যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সহায়তা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারী সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। অর্থপাচার সংক্রান্ত বিষয়গুলো দুদকের সঙ্গে যৌথভাবে তদন্তের আগ্রহের কথা জানানো হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে। শনিবার (২১ মে) যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের উদ্যোগে দুদকের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে এসব আগ্রহের কথা বলেন এফবিআই প্রতিনিধি দল।
অর্থপাচার মোকাবিলায় দুদকের তদন্তকারীদের দক্ষতা বাড়াতে মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত ‘প্রটেক্টিং পাবলিক ইনটেগরিটি : ইনভেস্টিগেটিং অ্যান্ড প্রসিকিউটিং কমপ্লেক্স করাপশন কেসেস’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ দেয়া হয় দুদকের ২০ কর্মকতাকে। শনিবার ছিল প্রশিক্ষণের সমাপনী দিন।
জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ টেলিফোনে সংবাদকে বলেন, দুদকের তদন্তকারীদের সব ধরনের তদন্তে সক্ষমতা রয়েছে। দুদকের আইনে যদি কোন তদন্তে বাইরের কোন সংস্থার সহযোগিতা নেয়ার প্রয়োজন থাকে তাহলে আমরা নিতে পারি। যদি তারা এমন প্রস্তাব দিয়ে থাকে আর আমরাও যদি দেখি এ ধরনের তদন্তের ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা নেয়ার প্রয়োজন আছে তাহলে কোন অসুবিধা নেই। আমরা এ ধরনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানাই।
প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া দুদকের উপপরিচালক পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, এফবিআইয়ের এক কর্মকর্তা আমাদের বলেছেন, জটিল দুর্নীতির মামলার ক্ষেত্রে এফবিআইয়ের সঙ্গে যৌথ তদন্ত দল গঠন করতে পারে দুদক। এফবিআই যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অবৈধভাবে বা হুন্ডিতে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার ও ফ্রিজ করতে সহায়তা করবে এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দুদকে পাঠাবে। পারস্পরিক আইনি সহায়তার অনুরোধে তারা সেখান থেকে দুদককে সহায়তা করবে এবং দ্রুতই সেসব তথ্য পাঠাবে।’
দুদকের আরেক কর্মকর্তা বলেছেন, এফবিআইয়ের কর্মকর্তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাই প্রশিক্ষক হিসেবে অংশ নিয়েছেন। তারা বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। দুদকের যেসব কর্মকর্তা প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন তারাও তাদের তদন্তের অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন। এ বিষয়ে কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবকিছু বুঝে কাজ করবেন।
দুদক মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব জানান, গত ১৯ মে হোটেল রেডিসনে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ। শনিবার ছিল প্রশিক্ষণের শেষ দিন।
দুদকের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র কানাডা, ভারত, সিঙ্গপুর, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানের পদস্ত কর্মকর্তা, ব্যাংকার, এমপি, ব্যবসায়ীসহ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে এসব অর্থ পাচারের অভিযোগ। বছরের পর বছর দেশের বাইরে হুন্ডি বা ব্যবসার নামে টাকা পাচার হয়ে আসলেও তা রোধ করা যায়নি। অর্থপাচার সংক্রান্তে দুদক মামলাও করেছে। এসব মামলায় দুদক বেশকিছু অর্থ ফেরত আনলেও বেশিরভাগ অর্থ এখনও ফেরত আনা যায়নি। হাইকোর্ট থেকেও অর্থ পাচারকারীদের তালিকা এবং পাচার হওয়া অর্থের বিষয়ে দুদকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। দুদক একটি প্রতিবেদন দিলেও হাইকোর্ট তাতে তুষ্ট হয়নি।
দুদকের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০২০ সালে মানিলন্ডারিংয়ের ১২৯টি অভিযোগের মধ্যে ১৭টি অনুসন্ধান দুদক শেষ করতে পেরেছে। এর মধ্যে ৮টি ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে, ৬টি অভিযোগ সমাপ্তি এবং ৩টি অভিযোগ অন্য পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করা হয়েছে । একইভাবে ২০২১ সালে মানিলন্ডারিং সংক্রান্তে ১৩৯টি অনুসন্ধানের মধ্যে ২৮টি অনুসন্ধান শেষ করেছে দুদক। এর মধ্যে ১৩টি ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১২টি অভিযোগ সমাপ্তি এবং পাঁচটি অভিযোগ অন্য পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
দুদক বলছে, ঘুষ দুর্নীতি সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং অপরাধ দুদক তদন্ত করতে পারে। মানিলন্ডারিং আইনে ২৬টি অপরাধ সংশ্লিষ্ট মানিলন্ডারিংয়ের তদন্ত এনবিআর সিআইডিসহ একাধিক সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
