alt

ভালো শেয়ারেও বাজার মন্দা, কাটছে না খরা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : রোববার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

দেশের শেয়ারবাজারের খরা কাটছে না। লেনদেন বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ও টাকার পরিমাণ কমছে। সপ্তাহে একদিন কিছুটা উন্নতি হলে পরের চার দিন টানা দরপতন হচ্ছে। এমন অবস্থা গত সেপ্টেম্বর মাসজুড়েই ছিল শেয়ারবাজারে। এ সময়ে বছাই করা কোম্পানির শেয়ারেও ছিল মন্দাভাব। অলোচ্য সময়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ডিএসই৩০ সূচক প্রায় ১০৭ পয়েন্ট হারিয়েছে। আর এসব কোম্পানির বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী লোকসানে পড়েছে।

তবে, গত সপ্তাহে ডিএসই ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূলধন বেড়েছে ২ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। তবে গত সপ্তাহে উভয় শেয়ারবাজারে লেনদেনের পরিমাণ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু সেপ্টেম্বর মাস নয়, বিগত সরকারের পতনের পর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আশা করেছিল শেয়ারবাজার ভালো হবে। কিন্তু গত ১৪ মাসেও সেই আশা আরও হতাশায় পরিণত হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিও অর্ধেকে নেমেছে।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, শেয়ারবাজারের এনম পরিস্থিতি অনেক আগ থেকেই। এক সময় নিয়ন্ত্রক সংস্থার তত্ত্বাবধান অনেক দুর্বল কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। যার অধিকাংশই এখন দেউলিয়ার পথে। আবার করোনা মহামারীতে সেইসব দুর্বল কোম্পানির শেয়ার দর কারসাজির মাধ্যমে এমন পর্যায়ে উঠেছে, যা শেষমেশ ফ্লোর প্রাইস দিয়ে আটকিয়েছে তৎকালীন কমিশন। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারী নিঃস্ব থেকে আরও নিঃস্ব হয়েছেন। অনেকে বাজার ছেড়ে চলে গেছেন। আর যারা আছেন, তারাও লোকসানে থাকতে থাকতে পুঁজি হারানোর পথে। দায় দেনা ও ঋণের কবলে পড়ে আছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, লেনদেন পরিস্থিতিতে অনেক ব্রোকারেজ হাউজ তাদের মাসিক খরচও তুললে পারছে না। ডিএসইর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে ডিএসই৩০ সূচক ২ হাজার ১৮৮ পয়েন্টে ছিল। যা মাস শেষে ২ হাজার ৮১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এ হিসেবে মাসের ব্যবধানে সূচকটি প্রায় ১০৭ পয়েন্ট হারিয়েছে। মূলধন বেড়েছে ২ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সূচকের উত্থান ও পতনের মিশ্র প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ সময়ে ডিএসই ও সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা কমেছে। তবে উভয় পুঁজিবাজারে বিদায়ী সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছে। এর মধ্যে ডিএসইতে ২ হাজার ১৪৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। উভয় শেয়ারবাজারের তথ্য বিশ্লেষণে এ তথ্য জানা গেছে।

গত শনিবার ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স শূন্য দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪১৫ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ২১ দশমিক ২০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ কমে ২ হাজার ৮১ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক শূন্য দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১৭১ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) ১৮ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬৮ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এ বাজারে মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৫১৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৬০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৯১৮ কোটি ৮৩ কোটি ৩২ লাখ টাকার। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ১ হাজার ৫৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা। বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৫টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫০টির, দর কমেছে ২১৫টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টির। তবে লেনদেন হয়নি ১৬টির।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৭৯ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক শূন্য দশমিক ৮২ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ১০৮ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক শূন্য দশমিক ১৪ শতাংশ কমে ৯ হাজার ২৬৪ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক শূন্য দশমিক ৩৮ শতাংশ কমে ৯৫ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স (এসএমই ইনডেক্স) শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৯১৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২০ হাজার ৪২০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ২১ হাজার ২০০ কোটি ৯ লাখ টাকা। টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৬৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬৭ কোটি ৫ লাখ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ২৫ কোটি ৬ লাখ টাকা। বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে মোট ২৯৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৩টির, দর কমেছে ১৫৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির শেয়ার ও ইউনিট দর।

