ঘটনাবহুল ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়েছে, যা কোভিড মহামারীর দুঃসময়ের পর সবচেয়ে কম। এর আগে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এর চেয়ে কম ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেয়েছিল বাংলাদেশ। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় ৪ দশমিক ২২ শতাংশ।
আন্দোলন-সংঘাতের ধাক্কা সামলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও চতুর্থ প্রান্তিকে অর্থনীতির চাকা ফের গতি হারিয়েছে। এর আগে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এর চেয়ে কম ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেয়েছিল বাংলাদেশ। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় ৪ দশমিক ২২ শতাংশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে চলতি মূল্যে জুন শেষে জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৪০ হাজার ৫০ কোটি টাকায়, যা আগের অর্থবছরে একই সময়ে ১৩ লাখ ১৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা ছিল।
গত অর্থবছরের শুরুতেই সরকার পরিবর্তনের দাবিতে উত্তাল ছিল সারাদেশ। অবরোধ, সংঘাত ও ইন্টারনেট বন্ধ রাখার ঘটনায় অর্থনৈতিক কর্মকা- স্থবির হয়ে পড়েছিল, যার প্রভাব পড়ে অর্থনীনতিতে। যে কারণে অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৯৬ শতাংশে নেমে যায়।
ক্ষমতার পালাবদলের পর অন্তর্বর্তী সরকার দেশের হাল ধরে। সরকার কিছুটা স্থিতিশীল হলে আন্দোলন সংগ্রামের চাপও কমতে শুরু করে। তাতে অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয় ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আন্দোলন-সংঘাতের ধাক্কা সামলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলে তৃতীয় প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরো একটু বেড়ে ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ হয়। কিন্তু চতুর্থ প্রান্তিক, অর্থাৎ এপ্রিল-জুন সময়ে অর্থনীতির চাকা ফের গতি হারায়। জিডিপি বাড়ে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল যথাক্রমে ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ ও ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। তৃতীয় প্রান্তিকে ছিল ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। আর শেষ প্রান্তিকে ২ দশমিক ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির খবর এসেছিল।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি দেখেছে শিল্প খাত। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১ দশমিক শূন্য ০৮ শতাংশ।
এদিকে কৃষি ও সেবা খাতে এই প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। কৃষিতে চতুর্থ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ০১ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের এই সময়ে ৪ দশমিক ১১ শতাংশ ছিল। এই সময়ে সেবা খাতে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩ দশমিক শূন্য ৬১ শতাংশ।
বিবিএসের হিসাবে, জিডিপির আকার স্থির মূল্যে দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৮৬ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা যা আগের অর্থবছরের এই সময়ে ছিল ৮ লাখ ৫৭ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। গতবছর বাজেটের সময় ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ সরকার। তখনকার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরেছিলেন।
মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ডিসেম্বরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ৫ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু সেই লক্ষ্যেও পৌঁছানো গেল না। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সরকার আশা করছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রাক্কলিত (সংশোধিত) প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে। আর ২০২৬-২৭ অর্থবছরে তা ৬ শতাংশ এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
ঘটনাবহুল ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়েছে, যা কোভিড মহামারীর দুঃসময়ের পর সবচেয়ে কম। এর আগে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এর চেয়ে কম ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেয়েছিল বাংলাদেশ। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় ৪ দশমিক ২২ শতাংশ।
আন্দোলন-সংঘাতের ধাক্কা সামলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও চতুর্থ প্রান্তিকে অর্থনীতির চাকা ফের গতি হারিয়েছে। এর আগে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এর চেয়ে কম ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেয়েছিল বাংলাদেশ। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় ৪ দশমিক ২২ শতাংশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে চলতি মূল্যে জুন শেষে জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৪০ হাজার ৫০ কোটি টাকায়, যা আগের অর্থবছরে একই সময়ে ১৩ লাখ ১৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা ছিল।
গত অর্থবছরের শুরুতেই সরকার পরিবর্তনের দাবিতে উত্তাল ছিল সারাদেশ। অবরোধ, সংঘাত ও ইন্টারনেট বন্ধ রাখার ঘটনায় অর্থনৈতিক কর্মকা- স্থবির হয়ে পড়েছিল, যার প্রভাব পড়ে অর্থনীনতিতে। যে কারণে অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৯৬ শতাংশে নেমে যায়।
ক্ষমতার পালাবদলের পর অন্তর্বর্তী সরকার দেশের হাল ধরে। সরকার কিছুটা স্থিতিশীল হলে আন্দোলন সংগ্রামের চাপও কমতে শুরু করে। তাতে অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয় ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আন্দোলন-সংঘাতের ধাক্কা সামলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলে তৃতীয় প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরো একটু বেড়ে ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ হয়। কিন্তু চতুর্থ প্রান্তিক, অর্থাৎ এপ্রিল-জুন সময়ে অর্থনীতির চাকা ফের গতি হারায়। জিডিপি বাড়ে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল যথাক্রমে ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ ও ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। তৃতীয় প্রান্তিকে ছিল ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। আর শেষ প্রান্তিকে ২ দশমিক ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির খবর এসেছিল।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি দেখেছে শিল্প খাত। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১ দশমিক শূন্য ০৮ শতাংশ।
এদিকে কৃষি ও সেবা খাতে এই প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। কৃষিতে চতুর্থ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ০১ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের এই সময়ে ৪ দশমিক ১১ শতাংশ ছিল। এই সময়ে সেবা খাতে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩ দশমিক শূন্য ৬১ শতাংশ।
বিবিএসের হিসাবে, জিডিপির আকার স্থির মূল্যে দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৮৬ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা যা আগের অর্থবছরের এই সময়ে ছিল ৮ লাখ ৫৭ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। গতবছর বাজেটের সময় ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ সরকার। তখনকার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরেছিলেন।
মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ডিসেম্বরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ৫ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু সেই লক্ষ্যেও পৌঁছানো গেল না। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সরকার আশা করছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রাক্কলিত (সংশোধিত) প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে। আর ২০২৬-২৭ অর্থবছরে তা ৬ শতাংশ এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে।