alt

অপরাধ ও দুর্নীতি

চাকরির নামে প্রতারণা, টার্গেট ছিল সপ্তাহে ৬০ জন

মাসুদ রানা : বুধবার, ১৮ মে ২০২২

রিকশাচালক, বাসের হেল্পার, নিরাপত্তাকর্মীসহ নিম্নআয়ের মানুষের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতো চক্রের সদস্যরা। এক পর্যায়ে নিজেদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে, ওই নিম্নআয়ের মানুষদের কোন স্বজন সরকারি চাকরি নিতে চাইলে যোগাযোগ করতে বলে। পরে কোন দপ্তরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে, চক্রের সদস্যরা ওই মানুষদের ফোন করে, চাকরিপ্রত্যাশী থাকলে দ্রুত যোগাযোগ করতে বলে। তাদের ফাঁদে কেউ পা দিলে, চাকরিপ্রত্যাশীকে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন সরবারহ, মেডিকেল করা, দপ্তরের অন্য কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করা এবং কিউআর কোড সম্বলিত ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ধাপে ধাপে টাকা আত্মসাৎ করত। একপর্যায়ে ভিকটিম চাকরিতে যোগদানের কথা বললে লাপাত্তা হয়ে যেত প্রতারক চক্রটি।

নিয়োগপত্রে কিউআর কোড যুক্ত করে চাকরিপ্রত্যাশীদের বোকা বানিয়ে লাখ লাখ হাতানো এ চক্র প্রতি সপ্তাহে ৬০ জন চাকরিপ্রত্যাশীকে টার্গেট করত। এ চক্রের মূল হোতাসহ ২ জনকে গ্রেপ্তারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলোÑ মূল হোতা মো. মোশারফ হোসেন ও তার সহযোগী মো. জিয়া উদ্দিন। গত সোমবার মধ্যরাতে দারুস সালাম থানার আনন্দ নগর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৩টি মোবাইল ফোন, ৭টি সিম কার্ড, বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার বেশ কিছু ভুয়া প্রশ্ন, প্রবেশপত্র ও কিউআর কোড সম্বলিত নিয়োগপত্র জব্দ করা হয়েছে। গতকাল তাদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হলে আদালত ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এক সময় গার্মেন্টসে চাকরি করার সময় এক প্রতারকের মাধ্যমে চাকরিতে নিয়োগের নামে প্রতারণা করার বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করে মোশারফ হোসেন। দুই বছর ধরে সহযোগী জিয়া উদ্দিনকে নিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি। প্রতারণার কৌশল হিসেবে সব সময় বিভিন্ন দপ্তরের ছোট ছোট পোস্টে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখাতেন। তাদের ফাঁদে যে চাকরিপ্রত্যাশীরা পা দিত, প্রথমে তাদের কাছ থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে জীবনবৃত্তান্ত, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি ও অন্য সব ডকুমেন্ট নিত। পরে এসব তথ্যের মাধ্যমে একটি ভুয়া প্রবেশপত্র তৈরি করে প্রার্থীর ই-মেইলে পাঠাতো। এরপর বিকাশ/রকেটের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে ভাইভার জন্য মনোনীত হয়েছেন বলে জানাতো।

কিছুদিন পরে ভুয়া নিবন্ধিত সিম কার্ডের মাধ্যমে অন্য এক ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পুনরায় কল করে মেডিকেল ও অন্য খরচ বাবদ কিছু টাকা বিকাশ/রকেটের মাধ্যমে দিতে বলে। সেই টাকা পাওয়ার পর প্রতারক চক্রটি একটি ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য চাকরিপ্রত্যাশীদের ‘কিউআর কোড জেনারেটর’ সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রার্থীর নাম ঠিকানা সম্বলিত একটি ‘কিউআর কোড’ তৈরি করে ভুয়া নিয়োগপত্রে সেটি স্থাপন করে।

