নারী উদ্যোক্তারা তাদের দেয়া ঋণের শর্ত সহজ করার দাবি তুলে ধরেছেন তাদের নিয়ে আয়োজিত জাতীয় সংলাপে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
সংলাপে ঋণ পেতে কত বিড়ম্বনায় পড়তে হয়ে সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন পোশাক ও পাট খাতের নারী উদ্যোক্তা। ‘অর্থায়নে নারী উদ্যোক্তাদের প্রবেশাধিকার’ শীর্ষক নীতিবিষয়ক জাতীয় এ সংলাপে পাঁচজন নারী উদ্যোক্তা জানান, ঋণের জন্য ব্যাংকে গেলে পরিবারের পুরুষ সদস্যের (স্বামী, বাবা বা ভাই) গ্যারান্টার বানানোর শর্ত দেওয়া হয়।
খুলনার দৌলতপুর এলাকার মহুয়া তামান্না তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, প্রণোদনার ঋণের জন্য নিজ উপজেলায় যতগুলো ব্যাংকের শাখা আছে, সবখানে গেছেন, কিন্তু ফিরতে হয়েছে তাঁকে খালি হাতে। ব্যবসা বাড়াতে ঋণের দরকার থাকলেও সবাই শুভকামনা জানিয়ে বিদায় করে দিয়েছেন, ঋণের ব্যবস্থা করেননি। ঋণের জন্য পুরুষ গ্যারান্টারের (জামিনদার) শর্ত বেঁধে দিচ্ছে ব্যাংকগুলো।
এ ছাড়া কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন), ট্রেড লাইসেন্স, ব্যাংক বিবরণী, দোকানভাড়ার দলিলসহ বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয় উল্লেখ করে তাঁরা বলেন, একজন নারী উদ্যোক্তার পক্ষে এসব শর্ত পূরণ করা কঠিন। এই নারী উদ্যোক্তারা অবশ্য এ–ও বলেন, ব্যবসার ক্ষেত্রে সবার আগে বাধা আসে পরিবার থেকে। পরিবারের সহযোগিতা পাওয়া যায় না।
সংলাপে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে নেওয়া এক বছরমেয়াদি ‘দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প’–এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এই প্রকল্পের প্রধান জয়দীপ সিনহা রায়। এ প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৪০ জন নারী উদ্যোক্তাকে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে ব্র্যাক।
সংলাপে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক জাকের হোসেন, জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির (নাসিব) সভাপতি মির্জা নূরুল গণী, ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটিবিষয়ক পরিচালক নবনীতা চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন পরিচালক কে এ এম মোর্শেদ।
বিসিকের চেয়ারম্যান প্রশ্ন রাখেন, একজন নারী উদ্যোক্তার জন্য কিংবা একজন দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যাংক কেন এত শর্ত বেঁধে দেয়। তাহলে যাঁরা তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পালিয়ে যান, তাঁরা কীভাবে পালান। তাঁদেরও এসব শর্ত পালন করার কথা। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য শর্ত শিথিলের আহ্বান জানান তিনি।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, করোনার ক্ষতি মোকাবিলায় সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। কিন্তু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা এ প্যাকেজ থেকে ঋণ পাননি। কারণ, ছোট উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে নিরুৎসাহিত করেন ব্যাংকাররা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক জাকের হোসেন বলেন, সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েও অনেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার নিয়ম জানেন না। ব্যাংকারদেরও সমস্যা আছে। তাঁরা বড় ঋণের দিকে ছোটেন।
মির্জা নূরুল গণী বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অনেক ঋণের সুবিধা আছে, কিন্তু তা কাজে আসছে না। আবার নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক বিজ্ঞপ্তি থাকলেও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তা মানে না।
নীতিমালায় পুরুষ গ্যারান্টার রাখার শর্ত নেই উল্লেখ করে নবনীতা চৌধুরী নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়ার পথ সুগম করতে এ শর্ত বাতিলের দাবি জানান।
শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২
নারী উদ্যোক্তারা তাদের দেয়া ঋণের শর্ত সহজ করার দাবি তুলে ধরেছেন তাদের নিয়ে আয়োজিত জাতীয় সংলাপে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
সংলাপে ঋণ পেতে কত বিড়ম্বনায় পড়তে হয়ে সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন পোশাক ও পাট খাতের নারী উদ্যোক্তা। ‘অর্থায়নে নারী উদ্যোক্তাদের প্রবেশাধিকার’ শীর্ষক নীতিবিষয়ক জাতীয় এ সংলাপে পাঁচজন নারী উদ্যোক্তা জানান, ঋণের জন্য ব্যাংকে গেলে পরিবারের পুরুষ সদস্যের (স্বামী, বাবা বা ভাই) গ্যারান্টার বানানোর শর্ত দেওয়া হয়।
খুলনার দৌলতপুর এলাকার মহুয়া তামান্না তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, প্রণোদনার ঋণের জন্য নিজ উপজেলায় যতগুলো ব্যাংকের শাখা আছে, সবখানে গেছেন, কিন্তু ফিরতে হয়েছে তাঁকে খালি হাতে। ব্যবসা বাড়াতে ঋণের দরকার থাকলেও সবাই শুভকামনা জানিয়ে বিদায় করে দিয়েছেন, ঋণের ব্যবস্থা করেননি। ঋণের জন্য পুরুষ গ্যারান্টারের (জামিনদার) শর্ত বেঁধে দিচ্ছে ব্যাংকগুলো।
এ ছাড়া কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন), ট্রেড লাইসেন্স, ব্যাংক বিবরণী, দোকানভাড়ার দলিলসহ বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয় উল্লেখ করে তাঁরা বলেন, একজন নারী উদ্যোক্তার পক্ষে এসব শর্ত পূরণ করা কঠিন। এই নারী উদ্যোক্তারা অবশ্য এ–ও বলেন, ব্যবসার ক্ষেত্রে সবার আগে বাধা আসে পরিবার থেকে। পরিবারের সহযোগিতা পাওয়া যায় না।
সংলাপে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে নেওয়া এক বছরমেয়াদি ‘দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প’–এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এই প্রকল্পের প্রধান জয়দীপ সিনহা রায়। এ প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৪০ জন নারী উদ্যোক্তাকে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে ব্র্যাক।
সংলাপে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক জাকের হোসেন, জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির (নাসিব) সভাপতি মির্জা নূরুল গণী, ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটিবিষয়ক পরিচালক নবনীতা চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন পরিচালক কে এ এম মোর্শেদ।
বিসিকের চেয়ারম্যান প্রশ্ন রাখেন, একজন নারী উদ্যোক্তার জন্য কিংবা একজন দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যাংক কেন এত শর্ত বেঁধে দেয়। তাহলে যাঁরা তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পালিয়ে যান, তাঁরা কীভাবে পালান। তাঁদেরও এসব শর্ত পালন করার কথা। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য শর্ত শিথিলের আহ্বান জানান তিনি।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, করোনার ক্ষতি মোকাবিলায় সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। কিন্তু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা এ প্যাকেজ থেকে ঋণ পাননি। কারণ, ছোট উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে নিরুৎসাহিত করেন ব্যাংকাররা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক জাকের হোসেন বলেন, সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েও অনেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার নিয়ম জানেন না। ব্যাংকারদেরও সমস্যা আছে। তাঁরা বড় ঋণের দিকে ছোটেন।
মির্জা নূরুল গণী বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অনেক ঋণের সুবিধা আছে, কিন্তু তা কাজে আসছে না। আবার নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক বিজ্ঞপ্তি থাকলেও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তা মানে না।
নীতিমালায় পুরুষ গ্যারান্টার রাখার শর্ত নেই উল্লেখ করে নবনীতা চৌধুরী নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়ার পথ সুগম করতে এ শর্ত বাতিলের দাবি জানান।