মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় এবার ব্যাংক সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্য রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউজিল্যান্ড সুদের হার তিন-চতুর্থাংশ পয়েন্ট বাড়িয়ে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশে উন্নীত করেছে। রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশটিতে সুদের হার ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত হয়েছে। এপি
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৯ সালে অফিশিয়াল ক্যাশ রেট প্রবর্তন করে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময়ের পর এবারই প্রথমবারের মতো সুদের হার অর্ধ পয়েন্টের বেশি বাড়াল ব্যাংকটি। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পাওয়া নতুন সুদের হারটি ২০০৯ সালের পর সর্বোচ্চ।
এ প্রসঙ্গে নিউজিল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অ্যাড্রিয়ান ওর বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটির সম্মতি অনুযায়ী সুদের হার বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে হারটি আগের তুলনায় দ্রুতগতিতে বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাখার জন্যই এটি করা হয়েছে।’
গ্রাহকদের উদ্দেশে গভর্নর বলেন, ‘আপনারা ব্যয় সংকোচন করা নিয়ে চিন্তা করুন। ব্যয়ের চেয়ে সঞ্চয় করার কথা বেশি ভাবুন। আমার মনে হয় এটি একটি অদ্ভুত ধারণা। তবুও আপনারা এটা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন।’
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নেয়া এই উদ্যোগ এটিই প্রথম নয়, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভসহ বিশ্বের অন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আগ্রাসীভাবে সুদের হার বাড়াচ্ছে। ফেডারেল রিজার্ভ তার স্বল্পমেয়াদি সুদের হার ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিউজিল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেঞ্চমার্ক সুদের হার আশঙ্কার চেয়েও আগ্রাসীভাবে সংশোধন করেছে। আগামী বছর এটি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার রয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশে। যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ছিল ১ থেকে ৩ শতাংশ। পাশাপাশি বর্তমানে দেশটিতে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৩ শতাংশ।
এক পূর্বাভাসে বলা হয়, আগামী বছর বেকারত্ব আরও বাড়বে। পাশাপাশি দেশটির অর্থনীতিতে মন্দার প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে নিউজিল্যান্ডে ডলারের বিনিময় হার বেড়েছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে গভর্নর অ্যাড্রিয়ান ওর বলেন, ‘কোর ভোক্তা মূল্যস্ফীতি এখনও ঊর্ধ্বমুখী। পাশাপাশি দেশের কর্মসংস্থান পরিস্থিতি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। স্বল্পমেয়াদি মূল্যস্ফীতির প্রত্যাশাও বেড়েছে। ফলে সামগ্রিকভাবে দেশে উচ্চতর মূল্যস্ফীতির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৩ নভেম্বর) মুদ্রানীতি কমিটি সুদের হার সম্পূর্ণভাবে ১ শতাংশ বাড়ানোর কথা বিবেচনা করেছিল। তবে সেটা দশমিক ৭৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়।’
তিনি আরও জানান, মূল্যস্ফীতি কারো বন্ধু নয় এবং এটি নিম্নমুখী করার জন্য ছোট আকারের একটি মন্দার প্রয়োজন হতে পারে। একই সঙ্গে দেশকে মূল্যস্ফীতির হাত থেকে রক্ষা করতে সবারই ব্যয়ের পরিমাণ সংকুচিত করতে হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে বিশ্বের অর্থনীতির জন্য খারাপ সংবাদ দিয়েছে প্যারিসভিত্তিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)। সংস্থাটি বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে রেকর্ড পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগ্রাসীভাবে সুদের হার বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। এ অবস্থায় বিশ্ব অর্থনীতি মন্দায় পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক বিশ্লেষক। যদিও বিশ্ব অর্থনীতি সীমিত প্রবৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে প্যারিসভিত্তিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)।
ওইসিডির অনুমান, চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতি মাত্র ৩ দশমিক ১ শতাংশ প্রসারিত হবে। এ পূর্বাভাস ২০২১ সালে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে অনেক কম। তবে আগামী বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরো খারাপ হবে। ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতি মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ প্রসারিত হবে।