এরপর প্রার্থীকে বলা হয় যে, ‘কিউআর কোড স্ক্যানার’ দিয়ে আপনার নিয়োগপত্রটি সঠিক কি-না যাচাই করুন। প্রার্থী যখন তার মোবাইলের কিউআর কোড স্ক্যানার দিয়ে চেক করে তখন সেখানে নিজের তথ্য দেখায় এবং প্রার্থী চুক্তির সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে এই নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গেলে জানতে পারেন নিয়োগপত্রটি ভুয়া। এর মধ্যে তারা ব্যবহৃত ফোনগুলো বন্ধ করে ফেলতো।

এদিকে, একই কৌশলে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিউটে কর্মরত আনসার সদস্য মো. এছাহাক আলীর ছেলে ও ভাগিনাকে সেনাবাহিনীর স্টোরকিপার পদে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে গত ৫ মে বনানী থানায় মামলা করেন এছাহাক আলী। মামলায় উল্লেখ করা হয়, চাকরি পাইয়ে দিতে ৩ লাখ টাকা দাবি করা হয়। প্রথমে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা পাঠানোর পর ধাপে ধাপে আরও টাকা চাওয়া হয়। এক পর্যায়ে কিউআর কোড দেয়া নিয়োগপত্র পাঠিয়ে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। তখন সেনাবাহিনীর একজন মেজরকে ওই নিয়োগপত্র দেখিয়ে, জানতে পারেন জালিয়াতির শিকার হয়েছেন।

এ বিষয়ে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম টিমের টিম লিডার ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল হক বলেন, চাকরিপ্রত্যাশীরা নিজেরা অনৈতিক পথ অবলম্বন করে প্রতারণার শিকার হওয়ায় কেউ আইনগত ব্যবস্থা নিত না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি মানুষের সঙ্গে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল। তবে, বনানী থানায় দায়ের হওয়া ওই মামলার সূত্র ধরে চক্রটির ২ প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিপুল সংখ্যক মানুষের সঙ্গে এ ধরনের প্রতারণা করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতানোর কথা শিকার করেছেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাদের সঙ্গে আর কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

অর্থপাচার: সকল আসামিকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ছবি

ডিবিতে ডাকা হয়েছে কারিগরি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যানকে

সখীপুরে র‍্যাবের অভিযানে ইয়াবা গাঁজাসহ গ্রেফতার দুই

রাবিতে শহীদ কামারুজ্জামান হল নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের অভিযান

ছবি

ড. ইউনূসকে ২৩ মে পর্যন্ত জামিন

ছবি

তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছিনতাই ও চুরি হওয়া ফোন সেট উদ্ধার

মতলবে ব্যাংকের নৈশপ্রহরী খুনের রহস্য উন্মোচন,মূল আসামী সহ ৩ জন গ্রেফতার

ছবি

লঞ্চে বোরকা পরে ছিনতাই করতেন তারা

বন্ধুর সহায়তায় প্রবাসীর স্ত্রীকে খুন করে ঘরের মালামাল লুট করে আপন ভাই

গাজীপুরে ৩জন ভুয়া ডিবি পুলিশ আটক

ছবি

আইন অমান্য করে ইটভাটা পরিচালনা, সংবাদ প্রকাশের পর অভিযান, ৩ লাখ টাকা জরিমানা

ছবি

দুদকের মামলায় সাবেক এমপি কাদের খানের চার বছরের দন্ড

গাজীপুরে পুত্রকে কুপিয়ে হত্যা, পিতা আটক

ছবি

এবার ভরদুপুরে থানচির দুই ব্যাংকে ডাকাতি

সিলেটে ‘ধর্ষক’ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে গ্রপ্তার করেছে র‌্যাব

ছবি

ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ

ছবি

শেকলে বেঁধে তরুণীকে গণধর্ষণ, রিমান্ডে ৪ আসামি

মুন্সীগঞ্জে ডালিম হ.ত্যা মামলার ৬ আসামি জেলহাজতে

ছবি

শিকলে বেঁধে ২৫ দিন ধরে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ

ছবি

গেন্ডারিয়ায় ৯৮৩ পিস ভয়াবহ মাদক বুপ্রেনরফিনসহ গ্রেপ্তার কারবারি

ছবি

সিলেটে তরুণীকে আটকে রেখে দিনের পর দিন ধর্ষণ অধরা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ অভিযুক্তরা

নারায়ণগঞ্জে প্রেমিকাকে ধর্ষণ ও হত্যা, ৩ জনের যাবজ্জীবন

ছবি

স্ত্রী-শাশুড়িসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ‘জল্লাদ’ শাহজাহানের প্রতারণার মামলা

ছবি

মিতু হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিচ্ছেন দুই ম্যাজিস্ট্রেটসহ ৫ জন

ছবি

দুই বছরের দণ্ড ২৭ বছর পর বাতিল, রায়ের কপি যাচ্ছে সব আদালতে

ছবি

মানিকদির জমি দখল নাজিমের দৌরাত্ম্য থামছেই না, আতঙ্কে এলাকাবাসী

ছবি

পুলিশের সোর্স হত্যা মামলার পলাতক ২ আসামি গ্রেপ্তার

ছবি

বড় মনিরের বিরুদ্ধে এবার ঢাকায় কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

ছবি

রামুর কচ্ছপিয়ায় ছুরিকাঘাতে ছায়া হত্যার ঘটনায় আটক দুই

ছবি

মহেশখালীর সিরিয়াল কিলার আজরাইল গ্রেফতার

ছবি

মুন্সীগঞ্জে পাইপগান-ফেন্সিডিলসহ দু’জন আটক

ছবি

দুদকের মামলায় ২০ কোটি ২২ লাখ টাকার আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক এমপি মান্নান কারাগারে

ছবি

আইএমইআই নম্বর পাল্টে মোবাইল বিক্রি, চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

চুনারুঘাটে স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা, স্বামী আটক

ছবি

সিরাজগঞ্জে ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৫ কোটি টাকা গায়েব, ৩ কর্মকর্তা কারাগারে

শতাধিক শিক্ষা ভবন নির্মাণের নামে বিল ভাগ-বাটোয়ারা

tab

অপরাধ ও দুর্নীতি

চাকরির নামে প্রতারণা, টার্গেট ছিল সপ্তাহে ৬০ জন

মাসুদ রানা

বুধবার, ১৮ মে ২০২২

রিকশাচালক, বাসের হেল্পার, নিরাপত্তাকর্মীসহ নিম্নআয়ের মানুষের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতো চক্রের সদস্যরা। এক পর্যায়ে নিজেদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে, ওই নিম্নআয়ের মানুষদের কোন স্বজন সরকারি চাকরি নিতে চাইলে যোগাযোগ করতে বলে। পরে কোন দপ্তরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে, চক্রের সদস্যরা ওই মানুষদের ফোন করে, চাকরিপ্রত্যাশী থাকলে দ্রুত যোগাযোগ করতে বলে। তাদের ফাঁদে কেউ পা দিলে, চাকরিপ্রত্যাশীকে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন সরবারহ, মেডিকেল করা, দপ্তরের অন্য কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করা এবং কিউআর কোড সম্বলিত ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ধাপে ধাপে টাকা আত্মসাৎ করত। একপর্যায়ে ভিকটিম চাকরিতে যোগদানের কথা বললে লাপাত্তা হয়ে যেত প্রতারক চক্রটি।

