alt

কুমিল্লা ইপিজেডে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী বিদেশিরা, প্রয়োজন আরো প্লট

বাসস : শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরে রপ্তানিতে রেকর্ড গড়েছে কুমিল্লা ইপিজেড। ২০২৪- ২৫ অর্থবছরে এখান থেকে ৯০২ মিলিয়ন ডলারের পণ্য গেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। তবে কুমিল্লা ইপিজেডের এই সম্ভাবনাকে আরো বড় করে দেখছে বেপজা কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ( বেপজা) জানায়, কুমিল্লা ইপিজেডে বিনিয়োগের জন্য নতুন নতুন বিনিয়োগকারী আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু প্লট খালি না থাকায় নতুন বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নতুন প্লট বরাদ্দ দেওয়া হলে বিনিয়োগ যেমন বাড়বে, রপ্তানি আয়ও বাড়বে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার লক্ষ্যে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কুমিল্লা ইপিজেড। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি সুদৃঢ়করণের লক্ষ্যে শিল্পায়ন, বিনিয়োগ উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং রপ্তানি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নির্মিত ২৬৭ একরের কুমিল্লা ইপিজেডে মোট প্লট সংখ্যা ২৪৩ টি।

বেপজা কুমিল্লার নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহবুব বাসসকে বলেন, প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরে রপ্তানিতে রেকর্ড গড়েছে কুমিল্লা ইপিজেড। ৯০২ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে বিভিন্ন দেশে। ৪৬টি প্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে যা স্থানীয় অর্থনীতিকে করেছে গতিশীল। প্লট খালি না থাকায় নতুন করে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার সুযোগ নেই। অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী কুমিল্লা ইপিজেডে বিনিয়োগে আগ্রহী।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর হতেই হাজার হাজার শ্রমিকের ব্যস্ত পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে কুমিল্লা ইপিজেড। যন্ত্রের শব্দ যোগ করছে শিল্প আর রপ্তানির নতুন সব গল্প। নিজেই ভাঙছে নিজের রেকর্ড।

গত ৫ বছরে কুমিল্লা ইপিজেডের বিনিয়োগ ও রপ্তানির চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিনিয়োগ হয়েছে ৬১.০২ মিলিয়ন ডলার, রপ্তানি হয়েছে ৫৬৫.৮৫ মিলিয়ন ডলার। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বিনিয়োগ ৬৭.৪৬ মিলিয়ন ডলার, রপ্তানি ৮১৪.৮২ মিলিয়ন ডলার, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বিনিয়োগ ৫০.২৩ মিলিয়ন ডলার, রপ্তানি ৭৯০.৯৪ মিলিয়ন ডলার, ২০২৩-২০২৪ বিনিয়োগ ২৪.৪৯ মিলিয়ন ডলার, রপ্তানি ৭১১.৩৭ মিলিয়ন ডলার, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিনিয়োগ ২৫.৫৪ মিলিয়ন ডলার, রপ্তানি ৯০১.২২ মিলিয়ন।

এ পর্যালোচনা থেকে দেখা যায়, কুমিল্লা ইপিজেড-এর মাধ্যমে বছর বছর বিনিয়োগ যেমন বেড়েছে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ধাক্কা কাটিয়ে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে কুমিল্লা ইপিজেড। বাড়ছে অর্ডার, বাড়ছে রপ্তানি। প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিকের প্রাণচাঞ্চল্যে মুখর ইপিজেডে কাজ করছে ৬৬ শতাংশ নারী। প্রতিমাসে এখানকার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাবদ খরচ প্রায় ২৫০কোটি টাকা। যা স্থানীয় অর্থনীতিকেও চাঙ্গা করছে। কমেছে বেকারত্ব।

কুমিল্লা ইপিজেডে শ্রুতি টেক্সটাইলে কর্মরত দেবিদ্বারের মেয়ে সাবিনা আক্তার বাসসকে বলেন, আমি ৫ বছর ধরে কাজ করছি। এখন সিনিয়র অপারেটর হিসেবে আছি।

আমার বেতনে পরিবার নিয়ে ভালো আছি। সন্তানদেরও পড়াশোনা করাচ্ছি।

ব্র্যান্ডিক্স টেক্সটাইলে কাজ করতে এসেছেন খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ির বাসিন্দা মেমং মারমা। তিনি বলেন, আমি এবং আমার বউ এখানে চাকরি করছি। গ্রামে মা-বাবাকে খরচ দিচ্ছি, এখানে পরিবার নিয়ে ভালোভাবে চলছি।

