করোনা শনাক্তের শীর্ষে রয়েছে ১৩ জেলা। এর মধ্যে ঢাকায় একদিনেই প্রায় সাড়ে ছয় হাজার ও চট্টগ্রামে প্রায় এক হাজার মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বাকি ১১ জেলায় নূন্যতম ৬১ জন থেকে দেড় শতাধিক রোগী পাওয়া গেছে। এদিন মেহেরপুর ও নড়াইল ছাড়া বাকি ৬২ জেলাতেই কোভিড শনাক্ত হয়েছে।
সব মিলিয়ে একদিনে সারাদেশে সাড়ে ৯ হাজার মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে সংখ্যার পাশাপাশি শনাক্তের হার এবং মৃত্যুও বেড়েছে। একদিনে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের দিন আট হাজার ৪০৭ জন রোগী শনাক্ত এবং ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
একদিনে এর চেয়ে বেশি কোভিড শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ গত বছরের ১২ অগাস্ট; ওইদিন ১০ হাজার ১২৬ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্তের কথা বলা হয়েছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, যেভাবে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তা উদ্বেগজনক। দেশে আগের সপ্তাহের তুলনায় গত এক সপ্তাহে (১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি) করোনা শনাক্ত বেড়েছে ২২৮ শতাংশ। এ সময় করোনায় মৃত্যু বেড়েছে ১৮৫ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে এক ভার্চুয়াল বুলেটিনে দেশের সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরেন।
বুলেটিনে জানানো হয়, এক সপ্তাহে দেশে ২৭ শতাংশের বেশি নমুনা পরীক্ষা বেড়েছে। সাত দিনে দুই লাখ তিন হাজার ১২২টি পরীক্ষা হয়েছে। এই পরীক্ষায় রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩৪ হাজার ৪০৫ জন। এর আগের সপ্তাহের তুলনায় সাত দিনে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার রোগী বেশি শনাক্ত হয়েছে। এ হিসাবে এক সপ্তাহে ২২৮ শতাংশ রোগী বেড়েছে।
এছাড়া গত এক সপ্তাহে করোনায় সংক্রমিতদের মধ্যে ৫৭ জন মারা গেছেন। যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩৭ জন বেশি। এক সপ্তাহে রোগী শনাক্ত, পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার এবং মৃত্যুর এই পরিসংখ্যান বলছে, দেশে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে।
শনাক্ত বেশি ১৩ জেলায়
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মহানগরীসহ জেলায় ২৫ হাজার ৬৩১টি নমুনা পরীক্ষায় ছয় হাজার ৪৮৮ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা অনুপাতে এই জেলায় শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৩১ শতাংশ।
চট্টগ্রামে একদিনে তিন হাজার ১৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এই পরীক্ষায় ৯৮৯ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে। এই হিসাবে চট্টগ্রামে রোগী শনাক্তের ৩০ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে ৭৭০টি নমুনা পরীক্ষায় ১৫৭ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে। এই জেলায় নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে রোগী শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
ময়মনসিংহে একদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪১৬ জনের। এর মধ্যে ১০৬ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা অনুপাতে ময়মনসিংহে রোগী শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। কক্সবাজারে ২৪ ঘণ্টায় ৭৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এই পরীক্ষায় ১২৭ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এই হিসাবে কক্সবাজারে কোভিডের হার ১৬ দশমিক ০৯ শতাংশ।
বগুড়ায় একদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৩৮ জনের। এতে ৯৪ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। বগুড়ায় পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
যশোরে একদিনে ২০৪ জনের নমুনা পরীক্ষা ৭৫ জনের শরীরে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ হিসাবে যশোরে শনাক্তের হার ৩৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ। খুলনায় ২৬২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯৪ জনের দেহে কোভিড শনাক্ত হয়েছে। এ হিসাবে খুলনায় রোগী শনাক্তের হার ৩৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
সিলেটে একদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭৭১টি। এই পরীক্ষায় ১৯৪ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় সিলেটে শনাক্তের ২৫ দশমিক ১৬ শতাংশ।
গাজীপুরে ২২৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৭৯ জনের কোভিড ধরা পড়ে। এতে শনাক্তের হার দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
