ঢাকার আশুলিয়ায় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যায় মামলার এজাহারে আসামি আশরাফুল ইসলাম জিতুর বয়স ১৬ বছর লেখা হলেও র্যাব বলছে সনদ অনুযায়ী তার বয়স ১৯।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলছেন, জিতুর জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ডে যে জন্মতারিখ রয়েছে, তা এজাহারের সঙ্গে মিলছে না।
বৃহস্পতিবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, “জিতুকে গ্রেপ্তারের পর তার কলেজ থেকে জুনিয়র দাখিল পরীক্ষার সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা হয়। সেখানে তার জন্ম তারিখ রয়েছে ২০০৩ সালের ১৭ জানুয়ারি।
“সে অনুযায়ী তার বয়স ১৯ বছর। কিন্তু মামলার এজাহারে লেখা ১৬ বছর।”
শনিবার দুপুরে সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে ওই স্কুলের শিক্ষক উৎপল সরকারের উপর অতর্কিত হামলা চালায় দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র জিতু। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে মারা যান উৎপল। এ ঘটনার পর স্কুলশিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচিতে শামিল হন। মামলায় জিতুর বয়স ১৬ লেখার বিষয়টি নিয়েও তারা প্রশ্ন তোলেন।
আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সীদের অপরাধের বিচার হয় কিশোর আইনে। সেই সুবিধা পাইয়ে দিতে জিতুর বয়স কম দেখানো হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও স্থানীয়রা তুলেছেন।
র্যাব কর্মকর্তা আল মঈন বলেন, “তার শিক্ষাজীবনে বিভিন্ন সময় ব্রেক ছিল। প্রথমে তাকে স্কুলে ভর্তি করে পরিবার। দ্বিতীয় শ্রেণিতে তাকে জোর করে মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়। “এরপর তাকে আবার স্কুলের নবম শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়। এ ছাড়া তার উচ্ছৃঙ্খল জীবন ও বেপরোয়া চলাফেরার কারণেও শিক্ষাজীবনে ছেদ পড়ে।”
কমান্ডার মঈন বলেন, “বয়স ১৯ নিশ্চিত হওয়ার পর র্যাব অপরাধী হিসেবে তার নাম প্রকাশ করেছে। এখন বিষয়টি নিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করবে। তবে আমরা কলেজের অধ্যক্ষের কাছ থেকে এই সার্টিফিকেট নিয়েছি।”
বুধবার বিকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নগরহাওলা গ্রামে এক বন্ধুর বাড়ি থেকে জিতুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ভোর থেকে ওই বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন তিনি।
একই দিন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা থেকে এই ছাত্রের বাবাকে গ্রেপ্তারের কথা জানান আশুলিয়া থানার ওসি এইচ এম কামরুজ্জামান। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
ওই ছাত্রের বাবাকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে তাকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
ওই ছাত্রের পরিবার শিক্ষকের পরিবারকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে কি না জানতে চাইলে আল মঈন বলেন, ‘আমরা উৎপলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু এমন কোনো হুমকি-ধমকির বিষয়ে তথ্য পাইনি।’
শিক্ষক উৎপল কুমারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার বর্ণনায় কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেছিলেন, “আমাদের স্কুলে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। দুপুরে মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা উৎপলকে হঠাৎ করে এসে ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে ওই ছাত্র।
“তিনি (উৎপল) ছাত্রদের বিভিন্ন সময় চুল কাটতে বলাসহ বিভিন্ন আচরণগত সমস্যা নিয়ে কাউন্সেলিং করতেন। বিভিন্ন অপরাধের বিচারও করতেন তিনি। হয়ত কোনো কারণে সেই শিক্ষকের ওপর ক্ষোভ থেকে ছাত্রটি এই ঘটনা ঘটিয়েছে।”
কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক উৎপল কলেজটির শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে আশুলিয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ দিয়েছিলেন।
৩৭ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ঢাকার মিরপুরে পরিবার নিয়ে থাকতেন। সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার এঙ্গেলদানি গ্রামের মৃত অজিত সরকারের ছেলে তিনি।
বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন ২০২২
ঢাকার আশুলিয়ায় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যায় মামলার এজাহারে আসামি আশরাফুল ইসলাম জিতুর বয়স ১৬ বছর লেখা হলেও র্যাব বলছে সনদ অনুযায়ী তার বয়স ১৯।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলছেন, জিতুর জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ডে যে জন্মতারিখ রয়েছে, তা এজাহারের সঙ্গে মিলছে না।
বৃহস্পতিবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, “জিতুকে গ্রেপ্তারের পর তার কলেজ থেকে জুনিয়র দাখিল পরীক্ষার সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা হয়। সেখানে তার জন্ম তারিখ রয়েছে ২০০৩ সালের ১৭ জানুয়ারি।
“সে অনুযায়ী তার বয়স ১৯ বছর। কিন্তু মামলার এজাহারে লেখা ১৬ বছর।”
শনিবার দুপুরে সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে ওই স্কুলের শিক্ষক উৎপল সরকারের উপর অতর্কিত হামলা চালায় দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র জিতু। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে মারা যান উৎপল। এ ঘটনার পর স্কুলশিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচিতে শামিল হন। মামলায় জিতুর বয়স ১৬ লেখার বিষয়টি নিয়েও তারা প্রশ্ন তোলেন।
আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সীদের অপরাধের বিচার হয় কিশোর আইনে। সেই সুবিধা পাইয়ে দিতে জিতুর বয়স কম দেখানো হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও স্থানীয়রা তুলেছেন।
র্যাব কর্মকর্তা আল মঈন বলেন, “তার শিক্ষাজীবনে বিভিন্ন সময় ব্রেক ছিল। প্রথমে তাকে স্কুলে ভর্তি করে পরিবার। দ্বিতীয় শ্রেণিতে তাকে জোর করে মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়। “এরপর তাকে আবার স্কুলের নবম শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়। এ ছাড়া তার উচ্ছৃঙ্খল জীবন ও বেপরোয়া চলাফেরার কারণেও শিক্ষাজীবনে ছেদ পড়ে।”
কমান্ডার মঈন বলেন, “বয়স ১৯ নিশ্চিত হওয়ার পর র্যাব অপরাধী হিসেবে তার নাম প্রকাশ করেছে। এখন বিষয়টি নিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করবে। তবে আমরা কলেজের অধ্যক্ষের কাছ থেকে এই সার্টিফিকেট নিয়েছি।”
বুধবার বিকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নগরহাওলা গ্রামে এক বন্ধুর বাড়ি থেকে জিতুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ভোর থেকে ওই বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন তিনি।
একই দিন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা থেকে এই ছাত্রের বাবাকে গ্রেপ্তারের কথা জানান আশুলিয়া থানার ওসি এইচ এম কামরুজ্জামান। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
ওই ছাত্রের বাবাকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে তাকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
ওই ছাত্রের পরিবার শিক্ষকের পরিবারকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে কি না জানতে চাইলে আল মঈন বলেন, ‘আমরা উৎপলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু এমন কোনো হুমকি-ধমকির বিষয়ে তথ্য পাইনি।’
শিক্ষক উৎপল কুমারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার বর্ণনায় কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেছিলেন, “আমাদের স্কুলে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। দুপুরে মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা উৎপলকে হঠাৎ করে এসে ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে ওই ছাত্র।
“তিনি (উৎপল) ছাত্রদের বিভিন্ন সময় চুল কাটতে বলাসহ বিভিন্ন আচরণগত সমস্যা নিয়ে কাউন্সেলিং করতেন। বিভিন্ন অপরাধের বিচারও করতেন তিনি। হয়ত কোনো কারণে সেই শিক্ষকের ওপর ক্ষোভ থেকে ছাত্রটি এই ঘটনা ঘটিয়েছে।”
কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক উৎপল কলেজটির শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে আশুলিয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ দিয়েছিলেন।
৩৭ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ঢাকার মিরপুরে পরিবার নিয়ে থাকতেন। সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার এঙ্গেলদানি গ্রামের মৃত অজিত সরকারের ছেলে তিনি।