নিত্যপণ্যের বাজারে চাল-ডাল-আটা-ময়দা-তেল-চিনিসহ প্রায় প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের দাম ‘দফায় দফায়’ বেড়েই চলছে। তবে, ফার্মের মুরগি ও ডিমের দাম কমতে শুরু করেছে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীতে শীতকালীন সবজি আসতে থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে। নিত্যপণ্য ক্রয়ে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।
গতকাল রাজধানীর শ্যামলী কাঁচাবাজারের পূর্ব-দক্ষিণ গেটে দেখা হয় আতাউর রহমানের সঙ্গে। পঞ্চশঊর্ধ্ব বেসরকারি চাকরিজীবী আতাউর রহমান সাদা পলিথিন ব্যাগে করে বাজার নিয়ে বাজার থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছিলেন। তার কাছে বাজারের বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদকে বলেন, ‘কষ্টে আছি, অনেক কষ্ট করে চলছি। আগের মতো কিনতে পারছি না, ঠিক মতো খাইতে পারছি না। অল্প কিনছি, অল্প খাচ্ছি। এত ব্যালেন্স করেও সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।’
বাজারে কী কী কিনলেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মাছ-মাংস কেনা তো সাধ্যের বাইরে গেছে। বাজারে আসার সময় মেয়েটা বলেছিল নতুন আলু আনতে। তাই এক কেজি নতুন আলু ষাট টাকা দিয়ে কিনলাম। সঙ্গে এক কেজি ওজনের একটা বাঁধাকপি ৪০ টাকায় আর এক আঁটি শাক কিনলাম ২০ টাকায়।’
‘জিনিস পত্রের যে দাম! এর ওপর বাসাভাড়া, বাচ্চাদের পড়ালেখার খরচ! তেল-চাল-ডাল-চিনি কিনতেই বেতনের টাকা শেষ হয়ে যায়!’ বলে অক্ষেপ করতে করতে চলে গেলেন আতাউর রহমান।
এ সময়ে কথা হয় রাফিদ, রিয়াদ ও তন্ময়ের সঙ্গে। তারা মেসে থাকেন। তারা শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে তাদের একজন রিয়াদ সংবাদকে বলেন, ‘ছয়মাস আগে আমাদের মেসে একজনের থাকতে ও খাইতে ছয় হাজার টাকা হলেই হতো। এখন মাসে আট হাজার টাকা দিয়েও হয় না। তারপরও মেসে আগের মতো খাওয়া-দাওয়া হয় না।’
তার পাশে থাকা রাফিদ যোগ করে বলেন, ‘হাত খরচের টাকাটা বাজার খরচের মধ্যে চলে যায়। বাড়ি থেকে বাড়তি টাকা চাইতে পারি না। চলাফেরা করতে খুব সমস্যা হচ্ছে।’
বাজারে দামের বিষয়ে তন্ময় বলেন, ‘আটাশের চাল কেজি ৬০ টাকা হয়েছে। একটু কমেছে বয়লার মুরগির দাম, কেজি ১৬০ টাকা। তবে, গত কয়েকদিন ধরে সবজির দামটা কমতে শুরু করেছে।’
শ্যামলী কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘শীতের সবজি বাজারে আসায় দাম আনেক কমেছে। কেজিতে ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। কয়েকদিন আগেও যে আলু (নতুন আলু) ১০০ থেকে ১১০ টাকা বিক্রি করেছি, সেই আলুই আজ ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। যে বাঁধাকপি গত সপ্তাহেও বিক্রি করেছি ৬০ টাকায়, আজ সেটা বিক্রি করছি ৪০ টাকায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগেও ৫০০ গ্রাম ওজনের ১টা ফুলকপি ৫০ টাকায় বিক্রি করেছি, আজ দের কেজি ওজনের ১টা ফুলকপি বিক্রি করছি ৪০ টাকায়। সাধারণত দাম কমলে বিক্রি বেড়ে যায়। আমরা সবসময় এমনই দেখে আসছি। কিন্তু এবার ব্যাপারটা ভিন্ন। কিন্তু সে হারে বিক্রি বাড়েনি।’
ক্রেতা হিসেবে বিআর আটাশ চালের কেজি কতো টাকা জানতে চাইলে কাওরান বাজারের মেসার্স হাজী রাইছ এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মো. মাইন উদ্দিন মাইন সংবাদকে বলেন, ‘বিআরআটাশ চাল বিক্রি করছি কেজি প্রতি ৬০ টাকা। যদি এক বস্তা নেন তাহলে ৫০ কেজির বস্তায় ৫০ টাকা রাখবো। আর মিনিকেট চাল যদি নেন তাহলে কেজি ৭০ টাকা করে রাখবো, আর ৫০ কেজির বস্তায় ৫০ টাকা কম রাখবো।’
বাজারে ফার্মের লাল ও সাদা ডিমের দাম এখন কিছুটা কমতির দিকে। এক ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি করছি ১১০ টাকায় আর এক ডজন হাঁসের ডিম বিক্রি করছি ২০০ টাকা বলে জানান, কারওয়ান বাজারের ভাই ভাই স্টোরের ডিম ব্যাবসায়ী।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে গরুর মাংস ৬৮০-৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯০০-৯৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২২