মুন্সীগঞ্জে একদিনে ১০৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে ৬৩ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এ হিসাবে মুন্সীগঞ্জে শনাক্তের হার ৫৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। নোয়াখালীতে ৪৪৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৬১ জনের দেহে জীবাণু পাওয়া গেছে। এ হিসাবে নোয়াখালীতে শনাক্তের ১৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। রাজশাহীতে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৩৯ জনের। এতে ৬৭ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় রাজশাহীতে কোভিড শনাক্তের হার ২৮ শতাংশ।
১০ জেলায় উচ্চ ঝুঁকি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত এক সপ্তাহের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, ঢাকা ও রাঙ্গামাটির পাশাপাশি আরও ১০ জেলাকে করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এছাড়া মধ্যম ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে ৩২ জেলা। তবে এখন পর্যন্ত ঝুঁকিমুক্ত ১৬ জেলা।
অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১০ জেলা হলো গাজীপুর, রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, বগুড়া, দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, লালমনিরহাট, খাগড়াছড়ি ও পঞ্চগড়। এর মধ্যে গাজীপুরে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৭৯ জন, রাজশাহীতে ৬৭ জন, যশোরে ৭৫ জন, কুষ্টিয়ায় ৪৪ জন, বগুড়ায় ৯৪ জন, দিনাজপুরে ৪৮ জন, রাঙ্গামাটিতে ৪২ জন, লালমনিরহাটে একজন, খাগড়াছড়িতে ২৩ জন ও পঞ্চগড়ে দুইজনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
অধিক সংক্রমিত জেলাগুলোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার যে বিষয়টি বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে বর্তমান যে করোনা ব্যবস্থাপনা, তার প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই। এটি একেবারেই প্রশাসনিক বিষয়। অধিদপ্তরের কর্মপন্থা ঠিক করার জন্য এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়। কোন জেলাকে নির্দিষ্ট করা হয়নি। জেলায় পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের সংখ্যাকে কেন্দ্র করে সাজানো হয়েছে। এই পরিসংখ্যান কোন সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে না।
হাসপাতালে রোগী বাড়েনি দাবি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
করোনা শনাক্ত বাড়লেও হাসপাতালে করোনা রোগী বাড়েনি দাবি করে ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, তবে এতে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বেশি সংক্রমণ হচ্ছে করোনার ওমিক্রন ধরনের। পাশের দেশেও অমিক্রন বেশি ছড়াচ্ছে। সবাইকে স্বাস্থ্য সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘সাধারণত কোন নতুন ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) এলে সেটি পুরোনো ধরনকে প্রতিস্থাপন করে। তবে এখন পর্যন্ত দেশে যে পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে, তাতে করোনার ডেল্টা ধরনই বেশি ছড়াচ্ছে। গত বছর করোনার ডেল্টা ধরনের তান্ডব দেখা গেছে। তাই অসতর্ক হওয়ার সুযোগ নেই।’
একদিনে শনাক্ত ৯ হাজার ৫০০ জন
দেশে এক দিনে ৯ হাজার ৫০০ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে মারা গেছেন ১২ জন। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৪২ হাজার ২৯৪ জনে। তাদের মধ্যে এ পর্যন্ত ২৮ হাজার ১৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে সেরে উঠেছেন ৪৭৩ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৮ জন। মোট শনাক্ত রোগী থেকে মারা যাওয়া ও সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা বাদ দিলে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর (অ্যাক্টিভ কেস) সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৯ হাজার ৮৫০ জন। এই সংখ্যক রোগী এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ৫০ হাজার ৮৪৫ জন। তবে বর্তমানে ‘সিরিয়াস ক্রিটিক্যাল’ বা গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৩৪৯ জন।
২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩৭ হাজার ৮৩০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দাঁড়ালো ২৫ দশমিক ১১ শতাংশে। আগের দিন এই হার ছিল ২৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
তবে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে করোনা শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। শনাক্ত অনুপাতে মৃত্যুর হার এক দশমিক ৭২ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৯৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
একদিনে মৃত্যু হওয়া ১২ জনের মধ্যে পুরুষ ১০ জন এবং নারী দুইজন। তাদের ছয়জন ঢাকা মহানগরীর বাসিন্দা ছিলেন। এছাড়া গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জয়পুরহাট ও হবিগঞ্জে একজন করে কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ছয়জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং বাকি ছয়জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ছিল।
বুধবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২২
করোনা শনাক্তের শীর্ষে রয়েছে ১৩ জেলা। এর মধ্যে ঢাকায় একদিনেই প্রায় সাড়ে ছয় হাজার ও চট্টগ্রামে প্রায় এক হাজার মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বাকি ১১ জেলায় নূন্যতম ৬১ জন থেকে দেড় শতাধিক রোগী পাওয়া গেছে। এদিন মেহেরপুর ও নড়াইল ছাড়া বাকি ৬২ জেলাতেই কোভিড শনাক্ত হয়েছে।
সব মিলিয়ে একদিনে সারাদেশে সাড়ে ৯ হাজার মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে সংখ্যার পাশাপাশি শনাক্তের হার এবং মৃত্যুও বেড়েছে। একদিনে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের দিন আট হাজার ৪০৭ জন রোগী শনাক্ত এবং ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
একদিনে এর চেয়ে বেশি কোভিড শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ গত বছরের ১২ অগাস্ট; ওইদিন ১০ হাজার ১২৬ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্তের কথা বলা হয়েছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, যেভাবে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তা উদ্বেগজনক। দেশে আগের সপ্তাহের তুলনায় গত এক সপ্তাহে (১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি) করোনা শনাক্ত বেড়েছে ২২৮ শতাংশ। এ সময় করোনায় মৃত্যু বেড়েছে ১৮৫ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে এক ভার্চুয়াল বুলেটিনে দেশের সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরেন।
বুলেটিনে জানানো হয়, এক সপ্তাহে দেশে ২৭ শতাংশের বেশি নমুনা পরীক্ষা বেড়েছে। সাত দিনে দুই লাখ তিন হাজার ১২২টি পরীক্ষা হয়েছে। এই পরীক্ষায় রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩৪ হাজার ৪০৫ জন। এর আগের সপ্তাহের তুলনায় সাত দিনে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার রোগী বেশি শনাক্ত হয়েছে। এ হিসাবে এক সপ্তাহে ২২৮ শতাংশ রোগী বেড়েছে।
এছাড়া গত এক সপ্তাহে করোনায় সংক্রমিতদের মধ্যে ৫৭ জন মারা গেছেন। যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩৭ জন বেশি। এক সপ্তাহে রোগী শনাক্ত, পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার এবং মৃত্যুর এই পরিসংখ্যান বলছে, দেশে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে।
শনাক্ত বেশি ১৩ জেলায়
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মহানগরীসহ জেলায় ২৫ হাজার ৬৩১টি নমুনা পরীক্ষায় ছয় হাজার ৪৮৮ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা অনুপাতে এই জেলায় শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৩১ শতাংশ।
চট্টগ্রামে একদিনে তিন হাজার ১৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এই পরীক্ষায় ৯৮৯ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে। এই হিসাবে চট্টগ্রামে রোগী শনাক্তের ৩০ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে ৭৭০টি নমুনা পরীক্ষায় ১৫৭ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে। এই জেলায় নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে রোগী শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
ময়মনসিংহে একদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪১৬ জনের। এর মধ্যে ১০৬ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা অনুপাতে ময়মনসিংহে রোগী শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। কক্সবাজারে ২৪ ঘণ্টায় ৭৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এই পরীক্ষায় ১২৭ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এই হিসাবে কক্সবাজারে কোভিডের হার ১৬ দশমিক ০৯ শতাংশ।
বগুড়ায় একদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৩৮ জনের। এতে ৯৪ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। বগুড়ায় পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
যশোরে একদিনে ২০৪ জনের নমুনা পরীক্ষা ৭৫ জনের শরীরে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ হিসাবে যশোরে শনাক্তের হার ৩৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ। খুলনায় ২৬২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯৪ জনের দেহে কোভিড শনাক্ত হয়েছে। এ হিসাবে খুলনায় রোগী শনাক্তের হার ৩৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
সিলেটে একদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭৭১টি। এই পরীক্ষায় ১৯৪ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় সিলেটে শনাক্তের ২৫ দশমিক ১৬ শতাংশ।
গাজীপুরে ২২৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৭৯ জনের কোভিড ধরা পড়ে। এতে শনাক্তের হার দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
