alt

অর্থ-বাণিজ্য

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বিপ্লব, প্রতিদিন ৬ হাজার কোটি টাকা লেনদেন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : রোববার, ১৮ মে ২০২৫

ব্যাংকিং সেবায় বৈপ্লবিক এক পরিবর্তন এনেছে মোবাইল ব্যাংকিং। এখন প্রতিদিন গড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। কেবল টাকা পাঠানোই নয়, দেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করেছে মোবাইল ব্যাংকিং। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবামূল্য পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ প্রবাসী-আয় বা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন অন্যতম পছন্দের মাধ্যম। এই সেবার কারণে বেড়েছে নতুন কর্মসংস্থান।

গত মার্চ মাসে মোবাইলে ১ লাখ ৭৮ হাজার ১২৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। একক মাসের হিসাবে এই লেনদেন অতীতের যেকোনো মাসের চেয়ে বেশি। এর আগে চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল, যা ছিল এতদিন সর্বোচ্চ। মার্চে প্রতিদিনের গড় হিসাবে লেনদেনের হয়েছে ৫ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা; আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে এই অঙ্ক ছিল ৫ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি মোবাইলে আর্থিক লেনদেনের হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের শেষ মাস জুনে মোবাইলে লেনদেন হয়েছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৮৩ টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে তা কমে ১ লাখ ২২ হাজার ৯২২ কোটি টাকায় নেমে আসে। পরের মাস আগস্টে লেনদেন বেড়ে হয় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয় ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৭ কোটি টাকা। অক্টোবরে বেড়ে হয় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। নভেম্বর মাসে তা আরও বেড়ে হয় ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা। গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইল ফোনে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়। ফেব্রুয়ারিতে তা কমে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮০ কোটি টাকায় নেমে আসে।

হাতের মোবাইল ফোনই এখন ব্যাংক। হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিই হয়ে উঠেছে সব ধরনের লেনদেনের অপরিহার্য মাধ্যম। এসব লেনদেনের হিসাব খুলতে কোথাও যেতে হয় না। গ্রাহক নিজেই অনায়াসে নিজের হিসাব খুলে লেনদেন করতে পারছেন। মোবাইল ফোনের সাহায্যে অন্যকে টাকা পাঠানো, মোবাইল রিচার্জ, বিভিন্ন পরিষেবা ও কেনাকাটার বিল পরিশোধ, টিকেট কেনাসহ কত সেবা যে মিলছে, তা এক দমে বলা খুবই কঠিন। সব মিলিয়ে বিকাশ, রকেট, নগদ ও উপায়ের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে আর্থিক স্বাধীনতা ও স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছে। ২০২৪ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইলে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয় ১ লাখ ৩০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। মার্চে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। এপ্রিল ও মে মাসে লেনদেন হয় যথাক্রমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৯ কোটি ও ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা। নভেম্বরে হয়েছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা। তার আগের মাস অক্টোবরে এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়। সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয় এক লাখ ৮ হাজার ৩৭৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগস্টে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের শেষ চার মাসেই (মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন) মোবাইলে লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম মাস জুলাইয়ে তা কমে লাখ কোটি টাকার নিচে, ৯৮ হাজার ৩০৬ কোটি টাকায় নেমে আসে।

এরপর থেকে প্রতি মাসেই লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোবাইলে লেনদেন হয়েছিল ৩২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। এভাবেই বাংলাদেশে মোবাইলে আর্থিক সেবা বা এমএফএস ব্যবহার প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত গতিতে বাড়ছে।

মোবাইল লেনদেনে গ্রাহক সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৬৮। মার্চে সেই গ্রাহক সংখ্যা ২৪ কোটি ৩৬ লাখ ২৭ হাজার ২৮ এ দাঁড়িয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ২৪ কোটি ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩৪। জানুয়ারিতে ছিল ২৩ লাখ ৯৩ লাখ ২ হাজার ৯৯১।

গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ২৩ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার ১৫৩। নভেম্বরে ছিল ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ১২ হাজার ৫১৫। অক্টোবর ছিল ২৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪ হাজার ৭১৩। সেপ্টেম্বরে ২৩ কোটি ৩৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫২৩।

একজন গ্রাহক একাধিক এমএফএস সেবায় হিসাব খুলতে পারেন। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে ঠিক কত নাগরিক এমএফএসের আওতায় এসেছেন, তা বলা যাচ্ছে না। তবে প্রতিটি পরিবারেই সেবাটি পৌঁছে গেছে, এটা বলা যায়। বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক সেবার যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ মার্চ। বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এ সেবা চালু করে। পরে এটির নাম বদলে হয় রকেট।

এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমএফএস সেবা চালু করে বিকাশ। পরবর্তী সময়ে আরও অনেক ব্যাংক এ সেবায় এসেছে। তবে খুব সুবিধা করতে পারেনি। বর্তমানে বিকাশ, রকেটের পাশাপাশি মাই ক্যাশ, এম ক্যাশ, উপায়, শিওর ক্যাশসহ ১৫টি ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে। এর বাইরে ডাক বিভাগের নগদও দিচ্ছে এই সেবা।

ছবি

শাওমি ও মেট লাইফের মধ্যে চুক্তি

ছবি

বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে পিটিএ স্বাক্ষরের আহ্বান

৯১ দিনের ট্রেজারি বিলের সুদ এখন ১২.১০%

ছবি

যুক্তরাজ্যের গ্লোবাল ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড পেলো ওয়ালটন ডিজি-টেক

বিসিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের পূর্ত কাজের ১১১ কোটি টাকার ব্যয় অনুমোদন

আগামী দুই শনিবার খোলা থাকবে এনবিআরের সব অফিস

ছবি

শরিয়াহ-সম্মত বিনিয়োগ ব্যবস্থা প্রসারে একসঙ্গে কাজ করবে প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট ও আইএফএ কনসালটেন্সি

বাজেটে পোল্ট্রি খাতের জন্য বিশেষ বরাদ্দ চায় বিপিআইএ

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আরও ১০০০ কোটি টাকা পেল ন্যাশনাল ব্যাংক

গার্মেন্টস খাতে এখনও বন্ধ ১৪ কারখানা

ছবি

প্রস্তাবিত বাজেটে প্রত্যাশার বাস্তবায়ন দেখছি না : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

২০% প্লাস্টিক কারখানা বন্ধের পথে, ভ্যাট কমানেরা দাবি মালিকদের

ছবি

ন্যাশনাল ব্যাংককে আরও ১,০০০ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

রেমিট্যান্সে সুবাতাস, গড়তে যাচ্ছে নতুন রেকর্ড

ছবি

নিরীক্ষা দুর্বলতায় অর্থপাচার ও ঋণ খেলাপি সহজ হয়েছে: আইসিএমএবি

ছবি

ফের ডিএসইতে বড় দরপতন, কমেছে লেনদেনও

ছবি

কম দামি স্যান্ডেলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট তুলে দেয়ার দাবি

ছবি

ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি পৌনে ২ লাখ কোটি টাকা

ছবি

“বোমা মারলেও ভয় পাব না”—আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এর চেয়ারম্যান

বিভিন্ন সংকট পেরিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে অগ্রগতি

ছবি

জুলাইয়ে যোগ দিচ্ছেন ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন এমডি আদিল চৌধুরী

ঈদের ছুটির পর চালু হয়েছে ৯২ শতাংশ গার্মেন্ট কারখানা

পোশাকখাতের উন্নয়নে সুইসকন্টাক্ট-বিজিএমইএ সমঝোতা

ছবি

১৪ দিনে এলো ১৪ হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স

সূচকের বড় উত্থান, লেনদেন ছাড়ালো ৪শ’ কোটি টাকা

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি

ছবি

খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়ালো ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা

পাঁচ ব্যাংক এক হবে নির্বাচনের আগেই: গভর্নর

ছবি

খেলাপি ঋণের রেকর্ড উল্লম্ফন: মোট ঋণের এক চতুর্থাংশ এখন ফেরতযোগ্য নয়

ছবি

২০২৫-২৭ মেয়াদে বিজিএমইএ পরিচালনায় নতুন নেতৃত্ব, সভাপতি মাহমুদ হাসান খান

ছবি

বিদেশে অর্থ পাচারে অভিযুক্তদের সঙ্গে ‘সমঝোতার’ পথে বাংলাদেশ

ছবি

দেশের অর্থনীতি এখন শূন্যেরও নিচে,‘দেনার ভারে নুয়ে পড়েছে দেশ’: লন্ডনে ইউনূস

ছবি

নিম্নমুখী জিডিপি ও বিনিয়োগ, বাংলাদেশকে সতর্ক করল বিশ্বব্যাংক

ছবি

‘মেয়ে ফ্ল্যাট কিনেছে, আমি নয়’—দুবাই ফ্ল্যাট প্রসঙ্গে গভর্নর আহসান মনসুর

ছবি

এবার পশু কোরবানি কমেছে প্রায় ১৩ লাখ, সবচেয়ে কম সিলেটে

ছবি

চামড়ায় দেরিতে লবণ দেওয়ায় অনেকে কাঙ্ক্ষিত দাম পাননি : শিল্প উপদেষ্টা

tab

অর্থ-বাণিজ্য

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বিপ্লব, প্রতিদিন ৬ হাজার কোটি টাকা লেনদেন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

