নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে পাড়া-মহল্লাসহ পুরো শহরকে পরিচ্ছন্ন না করলে ডেঙ্গুজ্বরের বাহক এডিশ মশার উপদ্রব কমবে না। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন ও থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গুজ্বরের বাহক এডিশ মশা ব্যাপক হারে বাড়ছে।
পার্শ্ববর্তী দেশের কলকাতা, ম্যানিলা ও জাকার্তাসহ অনেক দেশে এডিশ মশা দমনে সবাই মিলে শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছে। তাদের দেশে সফল হয়েছে। বাংলাদেশে শুধু সিটি করপোরেশনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। গণআন্দোলনের মতো সবাই মিলে শহর এডিশ মশামুক্ত করতে হবে। তাহলেই মশার উপদ্রব কমবে, না হয় এটাও মহামারী আকার ধারণ করার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সংবাদকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তার মতে, এখন শহর থেকে উপজেলা পর্যন্ত ফাঁকা রাস্তা ও নির্মাণাধীন দালানের কাজ হচ্ছে। সেখানে এ কারণে এডিশ মশার প্রজনন ও লার্ভা সৃষ্টি হচ্ছে। সেই লার্ভা থেকে পূর্ণাঙ্গ মশা জন্মে মানুষকে কামড় দেয়। এতে মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়।
অন্যদিকে কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ খলিলুর রহমানের মতে, নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের জমে থাকা পানি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করলে অবস্থার উন্নতি হবে না। পরিত্যক্ত ডাবের খোসা, টিনের কোটা, কন্টেইনার, বালতিসহ সবকিছু পরিষ্কার করতে হবে। আর সিটি করপোরেশনকে এডিশ মশা দমনে আরও কাজ করতে হবে। কেউ গাফিলতি করলে আর মশা দমন না করলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মশা দমনে উন্নতি করলে ও আমাদের দেশে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। তারপরও মানুষের মধ্যে মশা দমনে জনসচেতনতা তেমন বাড়েনি। সচেতনতা না বাড়ালে পরিস্থিতির অবনতি হতেই থাকবে। এখনই বহুতল ভবনসহ যেখানে এডিশ মশার প্রজননস্থল আছে, সেখানে লার্ভা ধ্বংস করা জরুরি। না হয় বর্তমান পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছে।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। যার কারণে হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন রোগীর ভিড় বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৬৩৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে এখনও দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ভর্তি আছে ২ হাজার ৩৩ জন। তার মধ্যে ঢাকার ৫০টি হাসপাতালে ভর্তি আছে ১৭৭১ জন। আর ঢাকার বাইরে ৫৬২ জন।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অ্যান্ড অপারেশন সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে শুধু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৯ হাজার ২৮৩ জন। ঢাকায় ১৪ হাজার ৫৪৬ জন ও ঢাকার বাইরে ৪ হাজার ৭৩৭ জন।
চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছে ১৬ হাজার ৮৮৭ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৬৩ জন। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে।
হাসপাতালের তথ্য মতে, আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ২৮ জন, শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ১৯ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪১ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৩ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ২৫ জন, কামরাঙ্গীরচর হাসপাতালে ৩০ জন ভর্তি হয়েছে।
অন্যদিকে ফরিদপুরে ১০ জন, গাজীপুরে ৬ জন, চট্টগ্রামে ২০ জন, কক্সবাজারে ২৬ জন, ফেনীতে ২ জন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮ জন ভর্তি হয়েছে। যশোরে ১২ জন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১১ জন, রাজশাহীতে ৪ জন ভর্তি হয়েছে।
মাসিক তথ্যে চলতি মাসের গত ৬ দিনে মোট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩ হাজার ১৯১ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৮ জন। এভাবে গত জুলাই মাস থেকে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে।
বৃহস্পতিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২২
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে পাড়া-মহল্লাসহ পুরো শহরকে পরিচ্ছন্ন না করলে ডেঙ্গুজ্বরের বাহক এডিশ মশার উপদ্রব কমবে না। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন ও থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গুজ্বরের বাহক এডিশ মশা ব্যাপক হারে বাড়ছে।
পার্শ্ববর্তী দেশের কলকাতা, ম্যানিলা ও জাকার্তাসহ অনেক দেশে এডিশ মশা দমনে সবাই মিলে শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছে। তাদের দেশে সফল হয়েছে। বাংলাদেশে শুধু সিটি করপোরেশনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। গণআন্দোলনের মতো সবাই মিলে শহর এডিশ মশামুক্ত করতে হবে। তাহলেই মশার উপদ্রব কমবে, না হয় এটাও মহামারী আকার ধারণ করার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সংবাদকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তার মতে, এখন শহর থেকে উপজেলা পর্যন্ত ফাঁকা রাস্তা ও নির্মাণাধীন দালানের কাজ হচ্ছে। সেখানে এ কারণে এডিশ মশার প্রজনন ও লার্ভা সৃষ্টি হচ্ছে। সেই লার্ভা থেকে পূর্ণাঙ্গ মশা জন্মে মানুষকে কামড় দেয়। এতে মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়।
অন্যদিকে কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ খলিলুর রহমানের মতে, নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের জমে থাকা পানি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করলে অবস্থার উন্নতি হবে না। পরিত্যক্ত ডাবের খোসা, টিনের কোটা, কন্টেইনার, বালতিসহ সবকিছু পরিষ্কার করতে হবে। আর সিটি করপোরেশনকে এডিশ মশা দমনে আরও কাজ করতে হবে। কেউ গাফিলতি করলে আর মশা দমন না করলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মশা দমনে উন্নতি করলে ও আমাদের দেশে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। তারপরও মানুষের মধ্যে মশা দমনে জনসচেতনতা তেমন বাড়েনি। সচেতনতা না বাড়ালে পরিস্থিতির অবনতি হতেই থাকবে। এখনই বহুতল ভবনসহ যেখানে এডিশ মশার প্রজননস্থল আছে, সেখানে লার্ভা ধ্বংস করা জরুরি। না হয় বর্তমান পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছে।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। যার কারণে হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন রোগীর ভিড় বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৬৩৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে এখনও দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ভর্তি আছে ২ হাজার ৩৩ জন। তার মধ্যে ঢাকার ৫০টি হাসপাতালে ভর্তি আছে ১৭৭১ জন। আর ঢাকার বাইরে ৫৬২ জন।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অ্যান্ড অপারেশন সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে শুধু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৯ হাজার ২৮৩ জন। ঢাকায় ১৪ হাজার ৫৪৬ জন ও ঢাকার বাইরে ৪ হাজার ৭৩৭ জন।
চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছে ১৬ হাজার ৮৮৭ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৬৩ জন। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে।
হাসপাতালের তথ্য মতে, আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ২৮ জন, শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ১৯ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪১ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৩ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ২৫ জন, কামরাঙ্গীরচর হাসপাতালে ৩০ জন ভর্তি হয়েছে।
অন্যদিকে ফরিদপুরে ১০ জন, গাজীপুরে ৬ জন, চট্টগ্রামে ২০ জন, কক্সবাজারে ২৬ জন, ফেনীতে ২ জন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮ জন ভর্তি হয়েছে। যশোরে ১২ জন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১১ জন, রাজশাহীতে ৪ জন ভর্তি হয়েছে।
মাসিক তথ্যে চলতি মাসের গত ৬ দিনে মোট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩ হাজার ১৯১ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৮ জন। এভাবে গত জুলাই মাস থেকে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে।