alt

সংস্কৃতি

আজ সুমনের গান, ভেন্যু নিয়ে নাটকীয়তা

জাহিদা পারভেজ ছন্দা : শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২

শেষ পর্যন্ত সুমন কবিরের গানের অনুষ্ঠান হচ্ছে, তবে জাতীয় জাদুঘরে নয়, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে। বিষয়টি নিশ্চিত করছেন আয়োজক প্রতিষ্ঠান পিপহোল।

আজ থেকে তিন দিন রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে গান শোনাবেন ভারতের শিল্পী সুমন কবির, এমনটাই কথা ছিল। সেই অনুযায়ী সুমন কবির ঢাকায় এসে পৌঁছান গত বৃহস্পতিবার। আর সব প্রস্তুতিও প্রায় শেষ করে ফেলেছিল আয়োজক প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে ‘ভেন্যু’ নিয়ে শুরু হয় নাটকীয়তা। দিনভর নাটকীয়তার শেষ হয় গতকাল সন্ধ্যায়।

অনুষ্ঠান আয়োজকরা গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জাদুঘরের আয়োজন নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। কোন সমস্যা হতে পারে আন্দাজ করতে পারেননি। জাতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষও বলেছিল অনুষ্ঠানটি তাদের মিলনায়তনেই হচ্ছে। কিন্তু পুলিশের কাছে অনুমতি নিতে গিয়েই বাঁধে বিপত্তি। জাদুঘরের মতো গুরুত্বপূর্ন স্থানে এত বড় অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে শ্রেফ জানিয়ে দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে অনুষ্ঠানের আয়োজক ও জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। শুরু হয় তোড়জোড়। এরপরই নতুন ভেন্যু খুঁজতে শুরু করে অনুষ্ঠান আয়োজক ‘পিপহোল’। পাল্টে যায় ‘ভেন্যু’।

ডিএমপির এমন সিদ্ধান্তে আয়োজকদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হলেও তারা দ্রুত বিষয়টি সমাধান করেন। গতকাল সন্ধ্যায় আয়োজক প্রতিষ্ঠান ‘পিপহোল’-এর কর্মকর্তা মীর আরিফ বিল্লাহ সংবাদকে বলেন, ‘রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হবে কবীর সুমনের গানের অনুষ্ঠান। আপাতত তেমন কিছু বলতে না পারলেও শুধু বলছি, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে গাইবেন কবীর সুমন। অনুমতি হয়ে গেছে। ’

আরিফ বিল্লাহ বলেন, ‘কবির সুমন চলে এসেছেন। এ এত আগ্রহ নিয়ে দর্শক শ্রোতা টিকেট কেটেছেন। তাদের জন্যই বেশি উত্তেজিত ছিলাম। মোট কথা আমরা কবীর সুমনের অনুষ্ঠানটি ভালোভাবে করতে চাই। এ জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’

এদিকে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়া না দেয়া নিয়ে আলোচনার মুখে পড়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার মুঠোফোনে জানান, ‘জাতীয় জাদুঘর অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। যাকে বলে কি পয়েন্ট ইনস্টলেশনে কেপিআইভুক্ত এলাকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে একজন জনপ্রিয় বিদেশি শিল্পী তিন দিন গান পরিবেশন করবেন। এখানে ভিড় হবেই। সাধারণ কোন অনুষ্ঠান হলে সমস্যা ছিল না, আমরা অনুমতি দিতাম।’

অনেক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আয়োজকদের দোষ নেই, আমাদেরও নেই। আসলে এ বিষয়গুলো সবার বুঝতে হবে। রাষ্ট্রের কিছু বিধিনিষেধ মানতে হবে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে তো অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।’ কমপক্ষে ৫শ’ দর্শকশ্রোতা একসঙ্গে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন এমন ভেন্যু হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনকে সবচেয়ে সুবিধাজনক মনে হওয়ায় পিপহোল যোগাযোগ শুরু করেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনও প্রথমে ভেন্যু দিতে চায়নি। কারণ হিসেবে তারা জানায়, গানের অনুষ্ঠান করার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ওই মিলনায়তনে নেই। সাউন্ড সিস্টেমও ভালো না। এর আগে দেশের একটি ব্যান্ডদল মিলনায়তন বরাদ্দ নিয়েও পরে সাউন্ড সিস্টেমের কারণে শো করেনি।

তবে আয়োজক সব অনুমতি নিয়ে নিয়ম মেনে অনুষ্ঠান করতে চাইলে মিলনায়তন বরাদ্দ দিতে আপত্তি নেই বলে জানায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন কর্তৃপক্ষ। এরপরই পিপহোল প্রচার করে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হচ্ছে অনুষ্ঠান।

১৯৯২ সালে প্রকাশ হয় কবীর সুমনের প্রথম আধুনিক গানের অ্যালবাম ‘তোমাকে চাই’। বাংলা গানের গতিপথ বদলে দেয়া এ অ্যালবাম প্রকাশের ৩০ বছর পূর্ণ হলো এ বছর। এ উপলক্ষেই এই আয়োজন বলে জানান আয়োজকরা। তাদের এই উদ্যাপনে শরিক হতেই আয়োজকদের আমন্ত্রণে কবীর সুমন এখন ঢাকায়।

গত শুক্রবার থেকে অনুষ্ঠানের টিকেট ছাড়া হয়েছে। টিকেট নিয়ে দর্শকদের মধ্যে তুমুল আগ্রহ বোঝা যায় মাত্র ৭২ ঘণ্টার ব্যবধানে আধুনিক বাংলা গানের দুই দিনের শোর সব টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। সুমন ১৫ ও ২১ তারিখে আধুনিক বাংলা গান এবং ১৮ তারিখে বাংলা খেয়াল পরিবেশন করবেন বলে এখন পর্যন্ত জানা গেছে।

জানা গেছে, তারিখ একই থাকলেও অনুষ্ঠান শুরুর সময় কিছুটা পিছিয়ে যাবে। আজ অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল সাড়ে চারটায়। আর মিলনায়তনের গেট খোলা হবে তিনটা ৪৫ মিনিটে।

করোনা মহামারীর পর দেশে এটাই প্রথম এত বড় অনুষ্ঠান হতে চলেছে, আবার প্রায় ১৩ বছর পর গান করতে এসেছেন সুমন। সব মিলিয়ে এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করছে বলে জানান অনুষ্ঠানে টিকেট হাতে পাওয়া একজন মাহবুব আহমেদ জয়।

জয় বলেন, ‘কবীর সুমন এমন একজন শিল্পী যার গান পুরোনো হয় না, হবে না। আর এতদিন তাকে শুধু শুনেছি এবার দেখবো এটা আমার জন্য খুবই এক্সাইটিং (উত্তেজনা)।’

এদিকে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া অনুষ্ঠানকে ঘিরে এক ভিডিও বার্তায় কবীর সুমন বলেন, ‘এ আয়োজন নিয়ে বাংলাদেশের নবীনদের মধ্যেও খুব উৎসাহ রয়েছে বলে জানালেন আয়োজকেরা। এটা আমার খুব ভালো লাগছে।’ ‘আমার ৭৩ বছর চলছে। আর বেশি দিন তো নেই। আরও অনেক বছরও যদি বাঁচি, এই গলাটা তো আর থাকবে না। সুর তো থাকবে না। তাই যতদিন আছি, সবাই যদি শোনেন আমার খুব ভালো লাগবে। এই বুড়োর গান শুনতে মানুষের আগ্রহ আমাকে আনন্দ দেয়’।

নব্বইয়ের দশকের শেষ ভাগে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে এসে গান করেছিলেন কবীর সুমন, তখন কোন পারিশ্রমিক নেননি তিনি। কবীর সুমন শেষবার ঢাকায় এসেছিলেন ২০০৯ সালের অক্টোবর। তখন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে গান পরিবেশনে বাধা পেয়ে কলকাতায় ফিরে গিয়েছিলেন। মাঝে এক যুগ কেটে গেলেও আর ঢাকায় আসেননি তিনি। এক সাক্ষাৎকারে কিছুটা অভিমানের সঙ্গে বলেছিলেন, বাংলাদেশে আর কখনো আসবেন না তিনি। সেই অভিমানকে সরিয়ে সুমন কবীর বাংলাদেশে এসেছেন তার ভক্ত শ্রোতাদের ভালোবেসে।

ছবি

‘রোড টু বালুরঘাট’, মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থীদের চিত্র প্রদর্শন

ছবি

পাবলিশহার এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেলেন বাংলাদেশের মিতিয়া ওসমান

ছবি

চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মুখর পরিবেশে বর্ষ বরন সম্পন্ন

ছবি

জামালপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত

ছবি

বনাঢ্য নানান আয়োজনে বিভাগীয় নগরী রংপুরে পালিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখ

ছবি

আজ চৈত্র সংক্রান্তি

ছবি

বর্ষবরণে সময়ের বিধি-নিষেধ মানবে না সাংস্কৃতিক জোট

ছবি

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার গুণীজন সংবর্ধনা

ছবি

স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রায় সকল প্রতিষ্ঠানকে কাজ করতে হবে : ড. কামাল চৌধুরী

