দীর্ঘদিন থেকে জাপান বাংলাদেশের ভালো বন্ধু রাষ্ট্র। এর আগে বহুবার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় চলে আসে। ভূরাজনৈতিক বিষয়টি মাথায় রেখেই জাপান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে এবং কোন খাতে বিনিয়োগ করবে সে ক্ষেত্রেও জাপানের নিজস্ব পছন্দ রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন জাপানের রিটসুমেইকান এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টাটসুফুনি ইয়ামাগাটা।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস) আয়োজিত তিন দিনের বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ছিল। সম্মেলনে অধ্যাপক টাটসুফুনি ইয়ামাগাটা ‘ট্রানজিশন ইন জাপান’স ভিউ অব বাংলাদেশ : হাউ টু মিডল পাউয়ার সুড বিহ্যাভ অ্যালং হেজেমনস’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রবন্ধে তিনি জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক টাটসুফুনি ইয়ামাগাটা বলেন, ‘একটি দেশ কোন কোন দেশে বিনিয়োগ করবে বা কোন দেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক তৈরি হবে সেটি অনেকগুলো বিষয়ে ওপর নির্ভর করে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক তৈরিতে কোয়াড বড় ভূমিকা পালন করছে। ভূরাজনীতি একটি বড় বিষয়।’
উল্লেখ্য, কোয়াড (কিউইউএআরডি) এর পূর্ণরূপ হচ্ছে ‘কোয়াডরিলেটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ’। এর অর্থ হলো ‘চতুর্পক্ষীয় নিরাপত্তা সংলাপ’। কোয়াড এর মূল উদ্দেশ্য চীনের অর্থনৈতিক ও সামরিক অগ্রযাত্রা প্রতিহত করা। যদিও প্রশান্ত মহাসাগরে অবাধ নৌ চলাচল নিশ্চিত করার কথা বলে এ সংগঠনটি যাত্রা শুরু করেছিল। তবে বর্তমানে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আধিপত্য বিস্তারকে রুখে দেয়ায় কোয়াডের মূল উদ্দেশ্য।
প্রবন্ধ উপস্থাপনায় তিনি আরও বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। পরে কৌশলগতকারণে তা আরও শক্তিশালী হয়েছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি বড় সাফল্য অর্জন করে বিশ্বের বুকে শিল্পখাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। রানা প্লাজা, হোলি আর্টিজান বাংলাদেশের জন্য কালো অধ্যায়। হোলি আর্টিজানে সাতজন জাপানি নাগরিক মৃত্যবরণ করেছে। তারপরও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। বরং জাপানি ঋণ গ্রহণে বাংলাদেশ প্রথম সারির একটি দেশ।’
শুক্রবার সারাদিনের সেশনে আরও কয়েকটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে আরেকটি প্রবন্ধ হলো, ‘রেজিল্যান্স ইন লো অ্যান্ড মিডল ইনকাম কানট্রিজ : লেশন ফ্রম কোভিড-১৯ প্যান্ডামিক’। এই প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ মোস্তাক মোবারক।
প্রবন্ধে দেখানো হয়, স্বল্প ও মধ্য আয়ের দেশগুলো করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় উন্নত দেশের তুলনায় অনেক ভালো করেছে। অধিকাংশ স্বল্প ও মধ্য আয়ের দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে যেখানে উন্নত দেশের হার অনেক কম।’
প্রবন্ধে আরও বলা হয়, ‘করোনা সংকটের কারণে ৮ শতাংশ থেকে ৮৭ শতাংশ স্বল্প ও মধ্য আয়ের দেশের আয় কমেছে। ৯ থেকে ৮৭ শতাংশ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা কমেছে। ৮০ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। তবে ভ্যাকসিন গ্রহণে এগিয়ে থাকলেও বেশি অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে পড়েছে স্বল্প আগের দেশগুলো।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক উন্নয়ন বিভাগের অধ্যাপক অলোকা বসু, যুক্তরাজ্যের লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিক্সের অধ্যাপক নাইলা কবির, যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যলয়ের অধ্যাপক সোনাল্ড ডেসাই, নিউ ইয়োর্কের পপুলেশন কাউন্সিলের জৈষ্ট সহকারী সাজেদা আমিনসহ আরও অনেকে।
