নতুন ভবন পাওয়ার পরেও কলা ভবনের কক্ষসমূহ কর্তৃপক্ষকে না বুঝিয়ে দিয়ে জোর করে দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের কয়েকটি বিভাগের বিরুদ্ধে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের ৬ষ্ঠ তলা থেকে ১২তম তলা সম্প্রসারণের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করা হয়। ২০২০ সালে বিভাগগুলো ফ্লোর বরাদ্দ পায়। এরপূর্বে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলো কলা ভবনের বিভিন্ন রুমে তাদের ক্লাস নেয়। তবে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো নবনির্মিত ভবনে স্থানান্তরিত হলেও কলা ভবনের রুমগুলো ছাড়েনি। কক্ষগুলেতে তালা লাগিয়েই তারা নতুন ভবনে চলে আসে।
এদিকে, পর্যাপ্ত কক্ষ না পাওয়ায় কলাভবনের বিভাগগুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ক্লাস-টিউটোরিয়াল-অফিস কার্যক্রম চালানোর জন্য বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। এ বিভাগগুলোর চার-পাঁচজন শিক্ষককে একটি কক্ষ ভাগাভাগি করতে হয়। আবার কোনো কোনো বিভাগের চেয়ারম্যানকেও অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে কক্ষ ভাগাভাগি করতে হয়।
কলা অনুষদভুক্ত উর্দু বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জাফর আহমেদ ভুঁইয়া সংবাদকে বলেন, আমাদের বিভাগের প্রথম গ্রেডের অধ্যাপককেও কক্ষ শেয়ার করতে হয়। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলোর জন্য তাদের নিজস্ব ভবনেই পর্যাপ্ত কক্ষ বরাদ্দ আছে। অথচ তারা এখানেও গায়ের জোরে রুম দখল করে আছে। রাজনীতি, ভোটাভুটির কারণেও ডিনরাও কিছু বলে না।
তিনি বলেন, গবেষণার জন্য শিক্ষকদের যদি সুযোগ করে না দেওয়া হয় তাহলে তারা কীভাবে গবেষণা করবে? দুই-তিনজন শিক্ষক এক রুমে বসে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা, শিক্ষার্থীদের টিউটোরিয়াল ক্লাস নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে জানা গেছে, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে কলা অনুষদের শিক্ষকরা সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলো স্থানান্তরের পরে কক্ষ বুঝিয়ে না দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস বরাদ্দ কমিটির চেয়ারম্যান প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর (প্রশাসন) এর নিকট একটি চিঠি দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস বরাদ্দ কমিটির সর্বশেষ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কলাভবনের খালি থাকা কক্ষগুলো সিলগালা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী কলা ভবনের ২০৮৮, ২০৮৯ ও ২০৯১ কক্ষও সিলগালা করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসে সিলাগালকৃত তালাগুলো ভেঙ্গে ফেলে এবং কক্ষগুলো ল্যাব হিসেবে ব্যবহার করার কথা জানিয়ে পোস্টার লাগিয়ে দেয়। তারা পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবারও সিলগালা করা হয়।
এদিকে কোনোরূপ নোটিশ ছাড়াই কক্ষ সিলগালা করছে বলে অভিযোগ করেছে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভূক্ত যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের চেয়ারপার্সন তওহিদা জাহান। তিনি বলেন, শ্রেণিকক্ষ এবং সেমিনার কক্ষ পাওয়ার সাথে সাথেই আমরা সেগুলো ছেড়ে দিয়েছি। আমাদের স্পেশাল শিক্ষার্থীদের লিফ্টে উঠতে সমস্যা হয়। সেজন্য আমরা শুরু থেকেই কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি কলাভবনের দুই তলায় অডিওলোজি ল্যাব এবং ক্লিনিকের জন্য- এ দুটি কক্ষ আমাদের দেওয়ার জন্য। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো চিঠি বা নোটিশ ছাড়াই কক্ষগুলো সিলগালা করে দিয়েছে।
অন্যদিকে কর্তৃপক্ষ বলছে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই কক্ষ সিলগালা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন)এবং
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস বরাদ্দ কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ সংবাদকে বলেন, আমার কমিটির মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে আমার কার্যক্রম পরিচালনা করছি। নিয়মের বাইরে এক বর্গইঞ্চি জায়গাও কাউকে বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ নেই। ৮০টি কক্ষ ইতোমধ্যে খালি হয়েছে। সেগুলো পর্যায়ক্রমে সংশ্লিষ্ট অনুষদকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের বিষয়ে তিনি বলেন, ইঞ্জিনিয়ার সেকশন, স্টেট ম্যানেজার এবং কলাভবনের প্রক্টরকে অন্তর্ভুক্ত করে আমি একটি টিম গঠন করে দিয়েছি। তারা কক্ষগুলো পরিদর্শন করবে। সে অনুযায়ী পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সোমবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২১
