দেশের চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে আত্মসাৎ করা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারকে সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা। অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় গ্রেপ্তার দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের জবানবন্দিতেও এসেছে কয়েকজনের নাম। এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যদিও দুদকের চিঠির প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে পিকের কাছ থেকে নিয়মিত ঘুস বা কমিশন নেয়া দু’জন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার নাম আসলেও তারা এখনও বহাল তবিয়তে আছেন।
দুদক কর্মকর্তারা বলছেন পিকে হালদার ও তার সিন্ডিকেট যে পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে এর জন্য ৪০টি ভুয়া কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করেছেন। আর প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ পদে নিজের তিন প্রেমিকা, বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনকে বসিয়ে তাদের মাধ্যমে কৌশলে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার করেন। টানা পাঁচ বছর ধরে এ আত্মসাতের ঘটনা ঘটলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট শাখার কর্মকর্তারা এ বিষয়ে চুপ ছিলেন। তারা পিকে হালদারের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে অর্থ আত্মসাতের সুযোগ দেন। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান চলছে।
দুদকের অনুসন্ধান সূত্র বলছে, পিকে হালদার টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে ৪০টি ভুয়া কোম্পানি খোলেন। এরপর ওইসব কোম্পানির নামে ঋণ অনুমোদন করে তা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেন। বেশিরভাগই ঋণের ক্ষেত্রে মর্টগেজ ছিল না, থাকলেও তার পরিমাণ খুবই নগন্য। এছাড়া ওইসব কোম্পানির নামে থাকা স্থাবর সম্পদ বিক্রি করে দেন তিনি। এমনকী আমানতকারীদের শেয়ার পোর্টফলিও থেকে শেয়ার বিক্রি করে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ করছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বাধীন একটি দল।
দুদকের অনুসন্ধান সূত্র বলছে, চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতে পিকে হালদারকে ‘সহযোগিতার অভিযোগ’ বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডজনের বেশি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। যাদের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অডিট শাখার এসব কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠায় দুদক এ অনুসন্ধানে নামে। অভিযুক্তদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে কেন্দ্রীয় বাংকের গর্ভনরের কাছে গত বছরের এপ্রিল মাসে চিঠিও পাঠিয়েছিল দুদক। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পাঠানো হয় দুদকে। এসব তথ্য পর্যালোচনা চলছে। তবে দুদক অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম ও সাবেক ডেপুটি গর্ভনর সীতাংশু কুমার সুর চৌধুরী (এস কে সুর চৌধুরী)সহ ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। অন্য যারা অভিযুক্ত তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলবি নোটিশ পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
দুদকের অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময় অর্থাৎ পাঁচ বছরে পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, এফএএস ফাইন্যান্সের দুর্নীতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল কেন উদ্ঘাটন করতে পারলো না তা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন উঠেছে। পরিদর্শন দলের সহযোগিতার কারণে খুব সহজে আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণে রেখে পিকে চারটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পিকে কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর এসকে সুর ও নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমের বিরুদ্ধে প্রতি মাসে ঘুস নেয়ার অভিযোগ এক আসামির জবানবন্দিতে এসেছে।
জানা গেছে, পিকে ঋণ কেলেঙ্কারির সংক্রান্ত বিগত পাঁচ বছরের পরিদর্শন প্রতিবেদন চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরের কাছে দুদকের পরিচালক বেনজীর আহম্মেদ স্বাক্ষরে একটি চিঠি দেয়া হয়েছিল। কারো ইচ্ছাকৃত গাফলতি বা কুমতলব উদ্ঘাটিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে চিঠিতে বলা হয়। জানা গেছে, দুদকের চিঠির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ একটি টিম গঠন করে রিলায়েন্স ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, পিপলস লিজিং এবং এফএএস ফাইন্যান্স পরিদর্শন শেষে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। এরপর বিএফআইইউ’র প্রতিবেদন ২০২০ সালের ৭ জুলাই দুদকের মহাপরিচালকের (মানিলন্ডারিং) কাছে পাঠানো। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পরই দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান ৮৩ জনের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করেন। এখন পর্যন্ত পিকে হালদার কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৬৪ জনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দুদক।
