের আলোকে যত সিট তত যাত্রী পরিবহনে মৌখিক অনুমতি দেয় সরকার। যা শনিবার (১৫ জানুয়ারি) থেকে কার্যক্রম করা হয়।
কিন্তু রাজধানীর কোন বাস-মিনিবাসের এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করছে না। প্রতিটি গণপরিবহনে দাঁড়িয়ে ও গাদাগাদি করে পরিবহন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে যাত্রীরা। এছাড়া সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) বিধিনিষেধের ৫ দফা নির্দেশনার কোনটাই মানছে না পরিবহন চালকরা। প্রতিটি বাসের চালক ও সহকারীর টিকা সনদ থাকতে হবে। বাসের যাত্রী, চালক, সহকারী ও টিকেট বিক্রয়কারীর অবশ্যই মাস্ক থাকতে হবে। প্রতিবাসে হ্যান্ড সেনিটাইজার ও জীবাণুণাশক দিয়ে যাত্রীদের ব্যাগ ও জিনিসপত্র জীবাণুমুক্ত করতে হবে। পরিবহন ছাড়ার আগে ও পরে জীবাণুমুক্ত করা এই ৫ দফা নির্দেশনা ছিল বিআরটিএ’র।
এ বিষয়ে রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় সারোয়ার নামের এক যাত্রী বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী থেকে গুলিস্তান আসলাম শিকড় নামে একটি বাসে। এই বাসের নেই কোন স্বাস্থ্যবিধির বালাই। দাঁড়িয়ে ও গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে। চালক ও হেলপার কারো মুখেই মাস্ক ছিল না। মাস্ক ছাড়া যাত্রীদেরও কোন তদারকি করা হয়নি। এছাড়া বাসের সিটগুলো ছিল নোংরা ও ময়লাযুক্ত।’ পরিবহন মালিকরাই সিট অনুযায়ী যাত্রী পরিবহনের সুপারিশ করেছিল। কিন্তু এই সুপারিশ তারাই মানছে না বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে ট্রান্স সিলভা পরিবহনের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম খোকন সংবাদকে বলেন, ‘প্রতি বাসের চালক স্টাফকে বলা আছে সিটের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। কিন্তু বিভিন্ন স্টপেজে যাত্রীদের চাপ বেশি থাকার কারণে যাত্রীরা এই নির্দেশনা মানছে না। বাসের হেলপারকে ধাক্কা দিয়ে বাসে উঠে যায়। তখন আর নামনো যায় না। স্বাস্থ্যবিধির কথা বললে বাস স্টাফদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে যাত্রীরা।’
এ বিষয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার সংবাদকে বলেন, ‘গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে প্রতিদিন ১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। বিধি-নিষেধের নির্দেশনা অমান্য করলেই পরিবহনের চালক ও হেলপারকে জরিমানা করা হচ্ছে। এছাড়া মাস্ক ছাড়া যাতায়াত করলে যাত্রীদেরও জরিমানা করা হচ্ছে।’ এক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।
সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, কোন বাসেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। চালক ও হেলপার কেউ মাস্ক পরছে না। এছাড়া মাস্কবিহীন যাত্রীদেরও কোন তদারকি করা হচ্ছে না। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারি বিধিনিষেধ শুধু কাগছে-কলমে, বাস্তবে নেই বলে জানান যাত্রীরা।
রাজধানীর সাইনবোর্ড, যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, মালিবাগ হয়ে গাজীপুর পর্যন্ত চলাচল করে অনাবিল পরিবহন। সাজিদ নামের এই পরিবহনের চালক সংবাদকে বলেন, ‘যাত্রীদের নিষেধ করা হলেও অনেকেই উঠে পড়ে। দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন না করার বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু মানা যায় না। অফিসের সময় যাত্রীদের চাপ বেশি থাকে। তখন কিছু যাত্রী দাঁড়িয়ে যাতায়াত করে। তবে অন্য সময় কিছু ফাঁকা থাকে।’
মাস্ক না পরার বিষয়ে নয়ন নামের ট্রান্স সিলভা পরিবহনের এক হেলপার বলেন, ‘মাস্ক সব সময় পরা যায় না। কারণ মুখ ভিজে যায়। এছাড়া ভাড়া তোলার সময় যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে হয় মাস্ক খুলে।’ তবে মাস্ক সময় সব সময় সঙ্গে থাকে বলে জানান তিনি।
করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সরকার ১১ দফা বিধিনিষেধ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। সেখানে মাস্ক পরাকে জোর দিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশনা বেশির ভাগ মানুষ মানছে না।