বাজার পরিস্থিতির বিষয়ে একটি গণমাধ্যম আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মো. মামুনুর রশীদ বলেছেন, গত ১৪ মাসে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিও প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন কমিশন ও নতুন নেতৃত্ব এলেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরেনি। যারা ১৪ মাস আগে ১০০ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, আজ তারা নিজেদের অর্থ মাত্র ৫০ টাকায় দেখতে পাচ্ছেন। এ যেন এমন সময়, যখন দেশ হাসে, বিনিয়োগকারী কাঁদে।

ছবি

ব্যাংক কোম্পানি অধ্যাদেশ সংশোধনের খসড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ে, ‘পরিবারতন্ত্রে’র লাগাম টানার উদ্যোগ

ছবি

শেয়ারবাজারে লেনদেন কমে দাঁড়ালো ২০০ কোটি টাকার ঘরে

ছবি

বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগসহ ৮ দাবিতে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

ছবি

বেক্সিমকো টেক্সটাইল সচল করছে রিভাইভাল

ছবি

পণ্য পরিবহন নীতিমালা দ্রুত বাস্তবায়ন চায় বিসিভিওএ-কোয়াব

ছবি

মিডল্যান্ড ব্যাংক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী হিসেবে সামির উদ্দিনের যোগদান

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টর রোড শো অনুষ্ঠিত

ছবি

টানা পতনে ১৭ হাজার কোটি টাকা মূলধন হারালো শেয়ারবাজার

ছবি

এ বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কমেছে ১৪ শতাংশ

ছবি

৫ হাজার কোটি টাকা চেয়ে ১ হাজার কোটি পাচ্ছে আইসিবি

ছবি

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান হলেন কায়সার আলম

ছবি

ক্লাইমেট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সিটি ব্যাংক

ছবি

দুই মাস বন্ধ থাকার পর টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ছবি

রিয়েলমি সি৮৫ প্রো’র সেল শুরু

ছবি

বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ, সরবরাহ বাড়ায় সবজির দাম কমেছে

ছবি

আইএমএফ থেকে পরের কিস্তি পাওয়ার আলোচনা হবে নতুন সরকারের সঙ্গে

ছবি

পাঁচ ব্যাংক নয়, সরকারের টাকা পাবে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’

ছবি

খেলাপি হার ২০ শতাংশ হলেও তহবিল পরিচালনায় যোগ্য হবে ব্যাংক

ছবি

এবার স্বর্ণের দাম ভরিতে বাড়লো ৫ হাজার টাকা

ছবি

সার ডিলার নিয়োগ ও বিতরণ নীতিমালা অনুমোদন

ছবি

ঠিকায় কাজ করা পোশাক কারখানাও প্রণোদনা পাবে

ছবি

রমজান-নির্বাচন উপলক্ষে পণ্যের সরবরাহ বাড়ানোর তাগিদ

ছবি

বাকিতে আমদানি করা যাবে রোজার পণ্য

ছবি

সুমিটোমো থার্ড টার্মিনালের অপারেশনস-মেইটেনেন্স কাজ করতে আগ্রহী জাপান

ছবি

চলমান গ্যাস সংকট কমাতে দীর্ঘ পরিকল্পনা পেট্রোবাংলার

ছবি

প্রথম প্রান্তিকে ওয়ালটনের মুনাফায় ৪৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

ছবি

সয়াবিন তেল ও চিনি কিনছে সরকার

ছবি

১৬৪ টাকায় সয়াবিন তেল, ৯৪ টাকায় চিনি কিনবে সরকার

ছবি

ভারতে মূল্যস্ফীতি শূন্যের কাছাকাছি

ছবি

সিএমএসএমইর তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ল

ছবি

সরকারের জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ, অর্থবিভাগ-এর সাথে সর্বজনীন পেনশন স্কিমসমুহে রেজিস্ট্রেশন

ছবি

মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা নিয়ে গেজেট, থাকছে না মেয়াদি ফান্ড

ছবি

মেট্রোরেল প্রকল্প বাতিল হয়নি, ব্যয় কমানোর চেষ্টা চলছে: ডিএমটিসিএল এমডি

ছবি

পাঁচ ব্যাংকের অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে চিঠি

ছবি

নতুন পে-স্কেলের ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে যাবে বর্তমান সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

চট্টগ্রামে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল: ৩০ বছর চালাবে ডেনমার্কের কোম্পানি

tab

ভালো শেয়ারেও বাজার মন্দা, কাটছে না খরা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

