ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ
ফরিদপুরে এক সরকারি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হাসপাতালে বসে ক্লিনিকে রোগী পাঠিয়ে ভুল অস্ত্রপচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) লিখিত আকারে এ অভিযোগটি দেওয়া হয় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমানকে।
লিখিত এ অভিযোগ করেছেন রাজবাড়ী সদরের নিমতলা এলাকার বাসিন্দা মো. মান্নান বেপারি। মান্নান বেপারি স্থানীয় একটি ইট ভাটার শ্রমিক।
তিনি লিখিত অভিযোগ করেছেন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের মেডিকেল কর্মকর্তা উৎপল নাগের বিরুদ্ধে।
তিনি জানান, তার স্ত্রী হাসনা বেগমের (৩৯) পেটে ব্যথার কারণে গত ২২ ডিসেম্বর ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ টাকার টিকিট কেটে আউটডোরে গাইনি বিভাগের চিকিৎসককে দেখান।
গাইনি চিকিৎসক রোগীকে সার্জারি চিকিৎসক উৎপল নাগ এর কাছে পাঠান। উৎপল নাগ তার স্ত্রীকে দেখে বলেন, আপনার স্ত্রীকে দ্রুত অপারেশন না করলে ওনাকে বাঁচানো যাবে না। এই হাসপাতালে অপারেশন করতে অনেকদিন অপেক্ষা করতে হয়, তাছাড়াও এই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা তেমন ভালো না। আপনার স্ত্রীকে বাঁচাতে হলে আপনারা এখনি পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত ফরিদপুর পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চলে যান। আমি একটু পরেই ওই হাসপাতালে আসব।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, উৎপল নাগের কথামত তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে ফরিদপুর পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে তার স্ত্রীর তিনটি পরীক্ষা করা হয়। উৎপল নাগ পিয়ারলেস হাসপাতালে গিয়ে সন্ধ্যা ৬টার সময় তার স্ত্রীর এপেন্ডিক্স অপারেশন করবেন বলে জানান। তিনি (মান্নান ব্যাপারী) বাড়িতে গিয়ে নগদ টাকা, কাঁথা, বালিশ নিয়ে ৬টার আগেই হাসপাতালে এসে দেখে তার স্ত্রীর অপারেশন করা হয়ে গেছে। এই অপারেশন বাবদ চিকিৎসক উৎপল নাগ তার কাছ থেকে ২৬ হাজার টাকা নিয়েছেন। অপারেশনের ৪ দিন পর হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়ার সময় তার স্ত্রীর সেলাই কেটে ড্রেসিং শুরু করেন। ঠিক তখন মল নালি দিয়ে মল বেড়োতে শুরু করে। লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, বিষয়টি উৎপল নাগকে জানানোর পর তিনি বলেন এই সমস্যার চিকিৎসা করতে আরও এক লাখ টাকা লাগবে।
এরপর মান্নান ব্যাপারি তার স্ত্রীকে নিয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তার স্ত্রী এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে। মান্নান বেপারি লিখিত ওই অভিযোগে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অর্থলোভী চিকিৎসক উৎপল নাগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। এ ব্যাপারে উৎপল নাগ বলেন, ওই রোগীকে প্রথমে স্থানীয় পর্যায়ে তুক-তাক, ঝাড়-ফুঁক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয়। রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ফরিদপুর নিয়ে আসা হয়।
তিনি বলেন, ফরিদপুরে আনার আগেই এপেন্ডিক্স ফেটে যায়, ফলে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ায় দ্রুত অস্ত্রপচার করা হয়। তিনি বলেন, অস্ত্রপচারে কোন সমস্যা হয়নি। তবে মলবাহিত নালির সাথে এপেন্ডিক্স লেগে থাকলে এসব রোগীর খেতে নালিতে কিছু ছিদ্র তৈরি হয়। তবে এ ছিদ্র কিছু দিনের মধ্যেই জোড়া লেগে যায়। তিনি বলেন, রোগী ভালো আছে এবং তিনি দ্রুত উন্নতির পথে রয়েছেন।
ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে এ অস্ত্রপচার করা সম্ভব ছিল মন্তব্য করে চিকিৎসক উৎপল নাগ বলেন, প্রথমত রোগীর অবস্থা গুরুতর ছিল এবং দ্বিতীয়ত রোগীর পরিবারও দেরি করতে রাজি হচ্ছিল না। জানতে চাইলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, গত ২৫ দিন ধরে ওই রোগী ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। রোগী আরোগ্যের পথে রয়েছে। তিনি বলেন, চিকিৎসক উৎপল নাগের ব্যাপারে একটি অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত করা হবে। তিনি বলেন, উৎপল নাগের কাছে জানতে চাওয়া হবে তিনি কেন মেডিকেল আসা রোগীর চিকিৎসা বাইরের ক্লিনিকে গিয়ে অস্ত্রপচার করলেন।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ
বুধবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২২
ফরিদপুরে এক সরকারি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হাসপাতালে বসে ক্লিনিকে রোগী পাঠিয়ে ভুল অস্ত্রপচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) লিখিত আকারে এ অভিযোগটি দেওয়া হয় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমানকে।
লিখিত এ অভিযোগ করেছেন রাজবাড়ী সদরের নিমতলা এলাকার বাসিন্দা মো. মান্নান বেপারি। মান্নান বেপারি স্থানীয় একটি ইট ভাটার শ্রমিক।
তিনি লিখিত অভিযোগ করেছেন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের মেডিকেল কর্মকর্তা উৎপল নাগের বিরুদ্ধে।
তিনি জানান, তার স্ত্রী হাসনা বেগমের (৩৯) পেটে ব্যথার কারণে গত ২২ ডিসেম্বর ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ টাকার টিকিট কেটে আউটডোরে গাইনি বিভাগের চিকিৎসককে দেখান।
গাইনি চিকিৎসক রোগীকে সার্জারি চিকিৎসক উৎপল নাগ এর কাছে পাঠান। উৎপল নাগ তার স্ত্রীকে দেখে বলেন, আপনার স্ত্রীকে দ্রুত অপারেশন না করলে ওনাকে বাঁচানো যাবে না। এই হাসপাতালে অপারেশন করতে অনেকদিন অপেক্ষা করতে হয়, তাছাড়াও এই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা তেমন ভালো না। আপনার স্ত্রীকে বাঁচাতে হলে আপনারা এখনি পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত ফরিদপুর পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চলে যান। আমি একটু পরেই ওই হাসপাতালে আসব।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, উৎপল নাগের কথামত তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে ফরিদপুর পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে তার স্ত্রীর তিনটি পরীক্ষা করা হয়। উৎপল নাগ পিয়ারলেস হাসপাতালে গিয়ে সন্ধ্যা ৬টার সময় তার স্ত্রীর এপেন্ডিক্স অপারেশন করবেন বলে জানান। তিনি (মান্নান ব্যাপারী) বাড়িতে গিয়ে নগদ টাকা, কাঁথা, বালিশ নিয়ে ৬টার আগেই হাসপাতালে এসে দেখে তার স্ত্রীর অপারেশন করা হয়ে গেছে। এই অপারেশন বাবদ চিকিৎসক উৎপল নাগ তার কাছ থেকে ২৬ হাজার টাকা নিয়েছেন। অপারেশনের ৪ দিন পর হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়ার সময় তার স্ত্রীর সেলাই কেটে ড্রেসিং শুরু করেন। ঠিক তখন মল নালি দিয়ে মল বেড়োতে শুরু করে। লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, বিষয়টি উৎপল নাগকে জানানোর পর তিনি বলেন এই সমস্যার চিকিৎসা করতে আরও এক লাখ টাকা লাগবে।
এরপর মান্নান ব্যাপারি তার স্ত্রীকে নিয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তার স্ত্রী এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে। মান্নান বেপারি লিখিত ওই অভিযোগে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অর্থলোভী চিকিৎসক উৎপল নাগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। এ ব্যাপারে উৎপল নাগ বলেন, ওই রোগীকে প্রথমে স্থানীয় পর্যায়ে তুক-তাক, ঝাড়-ফুঁক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয়। রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ফরিদপুর নিয়ে আসা হয়।
তিনি বলেন, ফরিদপুরে আনার আগেই এপেন্ডিক্স ফেটে যায়, ফলে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ায় দ্রুত অস্ত্রপচার করা হয়। তিনি বলেন, অস্ত্রপচারে কোন সমস্যা হয়নি। তবে মলবাহিত নালির সাথে এপেন্ডিক্স লেগে থাকলে এসব রোগীর খেতে নালিতে কিছু ছিদ্র তৈরি হয়। তবে এ ছিদ্র কিছু দিনের মধ্যেই জোড়া লেগে যায়। তিনি বলেন, রোগী ভালো আছে এবং তিনি দ্রুত উন্নতির পথে রয়েছেন।
ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে এ অস্ত্রপচার করা সম্ভব ছিল মন্তব্য করে চিকিৎসক উৎপল নাগ বলেন, প্রথমত রোগীর অবস্থা গুরুতর ছিল এবং দ্বিতীয়ত রোগীর পরিবারও দেরি করতে রাজি হচ্ছিল না। জানতে চাইলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, গত ২৫ দিন ধরে ওই রোগী ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। রোগী আরোগ্যের পথে রয়েছে। তিনি বলেন, চিকিৎসক উৎপল নাগের ব্যাপারে একটি অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত করা হবে। তিনি বলেন, উৎপল নাগের কাছে জানতে চাওয়া হবে তিনি কেন মেডিকেল আসা রোগীর চিকিৎসা বাইরের ক্লিনিকে গিয়ে অস্ত্রপচার করলেন।