রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্রপ্রতিনিধি নির্বাচন সামনে রেখে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ সদস্যদের দেখা গেছে। রাতে দুটি আবাসিক হলে তল্লাশি চালানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয়-২৪ এবং মতিহার হলে গতকাল রোববার রাতে যৌথ অভিযান চালায় পুলিশ, প্রক্টরিয়াল বডি ও হল প্রশাসন। এ সময় দুই হলে মোট পাঁচজন অনাবাসিক শিক্ষার্থীকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তাদের আজ সোমবারের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় হল প্রশাসন।

আবাসিক হলে পুলিশ দিয়ে তল্লাশি চালানোর সমালোচনা করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার তার ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে পুলিশের কাজ কী? যদি পুলিশের কাজ থাকে তাহলে হল প্রভোস্টের কাজ কী? যেভাবে তল্লাশি হচ্ছে, মনে হয় হলগুলোতে শিক্ষার্থী থাকেন না, সন্ত্রাসী থাকে। কী গুরুতর অসম্মানজনক বিষয়! পুলিশকে হলে ঢুকিয়ে নর্মালাইজ করার চেষ্টা বিশেষ ভালো লক্ষণ না। আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে মনে করিয়ে দিচ্ছে। হলের নিরাপত্তার দায়িত্ব প্রভোস্টের, সে জন্যই তাকে দায়িত্ব দেওয়া হইছে। দুই দিন পরপর হলে চুরি হয়, যা ঠেকানোর ন্যূনতম মুরোদ তাদের নাই। এখন পুলিশগিরি দেখাচ্ছেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘গতকাল রাতে দুটি হলে যৌথ তল্লাশি চালানো হয়েছে। মতিহার হলে অভিযান চালিয়ে তিনজন এবং বিজয়-২৪ হলে দুজন অনাবাসিক শিক্ষার্থী পাওয়া গেছে। তারা সবাই সংশ্লিষ্ট হলেরই ছাত্র। তবু আমরা নির্দেশনা দিয়েছি, আগামীকালের (আজ) মধ্যে হল ত্যাগ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা খুবই দায়িত্বশীল আচরণ করেছেন। আগের অবস্থা থেকে এখন হল অনেক ভালো আছে।’

গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অন্তত ৩০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ফটকগুলোতে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। নির্বাচনের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থে ভোট গ্রহণের দিন ২ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব জানিয়েছেন, নির্বাচনের দিন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাদাপোশাক ও ইউনিফর্ম মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার পুলিশ সদস্য ক্যাম্পাসে মোতায়েন থাকবেন। এ ছাড়া অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও সার্বিক সহযোগিতায় থাকবে।