দুদকের তথ্যমতে, গত বছরের ২৯ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম, তার দুই স্ত্রী শাহীন আক্তার শেলী ও নাসরিন বেগম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর সীতাংশু কুমার সুর চৌধুরী (এস কে সুর চৌধুরী), তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অভিযুক্ত কর্মকর্তাসহ ৫২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইমিগ্রেশনে চিঠি পাঠায় দুদক। এদের মধ্যে এস কে সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে আগেই হাইকোর্টের আদেশে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এখন পর্যন্ত পিকে হালদার কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৬৪ জনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দুদক।
দুদকের অনুসন্ধান সূত্র বলছে, পিকে হালদার শেয়ার কিনে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে বসান নাহিদা রুনাইকে। এ কাজে তার খরচ হয়েছে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আর অবন্তিকা বড়ালকে ৮০০ কোটি টাকা খরচ করে পিপলস লিজিংয়ে বসান। সুস্মিতা সাহাকে দিয়েছেন ১০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ, পাপিয়া ব্যানার্জী দিয়েছেন ৩০০ কোটি টাকা এবং মমতাজকে দিয়েছেন ৩০০ কোটি টাকা। দুই প্রেমিকাকে দুই লিজিংয়ের দায়িত্বে দিতে খরচ করেন দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা। আর তিন বান্ধবীকে দিয়েছেন ৭০০ কোটি টাকা।
দুদকের অনুসন্ধান সূত্র বলছে, পিকে হালদার ত্রিভুজ প্রেমে মগ্ন ছিলেন। তিনি দুই প্রেমিকাকে নিয়ে ৬০ বার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। এর মধ্যে প্রেমিকা নাহিদা রুনাইকে নিয়ে গেছেন ২২ বার। পিকে হালদার নাহিদা রুনাইকে দিয়েছেন ২০ কোটি টাকা। অবন্তিকাকে বড়ালকে দিয়েছেন ধানমন্ডিতে ৫ কোটি টাকার ফ্ল্যাট। অনন্দিতা মৃধাকে দিয়েছেন উত্তরাতে ৪০ কোটি টাকা মূল্যের বাণিজ্যিক ভবন।
রোববার, ১৫ মে ২০২২
দেশের চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে আত্মসাৎ করা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারকে সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা। অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় গ্রেপ্তার দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের জবানবন্দিতেও এসেছে কয়েকজনের নাম। এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যদিও দুদকের চিঠির প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে পিকের কাছ থেকে নিয়মিত ঘুস বা কমিশন নেয়া দু’জন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার নাম আসলেও তারা এখনও বহাল তবিয়তে আছেন।
দুদক কর্মকর্তারা বলছেন পিকে হালদার ও তার সিন্ডিকেট যে পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে এর জন্য ৪০টি ভুয়া কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করেছেন। আর প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ পদে নিজের তিন প্রেমিকা, বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনকে বসিয়ে তাদের মাধ্যমে কৌশলে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার করেন। টানা পাঁচ বছর ধরে এ আত্মসাতের ঘটনা ঘটলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট শাখার কর্মকর্তারা এ বিষয়ে চুপ ছিলেন। তারা পিকে হালদারের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে অর্থ আত্মসাতের সুযোগ দেন। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান চলছে।
দুদকের অনুসন্ধান সূত্র বলছে, পিকে হালদার টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে ৪০টি ভুয়া কোম্পানি খোলেন। এরপর ওইসব কোম্পানির নামে ঋণ অনুমোদন করে তা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেন। বেশিরভাগই ঋণের ক্ষেত্রে মর্টগেজ ছিল না, থাকলেও তার পরিমাণ খুবই নগন্য। এছাড়া ওইসব কোম্পানির নামে থাকা স্থাবর সম্পদ বিক্রি করে দেন তিনি। এমনকী আমানতকারীদের শেয়ার পোর্টফলিও থেকে শেয়ার বিক্রি করে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ করছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বাধীন একটি দল।