বেপজার তথ্য মতে, এখানে তৈরি পোশাক, জুতা, ইলেকট্রনিক্স, প্লাস্টিক ও ফ্যাশন অ্যাকসেসরিজসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ইউরোপের দেশগুলোতে।

বিনিয়োগে যুক্ত আছে অন্তত ১৫টি দেশ। কুমিল্লা ইপিজেডের শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ এখন পর্যন্ত ৬১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ২৭০ জন বিদেশি কর্মকর্তা এখানেই বাস করেন। ইপিজেডে ৪৬টি প্রতিষ্ঠান উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাস্তবায়নাধীন রয়েছে আরও ৬টি প্রতিষ্ঠান। তবে সব প্লট বরাদ্দ হয়ে যাওয়ায় নতুন শিল্প স্থাপনের সুযোগ নেই।

বিনিয়োগকারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেপজা ও সরকারের সহযোগিতায় করোনা পরবর্তী সময়ে রপ্তানি বেড়েছে। বর্তমানে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছে অনেকেই। তবে কুমিল্লা বিমানবন্দর চালু হলে বিদেশি ক্রেতাদের যাতায়াত সহজ হবে বলে জানান তারা।

বেপজার নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহবুব বাসসকে বলেন, বর্তমানে বরাদ্দ দেওয়ার মতো প্লট খালি নেই। তবে যারা বর্তমানে কর্মরত আছেন এবং বিনিয়োগ করেছেন তারা নানাভাবে সম্প্রসারণ করছেন। ইতোমধ্যে বরাদ্দ নেয়া খালি অংশে তারা নতুন করে প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। ফলে কর্মসংস্থানও বাড়ছে। বিনিয়োগ খুব বেশি না বাড়লেও রপ্তানি ও কর্মসংস্থান বাড়বে বলে আশাবাদী বেপজার এই কর্মকর্তা।

ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের খুব কাছেই জাতীয় অর্থনীতির শক্তিশালী স্তম্ভ হিসেবে জানান দিচ্ছে কুমিল্লা ইপিজেড। নতুন করে প্লট সম্প্রসারণ করা সম্ভব হলে বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা যেমন বাড়বে তেমনি বাড়বে কর্মসংস্থান ও রপ্তানির সুযোগ।

ছবি

ব্যাংক কোম্পানি অধ্যাদেশ সংশোধনের খসড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ে, ‘পরিবারতন্ত্রে’র লাগাম টানার উদ্যোগ

ছবি

শেয়ারবাজারে লেনদেন কমে দাঁড়ালো ২০০ কোটি টাকার ঘরে

ছবি

বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগসহ ৮ দাবিতে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

ছবি

বেক্সিমকো টেক্সটাইল সচল করছে রিভাইভাল

ছবি

পণ্য পরিবহন নীতিমালা দ্রুত বাস্তবায়ন চায় বিসিভিওএ-কোয়াব

ছবি

মিডল্যান্ড ব্যাংক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী হিসেবে সামির উদ্দিনের যোগদান

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টর রোড শো অনুষ্ঠিত

ছবি

টানা পতনে ১৭ হাজার কোটি টাকা মূলধন হারালো শেয়ারবাজার

ছবি

এ বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কমেছে ১৪ শতাংশ

ছবি

৫ হাজার কোটি টাকা চেয়ে ১ হাজার কোটি পাচ্ছে আইসিবি

ছবি

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান হলেন কায়সার আলম

ছবি

ক্লাইমেট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সিটি ব্যাংক

ছবি

দুই মাস বন্ধ থাকার পর টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ছবি

রিয়েলমি সি৮৫ প্রো’র সেল শুরু

ছবি

বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ, সরবরাহ বাড়ায় সবজির দাম কমেছে

ছবি

আইএমএফ থেকে পরের কিস্তি পাওয়ার আলোচনা হবে নতুন সরকারের সঙ্গে

ছবি

পাঁচ ব্যাংক নয়, সরকারের টাকা পাবে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’