রোববার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫

দেশের শেয়ারবাজারের খরা কাটছে না। লেনদেন বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ও টাকার পরিমাণ কমছে। সপ্তাহে একদিন কিছুটা উন্নতি হলে পরের চার দিন টানা দরপতন হচ্ছে। এমন অবস্থা গত সেপ্টেম্বর মাসজুড়েই ছিল শেয়ারবাজারে। এ সময়ে বছাই করা কোম্পানির শেয়ারেও ছিল মন্দাভাব। অলোচ্য সময়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ডিএসই৩০ সূচক প্রায় ১০৭ পয়েন্ট হারিয়েছে। আর এসব কোম্পানির বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী লোকসানে পড়েছে।

তবে, গত সপ্তাহে ডিএসই ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূলধন বেড়েছে ২ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। তবে গত সপ্তাহে উভয় শেয়ারবাজারে লেনদেনের পরিমাণ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু সেপ্টেম্বর মাস নয়, বিগত সরকারের পতনের পর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আশা করেছিল শেয়ারবাজার ভালো হবে। কিন্তু গত ১৪ মাসেও সেই আশা আরও হতাশায় পরিণত হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিও অর্ধেকে নেমেছে।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, শেয়ারবাজারের এনম পরিস্থিতি অনেক আগ থেকেই। এক সময় নিয়ন্ত্রক সংস্থার তত্ত্বাবধান অনেক দুর্বল কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। যার অধিকাংশই এখন দেউলিয়ার পথে। আবার করোনা মহামারীতে সেইসব দুর্বল কোম্পানির শেয়ার দর কারসাজির মাধ্যমে এমন পর্যায়ে উঠেছে, যা শেষমেশ ফ্লোর প্রাইস দিয়ে আটকিয়েছে তৎকালীন কমিশন। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারী নিঃস্ব থেকে আরও নিঃস্ব হয়েছেন। অনেকে বাজার ছেড়ে চলে গেছেন। আর যারা আছেন, তারাও লোকসানে থাকতে থাকতে পুঁজি হারানোর পথে। দায় দেনা ও ঋণের কবলে পড়ে আছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, লেনদেন পরিস্থিতিতে অনেক ব্রোকারেজ হাউজ তাদের মাসিক খরচও তুললে পারছে না। ডিএসইর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে ডিএসই৩০ সূচক ২ হাজার ১৮৮ পয়েন্টে ছিল। যা মাস শেষে ২ হাজার ৮১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এ হিসেবে মাসের ব্যবধানে সূচকটি প্রায় ১০৭ পয়েন্ট হারিয়েছে। মূলধন বেড়েছে ২ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সূচকের উত্থান ও পতনের মিশ্র প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ সময়ে ডিএসই ও সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা কমেছে। তবে উভয় পুঁজিবাজারে বিদায়ী সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছে। এর মধ্যে ডিএসইতে ২ হাজার ১৪৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। উভয় শেয়ারবাজারের তথ্য বিশ্লেষণে এ তথ্য জানা গেছে।

গত শনিবার ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স শূন্য দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪১৫ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ২১ দশমিক ২০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ কমে ২ হাজার ৮১ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক শূন্য দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১৭১ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) ১৮ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬৮ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এ বাজারে মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৫১৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৬০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৯১৮ কোটি ৮৩ কোটি ৩২ লাখ টাকার। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ১ হাজার ৫৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা। বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৫টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫০টির, দর কমেছে ২১৫টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টির। তবে লেনদেন হয়নি ১৬টির।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৭৯ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক শূন্য দশমিক ৮২ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ১০৮ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক শূন্য দশমিক ১৪ শতাংশ কমে ৯ হাজার ২৬৪ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক শূন্য দশমিক ৩৮ শতাংশ কমে ৯৫ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স (এসএমই ইনডেক্স) শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৯১৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২০ হাজার ৪২০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ২১ হাজার ২০০ কোটি ৯ লাখ টাকা। টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৬৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬৭ কোটি ৫ লাখ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ২৫ কোটি ৬ লাখ টাকা। বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে মোট ২৯৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৩টির, দর কমেছে ১৫৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির শেয়ার ও ইউনিট দর।

বাজার পরিস্থিতির বিষয়ে একটি গণমাধ্যম আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মো. মামুনুর রশীদ বলেছেন, গত ১৪ মাসে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিও প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন কমিশন ও নতুন নেতৃত্ব এলেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরেনি। যারা ১৪ মাস আগে ১০০ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, আজ তারা নিজেদের অর্থ মাত্র ৫০ টাকায় দেখতে পাচ্ছেন। এ যেন এমন সময়, যখন দেশ হাসে, বিনিয়োগকারী কাঁদে।

back to top