ওইসিডি মহাসচিব ম্যাথিয়াস কোরম্যান বলেন, ‘এটা সত্য যে আমরা বিশ্বব্যাপী মন্দার পূর্বাভাস দিচ্ছি না। তবে এটা বেশ চ্যালেঞ্জিং প্রাক্কলন। আমি মনে করি না যে ২ দশমিক ২ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস স্বস্তিদায়ক।’
৩৮টি সদস্য দেশ নিয়ে গঠিত ওইসিডি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও সমৃদ্ধি নিয়ে কাজ করে এবং পর্যায়ক্রমে প্রতিবেদন ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে থাকে। সংস্থাটির পরিসংখ্যান দেখায় যে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দিতে ভূমিকা পালন করেছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় সংস্থাটির সদস্য দেশগুলোর ১৮ শতাংশ জ্বালানিতে ব্যয় হচ্ছে।
সর্বশেষ পূর্বাভাসে ওইসিডি ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আগ্রাসীভাবে সুদের হার বাড়াচ্ছে। এরই মধ্যে চলতি বছর বেঞ্চমার্ক সুদের হার ছয়বার বাড়ানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ পদক্ষেপ বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিকে প্রায় স্থবির করে দেবে। এ কারণে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি মাত্র ১ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়বে। যেখানে ২০২১ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। এছাড়া ২০২৩ ও ২০২৪ সালে দেশটির জিডিপি যথাক্রমে দশমিক ৫ ও ১ শতাংশ বাড়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র অন্তত একটি মৃদু মন্দায় প্রবেশ করবে। যদিও ওইসিডি নির্দিষ্ট করে মন্দার কথা বলেনি। প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি কিছুটা ধীর হলেও ২০২৩ ও ২০২৪ সালে সেটা ফেডারেল রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশের ওপর থাকবে।
ওইসিডি জানিয়েছে, আগামী বছরের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অন্যতম ভূমিকা রাখবে এশিয়া। অঞ্চলটির উদীয়মান বাজারগুলো দৃঢ় প্রবৃদ্ধি পাবে। যেমন ভারতের অর্থনীতি চলতি বছর ৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং আগামী বছর ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়বে। পাশাপাশি চীনের অর্থনীতি ২০২২ ও ২০২৩ সালে যথাক্রমে ৩ দশমিক ৩ ও ৪ দশমিক ৬ শতাংশ হারে প্রসারিত হবে। জিরো কোভিড নীতি ও আবাসন খাতে মন্দার কারণে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধীর হবে।
শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২
মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় এবার ব্যাংক সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্য রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউজিল্যান্ড সুদের হার তিন-চতুর্থাংশ পয়েন্ট বাড়িয়ে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশে উন্নীত করেছে। রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশটিতে সুদের হার ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত হয়েছে। এপি
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৯ সালে অফিশিয়াল ক্যাশ রেট প্রবর্তন করে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময়ের পর এবারই প্রথমবারের মতো সুদের হার অর্ধ পয়েন্টের বেশি বাড়াল ব্যাংকটি। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পাওয়া নতুন সুদের হারটি ২০০৯ সালের পর সর্বোচ্চ।
এ প্রসঙ্গে নিউজিল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অ্যাড্রিয়ান ওর বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটির সম্মতি অনুযায়ী সুদের হার বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে হারটি আগের তুলনায় দ্রুতগতিতে বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাখার জন্যই এটি করা হয়েছে।’
গ্রাহকদের উদ্দেশে গভর্নর বলেন, ‘আপনারা ব্যয় সংকোচন করা নিয়ে চিন্তা করুন। ব্যয়ের চেয়ে সঞ্চয় করার কথা বেশি ভাবুন। আমার মনে হয় এটি একটি অদ্ভুত ধারণা। তবুও আপনারা এটা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন।’
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নেয়া এই উদ্যোগ এটিই প্রথম নয়, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভসহ বিশ্বের অন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আগ্রাসীভাবে সুদের হার বাড়াচ্ছে। ফেডারেল রিজার্ভ তার স্বল্পমেয়াদি সুদের হার ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিউজিল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেঞ্চমার্ক সুদের হার আশঙ্কার চেয়েও আগ্রাসীভাবে সংশোধন করেছে। আগামী বছর এটি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার রয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশে। যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ছিল ১ থেকে ৩ শতাংশ। পাশাপাশি বর্তমানে দেশটিতে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৩ শতাংশ।