শুক্রবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২২
দীর্ঘদিন থেকে জাপান বাংলাদেশের ভালো বন্ধু রাষ্ট্র। এর আগে বহুবার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় চলে আসে। ভূরাজনৈতিক বিষয়টি মাথায় রেখেই জাপান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে এবং কোন খাতে বিনিয়োগ করবে সে ক্ষেত্রেও জাপানের নিজস্ব পছন্দ রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন জাপানের রিটসুমেইকান এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টাটসুফুনি ইয়ামাগাটা।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস) আয়োজিত তিন দিনের বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ছিল। সম্মেলনে অধ্যাপক টাটসুফুনি ইয়ামাগাটা ‘ট্রানজিশন ইন জাপান’স ভিউ অব বাংলাদেশ : হাউ টু মিডল পাউয়ার সুড বিহ্যাভ অ্যালং হেজেমনস’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রবন্ধে তিনি জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক টাটসুফুনি ইয়ামাগাটা বলেন, ‘একটি দেশ কোন কোন দেশে বিনিয়োগ করবে বা কোন দেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক তৈরি হবে সেটি অনেকগুলো বিষয়ে ওপর নির্ভর করে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক তৈরিতে কোয়াড বড় ভূমিকা পালন করছে। ভূরাজনীতি একটি বড় বিষয়।’
উল্লেখ্য, কোয়াড (কিউইউএআরডি) এর পূর্ণরূপ হচ্ছে ‘কোয়াডরিলেটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ’। এর অর্থ হলো ‘চতুর্পক্ষীয় নিরাপত্তা সংলাপ’। কোয়াড এর মূল উদ্দেশ্য চীনের অর্থনৈতিক ও সামরিক অগ্রযাত্রা প্রতিহত করা। যদিও প্রশান্ত মহাসাগরে অবাধ নৌ চলাচল নিশ্চিত করার কথা বলে এ সংগঠনটি যাত্রা শুরু করেছিল। তবে বর্তমানে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আধিপত্য বিস্তারকে রুখে দেয়ায় কোয়াডের মূল উদ্দেশ্য।
প্রবন্ধ উপস্থাপনায় তিনি আরও বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। পরে কৌশলগতকারণে তা আরও শক্তিশালী হয়েছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি বড় সাফল্য অর্জন করে বিশ্বের বুকে শিল্পখাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। রানা প্লাজা, হোলি আর্টিজান বাংলাদেশের জন্য কালো অধ্যায়। হোলি আর্টিজানে সাতজন জাপানি নাগরিক মৃত্যবরণ করেছে। তারপরও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। বরং জাপানি ঋণ গ্রহণে বাংলাদেশ প্রথম সারির একটি দেশ।’
শুক্রবার সারাদিনের সেশনে আরও কয়েকটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে আরেকটি প্রবন্ধ হলো, ‘রেজিল্যান্স ইন লো অ্যান্ড মিডল ইনকাম কানট্রিজ : লেশন ফ্রম কোভিড-১৯ প্যান্ডামিক’। এই প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ মোস্তাক মোবারক।
প্রবন্ধে দেখানো হয়, স্বল্প ও মধ্য আয়ের দেশগুলো করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় উন্নত দেশের তুলনায় অনেক ভালো করেছে। অধিকাংশ স্বল্প ও মধ্য আয়ের দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে যেখানে উন্নত দেশের হার অনেক কম।’
প্রবন্ধে আরও বলা হয়, ‘করোনা সংকটের কারণে ৮ শতাংশ থেকে ৮৭ শতাংশ স্বল্প ও মধ্য আয়ের দেশের আয় কমেছে। ৯ থেকে ৮৭ শতাংশ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা কমেছে। ৮০ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। তবে ভ্যাকসিন গ্রহণে এগিয়ে থাকলেও বেশি অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে পড়েছে স্বল্প আগের দেশগুলো।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক উন্নয়ন বিভাগের অধ্যাপক অলোকা বসু, যুক্তরাজ্যের লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিক্সের অধ্যাপক নাইলা কবির, যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যলয়ের অধ্যাপক সোনাল্ড ডেসাই, নিউ ইয়োর্কের পপুলেশন কাউন্সিলের জৈষ্ট সহকারী সাজেদা আমিনসহ আরও অনেকে।