রোববার, ১৮ মে ২০২৫

ব্যাংকিং সেবায় বৈপ্লবিক এক পরিবর্তন এনেছে মোবাইল ব্যাংকিং। এখন প্রতিদিন গড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। কেবল টাকা পাঠানোই নয়, দেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করেছে মোবাইল ব্যাংকিং। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবামূল্য পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ প্রবাসী-আয় বা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন অন্যতম পছন্দের মাধ্যম। এই সেবার কারণে বেড়েছে নতুন কর্মসংস্থান।

গত মার্চ মাসে মোবাইলে ১ লাখ ৭৮ হাজার ১২৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। একক মাসের হিসাবে এই লেনদেন অতীতের যেকোনো মাসের চেয়ে বেশি। এর আগে চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল, যা ছিল এতদিন সর্বোচ্চ। মার্চে প্রতিদিনের গড় হিসাবে লেনদেনের হয়েছে ৫ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা; আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে এই অঙ্ক ছিল ৫ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি মোবাইলে আর্থিক লেনদেনের হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের শেষ মাস জুনে মোবাইলে লেনদেন হয়েছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৮৩ টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে তা কমে ১ লাখ ২২ হাজার ৯২২ কোটি টাকায় নেমে আসে। পরের মাস আগস্টে লেনদেন বেড়ে হয় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয় ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৭ কোটি টাকা। অক্টোবরে বেড়ে হয় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। নভেম্বর মাসে তা আরও বেড়ে হয় ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা। গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইল ফোনে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়। ফেব্রুয়ারিতে তা কমে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮০ কোটি টাকায় নেমে আসে।

হাতের মোবাইল ফোনই এখন ব্যাংক। হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিই হয়ে উঠেছে সব ধরনের লেনদেনের অপরিহার্য মাধ্যম। এসব লেনদেনের হিসাব খুলতে কোথাও যেতে হয় না। গ্রাহক নিজেই অনায়াসে নিজের হিসাব খুলে লেনদেন করতে পারছেন। মোবাইল ফোনের সাহায্যে অন্যকে টাকা পাঠানো, মোবাইল রিচার্জ, বিভিন্ন পরিষেবা ও কেনাকাটার বিল পরিশোধ, টিকেট কেনাসহ কত সেবা যে মিলছে, তা এক দমে বলা খুবই কঠিন। সব মিলিয়ে বিকাশ, রকেট, নগদ ও উপায়ের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে আর্থিক স্বাধীনতা ও স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছে। ২০২৪ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইলে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয় ১ লাখ ৩০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। মার্চে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। এপ্রিল ও মে মাসে লেনদেন হয় যথাক্রমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৯ কোটি ও ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা। নভেম্বরে হয়েছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা। তার আগের মাস অক্টোবরে এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়। সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয় এক লাখ ৮ হাজার ৩৭৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগস্টে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের শেষ চার মাসেই (মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন) মোবাইলে লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম মাস জুলাইয়ে তা কমে লাখ কোটি টাকার নিচে, ৯৮ হাজার ৩০৬ কোটি টাকায় নেমে আসে।

এরপর থেকে প্রতি মাসেই লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোবাইলে লেনদেন হয়েছিল ৩২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। এভাবেই বাংলাদেশে মোবাইলে আর্থিক সেবা বা এমএফএস ব্যবহার প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত গতিতে বাড়ছে।

মোবাইল লেনদেনে গ্রাহক সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৬৮। মার্চে সেই গ্রাহক সংখ্যা ২৪ কোটি ৩৬ লাখ ২৭ হাজার ২৮ এ দাঁড়িয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ২৪ কোটি ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩৪। জানুয়ারিতে ছিল ২৩ লাখ ৯৩ লাখ ২ হাজার ৯৯১।

গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ২৩ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার ১৫৩। নভেম্বরে ছিল ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ১২ হাজার ৫১৫। অক্টোবর ছিল ২৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪ হাজার ৭১৩। সেপ্টেম্বরে ২৩ কোটি ৩৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫২৩।

একজন গ্রাহক একাধিক এমএফএস সেবায় হিসাব খুলতে পারেন। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে ঠিক কত নাগরিক এমএফএসের আওতায় এসেছেন, তা বলা যাচ্ছে না। তবে প্রতিটি পরিবারেই সেবাটি পৌঁছে গেছে, এটা বলা যায়। বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক সেবার যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ মার্চ। বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এ সেবা চালু করে। পরে এটির নাম বদলে হয় রকেট।

এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমএফএস সেবা চালু করে বিকাশ। পরবর্তী সময়ে আরও অনেক ব্যাংক এ সেবায় এসেছে। তবে খুব সুবিধা করতে পারেনি। বর্তমানে বিকাশ, রকেটের পাশাপাশি মাই ক্যাশ, এম ক্যাশ, উপায়, শিওর ক্যাশসহ ১৫টি ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে। এর বাইরে ডাক বিভাগের নগদও দিচ্ছে এই সেবা।

back to top