alt

সারাদেশ

যমুনার ভাঙনে নিঃস্ব শতাধিক পরিবার

রফিকুল ইসলাম, শিবালয় (মানিকগঞ্জ) : বৃহস্পতিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

শিবালয়ে বিগত এক বছরে যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের শতাধিক পরিবার জমিজমা, ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। নদীতে পানি কমা এবং বাড়ার সময় এ নদী ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিবছরই নদী ভাঙন দেখা দেয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করার ফলে প্রতিবছরই নদী ভাঙনের শিকার হন এসব অঞ্চলের লোকজন। এমতাবস্থায় নদী ভাঙনরোধে নদীর পাড় দিয়ে স্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণ অতিব জরুরি হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

শিবালয় মডেল ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়া, মধ্যনগর, ত্রিশুন্ডি, চর বৈষ্টমী ও চরশিবালয়ের এক অংশের কয়েকশ’ পরিবার নদী ভাঙনের কবলে তাদের ভিটে-মাটি হারিয়েছেন। এরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নতুন করে বসতি স্থাপন করেছেন। ভুক্তভোগীদের অনেকেই জমিজমা হারিয়ে রাস্তার ধারে বা অন্যের জমিতে বসতি স্থাপন এবং দিন মজুরি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনরকমে সংসার পরিচালনা করছেন। তাদের জীবন-যাপন অতিবাহিত হচ্ছে অতিকষ্টে।

এছাড়া নদী ভাঙনের কারণে চরম হুমকির মুখে পড়েছেন আরিচা ঘাট সংলগ্ন দক্ষিণ শিবালয়, অন্বয়পুর, এলাচীপুর ও আনুলিয়ার কয়েকশ’ পরিবার। বিগত বর্ষায় ওই গ্রামের নদীর পাড় এলাকার বেশ কিছু অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

ইতোমধ্যে নদী ভাঙন রোধে ভুক্তভোগী গ্রামবাসী এবং ৩নং শিবালয় মডেল ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের সঙ্গে দেখা করে এসব ব্যাপারে কথা বলেছেন এবং ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।

কয়েকদিন যাবত সরেজমিন নদী ভাঙনকবলিত আলোকদিয়া, মধ্যনগর ও ত্রিশুন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার উল্লিখিত গ্রামের কয়েকশ পরিবার নদী ভাঙনে তাদের ভিটে-বাড়ি হারিয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায় টং ঘর করে আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া মধ্যনগর এলকার রুস্তম হাউলাদার হাইস্কুল, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এদিকে উপজেলার দক্ষিণ শিবালয়, এলাচিপুর, নিহালপুর, ঝড়িয়ারবাগ, অন্বয়পুর এলাকার নদী পারের বাড়িঘর এবং ফসলি জমি বিগত বর্ষা থেকেই তীব্র নদী ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে। গত বর্ষায় এসব গ্রামের নদীর পাড় এলাকায় বিশাল পাড়ালের (খাড়া ঢাল) সৃষ্টি হয়ে ভয়াবহ অবস্থায় রয়েছে।

ভাঙনকবলিত এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুস্ক মৌসুমে নদীর পার এলাকায় অবৈধ ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা, নদীর মাঝে কাটার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু মাটি কাটা এবং ভাঙনকবলিত এলাকার অদূরে পশ্চিমে ও উত্তরে নদীর মাঝে চর পরা এবং বর্ষার সময় পানির স্রোতে নদী পার এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যায়। ইতোমধ্যে স্থানীয় অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আরিচা ঘাট থেকে নদীর পার দিয়ে দক্ষিণ শিবালয়ের রাস্তাটির অর্ধেক অংশ ইতোমধ্যেই নদীতে চলে গেছে। একই সঙ্গে পাকা কবরসহ অনেক স্থাপনাই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

যমুনার পারে অবস্থিত দক্ষিণ শিবালয় জামে মসজিদ, আরিচার পিসিপোল কারখানা, কাশাদহ সেচ প্রকল্পের পানির পাম্প হাউজ মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে। দ্রুত ভাঙন রোধ করা না হলে এসব স্থাপনা যেকোন সময় নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

