কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত, সোমবার বিক্ষোভের ঘোষণা
পাঁচ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেওয়া এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা সোমবার বিক্ষোভের ডাক দিয়ে সড়ক ছেড়েছেন।
রোববার সন্ধ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর তারা এ সিদ্ধান্ত নেন।
এর আগে দুপুরে শিক্ষকরা প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার দিকে পদযাত্রা শুরু করলে কদম ফোয়ারার সামনে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। সেখানেই তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে শিক্ষক প্রতিনিধিরা আলোচনার জন্য সচিবালয়ে যান।
সন্ধ্যায় আলোচনার ফলাফল জানাতে আন্দোলনস্থলে ফিরে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান বলেন,
“আমাদের পাঁচ দফা দাবিই মেনে নেওয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে একটি দাবির বিষয়ে সোমবারই স্বাক্ষর হবে। এমপিওভুক্তির উদ্দেশ্যে পাঠানো ১ হাজার ৮৯টি প্রতিষ্ঠানের ফাইল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুমোদনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “দুপুর থেকে শিক্ষকরা সড়ক অবরোধ করে আছেন— এর দায় রাষ্ট্রের। আমরা কর্মসূচি ঘোষণার আগে সিদ্ধান্ত দেওয়া হলে জনদুর্ভোগ হতো না। এখন এর দায়ভার সরকারের।”
আগামী সোমবার বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, “সরকার যদি এর আগেই আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না করে, তবে যে কোনো জনদুর্ভোগের জন্য আমরা দায়ী থাকব না, দায়ভার রাষ্ট্রের।”
ঐক্যজোটের আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শামসুল আলম জানান, “সোমবার বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়ে আমরা রাস্তা ছাড়ছি, তবে অবস্থান কর্মসূচি চলবে।”
সব এবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণসহ পাঁচ দফা দাবিতে ১৩ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।
তাদের পাঁচ দফা দাবি হলো—
চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারির জাতীয়করণের ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন।
এমপিওভুক্তির জন্য কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের পাঠানো ১,০৮৯টি প্রতিষ্ঠানের নথির অনুমোদন।
অনুদানহীন স্বীকৃত এবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর এমপিও আবেদন আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় প্রাক-প্রাথমিক পদ সৃষ্টি।
এবতেদায়ী মাদ্রাসার জন্য পৃথক অধিদপ্তর স্থাপন।
ইসলামি ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয়ে পরিচালিত আলিয়া মাদ্রাসা ব্যবস্থার প্রাথমিক স্তর হলো এবতেদায়ী মাদ্রাসা, যার যাত্রা শুরু ১৯৮৪ সালে। চার দশক পেরিয়ে গেলেও এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এখনও ন্যূনতম রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না।
শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, অনেকে চাকরি শেষ করেছেন কোনো সরকারি সুবিধা ছাড়াই, অথচ ১৯৭৩ সাল থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ করা হচ্ছে; ২০১৩ সালেও প্রায় ২৬ হাজার বিদ্যালয় সরকারি হয়।
দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসা এই শিক্ষকরা সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর আন্দোলন জোরদার করেন। এক পর্যায়ে তাদের পদযাত্রায় পুলিশ লাঠিপেটা ও জলকামান ব্যবহার করে, যা সামাজিকভাবে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
এর পরপরই গত ২৮ জানুয়ারি মাদ্রাসা অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক এবতেদায়ী মাদ্রাসাকে ধাপে ধাপে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। প্রাথমিক পর্যায়ে এসব প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা এখন বাস্তবায়নের অপেক্ষায়।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত, সোমবার বিক্ষোভের ঘোষণা
রোববার, ০২ নভেম্বর ২০২৫
পাঁচ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেওয়া এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা সোমবার বিক্ষোভের ডাক দিয়ে সড়ক ছেড়েছেন।
রোববার সন্ধ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর তারা এ সিদ্ধান্ত নেন।
এর আগে দুপুরে শিক্ষকরা প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার দিকে পদযাত্রা শুরু করলে কদম ফোয়ারার সামনে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। সেখানেই তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে শিক্ষক প্রতিনিধিরা আলোচনার জন্য সচিবালয়ে যান।
সন্ধ্যায় আলোচনার ফলাফল জানাতে আন্দোলনস্থলে ফিরে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান বলেন,
“আমাদের পাঁচ দফা দাবিই মেনে নেওয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে একটি দাবির বিষয়ে সোমবারই স্বাক্ষর হবে। এমপিওভুক্তির উদ্দেশ্যে পাঠানো ১ হাজার ৮৯টি প্রতিষ্ঠানের ফাইল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুমোদনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “দুপুর থেকে শিক্ষকরা সড়ক অবরোধ করে আছেন— এর দায় রাষ্ট্রের। আমরা কর্মসূচি ঘোষণার আগে সিদ্ধান্ত দেওয়া হলে জনদুর্ভোগ হতো না। এখন এর দায়ভার সরকারের।”
আগামী সোমবার বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, “সরকার যদি এর আগেই আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না করে, তবে যে কোনো জনদুর্ভোগের জন্য আমরা দায়ী থাকব না, দায়ভার রাষ্ট্রের।”
ঐক্যজোটের আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শামসুল আলম জানান, “সোমবার বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়ে আমরা রাস্তা ছাড়ছি, তবে অবস্থান কর্মসূচি চলবে।”
সব এবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণসহ পাঁচ দফা দাবিতে ১৩ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।
তাদের পাঁচ দফা দাবি হলো—
চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারির জাতীয়করণের ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন।
এমপিওভুক্তির জন্য কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের পাঠানো ১,০৮৯টি প্রতিষ্ঠানের নথির অনুমোদন।
অনুদানহীন স্বীকৃত এবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর এমপিও আবেদন আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় প্রাক-প্রাথমিক পদ সৃষ্টি।
এবতেদায়ী মাদ্রাসার জন্য পৃথক অধিদপ্তর স্থাপন।
ইসলামি ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয়ে পরিচালিত আলিয়া মাদ্রাসা ব্যবস্থার প্রাথমিক স্তর হলো এবতেদায়ী মাদ্রাসা, যার যাত্রা শুরু ১৯৮৪ সালে। চার দশক পেরিয়ে গেলেও এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এখনও ন্যূনতম রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না।
শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, অনেকে চাকরি শেষ করেছেন কোনো সরকারি সুবিধা ছাড়াই, অথচ ১৯৭৩ সাল থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ করা হচ্ছে; ২০১৩ সালেও প্রায় ২৬ হাজার বিদ্যালয় সরকারি হয়।
দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসা এই শিক্ষকরা সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর আন্দোলন জোরদার করেন। এক পর্যায়ে তাদের পদযাত্রায় পুলিশ লাঠিপেটা ও জলকামান ব্যবহার করে, যা সামাজিকভাবে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
এর পরপরই গত ২৮ জানুয়ারি মাদ্রাসা অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক এবতেদায়ী মাদ্রাসাকে ধাপে ধাপে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। প্রাথমিক পর্যায়ে এসব প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা এখন বাস্তবায়নের অপেক্ষায়।