নিয়োগপত্রে কিউআর কোড যুক্ত করে চাকরিপ্রত্যাশীদের বোকা বানিয়ে লাখ লাখ হাতানো এ চক্র প্রতি সপ্তাহে ৬০ জন চাকরিপ্রত্যাশীকে টার্গেট করত। এ চক্রের মূল হোতাসহ ২ জনকে গ্রেপ্তারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলোÑ মূল হোতা মো. মোশারফ হোসেন ও তার সহযোগী মো. জিয়া উদ্দিন। গত সোমবার মধ্যরাতে দারুস সালাম থানার আনন্দ নগর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৩টি মোবাইল ফোন, ৭টি সিম কার্ড, বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার বেশ কিছু ভুয়া প্রশ্ন, প্রবেশপত্র ও কিউআর কোড সম্বলিত নিয়োগপত্র জব্দ করা হয়েছে। গতকাল তাদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হলে আদালত ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এক সময় গার্মেন্টসে চাকরি করার সময় এক প্রতারকের মাধ্যমে চাকরিতে নিয়োগের নামে প্রতারণা করার বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করে মোশারফ হোসেন। দুই বছর ধরে সহযোগী জিয়া উদ্দিনকে নিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি। প্রতারণার কৌশল হিসেবে সব সময় বিভিন্ন দপ্তরের ছোট ছোট পোস্টে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখাতেন। তাদের ফাঁদে যে চাকরিপ্রত্যাশীরা পা দিত, প্রথমে তাদের কাছ থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে জীবনবৃত্তান্ত, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি ও অন্য সব ডকুমেন্ট নিত। পরে এসব তথ্যের মাধ্যমে একটি ভুয়া প্রবেশপত্র তৈরি করে প্রার্থীর ই-মেইলে পাঠাতো। এরপর বিকাশ/রকেটের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে ভাইভার জন্য মনোনীত হয়েছেন বলে জানাতো।

কিছুদিন পরে ভুয়া নিবন্ধিত সিম কার্ডের মাধ্যমে অন্য এক ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পুনরায় কল করে মেডিকেল ও অন্য খরচ বাবদ কিছু টাকা বিকাশ/রকেটের মাধ্যমে দিতে বলে। সেই টাকা পাওয়ার পর প্রতারক চক্রটি একটি ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য চাকরিপ্রত্যাশীদের ‘কিউআর কোড জেনারেটর’ সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রার্থীর নাম ঠিকানা সম্বলিত একটি ‘কিউআর কোড’ তৈরি করে ভুয়া নিয়োগপত্রে সেটি স্থাপন করে।

এরপর প্রার্থীকে বলা হয় যে, ‘কিউআর কোড স্ক্যানার’ দিয়ে আপনার নিয়োগপত্রটি সঠিক কি-না যাচাই করুন। প্রার্থী যখন তার মোবাইলের কিউআর কোড স্ক্যানার দিয়ে চেক করে তখন সেখানে নিজের তথ্য দেখায় এবং প্রার্থী চুক্তির সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে এই নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গেলে জানতে পারেন নিয়োগপত্রটি ভুয়া। এর মধ্যে তারা ব্যবহৃত ফোনগুলো বন্ধ করে ফেলতো।

এদিকে, একই কৌশলে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিউটে কর্মরত আনসার সদস্য মো. এছাহাক আলীর ছেলে ও ভাগিনাকে সেনাবাহিনীর স্টোরকিপার পদে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে গত ৫ মে বনানী থানায় মামলা করেন এছাহাক আলী। মামলায় উল্লেখ করা হয়, চাকরি পাইয়ে দিতে ৩ লাখ টাকা দাবি করা হয়। প্রথমে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা পাঠানোর পর ধাপে ধাপে আরও টাকা চাওয়া হয়। এক পর্যায়ে কিউআর কোড দেয়া নিয়োগপত্র পাঠিয়ে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। তখন সেনাবাহিনীর একজন মেজরকে ওই নিয়োগপত্র দেখিয়ে, জানতে পারেন জালিয়াতির শিকার হয়েছেন।

এ বিষয়ে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম টিমের টিম লিডার ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল হক বলেন, চাকরিপ্রত্যাশীরা নিজেরা অনৈতিক পথ অবলম্বন করে প্রতারণার শিকার হওয়ায় কেউ আইনগত ব্যবস্থা নিত না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি মানুষের সঙ্গে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল। তবে, বনানী থানায় দায়ের হওয়া ওই মামলার সূত্র ধরে চক্রটির ২ প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিপুল সংখ্যক মানুষের সঙ্গে এ ধরনের প্রতারণা করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতানোর কথা শিকার করেছেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাদের সঙ্গে আর কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

back to top