কিশোরগঞ্জ শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া নরসুন্দা নদী এক সময় ছিল প্রবাহমান। বর্ষায় ছিল স্রোতের ধারা। এই নদীপথে আসতো বড় বড় ব্যবসায়ী নৌযান। আসতো যাত্রীবাহী নৌযানও। সত্তরের দশক থেকেই নদীটি মৃত্যুর দিকে ধাবিত হতে থাকে। হয়ে যায় একটি বদ্ধ জলালয়, ঘন কচুরিপানার উর্বর আতুরঘর। কিন্তু এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি আর আন্দোলনের পর নরসুন্দার খনন কাজের সূচনা হয় ২০১২ সালের ২২ নভেম্বর থেকে। তৎকালীন এলজিআরডি মন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের খনন কাজ উদ্বোধনের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজের সূচনা হয়েছিল।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধানে শতকোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ‘কিশোরগঞ্জ জেলার নরসুন্দা নদী পুনর্বাসন ও পৌরসভা সংলগ্ন এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে এই বিশাল কর্মযজ্ঞটি পরিচালনা করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় নদী খনন, কয়েকটি সেতু ও ঘাট, ওয়াকওয়ে, ওয়াচটাওয়ার, শিশুপার্ক ও মুক্তমঞ্চ নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করা হয়। যদিও কাজের মান আর দুর্নীতি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। সরকারের উদ্যোগে গণশুনানি এবং তদন্ত কমিটিও গঠিত হয়েছিল। এই উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে প্রশাসনের উদ্যোগে নদীর দুই পাড়ে বহুতল ভবনসহ বহু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর বেদখল হওয়া প্রচুর জায়গা উদ্ধার করা হয়েছিল।
কিন্তু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও এখন আবার নদীর পাড় কোথাও কোথাও দখল হয়ে যাচ্ছে। কোথাও অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করে নদী পাড়ের লোকেরা জায়গা দখল করে নিচ্ছেন। আবার কোথাও নদীর পাড়ে গাছপালা লাগিয়ে বাগান তৈরি করে বিশাল বিশাল জায়গা দখল করে নিচ্ছেন। অবশ্য ইদানিং আবার অবৈধ দখল উচ্ছেদ কাজে প্রশাসন হাত দিয়েছে। তবে কোথাও কোথাও নদীর ভেতর ময়লা আবর্জনা ফেলে নদীর পরিবেশ বিষিয়ে তোলা হচ্ছে। বিশেষ করে শহরের তিনটি বাজার- বড়বাজার, কাচারি বাজার আর পুরানথানা বাজারের নানা রকম বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে। জবাই করা পশুর বর্জ্য থেকে শুরু করে শাকসবজিসহ পচনশীল পণ্যের বর্জ্য ফেলে সরু হয়ে আসা নদীকে যেন আরও সরু করে দেয়া হচ্ছে। এসব বাজার সংলগ্ন নদীর অংশ যেন এখন ময়লার ভাগাড় বা ডাম্পিং গ্রাউন্ড হয়ে গেছে।
অথচ এই নদী পথে এক সময় দক্ষিণ দিকে সদর ও কটিয়াদী উপজেলার সীমান্তরেখা হিসেবে পরিচিত ধুলদিয়া এলাকার সিংগুয়া নদী হয়ে বড় বড় নৌযান জেলা শহরের যাতায়াত করত। আবার পূর্বদিক থেকে করিমগঞ্জ হয়েও নৌযান যাতায়াত করতো।
এই দৃশ্য এখন কেবল মধ্য বয়সীদের স্মৃতি। আর নতুন প্রজন্ম নদীর বর্তমান চেহারা দেখে এসব স্মৃতিকথা বিশ্বাসই করতে চায় না।
রোববার, ২৩ জানুয়ারী ২০২২
কিশোরগঞ্জ শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া নরসুন্দা নদী এক সময় ছিল প্রবাহমান। বর্ষায় ছিল স্রোতের ধারা। এই নদীপথে আসতো বড় বড় ব্যবসায়ী নৌযান। আসতো যাত্রীবাহী নৌযানও। সত্তরের দশক থেকেই নদীটি মৃত্যুর দিকে ধাবিত হতে থাকে। হয়ে যায় একটি বদ্ধ জলালয়, ঘন কচুরিপানার উর্বর আতুরঘর। কিন্তু এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি আর আন্দোলনের পর নরসুন্দার খনন কাজের সূচনা হয় ২০১২ সালের ২২ নভেম্বর থেকে। তৎকালীন এলজিআরডি মন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের খনন কাজ উদ্বোধনের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজের সূচনা হয়েছিল।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধানে শতকোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ‘কিশোরগঞ্জ জেলার নরসুন্দা নদী পুনর্বাসন ও পৌরসভা সংলগ্ন এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে এই বিশাল কর্মযজ্ঞটি পরিচালনা করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় নদী খনন, কয়েকটি সেতু ও ঘাট, ওয়াকওয়ে, ওয়াচটাওয়ার, শিশুপার্ক ও মুক্তমঞ্চ নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করা হয়। যদিও কাজের মান আর দুর্নীতি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। সরকারের উদ্যোগে গণশুনানি এবং তদন্ত কমিটিও গঠিত হয়েছিল। এই উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে প্রশাসনের উদ্যোগে নদীর দুই পাড়ে বহুতল ভবনসহ বহু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর বেদখল হওয়া প্রচুর জায়গা উদ্ধার করা হয়েছিল।
কিন্তু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও এখন আবার নদীর পাড় কোথাও কোথাও দখল হয়ে যাচ্ছে। কোথাও অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করে নদী পাড়ের লোকেরা জায়গা দখল করে নিচ্ছেন। আবার কোথাও নদীর পাড়ে গাছপালা লাগিয়ে বাগান তৈরি করে বিশাল বিশাল জায়গা দখল করে নিচ্ছেন। অবশ্য ইদানিং আবার অবৈধ দখল উচ্ছেদ কাজে প্রশাসন হাত দিয়েছে। তবে কোথাও কোথাও নদীর ভেতর ময়লা আবর্জনা ফেলে নদীর পরিবেশ বিষিয়ে তোলা হচ্ছে। বিশেষ করে শহরের তিনটি বাজার- বড়বাজার, কাচারি বাজার আর পুরানথানা বাজারের নানা রকম বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে। জবাই করা পশুর বর্জ্য থেকে শুরু করে শাকসবজিসহ পচনশীল পণ্যের বর্জ্য ফেলে সরু হয়ে আসা নদীকে যেন আরও সরু করে দেয়া হচ্ছে। এসব বাজার সংলগ্ন নদীর অংশ যেন এখন ময়লার ভাগাড় বা ডাম্পিং গ্রাউন্ড হয়ে গেছে।
অথচ এই নদী পথে এক সময় দক্ষিণ দিকে সদর ও কটিয়াদী উপজেলার সীমান্তরেখা হিসেবে পরিচিত ধুলদিয়া এলাকার সিংগুয়া নদী হয়ে বড় বড় নৌযান জেলা শহরের যাতায়াত করত। আবার পূর্বদিক থেকে করিমগঞ্জ হয়েও নৌযান যাতায়াত করতো।
এই দৃশ্য এখন কেবল মধ্য বয়সীদের স্মৃতি। আর নতুন প্রজন্ম নদীর বর্তমান চেহারা দেখে এসব স্মৃতিকথা বিশ্বাসই করতে চায় না।