ছবি

খেলাপি হার ২০ শতাংশ হলেও তহবিল পরিচালনায় যোগ্য হবে ব্যাংক

ছবি

এবার স্বর্ণের দাম ভরিতে বাড়লো ৫ হাজার টাকা

ছবি

সার ডিলার নিয়োগ ও বিতরণ নীতিমালা অনুমোদন

ছবি

ঠিকায় কাজ করা পোশাক কারখানাও প্রণোদনা পাবে

ছবি

রমজান-নির্বাচন উপলক্ষে পণ্যের সরবরাহ বাড়ানোর তাগিদ

ছবি

বাকিতে আমদানি করা যাবে রোজার পণ্য

ছবি

সুমিটোমো থার্ড টার্মিনালের অপারেশনস-মেইটেনেন্স কাজ করতে আগ্রহী জাপান

ছবি

চলমান গ্যাস সংকট কমাতে দীর্ঘ পরিকল্পনা পেট্রোবাংলার

ছবি

প্রথম প্রান্তিকে ওয়ালটনের মুনাফায় ৪৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

ছবি

সয়াবিন তেল ও চিনি কিনছে সরকার

ছবি

১৬৪ টাকায় সয়াবিন তেল, ৯৪ টাকায় চিনি কিনবে সরকার

ছবি

ভারতে মূল্যস্ফীতি শূন্যের কাছাকাছি

ছবি

সিএমএসএমইর তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ল

ছবি

সরকারের জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ, অর্থবিভাগ-এর সাথে সর্বজনীন পেনশন স্কিমসমুহে রেজিস্ট্রেশন

ছবি

মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা নিয়ে গেজেট, থাকছে না মেয়াদি ফান্ড

ছবি

মেট্রোরেল প্রকল্প বাতিল হয়নি, ব্যয় কমানোর চেষ্টা চলছে: ডিএমটিসিএল এমডি

ছবি

পাঁচ ব্যাংকের অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে চিঠি

ছবি

নতুন পে-স্কেলের ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে যাবে বর্তমান সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

চট্টগ্রামে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল: ৩০ বছর চালাবে ডেনমার্কের কোম্পানি

tab

কুমিল্লা ইপিজেডে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী বিদেশিরা, প্রয়োজন আরো প্লট

বাসস

শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরে রপ্তানিতে রেকর্ড গড়েছে কুমিল্লা ইপিজেড। ২০২৪- ২৫ অর্থবছরে এখান থেকে ৯০২ মিলিয়ন ডলারের পণ্য গেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। তবে কুমিল্লা ইপিজেডের এই সম্ভাবনাকে আরো বড় করে দেখছে বেপজা কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ( বেপজা) জানায়, কুমিল্লা ইপিজেডে বিনিয়োগের জন্য নতুন নতুন বিনিয়োগকারী আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু প্লট খালি না থাকায় নতুন বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নতুন প্লট বরাদ্দ দেওয়া হলে বিনিয়োগ যেমন বাড়বে, রপ্তানি আয়ও বাড়বে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার লক্ষ্যে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কুমিল্লা ইপিজেড। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি সুদৃঢ়করণের লক্ষ্যে শিল্পায়ন, বিনিয়োগ উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং রপ্তানি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নির্মিত ২৬৭ একরের কুমিল্লা ইপিজেডে মোট প্লট সংখ্যা ২৪৩ টি।

বেপজা কুমিল্লার নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহবুব বাসসকে বলেন, প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরে রপ্তানিতে রেকর্ড গড়েছে কুমিল্লা ইপিজেড। ৯০২ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে বিভিন্ন দেশে। ৪৬টি প্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে যা স্থানীয় অর্থনীতিকে করেছে গতিশীল। প্লট খালি না থাকায় নতুন করে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার সুযোগ নেই। অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী কুমিল্লা ইপিজেডে বিনিয়োগে আগ্রহী।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর হতেই হাজার হাজার শ্রমিকের ব্যস্ত পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে কুমিল্লা ইপিজেড। যন্ত্রের শব্দ যোগ করছে শিল্প আর রপ্তানির নতুন সব গল্প। নিজেই ভাঙছে নিজের রেকর্ড।