শনিবার, ২১ মে ২০২২
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সহায়তা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারী সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। অর্থপাচার সংক্রান্ত বিষয়গুলো দুদকের সঙ্গে যৌথভাবে তদন্তের আগ্রহের কথা জানানো হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে। শনিবার (২১ মে) যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের উদ্যোগে দুদকের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে এসব আগ্রহের কথা বলেন এফবিআই প্রতিনিধি দল।
অর্থপাচার মোকাবিলায় দুদকের তদন্তকারীদের দক্ষতা বাড়াতে মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত ‘প্রটেক্টিং পাবলিক ইনটেগরিটি : ইনভেস্টিগেটিং অ্যান্ড প্রসিকিউটিং কমপ্লেক্স করাপশন কেসেস’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ দেয়া হয় দুদকের ২০ কর্মকতাকে। শনিবার ছিল প্রশিক্ষণের সমাপনী দিন।
জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ টেলিফোনে সংবাদকে বলেন, দুদকের তদন্তকারীদের সব ধরনের তদন্তে সক্ষমতা রয়েছে। দুদকের আইনে যদি কোন তদন্তে বাইরের কোন সংস্থার সহযোগিতা নেয়ার প্রয়োজন থাকে তাহলে আমরা নিতে পারি। যদি তারা এমন প্রস্তাব দিয়ে থাকে আর আমরাও যদি দেখি এ ধরনের তদন্তের ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা নেয়ার প্রয়োজন আছে তাহলে কোন অসুবিধা নেই। আমরা এ ধরনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানাই।
প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া দুদকের উপপরিচালক পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, এফবিআইয়ের এক কর্মকর্তা আমাদের বলেছেন, জটিল দুর্নীতির মামলার ক্ষেত্রে এফবিআইয়ের সঙ্গে যৌথ তদন্ত দল গঠন করতে পারে দুদক। এফবিআই যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অবৈধভাবে বা হুন্ডিতে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার ও ফ্রিজ করতে সহায়তা করবে এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দুদকে পাঠাবে। পারস্পরিক আইনি সহায়তার অনুরোধে তারা সেখান থেকে দুদককে সহায়তা করবে এবং দ্রুতই সেসব তথ্য পাঠাবে।’
দুদকের আরেক কর্মকর্তা বলেছেন, এফবিআইয়ের কর্মকর্তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাই প্রশিক্ষক হিসেবে অংশ নিয়েছেন। তারা বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। দুদকের যেসব কর্মকর্তা প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন তারাও তাদের তদন্তের অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন। এ বিষয়ে কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবকিছু বুঝে কাজ করবেন।
দুদক মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব জানান, গত ১৯ মে হোটেল রেডিসনে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ। শনিবার ছিল প্রশিক্ষণের শেষ দিন।
দুদকের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র কানাডা, ভারত, সিঙ্গপুর, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানের পদস্ত কর্মকর্তা, ব্যাংকার, এমপি, ব্যবসায়ীসহ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে এসব অর্থ পাচারের অভিযোগ। বছরের পর বছর দেশের বাইরে হুন্ডি বা ব্যবসার নামে টাকা পাচার হয়ে আসলেও তা রোধ করা যায়নি। অর্থপাচার সংক্রান্তে দুদক মামলাও করেছে। এসব মামলায় দুদক বেশকিছু অর্থ ফেরত আনলেও বেশিরভাগ অর্থ এখনও ফেরত আনা যায়নি। হাইকোর্ট থেকেও অর্থ পাচারকারীদের তালিকা এবং পাচার হওয়া অর্থের বিষয়ে দুদকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। দুদক একটি প্রতিবেদন দিলেও হাইকোর্ট তাতে তুষ্ট হয়নি।
দুদকের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০২০ সালে মানিলন্ডারিংয়ের ১২৯টি অভিযোগের মধ্যে ১৭টি অনুসন্ধান দুদক শেষ করতে পেরেছে। এর মধ্যে ৮টি ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে, ৬টি অভিযোগ সমাপ্তি এবং ৩টি অভিযোগ অন্য পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করা হয়েছে । একইভাবে ২০২১ সালে মানিলন্ডারিং সংক্রান্তে ১৩৯টি অনুসন্ধানের মধ্যে ২৮টি অনুসন্ধান শেষ করেছে দুদক। এর মধ্যে ১৩টি ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১২টি অভিযোগ সমাপ্তি এবং পাঁচটি অভিযোগ অন্য পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
দুদক বলছে, ঘুষ দুর্নীতি সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং অপরাধ দুদক তদন্ত করতে পারে। মানিলন্ডারিং আইনে ২৬টি অপরাধ সংশ্লিষ্ট মানিলন্ডারিংয়ের তদন্ত এনবিআর সিআইডিসহ একাধিক সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।