ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রাজধানীর হাইকোর্টের সামনে প্লাস্টিকের ড্রামের ভেতর থেকে আশরাফুল হক নামে এক যুবকের খণ্ডিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে। শুক্রবার,(১৪ নভেম্বর ২০২৫) আশরাফুলের বোন আনজিনা বেগম শাহবাগ থানায় মামলা করেন। এজাহারে নাম না জানা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় নিহতের ‘বন্ধু’ জরেজ মিয়া নামে একজনকে ‘প্রধান সন্দেহভাজন’ হিসেবে দেখছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার তার বন্ধু জরেজের সঙ্গে ঢাকায় আসেন
নিহত আশরাফুল ভারত ও মায়ানমার থেকে পেঁয়াজ ও আলু আমদানি করতেন
তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানোর কথা তুলে ধরে শাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মনসুর বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ভিডিও, অন্য তথ্য বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্তে কাজ করছি। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি প্রধান সন্দেহভাজনসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেইটের কাছে নীল ড্রাম থেকে খণ্ড-বিখণ্ড লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৬ টুকরো লাশের প্রথমে পরিচয় পাওয়া না গেলেও আঙুলের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেইজ থেকে পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
পুলিশ বলছে, লাশটি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজলার গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের আশরাফুল হকের। লাশ উদ্ধারের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুক্রবার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এরপর পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করার কথা জানিয়েছেন ওসি খালিদ মনসুর।
ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আনজিনা বেগম বলেন, আশরাফুলের কারও সঙ্গে ‘ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না’। গত মঙ্গলবার তার বন্ধু জরেজের সঙ্গে ঢাকায় আসেন। গত বুধবার বিকেলে আশরাফুলের সঙ্গে তার (আনজিনা) সর্বশেষ কথা হয়েছে। এরপর কয়েকবার ফোন দিলে ‘জরেজ ফোন ধরে’ জানায় আশরাফুল ব্যস্ত আছে।
এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার আশরাফুলের খবর পান বোন আনজিনা। ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন তিনি। পুলিশ বলছে, কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল ভারত ও মায়ানমার থেকে পেঁয়াজ আর আলু আমদানি করতেন। পণ্য আমদানির জন্য তার সরকারি লাইসেন্সও রয়েছে।
লাশের পরিচয় মেলার পর যোগাযোগ করা হলে বদরগঞ্জের গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামছুল আলম বলেন, আশরাফুল আগে হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা করতেন। কয়েক বছর ধরে গ্রামেই থাকতেন। চেয়ারম্যানের ভাষ্য, ‘গত সোমবার আসি ইউনিয়ন পরিষদ থাকি ওয়ারিশান সার্টিফিকেট নিয়ে গেছে। খুব ভালো ছেলেটা, এরকম কেন হলো কায় জানে।’
গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাহফুজার রহমান বলেন, ‘ও এখন জমিজমা কেনাবেচা করতো। দুইটা ছেলে-মেয়ে আছে, গ্রামেই থাকে। গত সোমবার পরিষদে আসছিল, ওয়ারিশান সার্টিফিকেট নিয়ে গেল। ঢাকায়ও গেল কবে তাও তো জানি না।’
শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের তারিখ ঘোষণার দিন ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। এদিন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ‘লকডাউন কর্মসূচি’ ঘোষণা করে। ফলে এদিন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঢাকাজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। হাইকোর্টের সামনে ও পুরো এলাকাতে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দিনভর কড়া নজরদারির মধ্যেই লাশের ড্রাম হাইকোর্ট এলাকাতে পড়েছিল, দুপুরেও স্থানীয় লোকজন সেটি পড়ে থাকতে দেখেন। পরে সন্দেহ হলে তারা পুলিশ ডাকেন। সন্ধ্যায় ড্রাম খুলতেই বেরিয়ে আসে লাশের ২৬ টুকরা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
রাজধানীর হাইকোর্টের সামনে প্লাস্টিকের ড্রামের ভেতর থেকে আশরাফুল হক নামে এক যুবকের খণ্ডিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে। শুক্রবার,(১৪ নভেম্বর ২০২৫) আশরাফুলের বোন আনজিনা বেগম শাহবাগ থানায় মামলা করেন। এজাহারে নাম না জানা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় নিহতের ‘বন্ধু’ জরেজ মিয়া নামে একজনকে ‘প্রধান সন্দেহভাজন’ হিসেবে দেখছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার তার বন্ধু জরেজের সঙ্গে ঢাকায় আসেন
নিহত আশরাফুল ভারত ও মায়ানমার থেকে পেঁয়াজ ও আলু আমদানি করতেন
তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানোর কথা তুলে ধরে শাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মনসুর বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ভিডিও, অন্য তথ্য বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্তে কাজ করছি। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি প্রধান সন্দেহভাজনসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেইটের কাছে নীল ড্রাম থেকে খণ্ড-বিখণ্ড লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৬ টুকরো লাশের প্রথমে পরিচয় পাওয়া না গেলেও আঙুলের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেইজ থেকে পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
পুলিশ বলছে, লাশটি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজলার গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের আশরাফুল হকের। লাশ উদ্ধারের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুক্রবার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এরপর পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করার কথা জানিয়েছেন ওসি খালিদ মনসুর।
ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আনজিনা বেগম বলেন, আশরাফুলের কারও সঙ্গে ‘ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না’। গত মঙ্গলবার তার বন্ধু জরেজের সঙ্গে ঢাকায় আসেন। গত বুধবার বিকেলে আশরাফুলের সঙ্গে তার (আনজিনা) সর্বশেষ কথা হয়েছে। এরপর কয়েকবার ফোন দিলে ‘জরেজ ফোন ধরে’ জানায় আশরাফুল ব্যস্ত আছে।
এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার আশরাফুলের খবর পান বোন আনজিনা। ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন তিনি। পুলিশ বলছে, কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল ভারত ও মায়ানমার থেকে পেঁয়াজ আর আলু আমদানি করতেন। পণ্য আমদানির জন্য তার সরকারি লাইসেন্সও রয়েছে।
লাশের পরিচয় মেলার পর যোগাযোগ করা হলে বদরগঞ্জের গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামছুল আলম বলেন, আশরাফুল আগে হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা করতেন। কয়েক বছর ধরে গ্রামেই থাকতেন। চেয়ারম্যানের ভাষ্য, ‘গত সোমবার আসি ইউনিয়ন পরিষদ থাকি ওয়ারিশান সার্টিফিকেট নিয়ে গেছে। খুব ভালো ছেলেটা, এরকম কেন হলো কায় জানে।’
গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাহফুজার রহমান বলেন, ‘ও এখন জমিজমা কেনাবেচা করতো। দুইটা ছেলে-মেয়ে আছে, গ্রামেই থাকে। গত সোমবার পরিষদে আসছিল, ওয়ারিশান সার্টিফিকেট নিয়ে গেল। ঢাকায়ও গেল কবে তাও তো জানি না।’
শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের তারিখ ঘোষণার দিন ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। এদিন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ‘লকডাউন কর্মসূচি’ ঘোষণা করে। ফলে এদিন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঢাকাজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। হাইকোর্টের সামনে ও পুরো এলাকাতে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দিনভর কড়া নজরদারির মধ্যেই লাশের ড্রাম হাইকোর্ট এলাকাতে পড়েছিল, দুপুরেও স্থানীয় লোকজন সেটি পড়ে থাকতে দেখেন। পরে সন্দেহ হলে তারা পুলিশ ডাকেন। সন্ধ্যায় ড্রাম খুলতেই বেরিয়ে আসে লাশের ২৬ টুকরা।