গত ৫ বছরে কুমিল্লা ইপিজেডের বিনিয়োগ ও রপ্তানির চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিনিয়োগ হয়েছে ৬১.০২ মিলিয়ন ডলার, রপ্তানি হয়েছে ৫৬৫.৮৫ মিলিয়ন ডলার। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বিনিয়োগ ৬৭.৪৬ মিলিয়ন ডলার, রপ্তানি ৮১৪.৮২ মিলিয়ন ডলার, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বিনিয়োগ ৫০.২৩ মিলিয়ন ডলার, রপ্তানি ৭৯০.৯৪ মিলিয়ন ডলার, ২০২৩-২০২৪ বিনিয়োগ ২৪.৪৯ মিলিয়ন ডলার, রপ্তানি ৭১১.৩৭ মিলিয়ন ডলার, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিনিয়োগ ২৫.৫৪ মিলিয়ন ডলার, রপ্তানি ৯০১.২২ মিলিয়ন।

এ পর্যালোচনা থেকে দেখা যায়, কুমিল্লা ইপিজেড-এর মাধ্যমে বছর বছর বিনিয়োগ যেমন বেড়েছে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ধাক্কা কাটিয়ে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে কুমিল্লা ইপিজেড। বাড়ছে অর্ডার, বাড়ছে রপ্তানি। প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিকের প্রাণচাঞ্চল্যে মুখর ইপিজেডে কাজ করছে ৬৬ শতাংশ নারী। প্রতিমাসে এখানকার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাবদ খরচ প্রায় ২৫০কোটি টাকা। যা স্থানীয় অর্থনীতিকেও চাঙ্গা করছে। কমেছে বেকারত্ব।

কুমিল্লা ইপিজেডে শ্রুতি টেক্সটাইলে কর্মরত দেবিদ্বারের মেয়ে সাবিনা আক্তার বাসসকে বলেন, আমি ৫ বছর ধরে কাজ করছি। এখন সিনিয়র অপারেটর হিসেবে আছি।

আমার বেতনে পরিবার নিয়ে ভালো আছি। সন্তানদেরও পড়াশোনা করাচ্ছি।

ব্র্যান্ডিক্স টেক্সটাইলে কাজ করতে এসেছেন খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ির বাসিন্দা মেমং মারমা। তিনি বলেন, আমি এবং আমার বউ এখানে চাকরি করছি। গ্রামে মা-বাবাকে খরচ দিচ্ছি, এখানে পরিবার নিয়ে ভালোভাবে চলছি।

বেপজার তথ্য মতে, এখানে তৈরি পোশাক, জুতা, ইলেকট্রনিক্স, প্লাস্টিক ও ফ্যাশন অ্যাকসেসরিজসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ইউরোপের দেশগুলোতে।

বিনিয়োগে যুক্ত আছে অন্তত ১৫টি দেশ। কুমিল্লা ইপিজেডের শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ এখন পর্যন্ত ৬১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ২৭০ জন বিদেশি কর্মকর্তা এখানেই বাস করেন। ইপিজেডে ৪৬টি প্রতিষ্ঠান উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাস্তবায়নাধীন রয়েছে আরও ৬টি প্রতিষ্ঠান। তবে সব প্লট বরাদ্দ হয়ে যাওয়ায় নতুন শিল্প স্থাপনের সুযোগ নেই।

বিনিয়োগকারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেপজা ও সরকারের সহযোগিতায় করোনা পরবর্তী সময়ে রপ্তানি বেড়েছে। বর্তমানে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছে অনেকেই। তবে কুমিল্লা বিমানবন্দর চালু হলে বিদেশি ক্রেতাদের যাতায়াত সহজ হবে বলে জানান তারা।

বেপজার নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহবুব বাসসকে বলেন, বর্তমানে বরাদ্দ দেওয়ার মতো প্লট খালি নেই। তবে যারা বর্তমানে কর্মরত আছেন এবং বিনিয়োগ করেছেন তারা নানাভাবে সম্প্রসারণ করছেন। ইতোমধ্যে বরাদ্দ নেয়া খালি অংশে তারা নতুন করে প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। ফলে কর্মসংস্থানও বাড়ছে। বিনিয়োগ খুব বেশি না বাড়লেও রপ্তানি ও কর্মসংস্থান বাড়বে বলে আশাবাদী বেপজার এই কর্মকর্তা।

ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের খুব কাছেই জাতীয় অর্থনীতির শক্তিশালী স্তম্ভ হিসেবে জানান দিচ্ছে কুমিল্লা ইপিজেড। নতুন করে প্লট সম্প্রসারণ করা সম্ভব হলে বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা যেমন বাড়বে তেমনি বাড়বে কর্মসংস্থান ও রপ্তানির সুযোগ।

back to top