নিধন ঠেকাতে মৎস্য বিভাগের কম্বিং অপারেশন
ভোলার মেঘনা নদীর শাহবাজপুর চ্যানেলে ডিম ছাড়ার অভিযান সফল হওয়ায় এবার ইলিশ প্রজাতি জাটকার পরিমাণ সর্বাধিক। রোববার (১৬ জানুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান। এ কারণে জেলার মেঘনা নদীতে এখন জাটকা আর পানি প্রায় সমান সমান অবস্থান বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা। এদিকে জেলায় জাটকা নিধন চলছে নির্বিচারে। এক শ্রেণীর প্রভাবশালী মাছ ব্যবসায়ীদের নেতৃত্বেই বাঁধা জাল, ঘুটিজাল, বেহন্দি জাল, মশারি জাল দিয়ে এই জাটকা নিধন করা হচ্ছে। জাটকা রক্ষা করা গেলে এই দ্বীপ জেলায় ইলিশ উৎপাদনের পরিমাণ ২ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গেছে, শহর ও গ্রামে জাটকাই চাপিলা মাছ হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। এক সাজি ৫ কেজি পরিমাণ জাটকা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩শ থেকে ৫শ টাকায়। অথচ বছর শেষে বড় হলে এই মাছই বিক্রি হতো ৫ লাখ টাকা। এভাবেই প্রতিদিন কোটি টাকার ইলিশ নিধন করা হচ্ছে। এমন অবস্থার মধ্যেই জাটকা রক্ষায় ১৪ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৮ দিনের কম্বিং অপারেশন শুরু করেছে মৎস্য বিভাগ। ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আজাহারুল ইসলাম জানান, ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ মাছের ডিম ছাড়া ও ভরা প্রজননের মৌসুম ছিল। ওই সময় সফলভাবে ইলিশ ডিম ছাড়ায় এবার জাটকার পরিমাণ বেশি। জেলার ৭ উপজেলায় সপ্তাহব্যাপী জাটকা রক্ষায় অভিযান চলছে।
রোববার সকাল পর্যন্ত ভোলা সদরের ইলিশা লঞ্চঘাটে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ থেকে জব্দ করা হয়েছে ২শ’ কেজি জাটকা। এ সময় দুটি মাছের আড়ত থেকে মাছ ও জাল জব্দ করা হয়। দৌলতখানে কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগের অভিযানে ২৫ মণ জাটকা জব্দ করা হয়। তজুমদ্দিন উপজেলায় নদী পাড়ের মাছ ঘাট থেকে ২৬ মণ জাটকা জব্ধ করা হয়। একইভাবে দৌলতখান ও মনপুরাসহ ৭ উপজেলায় দুই দিনে জব্দ করা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার কেজি ইলিশ । মৌসুমে এই মাছের দাম হতো ৪০ লাখ টাকা। এমনটা জানান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা। জাটকা নিধন বন্ধ করা না গেলে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। যে পরিমাণে ইলিশ ডিম ছেড়েছে, তার ১০ ভাগ রক্ষা করা গেলে ওই ইলিশের সংখ্যা দাঁড়াবে ৩৯ হাজার ৩১৫ কোটি। টাকার হিসেবে একটি ইলিশের দাম গড়ে ৫শ’ টাকা হলে, মোট টাকার পরিমাণ হবে প্রায় ১৯৬ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা। দেশের সর্বাধিক ইলিশ উৎপাদনের কেন্দ্র হচ্ছে ভোলা জেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী। ফলে জাটকা ইলিশ রক্ষায় সর্বাধিক চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক তৌফিক ই লাহী চৌধুরী ।
ভোলায় বর্তমানে ইলিশ উৎপাদনের পরিমাণ হচ্ছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৫৪ মেট্রিক টন। জাটকা রক্ষা করা গেলে এই দ্বীপ জেলায় ইলিশ উৎপাদনের পরিমাণ ২ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করেন ইলিশ গবেষকরা। ভোলার নাগরিক কমিটির সভাপতি আবু তাহের ও ওই কমিটির সহ-সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর দুলাল চন্দ্র ঘোষ মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী থেকে প্রভাবশালীদের অবৈধ ঘুটি, বেহেন্দী জালপাতা বন্ধ করার দাবি জানান।
নিধন ঠেকাতে মৎস্য বিভাগের কম্বিং অপারেশন
সোমবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২২
ভোলার মেঘনা নদীর শাহবাজপুর চ্যানেলে ডিম ছাড়ার অভিযান সফল হওয়ায় এবার ইলিশ প্রজাতি জাটকার পরিমাণ সর্বাধিক। রোববার (১৬ জানুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান। এ কারণে জেলার মেঘনা নদীতে এখন জাটকা আর পানি প্রায় সমান সমান অবস্থান বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা। এদিকে জেলায় জাটকা নিধন চলছে নির্বিচারে। এক শ্রেণীর প্রভাবশালী মাছ ব্যবসায়ীদের নেতৃত্বেই বাঁধা জাল, ঘুটিজাল, বেহন্দি জাল, মশারি জাল দিয়ে এই জাটকা নিধন করা হচ্ছে। জাটকা রক্ষা করা গেলে এই দ্বীপ জেলায় ইলিশ উৎপাদনের পরিমাণ ২ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গেছে, শহর ও গ্রামে জাটকাই চাপিলা মাছ হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। এক সাজি ৫ কেজি পরিমাণ জাটকা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩শ থেকে ৫শ টাকায়। অথচ বছর শেষে বড় হলে এই মাছই বিক্রি হতো ৫ লাখ টাকা। এভাবেই প্রতিদিন কোটি টাকার ইলিশ নিধন করা হচ্ছে। এমন অবস্থার মধ্যেই জাটকা রক্ষায় ১৪ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৮ দিনের কম্বিং অপারেশন শুরু করেছে মৎস্য বিভাগ। ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আজাহারুল ইসলাম জানান, ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ মাছের ডিম ছাড়া ও ভরা প্রজননের মৌসুম ছিল। ওই সময় সফলভাবে ইলিশ ডিম ছাড়ায় এবার জাটকার পরিমাণ বেশি। জেলার ৭ উপজেলায় সপ্তাহব্যাপী জাটকা রক্ষায় অভিযান চলছে।
রোববার সকাল পর্যন্ত ভোলা সদরের ইলিশা লঞ্চঘাটে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ থেকে জব্দ করা হয়েছে ২শ’ কেজি জাটকা। এ সময় দুটি মাছের আড়ত থেকে মাছ ও জাল জব্দ করা হয়। দৌলতখানে কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগের অভিযানে ২৫ মণ জাটকা জব্দ করা হয়। তজুমদ্দিন উপজেলায় নদী পাড়ের মাছ ঘাট থেকে ২৬ মণ জাটকা জব্ধ করা হয়। একইভাবে দৌলতখান ও মনপুরাসহ ৭ উপজেলায় দুই দিনে জব্দ করা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার কেজি ইলিশ । মৌসুমে এই মাছের দাম হতো ৪০ লাখ টাকা। এমনটা জানান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা। জাটকা নিধন বন্ধ করা না গেলে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। যে পরিমাণে ইলিশ ডিম ছেড়েছে, তার ১০ ভাগ রক্ষা করা গেলে ওই ইলিশের সংখ্যা দাঁড়াবে ৩৯ হাজার ৩১৫ কোটি। টাকার হিসেবে একটি ইলিশের দাম গড়ে ৫শ’ টাকা হলে, মোট টাকার পরিমাণ হবে প্রায় ১৯৬ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা। দেশের সর্বাধিক ইলিশ উৎপাদনের কেন্দ্র হচ্ছে ভোলা জেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী। ফলে জাটকা ইলিশ রক্ষায় সর্বাধিক চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক তৌফিক ই লাহী চৌধুরী ।
ভোলায় বর্তমানে ইলিশ উৎপাদনের পরিমাণ হচ্ছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৫৪ মেট্রিক টন। জাটকা রক্ষা করা গেলে এই দ্বীপ জেলায় ইলিশ উৎপাদনের পরিমাণ ২ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করেন ইলিশ গবেষকরা। ভোলার নাগরিক কমিটির সভাপতি আবু তাহের ও ওই কমিটির সহ-সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর দুলাল চন্দ্র ঘোষ মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী থেকে প্রভাবশালীদের অবৈধ ঘুটি, বেহেন্দী জালপাতা বন্ধ করার দাবি জানান।