নতুন ভবন পাওয়ার পরেও কলা ভবনের কক্ষসমূহ কর্তৃপক্ষকে না বুঝিয়ে দিয়ে জোর করে দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের কয়েকটি বিভাগের বিরুদ্ধে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের ৬ষ্ঠ তলা থেকে ১২তম তলা সম্প্রসারণের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করা হয়। ২০২০ সালে বিভাগগুলো ফ্লোর বরাদ্দ পায়। এরপূর্বে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলো কলা ভবনের বিভিন্ন রুমে তাদের ক্লাস নেয়। তবে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো নবনির্মিত ভবনে স্থানান্তরিত হলেও কলা ভবনের রুমগুলো ছাড়েনি। কক্ষগুলেতে তালা লাগিয়েই তারা নতুন ভবনে চলে আসে।
এদিকে, পর্যাপ্ত কক্ষ না পাওয়ায় কলাভবনের বিভাগগুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ক্লাস-টিউটোরিয়াল-অফিস কার্যক্রম চালানোর জন্য বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। এ বিভাগগুলোর চার-পাঁচজন শিক্ষককে একটি কক্ষ ভাগাভাগি করতে হয়। আবার কোনো কোনো বিভাগের চেয়ারম্যানকেও অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে কক্ষ ভাগাভাগি করতে হয়।
কলা অনুষদভুক্ত উর্দু বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জাফর আহমেদ ভুঁইয়া সংবাদকে বলেন, আমাদের বিভাগের প্রথম গ্রেডের অধ্যাপককেও কক্ষ শেয়ার করতে হয়। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলোর জন্য তাদের নিজস্ব ভবনেই পর্যাপ্ত কক্ষ বরাদ্দ আছে। অথচ তারা এখানেও গায়ের জোরে রুম দখল করে আছে। রাজনীতি, ভোটাভুটির কারণেও ডিনরাও কিছু বলে না।
তিনি বলেন, গবেষণার জন্য শিক্ষকদের যদি সুযোগ করে না দেওয়া হয় তাহলে তারা কীভাবে গবেষণা করবে? দুই-তিনজন শিক্ষক এক রুমে বসে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা, শিক্ষার্থীদের টিউটোরিয়াল ক্লাস নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে জানা গেছে, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে কলা অনুষদের শিক্ষকরা সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলো স্থানান্তরের পরে কক্ষ বুঝিয়ে না দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস বরাদ্দ কমিটির চেয়ারম্যান প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর (প্রশাসন) এর নিকট একটি চিঠি দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস বরাদ্দ কমিটির সর্বশেষ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কলাভবনের খালি থাকা কক্ষগুলো সিলগালা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী কলা ভবনের ২০৮৮, ২০৮৯ ও ২০৯১ কক্ষও সিলগালা করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসে সিলাগালকৃত তালাগুলো ভেঙ্গে ফেলে এবং কক্ষগুলো ল্যাব হিসেবে ব্যবহার করার কথা জানিয়ে পোস্টার লাগিয়ে দেয়। তারা পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবারও সিলগালা করা হয়।
এদিকে কোনোরূপ নোটিশ ছাড়াই কক্ষ সিলগালা করছে বলে অভিযোগ করেছে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভূক্ত যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের চেয়ারপার্সন তওহিদা জাহান। তিনি বলেন, শ্রেণিকক্ষ এবং সেমিনার কক্ষ পাওয়ার সাথে সাথেই আমরা সেগুলো ছেড়ে দিয়েছি। আমাদের স্পেশাল শিক্ষার্থীদের লিফ্টে উঠতে সমস্যা হয়। সেজন্য আমরা শুরু থেকেই কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি কলাভবনের দুই তলায় অডিওলোজি ল্যাব এবং ক্লিনিকের জন্য- এ দুটি কক্ষ আমাদের দেওয়ার জন্য। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো চিঠি বা নোটিশ ছাড়াই কক্ষগুলো সিলগালা করে দিয়েছে।
অন্যদিকে কর্তৃপক্ষ বলছে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই কক্ষ সিলগালা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন)এবং
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস বরাদ্দ কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ সংবাদকে বলেন, আমার কমিটির মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে আমার কার্যক্রম পরিচালনা করছি। নিয়মের বাইরে এক বর্গইঞ্চি জায়গাও কাউকে বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ নেই। ৮০টি কক্ষ ইতোমধ্যে খালি হয়েছে। সেগুলো পর্যায়ক্রমে সংশ্লিষ্ট অনুষদকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের বিষয়ে তিনি বলেন, ইঞ্জিনিয়ার সেকশন, স্টেট ম্যানেজার এবং কলাভবনের প্রক্টরকে অন্তর্ভুক্ত করে আমি একটি টিম গঠন করে দিয়েছি। তারা কক্ষগুলো পরিদর্শন করবে। সে অনুযায়ী পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।