যার মধ্যে সরকারের কয়েকশ’ কোটি টাকার পোল কারখানাও রয়েছে। নদীর পার এলাকা দীর্ঘদিন যাবত প্রতি বছরই বর্ষায় এবং শুষ্ক মৌসুমে সীমিত আকারে ভাঙনের শিকার হয়। বর্ষায় পানি বাড়ার সময় এবং শুষ্ক মৌসুমে পানি কমার সময় যেভাবে নদী ভাঙন শুরু হয় তা বিগত ৫০ বছরেও দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন ভাঙনের শিকার আমির চান, লোকমান, ইউনুস মাতব্বর, সন্তোষ মোল্লা, মোতালেব ও মঞ্জু মেম্বারসহ শতাধিক গ্রামবাসী।

বর্ষার সময় নদী ভাঙনের কারণে এ এলাকার লোকজন এখন চরম আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছেন। এসব ভাঙনকবলিত নদীপাড় এলাকায় নদী শাসন করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলে হয়তো নদী ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। তা না হলে পূর্বপুরুষের ভিটেবাড়ি, জায়গাজমি সব নদীতে বিলীন হয়ে যাবে বলে জানালেন ভিটেহারা আমির চান মোল্লা। তিনি আরও বললেন, এমন হলে অবশেষে গৃহহীন হয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিয়ে বসবাস করতে হবে। এমতাবস্থায় আরিচা ঘাট সংলগ্ন নিহালপুর এলাকা হতে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত নদী ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও নদী শাসনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় অধিবাসীরা। নদী ভাঙন রোধে ভাঙনকবলিত এলাকাবাসী এবং শিবালয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সংসদ সদস্য মানিকগঞ্জ-১ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

দক্ষিণ শিবালয় গ্রামের বাসিন্দা ও তেওতা একাডেমির প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, নদীর মাঝে চর পড়ার কারণে পানির স্রোতে পাড় এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় আমাদের এ গ্রামটিতে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু বাড়ি-ঘর, পাকা কবর ও আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের কাছে আমাদের আকুল আবেদন অতি দ্রুত এই ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, আমরা শিবালয়ের বিভিন্ন স্থানে জিও ব্যাগ দিয়ে সাময়িকভাবে ভাঙন রোধ করেছি। স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে আমাদের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

ছবি

সরকারি কলেজে আসবাব কেনায় একাট্টা আ’লীগ বিএনপি ঠিকাদাররা

ছবি

পায়রা এখন দেশের গভীরতম সমুদ্রবন্দর

ছবি

নওগাঁয় র‌্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের

ছবি

আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে, ৬ বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টির আশঙ্কা

ছবি

দুর্নীতিমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়

ছবি

সখীপুরে বিদ‍্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

ছবি

সিলেটে ভূমি জটিলতায় আটকে আছে বধ্যভূমি সংরক্ষণ কাজ

ছবি

কোমরে পিস্তল গুঁজে ফেসবুকে ছবি দেওয়া সেই ছাত্রলীগ নেতা আটক

ছবি

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় বজ্রপাতে নিহত ৩

ছবি

আখাউড়ায় বিজিবি- বিএসএফের যৌথ রিট্রিট সিরিমনি অনুষ্ঠিত

ছবি

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

ছবি

নেত্রকোণায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গুলি

ছবি

চট্টগ্রামে ২৪ চোরাই মোটরসাইকেলসহ গ্রেপ্তার ৫

ছবি

গাড়িতে বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধারের ঘটনায় সেই দম্পতির নামে মামলা

ছবি

ওমরাহ শেষে ফেরার পথে প্রাণ গেল ২ বাংলাদেশির

ছবি

চট্টগ্রামে স্বাধীনতা দিবসে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ

ছবি

খালার জানাযা শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুইভাই নিহত

ছবি

রমজান ও গরমে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগ

কুমিল্লায় ৩ নারী মাদকপাচারকারী গ্রেপ্তার

ছবি

সড়কের কাজ ফেলে রাখায় ২০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

বেনাপোল বন্দরে ৮ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৫৬ কোটি টাকা

