alt

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন: নিরাপদ ও নারীবান্ধব ক্যাম্পাসের প্রত্যাশা ছাত্রীদের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে যারা নেতৃত্বে আসবেন, তাদের কাছে নিরাপদ ও নারীবান্ধব ক্যাম্পাসের প্রত্যাশা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের অনেকে।

তাদের ভাষ্য, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্যানেলগুলো দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ইশতেহারে নারীবান্ধব ক্যাম্পাস গঠনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তবে এখন দেখার বিষয়—এই প্রতিশ্রুতিগুলোর কতটুকু বাস্তবে রূপ নেয়। পাশাপাশি আবাসন সংকট নিরসনের প্রতিশ্রুতিও যেন কেবল ইশতেহারে সীমাবদ্ধ না থাকে, সেই প্রত্যাশাও জানিয়েছেন তারা।

আগামী বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ হাজার ৫১৬ শিক্ষার্থী এই নির্বাচনে ভোট দেবেন, যার মধ্যে ছাত্রী ভোটার প্রায় ১১ হাজার ৩২৯ জন। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আইটি ভবন, নতুন কলা ভবন, বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান ও বাণিজ্য (বিবিএ) অনুষদ ভবনে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন জানান, প্রতিটি শিক্ষার্থী চাকসুর ২৬টি এবং হলের ১৪টি পদে ভোট দেবেন। এজন্য গোপন কক্ষ তৈরি করা হয়েছে।

এ নির্বাচনে ৪১৫ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। তারা ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্র শিবির, বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের ১২টি প্যানেলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া প্রতিটি পদে স্বতন্ত্রভাবে আরও ডজনখানেক প্রার্থী লড়ছেন।

সব প্যানেল ও প্রার্থীদের ইশতেহারে আবাসন, যোগাযোগব্যবস্থা ও নারীবান্ধব ক্যাম্পাস গঠনের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীরা ইশতেহার নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন, যা সোমবার রাতে শেষ হবে।

ক্যাম্পাসে ছাত্রীরা এসব ইশতেহার বিশ্লেষণ করছেন—কেউ আশাবাদী, কেউ আবার বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন।

চারুকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী তানজিলা রহমান দিয়া বলেন, “চাকসু ও হলের নেতৃত্বে যারা আসবেন, তাদের কাছে প্রথম দাবি নিরাপদ ক্যাম্পাস। যেন ছাত্রীদের ক্যাম্পাসে চলাচলে নিরাপত্তা থাকে এবং হলের বাইরে যারা মেসে থাকেন, তারাও নিরাপদে থাকতে পারেন।”

তিনি আরও বলেন, “ইশতেহারে আবাসন ও যোগাযোগের উন্নতির কথা বলা হলেও, এক বছরের মেয়াদে সেগুলো কতটা বাস্তবায়ন সম্ভব, তা নিয়েও সন্দেহ আছে।”

সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী আনিকা আনজুম মনে করেন, দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিরাপত্তাহীনতা বেশি।

“এখানে ছাত্রদের জন্য এক ধরনের নিয়ম, আর ছাত্রীদের জন্য অন্য নিয়ম। ছেলেরা রাজনীতিতে সহজে অংশ নিতে পারে, কিন্তু মেয়েরা জড়ালে কটূক্তির শিকার হয়,” বলেন আনিকা।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, “চাকসু নেতৃত্ব যেন ছেলেমেয়ে ভেদাভেদ না করে সত্যিকারের নারীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তোলে এবং আমাদের অধিকার নিশ্চিত করে।”

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্রী ফাহমিদা অর্পি বলেন, “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা আবাসন, যার ভুক্তভোগী বেশি ছাত্রীদেরই।”

তিনি জানান, “আগে হলে উঠতে হলে দলীয় পরিচয় লাগত। এখন ‘মেধার ভিত্তিতে’ সিট বণ্টনের অজুহাতে অনেককে বঞ্চিত করা হচ্ছে। প্রথম বর্ষের ছাত্রীদের তো ফলাফলও থাকে না, ফলে তারা আসন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

অর্পি বলেন, “দেশের নানা অঞ্চল থেকে মেয়েরা এখানে পড়তে আসে। কিন্তু প্রথম বর্ষে ছাত্রীদের থাকার সমস্যা হয় সবচেয়ে বেশি। নিরাপত্তা বড় বিষয় হওয়ায় বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজে পাওয়া কঠিন। আশা করি নতুন নেতৃত্ব দলীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করবে।”