দুদকের অনুসন্ধান সূত্র বলছে, চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতে পিকে হালদারকে ‘সহযোগিতার অভিযোগ’ বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডজনের বেশি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। যাদের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অডিট শাখার এসব কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠায় দুদক এ অনুসন্ধানে নামে। অভিযুক্তদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে কেন্দ্রীয় বাংকের গর্ভনরের কাছে গত বছরের এপ্রিল মাসে চিঠিও পাঠিয়েছিল দুদক। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পাঠানো হয় দুদকে। এসব তথ্য পর্যালোচনা চলছে। তবে দুদক অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম ও সাবেক ডেপুটি গর্ভনর সীতাংশু কুমার সুর চৌধুরী (এস কে সুর চৌধুরী)সহ ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। অন্য যারা অভিযুক্ত তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলবি নোটিশ পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
দুদকের অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময় অর্থাৎ পাঁচ বছরে পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, এফএএস ফাইন্যান্সের দুর্নীতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল কেন উদ্ঘাটন করতে পারলো না তা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন উঠেছে। পরিদর্শন দলের সহযোগিতার কারণে খুব সহজে আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণে রেখে পিকে চারটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পিকে কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর এসকে সুর ও নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমের বিরুদ্ধে প্রতি মাসে ঘুস নেয়ার অভিযোগ এক আসামির জবানবন্দিতে এসেছে।
জানা গেছে, পিকে ঋণ কেলেঙ্কারির সংক্রান্ত বিগত পাঁচ বছরের পরিদর্শন প্রতিবেদন চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরের কাছে দুদকের পরিচালক বেনজীর আহম্মেদ স্বাক্ষরে একটি চিঠি দেয়া হয়েছিল। কারো ইচ্ছাকৃত গাফলতি বা কুমতলব উদ্ঘাটিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে চিঠিতে বলা হয়। জানা গেছে, দুদকের চিঠির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ একটি টিম গঠন করে রিলায়েন্স ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, পিপলস লিজিং এবং এফএএস ফাইন্যান্স পরিদর্শন শেষে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। এরপর বিএফআইইউ’র প্রতিবেদন ২০২০ সালের ৭ জুলাই দুদকের মহাপরিচালকের (মানিলন্ডারিং) কাছে পাঠানো। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পরই দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান ৮৩ জনের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করেন। এখন পর্যন্ত পিকে হালদার কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৬৪ জনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দুদক।
দুদকের তথ্যমতে, গত বছরের ২৯ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম, তার দুই স্ত্রী শাহীন আক্তার শেলী ও নাসরিন বেগম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর সীতাংশু কুমার সুর চৌধুরী (এস কে সুর চৌধুরী), তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অভিযুক্ত কর্মকর্তাসহ ৫২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইমিগ্রেশনে চিঠি পাঠায় দুদক। এদের মধ্যে এস কে সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে আগেই হাইকোর্টের আদেশে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এখন পর্যন্ত পিকে হালদার কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৬৪ জনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দুদক।
দুদকের অনুসন্ধান সূত্র বলছে, পিকে হালদার শেয়ার কিনে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে বসান নাহিদা রুনাইকে। এ কাজে তার খরচ হয়েছে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আর অবন্তিকা বড়ালকে ৮০০ কোটি টাকা খরচ করে পিপলস লিজিংয়ে বসান। সুস্মিতা সাহাকে দিয়েছেন ১০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ, পাপিয়া ব্যানার্জী দিয়েছেন ৩০০ কোটি টাকা এবং মমতাজকে দিয়েছেন ৩০০ কোটি টাকা। দুই প্রেমিকাকে দুই লিজিংয়ের দায়িত্বে দিতে খরচ করেন দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা। আর তিন বান্ধবীকে দিয়েছেন ৭০০ কোটি টাকা।
দুদকের অনুসন্ধান সূত্র বলছে, পিকে হালদার ত্রিভুজ প্রেমে মগ্ন ছিলেন। তিনি দুই প্রেমিকাকে নিয়ে ৬০ বার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। এর মধ্যে প্রেমিকা নাহিদা রুনাইকে নিয়ে গেছেন ২২ বার। পিকে হালদার নাহিদা রুনাইকে দিয়েছেন ২০ কোটি টাকা। অবন্তিকাকে বড়ালকে দিয়েছেন ধানমন্ডিতে ৫ কোটি টাকার ফ্ল্যাট। অনন্দিতা মৃধাকে দিয়েছেন উত্তরাতে ৪০ কোটি টাকা মূল্যের বাণিজ্যিক ভবন।