শৈলকূপায় ৩৭৯ পরিবার পেল ৩৪ লাখ টাকা অনুদান

বাঘইল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৮ শিক্ষক কর্মচারীকে শোকজ

ছবি

খুলনায় ফুটপাত দখল করে ব্যবসা, দুর্ভোগে পথচারী

ছবি

লাখাইয়ে ব্রি-২৮ ধানে চিটা কপাল পুড়ল কৃষকের

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত

হবিগঞ্জে ২০ হাজার টাকার জন্য যুবককে হত্যা, ঘাতক আটক

পাথরঘাটায় ডাল খেতে বিষ প্রয়োগ করল প্রতিপক্ষ

ছবি

কাল ২৬ মার্চ, প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ

ছবি

রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এমডির গাড়ি চালকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

থানচিতে আগুনে পুড়ল ৪৫ দোকান

ছবি

রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এমডির গাড়ি চালকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

সাতক্ষীরায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক তরুণ নিহত, আহত ২

ছবি

শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানসহ ২০-২২ জন আসামি হতে পারে

বিমানের সার্ভার হ্যাক : ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলছেন ছোট ঝামেলা, পুুরো খবর ভুয়া

ছবি

নারায়ণগঞ্জে ওএমএসের চাল বিতরণ না করে রেখে দিলেন কাউন্সিলর

tab

সারাদেশ

যমুনার ভাঙনে নিঃস্ব শতাধিক পরিবার

রফিকুল ইসলাম, শিবালয় (মানিকগঞ্জ)

বৃহস্পতিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

শিবালয়ে বিগত এক বছরে যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের শতাধিক পরিবার জমিজমা, ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। নদীতে পানি কমা এবং বাড়ার সময় এ নদী ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিবছরই নদী ভাঙন দেখা দেয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করার ফলে প্রতিবছরই নদী ভাঙনের শিকার হন এসব অঞ্চলের লোকজন। এমতাবস্থায় নদী ভাঙনরোধে নদীর পাড় দিয়ে স্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণ অতিব জরুরি হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

শিবালয় মডেল ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়া, মধ্যনগর, ত্রিশুন্ডি, চর বৈষ্টমী ও চরশিবালয়ের এক অংশের কয়েকশ’ পরিবার নদী ভাঙনের কবলে তাদের ভিটে-মাটি হারিয়েছেন। এরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নতুন করে বসতি স্থাপন করেছেন। ভুক্তভোগীদের অনেকেই জমিজমা হারিয়ে রাস্তার ধারে বা অন্যের জমিতে বসতি স্থাপন এবং দিন মজুরি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনরকমে সংসার পরিচালনা করছেন। তাদের জীবন-যাপন অতিবাহিত হচ্ছে অতিকষ্টে।

এছাড়া নদী ভাঙনের কারণে চরম হুমকির মুখে পড়েছেন আরিচা ঘাট সংলগ্ন দক্ষিণ শিবালয়, অন্বয়পুর, এলাচীপুর ও আনুলিয়ার কয়েকশ’ পরিবার। বিগত বর্ষায় ওই গ্রামের নদীর পাড় এলাকার বেশ কিছু অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

ইতোমধ্যে নদী ভাঙন রোধে ভুক্তভোগী গ্রামবাসী এবং ৩নং শিবালয় মডেল ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের সঙ্গে দেখা করে এসব ব্যাপারে কথা বলেছেন এবং ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।