মুন্সীগঞ্জে একদিনে ১০৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে ৬৩ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এ হিসাবে মুন্সীগঞ্জে শনাক্তের হার ৫৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। নোয়াখালীতে ৪৪৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৬১ জনের দেহে জীবাণু পাওয়া গেছে। এ হিসাবে নোয়াখালীতে শনাক্তের ১৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। রাজশাহীতে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৩৯ জনের। এতে ৬৭ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় রাজশাহীতে কোভিড শনাক্তের হার ২৮ শতাংশ।
১০ জেলায় উচ্চ ঝুঁকি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত এক সপ্তাহের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, ঢাকা ও রাঙ্গামাটির পাশাপাশি আরও ১০ জেলাকে করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এছাড়া মধ্যম ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে ৩২ জেলা। তবে এখন পর্যন্ত ঝুঁকিমুক্ত ১৬ জেলা।
অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১০ জেলা হলো গাজীপুর, রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, বগুড়া, দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, লালমনিরহাট, খাগড়াছড়ি ও পঞ্চগড়। এর মধ্যে গাজীপুরে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৭৯ জন, রাজশাহীতে ৬৭ জন, যশোরে ৭৫ জন, কুষ্টিয়ায় ৪৪ জন, বগুড়ায় ৯৪ জন, দিনাজপুরে ৪৮ জন, রাঙ্গামাটিতে ৪২ জন, লালমনিরহাটে একজন, খাগড়াছড়িতে ২৩ জন ও পঞ্চগড়ে দুইজনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
অধিক সংক্রমিত জেলাগুলোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার যে বিষয়টি বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে বর্তমান যে করোনা ব্যবস্থাপনা, তার প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই। এটি একেবারেই প্রশাসনিক বিষয়। অধিদপ্তরের কর্মপন্থা ঠিক করার জন্য এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়। কোন জেলাকে নির্দিষ্ট করা হয়নি। জেলায় পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের সংখ্যাকে কেন্দ্র করে সাজানো হয়েছে। এই পরিসংখ্যান কোন সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে না।
হাসপাতালে রোগী বাড়েনি দাবি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
করোনা শনাক্ত বাড়লেও হাসপাতালে করোনা রোগী বাড়েনি দাবি করে ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, তবে এতে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বেশি সংক্রমণ হচ্ছে করোনার ওমিক্রন ধরনের। পাশের দেশেও অমিক্রন বেশি ছড়াচ্ছে। সবাইকে স্বাস্থ্য সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘সাধারণত কোন নতুন ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) এলে সেটি পুরোনো ধরনকে প্রতিস্থাপন করে। তবে এখন পর্যন্ত দেশে যে পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে, তাতে করোনার ডেল্টা ধরনই বেশি ছড়াচ্ছে। গত বছর করোনার ডেল্টা ধরনের তান্ডব দেখা গেছে। তাই অসতর্ক হওয়ার সুযোগ নেই।’
একদিনে শনাক্ত ৯ হাজার ৫০০ জন
দেশে এক দিনে ৯ হাজার ৫০০ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে মারা গেছেন ১২ জন। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৪২ হাজার ২৯৪ জনে। তাদের মধ্যে এ পর্যন্ত ২৮ হাজার ১৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে সেরে উঠেছেন ৪৭৩ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৮ জন। মোট শনাক্ত রোগী থেকে মারা যাওয়া ও সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা বাদ দিলে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর (অ্যাক্টিভ কেস) সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৯ হাজার ৮৫০ জন। এই সংখ্যক রোগী এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ৫০ হাজার ৮৪৫ জন। তবে বর্তমানে ‘সিরিয়াস ক্রিটিক্যাল’ বা গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৩৪৯ জন।
২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩৭ হাজার ৮৩০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দাঁড়ালো ২৫ দশমিক ১১ শতাংশে। আগের দিন এই হার ছিল ২৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
তবে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে করোনা শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। শনাক্ত অনুপাতে মৃত্যুর হার এক দশমিক ৭২ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৯৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
একদিনে মৃত্যু হওয়া ১২ জনের মধ্যে পুরুষ ১০ জন এবং নারী দুইজন। তাদের ছয়জন ঢাকা মহানগরীর বাসিন্দা ছিলেন। এছাড়া গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জয়পুরহাট ও হবিগঞ্জে একজন করে কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ছয়জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং বাকি ছয়জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ছিল।