রংপুরের ডিসিকে স্যার বলতে বাধ্য করার প্রতিবাদ
রংপুরের জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীনকে ‘স্যার’ ডাকতে বাধ্য করার অভিযোগ তুলেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক উমর ফারুখ। এর প্রতিবাদে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কন্যাসহ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ নিয়ে বুধবার সন্ধা থেকে রাত সাড়ে ৯টা সাড়ে তিনঘন্টা তুলকালাম কান্ড ঘটে। এ ঘটনা জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো নগরীতে তোলপাড় শুরু হয়। মহুর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। ছুটে আসেন সহকর্মী শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক নিজেই এসে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে জেলা প্রশাসকের মতো দায়িত্বশীল কর্মকর্তার আচরনে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। বৃহসপতিবারও দিনভর ছিলো বিষয়টি টক অব দ্যা টাউন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগি বেরোবির অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উমর ফারুখ জানান, আমি বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীনের সাথে দেখা করতে তার দপ্তরে যাই একটি স্কুলের বিষয়ে। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম চলা কালে রংপুরের প্রথম শহীদ শংকু সমজদারের নামে প্লেগ্রুপ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলটি গত তিন বছর থেকে পরিচালনা করে আসছি। সেই স্কুলের কাজে গিয়েছিলাম।
শিক্ষক উমর ফারুখের অভিযোগ, জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলার সময় তাকে আপা বলে সম্বোধন করায় জেলা প্রশাসক চিত্র লেখা নাজনীন তাকে স্যার সম্বোধন না করায় ক্ষুব্ধ হন। এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক তাকে বলেন আমি নারী না হলে কি বলে সম্বোধন করতেন তখন শিক্ষক ওমর ফারুখ বলেন ভাই বলতাম। এ সময় জেলা প্রশাসক তার চেয়ারের একটা সম্মান আছে অবশ্যই স্যার বলা উচিত। এ সময় এ বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। এ সময় সেখান থেকে বেরিয়ে এসে শিক্ষক উমর ফারুখ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে তার কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এ সময় হাতে নিয়ে থাকা প্লাকার্ডে লেখা ছিলো ‘রংপুরের জেলা প্রশাসক ‘স্যার’ ডাকতে বাধ্য করায় অবস্থান কর্মসূচি।’
বিষয়টি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ছুটে এসে সেই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসক তার চেম্বার থেকে নিচে নেমে এলে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েকজন শিক্ষকও সেখানে উপস্থিত হন।সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শিক্ষক উমর ফর অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে ভবনের দোতলা থেকে জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীন অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়ে নিচে নেমে এসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।
এ সময় সেখানে উপস্থিত শিক্ষার্থীসহ কৌতূহলী মানুষজনের উদ্দেশ্যে অভিযোগকারী শিক্ষক উমর ফারুখ অভিযোগ করে বলেন, জেলা প্রশাসক তাকে স্যার বলে সম্বোধন করতে বাধ্য করেছেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে তিনি এধরনের কথা বলতে পারেননা। এদিকে রাত পৌনে ৯টার দিকে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন এ ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি স্যার সন্মোধন করতে বলিনি। বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি।
এ সময় বেরোবির শিক্ষক সমিতির সভাপতি আসাদ মন্ডল কলা অনুষদের ডীন ড, তুহিন ওয়াদুদ , শিক্ষক আপেল মাহমুদসহ অন্যান্য শিক্ষকরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জেলা প্রশাসকের আচরন দুঃখজনক, একজন জেলা প্রশাসককে কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্যার বলবেন। তবে জেলা প্রশাসক দুঃখ প্রকাশ করায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ঘটনা স্থল ত্যাগ করে চলে যান।
এদিকে এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষক ওমর ফারুখ তার মেয়েকে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্যার বলতে বাধ্য কর ায় অবস্থান কর্মসূচি হাতে লেখা প্লাকার্ড নিয়ে অবস্থানের ছবি ভাইরাল হলে সারা দেশে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। বৃহসপতিবার দিনভর ছিলো বিষয়টি টক অব দ্যা টাউন।
এ ব্যাপারে বেরোবির শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি কলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. তুহিন আহাম্মেদ বলেন সাংবিধানিক ভাবে এবং সরকারী ভাবে আমরা সকলেই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানও স্যার ড্কাার বিপক্ষে ছিলেন। ৩০ লাখ শঞীদের জীবনের বিনিময়ে গড়ে ওঠা বাংলা দেশে একজন কর্মচারীর স্যার হয়ে ওঠার বদলে সেবক হয়ে উঠবেন সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
রংপুরের ডিসিকে স্যার বলতে বাধ্য করার প্রতিবাদ
বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩
রংপুরের জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীনকে ‘স্যার’ ডাকতে বাধ্য করার অভিযোগ তুলেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক উমর ফারুখ। এর প্রতিবাদে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কন্যাসহ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ নিয়ে বুধবার সন্ধা থেকে রাত সাড়ে ৯টা সাড়ে তিনঘন্টা তুলকালাম কান্ড ঘটে। এ ঘটনা জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো নগরীতে তোলপাড় শুরু হয়। মহুর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। ছুটে আসেন সহকর্মী শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক নিজেই এসে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে জেলা প্রশাসকের মতো দায়িত্বশীল কর্মকর্তার আচরনে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। বৃহসপতিবারও দিনভর ছিলো বিষয়টি টক অব দ্যা টাউন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগি বেরোবির অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উমর ফারুখ জানান, আমি বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীনের সাথে দেখা করতে তার দপ্তরে যাই একটি স্কুলের বিষয়ে। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম চলা কালে রংপুরের প্রথম শহীদ শংকু সমজদারের নামে প্লেগ্রুপ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলটি গত তিন বছর থেকে পরিচালনা করে আসছি। সেই স্কুলের কাজে গিয়েছিলাম।
শিক্ষক উমর ফারুখের অভিযোগ, জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলার সময় তাকে আপা বলে সম্বোধন করায় জেলা প্রশাসক চিত্র লেখা নাজনীন তাকে স্যার সম্বোধন না করায় ক্ষুব্ধ হন। এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক তাকে বলেন আমি নারী না হলে কি বলে সম্বোধন করতেন তখন শিক্ষক ওমর ফারুখ বলেন ভাই বলতাম। এ সময় জেলা প্রশাসক তার চেয়ারের একটা সম্মান আছে অবশ্যই স্যার বলা উচিত। এ সময় এ বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। এ সময় সেখান থেকে বেরিয়ে এসে শিক্ষক উমর ফারুখ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে তার কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এ সময় হাতে নিয়ে থাকা প্লাকার্ডে লেখা ছিলো ‘রংপুরের জেলা প্রশাসক ‘স্যার’ ডাকতে বাধ্য করায় অবস্থান কর্মসূচি।’
বিষয়টি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ছুটে এসে সেই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসক তার চেম্বার থেকে নিচে নেমে এলে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েকজন শিক্ষকও সেখানে উপস্থিত হন।সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শিক্ষক উমর ফর অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে ভবনের দোতলা থেকে জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীন অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়ে নিচে নেমে এসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।
এ সময় সেখানে উপস্থিত শিক্ষার্থীসহ কৌতূহলী মানুষজনের উদ্দেশ্যে অভিযোগকারী শিক্ষক উমর ফারুখ অভিযোগ করে বলেন, জেলা প্রশাসক তাকে স্যার বলে সম্বোধন করতে বাধ্য করেছেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে তিনি এধরনের কথা বলতে পারেননা। এদিকে রাত পৌনে ৯টার দিকে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন এ ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি স্যার সন্মোধন করতে বলিনি। বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি।
এ সময় বেরোবির শিক্ষক সমিতির সভাপতি আসাদ মন্ডল কলা অনুষদের ডীন ড, তুহিন ওয়াদুদ , শিক্ষক আপেল মাহমুদসহ অন্যান্য শিক্ষকরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জেলা প্রশাসকের আচরন দুঃখজনক, একজন জেলা প্রশাসককে কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্যার বলবেন। তবে জেলা প্রশাসক দুঃখ প্রকাশ করায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ঘটনা স্থল ত্যাগ করে চলে যান।
এদিকে এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষক ওমর ফারুখ তার মেয়েকে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্যার বলতে বাধ্য কর ায় অবস্থান কর্মসূচি হাতে লেখা প্লাকার্ড নিয়ে অবস্থানের ছবি ভাইরাল হলে সারা দেশে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। বৃহসপতিবার দিনভর ছিলো বিষয়টি টক অব দ্যা টাউন।
এ ব্যাপারে বেরোবির শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি কলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. তুহিন আহাম্মেদ বলেন সাংবিধানিক ভাবে এবং সরকারী ভাবে আমরা সকলেই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানও স্যার ড্কাার বিপক্ষে ছিলেন। ৩০ লাখ শঞীদের জীবনের বিনিময়ে গড়ে ওঠা বাংলা দেশে একজন কর্মচারীর স্যার হয়ে ওঠার বদলে সেবক হয়ে উঠবেন সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।