নিত্যপণ্যের বাজারে চাল-ডাল-আটা-ময়দা-তেল-চিনিসহ প্রায় প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের দাম ‘দফায় দফায়’ বেড়েই চলছে। তবে, ফার্মের মুরগি ও ডিমের দাম কমতে শুরু করেছে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীতে শীতকালীন সবজি আসতে থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে। নিত্যপণ্য ক্রয়ে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।
গতকাল রাজধানীর শ্যামলী কাঁচাবাজারের পূর্ব-দক্ষিণ গেটে দেখা হয় আতাউর রহমানের সঙ্গে। পঞ্চশঊর্ধ্ব বেসরকারি চাকরিজীবী আতাউর রহমান সাদা পলিথিন ব্যাগে করে বাজার নিয়ে বাজার থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছিলেন। তার কাছে বাজারের বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদকে বলেন, ‘কষ্টে আছি, অনেক কষ্ট করে চলছি। আগের মতো কিনতে পারছি না, ঠিক মতো খাইতে পারছি না। অল্প কিনছি, অল্প খাচ্ছি। এত ব্যালেন্স করেও সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।’
বাজারে কী কী কিনলেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মাছ-মাংস কেনা তো সাধ্যের বাইরে গেছে। বাজারে আসার সময় মেয়েটা বলেছিল নতুন আলু আনতে। তাই এক কেজি নতুন আলু ষাট টাকা দিয়ে কিনলাম। সঙ্গে এক কেজি ওজনের একটা বাঁধাকপি ৪০ টাকায় আর এক আঁটি শাক কিনলাম ২০ টাকায়।’
‘জিনিস পত্রের যে দাম! এর ওপর বাসাভাড়া, বাচ্চাদের পড়ালেখার খরচ! তেল-চাল-ডাল-চিনি কিনতেই বেতনের টাকা শেষ হয়ে যায়!’ বলে অক্ষেপ করতে করতে চলে গেলেন আতাউর রহমান।
এ সময়ে কথা হয় রাফিদ, রিয়াদ ও তন্ময়ের সঙ্গে। তারা মেসে থাকেন। তারা শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে তাদের একজন রিয়াদ সংবাদকে বলেন, ‘ছয়মাস আগে আমাদের মেসে একজনের থাকতে ও খাইতে ছয় হাজার টাকা হলেই হতো। এখন মাসে আট হাজার টাকা দিয়েও হয় না। তারপরও মেসে আগের মতো খাওয়া-দাওয়া হয় না।’
তার পাশে থাকা রাফিদ যোগ করে বলেন, ‘হাত খরচের টাকাটা বাজার খরচের মধ্যে চলে যায়। বাড়ি থেকে বাড়তি টাকা চাইতে পারি না। চলাফেরা করতে খুব সমস্যা হচ্ছে।’
বাজারে দামের বিষয়ে তন্ময় বলেন, ‘আটাশের চাল কেজি ৬০ টাকা হয়েছে। একটু কমেছে বয়লার মুরগির দাম, কেজি ১৬০ টাকা। তবে, গত কয়েকদিন ধরে সবজির দামটা কমতে শুরু করেছে।’
শ্যামলী কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘শীতের সবজি বাজারে আসায় দাম আনেক কমেছে। কেজিতে ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। কয়েকদিন আগেও যে আলু (নতুন আলু) ১০০ থেকে ১১০ টাকা বিক্রি করেছি, সেই আলুই আজ ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। যে বাঁধাকপি গত সপ্তাহেও বিক্রি করেছি ৬০ টাকায়, আজ সেটা বিক্রি করছি ৪০ টাকায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগেও ৫০০ গ্রাম ওজনের ১টা ফুলকপি ৫০ টাকায় বিক্রি করেছি, আজ দের কেজি ওজনের ১টা ফুলকপি বিক্রি করছি ৪০ টাকায়। সাধারণত দাম কমলে বিক্রি বেড়ে যায়। আমরা সবসময় এমনই দেখে আসছি। কিন্তু এবার ব্যাপারটা ভিন্ন। কিন্তু সে হারে বিক্রি বাড়েনি।’
ক্রেতা হিসেবে বিআর আটাশ চালের কেজি কতো টাকা জানতে চাইলে কাওরান বাজারের মেসার্স হাজী রাইছ এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মো. মাইন উদ্দিন মাইন সংবাদকে বলেন, ‘বিআরআটাশ চাল বিক্রি করছি কেজি প্রতি ৬০ টাকা। যদি এক বস্তা নেন তাহলে ৫০ কেজির বস্তায় ৫০ টাকা রাখবো। আর মিনিকেট চাল যদি নেন তাহলে কেজি ৭০ টাকা করে রাখবো, আর ৫০ কেজির বস্তায় ৫০ টাকা কম রাখবো।’
বাজারে ফার্মের লাল ও সাদা ডিমের দাম এখন কিছুটা কমতির দিকে। এক ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি করছি ১১০ টাকায় আর এক ডজন হাঁসের ডিম বিক্রি করছি ২০০ টাকা বলে জানান, কারওয়ান বাজারের ভাই ভাই স্টোরের ডিম ব্যাবসায়ী।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে গরুর মাংস ৬৮০-৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯০০-৯৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।