এক পূর্বাভাসে বলা হয়, আগামী বছর বেকারত্ব আরও বাড়বে। পাশাপাশি দেশটির অর্থনীতিতে মন্দার প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে নিউজিল্যান্ডে ডলারের বিনিময় হার বেড়েছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে গভর্নর অ্যাড্রিয়ান ওর বলেন, ‘কোর ভোক্তা মূল্যস্ফীতি এখনও ঊর্ধ্বমুখী। পাশাপাশি দেশের কর্মসংস্থান পরিস্থিতি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। স্বল্পমেয়াদি মূল্যস্ফীতির প্রত্যাশাও বেড়েছে। ফলে সামগ্রিকভাবে দেশে উচ্চতর মূল্যস্ফীতির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৩ নভেম্বর) মুদ্রানীতি কমিটি সুদের হার সম্পূর্ণভাবে ১ শতাংশ বাড়ানোর কথা বিবেচনা করেছিল। তবে সেটা দশমিক ৭৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়।’
তিনি আরও জানান, মূল্যস্ফীতি কারো বন্ধু নয় এবং এটি নিম্নমুখী করার জন্য ছোট আকারের একটি মন্দার প্রয়োজন হতে পারে। একই সঙ্গে দেশকে মূল্যস্ফীতির হাত থেকে রক্ষা করতে সবারই ব্যয়ের পরিমাণ সংকুচিত করতে হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে বিশ্বের অর্থনীতির জন্য খারাপ সংবাদ দিয়েছে প্যারিসভিত্তিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)। সংস্থাটি বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে রেকর্ড পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগ্রাসীভাবে সুদের হার বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। এ অবস্থায় বিশ্ব অর্থনীতি মন্দায় পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক বিশ্লেষক। যদিও বিশ্ব অর্থনীতি সীমিত প্রবৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে প্যারিসভিত্তিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)।
ওইসিডির অনুমান, চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতি মাত্র ৩ দশমিক ১ শতাংশ প্রসারিত হবে। এ পূর্বাভাস ২০২১ সালে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে অনেক কম। তবে আগামী বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরো খারাপ হবে। ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতি মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ প্রসারিত হবে।
ওইসিডি মহাসচিব ম্যাথিয়াস কোরম্যান বলেন, ‘এটা সত্য যে আমরা বিশ্বব্যাপী মন্দার পূর্বাভাস দিচ্ছি না। তবে এটা বেশ চ্যালেঞ্জিং প্রাক্কলন। আমি মনে করি না যে ২ দশমিক ২ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস স্বস্তিদায়ক।’
৩৮টি সদস্য দেশ নিয়ে গঠিত ওইসিডি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও সমৃদ্ধি নিয়ে কাজ করে এবং পর্যায়ক্রমে প্রতিবেদন ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে থাকে। সংস্থাটির পরিসংখ্যান দেখায় যে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দিতে ভূমিকা পালন করেছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় সংস্থাটির সদস্য দেশগুলোর ১৮ শতাংশ জ্বালানিতে ব্যয় হচ্ছে।
সর্বশেষ পূর্বাভাসে ওইসিডি ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আগ্রাসীভাবে সুদের হার বাড়াচ্ছে। এরই মধ্যে চলতি বছর বেঞ্চমার্ক সুদের হার ছয়বার বাড়ানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ পদক্ষেপ বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিকে প্রায় স্থবির করে দেবে। এ কারণে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি মাত্র ১ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়বে। যেখানে ২০২১ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। এছাড়া ২০২৩ ও ২০২৪ সালে দেশটির জিডিপি যথাক্রমে দশমিক ৫ ও ১ শতাংশ বাড়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র অন্তত একটি মৃদু মন্দায় প্রবেশ করবে। যদিও ওইসিডি নির্দিষ্ট করে মন্দার কথা বলেনি। প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি কিছুটা ধীর হলেও ২০২৩ ও ২০২৪ সালে সেটা ফেডারেল রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশের ওপর থাকবে।
ওইসিডি জানিয়েছে, আগামী বছরের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অন্যতম ভূমিকা রাখবে এশিয়া। অঞ্চলটির উদীয়মান বাজারগুলো দৃঢ় প্রবৃদ্ধি পাবে। যেমন ভারতের অর্থনীতি চলতি বছর ৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং আগামী বছর ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়বে। পাশাপাশি চীনের অর্থনীতি ২০২২ ও ২০২৩ সালে যথাক্রমে ৩ দশমিক ৩ ও ৪ দশমিক ৬ শতাংশ হারে প্রসারিত হবে। জিরো কোভিড নীতি ও আবাসন খাতে মন্দার কারণে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধীর হবে।