ছাত্রীরা আরও জানান, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য তাদের ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে হয়। তাই হলগুলোতে সুপার শপ ও ফার্মেসি স্থাপনের দাবিও জানিয়েছেন তারা।

অর্পির একই বিভাগের ছাত্রী ইবতিসাম আহমেদ বলেন, “আমাদের হলগুলোতে নিরাপত্তার অজুহাতে প্রবেশের সময় সীমিত করা হয়েছে। আমরা চাই সময়টা বাড়ানো হোক। এছাড়া বুলিংয়ের বিষয়টিও গুরুতর—রাজনৈতিক মতাদর্শের বাইরে গেলেই নানা অপমান সহ্য করতে হয়।”

সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে অর্থনীতি বিভাগের কয়েকজন ছাত্রী জানান, তাদের কাছে নিরাপত্তা ও আবাসনই প্রধান ইস্যু। শহর থেকে আসা-যাওয়া করা শাটল ট্রেনের ছাত্রীদেরও নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করতে হয় বলে জানান তারা।

এক ছাত্রী বলেন, “শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। আমাদের ক্যাম্পাসটা গ্রামের ভেতরে, স্থানীয় বখাটেদের কারণেও সমস্যা হয়। আশা করি নতুন নেতৃত্ব এসব সমস্যা সমাধানে কাজ করবে।”

অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী সুমাইয়া মমতাজ মিম বলেন, “ছাত্রীদের নানা ক্ষেত্রে বঞ্চিত করা হয়, এমনকি খেলাধুলাতেও। ছাত্রদের জন্য বিভিন্ন সময়ে খেলাধুলার আয়োজন হলেও ছাত্রীদের জন্য বছরে মাত্র একবার ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়।”

অহনা হালদার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “ছাত্রীরা অনেক সময় শহরে টিউশনে বা জরুরি কাজে যায়। ফেরার ট্রেন ক্যাম্পাসে পৌঁছায় রাত সাড়ে ৯টায়, খেয়ে হলে ফিরতে প্রায় ১০টা বাজে। তাই আমরা চাই, হলের প্রবেশের সময়টা আরেকটু বাড়ানো হোক।”

ছবি

জবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক হলেন খাদিজা

ছবি

রাবিতে নবীনবরণ: এক মঞ্চে রাকসু, ডাকসু ও চাকসুর ভিপি

ছবি

ঢাবি রসায়ন বিভাগের শিক্ষক এরশাদ হালিমের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

ছবি

ছাত্রলীগের রাবি শাখার সাবেক নেতা আটক

ডাকসু, জাকসু, রাকসু, চাকসু: সম্মিলিত ছাত্র সংসদের বিবৃতি

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস উদযাপন

ছবি

রাকসু জিএসের সঙ্গে বাকবিতন্ডা, রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ চাইলেন রাকসুর প্রতিনিধিরা

ছবি

‘সোহ্রাওয়ার্দীতে গাঁজা বেঁচতে নিষেধ করায় ছাত্রদল নেতা সাম্যকে হত্যা’: ডিবি

ছবি

সৈয়দপুরে আর্মি ইউনিভার্সিটিতে মেট্রোরেল বিষয়ক সেমিনার

ছবি

জকসু নির্বাচন ২২ ডিসেম্বর

ছবি

রাকসুর প্রথম অধিবেশনে ১২ দফা কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

জকসু নির্বাচন ২২ ডিসেম্বর

ছবি

কোটা আন্দোলনে হামলায় ঢাবির আরও ২৭৫ শিক্ষার্থী অভিযুক্ত

ছবি

৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা যৌক্তিক সময়ে নেওয়ার দাবি উত্তীর্ণদের

ছবি

জকসুতে এমফিল বাদ: আমাদের মাইনাস করার মাস্টারপ্ল্যান, বলছে ছাত্রদল

ছবি

বিএনপির বিরুদ্ধে ডাকসুর শিবিরের তিন নেতার বিবৃতি

ছবি

ইবিতে জুলাইবিরোধী ৩০ শিক্ষক-কর্মকর্তা বরখাস্ত

ছবি

সিটি ইউনিভার্সিটিতে সংবাদ সম্মেলন: শাস্তি, ক্ষতিপূরণ ও জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি

ছবি

জবি ছাত্রদলের মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

রাবি: দুই প্রশিক্ষকের উপস্থিতিতে ডুবেছেন সায়মা, তদন্তে পাওয়া গেছে অন্যান্য ‘গাফিলতি’

ছবি

‘বৈষম্য’ বাতিলের দাবীতে লাগাতার কর্মবিরতিতে রাবির স্কুল শিক্ষকরা

ছবি

জকসু নির্বাচন: পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠন

ছবি

রাবি: সায়মার মৃত্যুর ‘সুষ্ঠু বিচার’ দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরা, বিক্ষোভ

ছবি

চবির শহীদ আবদুর রব হলে সমৃদ্ধ কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন

ছবি

রাবি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে আমরণ অনশন, তদন্তে কমিটি

ছবি

রাবি: সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি

রাবি: শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে আমরণ অনশন, তদন্তে কমিটি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ পদ থেকে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের নিয়োগ বাতিল

ছাত্র সংসদ এখন থেকে জাতীয় ছাত্রশক্তি

ছবি

বুয়েটের শ্রীশান্তের বিরুদ্ধে মামলায় ধর্মানুভূতিতে আঘাতের ধারা

ছবি

পুলিশের বলা ‘ত্রিভুজ প্রেমের গল্প’ নিয়ে প্রশ্ন জোবায়েদের শিক্ষকের

ছবি

ছাত্রীদের নিয়ে বাজে মন্তব্য: বুয়েটছাত্র শ্রীশান্ত কারাগারে

ছবি

রাবি: সভাপতির অপসরণসহ চার দাবিতে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ‘শাটডাউন’

ছবি

রাকসুর গেজেট প্রকাশ, শপথ ‘২৬ অক্টোবর’

ছবি

ব্রিটিশ কাউন্সিল পুরস্কার পেলেন ইংরেজি মাধ্যমের ৪২ শিক্ষার্থী

ছবি

তিস্তা প্রকল্পের দাবিতে রাবিতে ‘তিস্তা বাঁচাও আন্দোলন’ কর্মসূচী

tab

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন: নিরাপদ ও নারীবান্ধব ক্যাম্পাসের প্রত্যাশা ছাত্রীদের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে যারা নেতৃত্বে আসবেন, তাদের কাছে নিরাপদ ও নারীবান্ধব ক্যাম্পাসের প্রত্যাশা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের অনেকে।

তাদের ভাষ্য, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্যানেলগুলো দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ইশতেহারে নারীবান্ধব ক্যাম্পাস গঠনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তবে এখন দেখার বিষয়—এই প্রতিশ্রুতিগুলোর কতটুকু বাস্তবে রূপ নেয়। পাশাপাশি আবাসন সংকট নিরসনের প্রতিশ্রুতিও যেন কেবল ইশতেহারে সীমাবদ্ধ না থাকে, সেই প্রত্যাশাও জানিয়েছেন তারা।

আগামী বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ হাজার ৫১৬ শিক্ষার্থী এই নির্বাচনে ভোট দেবেন, যার মধ্যে ছাত্রী ভোটার প্রায় ১১ হাজার ৩২৯ জন। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আইটি ভবন, নতুন কলা ভবন, বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান ও বাণিজ্য (বিবিএ) অনুষদ ভবনে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন জানান, প্রতিটি শিক্ষার্থী চাকসুর ২৬টি এবং হলের ১৪টি পদে ভোট দেবেন। এজন্য গোপন কক্ষ তৈরি করা হয়েছে।

এ নির্বাচনে ৪১৫ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। তারা ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্র শিবির, বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের ১২টি প্যানেলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া প্রতিটি পদে স্বতন্ত্রভাবে আরও ডজনখানেক প্রার্থী লড়ছেন।

সব প্যানেল ও প্রার্থীদের ইশতেহারে আবাসন, যোগাযোগব্যবস্থা ও নারীবান্ধব ক্যাম্পাস গঠনের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীরা ইশতেহার নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন, যা সোমবার রাতে শেষ হবে।

ক্যাম্পাসে ছাত্রীরা এসব ইশতেহার বিশ্লেষণ করছেন—কেউ আশাবাদী, কেউ আবার বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন।

চারুকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী তানজিলা রহমান দিয়া বলেন, “চাকসু ও হলের নেতৃত্বে যারা আসবেন, তাদের কাছে প্রথম দাবি নিরাপদ ক্যাম্পাস। যেন ছাত্রীদের ক্যাম্পাসে চলাচলে নিরাপত্তা থাকে এবং হলের বাইরে যারা মেসে থাকেন, তারাও নিরাপদে থাকতে পারেন।”

তিনি আরও বলেন, “ইশতেহারে আবাসন ও যোগাযোগের উন্নতির কথা বলা হলেও, এক বছরের মেয়াদে সেগুলো কতটা বাস্তবায়ন সম্ভব, তা নিয়েও সন্দেহ আছে।”

সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী আনিকা আনজুম মনে করেন, দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিরাপত্তাহীনতা বেশি।

“এখানে ছাত্রদের জন্য এক ধরনের নিয়ম, আর ছাত্রীদের জন্য অন্য নিয়ম। ছেলেরা রাজনীতিতে সহজে অংশ নিতে পারে, কিন্তু মেয়েরা জড়ালে কটূক্তির শিকার হয়,” বলেন আনিকা।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, “চাকসু নেতৃত্ব যেন ছেলেমেয়ে ভেদাভেদ না করে সত্যিকারের নারীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তোলে এবং আমাদের অধিকার নিশ্চিত করে।”

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্রী ফাহমিদা অর্পি বলেন, “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা আবাসন, যার ভুক্তভোগী বেশি ছাত্রীদেরই।”

তিনি জানান, “আগে হলে উঠতে হলে দলীয় পরিচয় লাগত। এখন ‘মেধার ভিত্তিতে’ সিট বণ্টনের অজুহাতে অনেককে বঞ্চিত করা হচ্ছে। প্রথম বর্ষের ছাত্রীদের তো ফলাফলও থাকে না, ফলে তারা আসন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

অর্পি বলেন, “দেশের নানা অঞ্চল থেকে মেয়েরা এখানে পড়তে আসে। কিন্তু প্রথম বর্ষে ছাত্রীদের থাকার সমস্যা হয় সবচেয়ে বেশি। নিরাপত্তা বড় বিষয় হওয়ায় বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজে পাওয়া কঠিন। আশা করি নতুন নেতৃত্ব দলীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করবে।”

ছাত্রীরা আরও জানান, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য তাদের ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে হয়। তাই হলগুলোতে সুপার শপ ও ফার্মেসি স্থাপনের দাবিও জানিয়েছেন তারা।

অর্পির একই বিভাগের ছাত্রী ইবতিসাম আহমেদ বলেন, “আমাদের হলগুলোতে নিরাপত্তার অজুহাতে প্রবেশের সময় সীমিত করা হয়েছে। আমরা চাই সময়টা বাড়ানো হোক। এছাড়া বুলিংয়ের বিষয়টিও গুরুতর—রাজনৈতিক মতাদর্শের বাইরে গেলেই নানা অপমান সহ্য করতে হয়।”

সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে অর্থনীতি বিভাগের কয়েকজন ছাত্রী জানান, তাদের কাছে নিরাপত্তা ও আবাসনই প্রধান ইস্যু। শহর থেকে আসা-যাওয়া করা শাটল ট্রেনের ছাত্রীদেরও নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করতে হয় বলে জানান তারা।

এক ছাত্রী বলেন, “শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। আমাদের ক্যাম্পাসটা গ্রামের ভেতরে, স্থানীয় বখাটেদের কারণেও সমস্যা হয়। আশা করি নতুন নেতৃত্ব এসব সমস্যা সমাধানে কাজ করবে।”

অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী সুমাইয়া মমতাজ মিম বলেন, “ছাত্রীদের নানা ক্ষেত্রে বঞ্চিত করা হয়, এমনকি খেলাধুলাতেও। ছাত্রদের জন্য বিভিন্ন সময়ে খেলাধুলার আয়োজন হলেও ছাত্রীদের জন্য বছরে মাত্র একবার ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়।”

অহনা হালদার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “ছাত্রীরা অনেক সময় শহরে টিউশনে বা জরুরি কাজে যায়। ফেরার ট্রেন ক্যাম্পাসে পৌঁছায় রাত সাড়ে ৯টায়, খেয়ে হলে ফিরতে প্রায় ১০টা বাজে। তাই আমরা চাই, হলের প্রবেশের সময়টা আরেকটু বাড়ানো হোক।”

back to top