কয়েকদিন যাবত সরেজমিন নদী ভাঙনকবলিত আলোকদিয়া, মধ্যনগর ও ত্রিশুন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার উল্লিখিত গ্রামের কয়েকশ পরিবার নদী ভাঙনে তাদের ভিটে-বাড়ি হারিয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায় টং ঘর করে আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া মধ্যনগর এলকার রুস্তম হাউলাদার হাইস্কুল, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এদিকে উপজেলার দক্ষিণ শিবালয়, এলাচিপুর, নিহালপুর, ঝড়িয়ারবাগ, অন্বয়পুর এলাকার নদী পারের বাড়িঘর এবং ফসলি জমি বিগত বর্ষা থেকেই তীব্র নদী ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে। গত বর্ষায় এসব গ্রামের নদীর পাড় এলাকায় বিশাল পাড়ালের (খাড়া ঢাল) সৃষ্টি হয়ে ভয়াবহ অবস্থায় রয়েছে।

ভাঙনকবলিত এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুস্ক মৌসুমে নদীর পার এলাকায় অবৈধ ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা, নদীর মাঝে কাটার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু মাটি কাটা এবং ভাঙনকবলিত এলাকার অদূরে পশ্চিমে ও উত্তরে নদীর মাঝে চর পরা এবং বর্ষার সময় পানির স্রোতে নদী পার এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যায়। ইতোমধ্যে স্থানীয় অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আরিচা ঘাট থেকে নদীর পার দিয়ে দক্ষিণ শিবালয়ের রাস্তাটির অর্ধেক অংশ ইতোমধ্যেই নদীতে চলে গেছে। একই সঙ্গে পাকা কবরসহ অনেক স্থাপনাই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

যমুনার পারে অবস্থিত দক্ষিণ শিবালয় জামে মসজিদ, আরিচার পিসিপোল কারখানা, কাশাদহ সেচ প্রকল্পের পানির পাম্প হাউজ মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে। দ্রুত ভাঙন রোধ করা না হলে এসব স্থাপনা যেকোন সময় নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

যার মধ্যে সরকারের কয়েকশ’ কোটি টাকার পোল কারখানাও রয়েছে। নদীর পার এলাকা দীর্ঘদিন যাবত প্রতি বছরই বর্ষায় এবং শুষ্ক মৌসুমে সীমিত আকারে ভাঙনের শিকার হয়। বর্ষায় পানি বাড়ার সময় এবং শুষ্ক মৌসুমে পানি কমার সময় যেভাবে নদী ভাঙন শুরু হয় তা বিগত ৫০ বছরেও দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন ভাঙনের শিকার আমির চান, লোকমান, ইউনুস মাতব্বর, সন্তোষ মোল্লা, মোতালেব ও মঞ্জু মেম্বারসহ শতাধিক গ্রামবাসী।

বর্ষার সময় নদী ভাঙনের কারণে এ এলাকার লোকজন এখন চরম আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছেন। এসব ভাঙনকবলিত নদীপাড় এলাকায় নদী শাসন করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলে হয়তো নদী ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। তা না হলে পূর্বপুরুষের ভিটেবাড়ি, জায়গাজমি সব নদীতে বিলীন হয়ে যাবে বলে জানালেন ভিটেহারা আমির চান মোল্লা। তিনি আরও বললেন, এমন হলে অবশেষে গৃহহীন হয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিয়ে বসবাস করতে হবে। এমতাবস্থায় আরিচা ঘাট সংলগ্ন নিহালপুর এলাকা হতে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত নদী ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও নদী শাসনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় অধিবাসীরা। নদী ভাঙন রোধে ভাঙনকবলিত এলাকাবাসী এবং শিবালয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সংসদ সদস্য মানিকগঞ্জ-১ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

দক্ষিণ শিবালয় গ্রামের বাসিন্দা ও তেওতা একাডেমির প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, নদীর মাঝে চর পড়ার কারণে পানির স্রোতে পাড় এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় আমাদের এ গ্রামটিতে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু বাড়ি-ঘর, পাকা কবর ও আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের কাছে আমাদের আকুল আবেদন অতি দ্রুত এই ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, আমরা শিবালয়ের বিভিন্ন স্থানে জিও ব্যাগ দিয়ে সাময়িকভাবে ভাঙন রোধ করেছি। স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে আমাদের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

back to top