ছবি

এলাকাবাসীর সঙ্গে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের নতুন কমিটি, ড. সনজীদা খাতুন সভাপতি, ড. আতিউর রহমান নির্বাহী সভাপতি,লিলি ইসলাম সাধারণ সম্পাদক

ছবি

এবার বইমেলায় ৬০ কোটি টাকার বই বিক্রি

ছবি

আজ শেষ হচ্ছে মহান একুশের বইমেলা, বিক্রি বেড়েছে শেষ মুহুর্তে

ছবি

আগামী বছর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার জায়গা বরাদ্দ নাওদিতে পারে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

ছবি

বইমেলা, মেয়াদ বাড়ায় খুশি সবাই

ছবি

বইমেলায় ফ্রান্স প্রবাসী কাজী এনায়েত উল্লাহর দুই বই

ছবি

নারী লেখকদের বই কম, বিক্রিও কম

ছবি

বইমেলায় বিদায়ের সুর

ছবি

শিশুদের আনন্দ উচ্ছ্বাসে জমজমাট বইমেলার শিশু প্রহর

ছবি

বইমেলায় শিশুদের চোখে মুখে ছিল আনন্দ উচ্ছ্বাস

ছবি

বই মেলায় খুদে লেখকদের গল্প সংকলন ‘কিশোর রূপাবলি’

ছবি

`বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশিত উন্নত শিরের বাঙালি জাতি চাই’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

ছবি

বইমেলায় সরোজ মেহেদীর ‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’

ছবি

বইমেলায় মাহবুবুর রহমান তুহিনের ‘চেকবই’

বইমেলায় প্রকাশিত হলো সাংবাদিক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের ‘যাপিত জীবনের গল্প’

ছবি

সমাজসেবায় একুশে পদকঃ এখনও ফেরি করে দই বিক্রি করেন জিয়াউল হক

ছবি

বইমেলায় পন্নী নিয়োগীর নতুন গ্রল্পগ্রন্থ আতশবাজি

ছবি

ভাষার শক্তি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সুদৃঢ় করে: উপাচার্য ড. মশিউর রহমান

ছবি

রুবেলের গ্রন্থ শিশির ঝরা কবিতা

ঢাবিতে পাঁচ দিনব্যাপী ‘আমার ভাষার চলচ্চিত্র’ উৎসব শুরু

ছবি

সোনারগাঁয়ে লোকজ উৎসবে খেলাঘরের নাচ-গান পরিবেশন

ছবি

বাংলা একাডেমি পুরস্কার ফেরত দিলেন জাকির তালুকদার

ছবি

রংতুলির মাধ্যমে নিরাপদ সড়কের দাবি শিশুদের

ছবি

জাতীয় প্রেস ক্লাবে পিঠা উৎসব ও লোকগানের আসর

ফরিদপুরে ২ ফেব্রূয়ারি থেকে ঐতিহ্যবাহী জসীম পল্লী মেলা

ছবি

লেনিন উপন্যাসের প্রকাশনা উৎসব

tab

সংস্কৃতি

আজ সুমনের গান, ভেন্যু নিয়ে নাটকীয়তা

জাহিদা পারভেজ ছন্দা

শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২

শেষ পর্যন্ত সুমন কবিরের গানের অনুষ্ঠান হচ্ছে, তবে জাতীয় জাদুঘরে নয়, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে। বিষয়টি নিশ্চিত করছেন আয়োজক প্রতিষ্ঠান পিপহোল।

আজ থেকে তিন দিন রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে গান শোনাবেন ভারতের শিল্পী সুমন কবির, এমনটাই কথা ছিল। সেই অনুযায়ী সুমন কবির ঢাকায় এসে পৌঁছান গত বৃহস্পতিবার। আর সব প্রস্তুতিও প্রায় শেষ করে ফেলেছিল আয়োজক প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে ‘ভেন্যু’ নিয়ে শুরু হয় নাটকীয়তা। দিনভর নাটকীয়তার শেষ হয় গতকাল সন্ধ্যায়।

অনুষ্ঠান আয়োজকরা গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জাদুঘরের আয়োজন নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। কোন সমস্যা হতে পারে আন্দাজ করতে পারেননি। জাতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষও বলেছিল অনুষ্ঠানটি তাদের মিলনায়তনেই হচ্ছে। কিন্তু পুলিশের কাছে অনুমতি নিতে গিয়েই বাঁধে বিপত্তি। জাদুঘরের মতো গুরুত্বপূর্ন স্থানে এত বড় অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে শ্রেফ জানিয়ে দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে অনুষ্ঠানের আয়োজক ও জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। শুরু হয় তোড়জোড়। এরপরই নতুন ভেন্যু খুঁজতে শুরু করে অনুষ্ঠান আয়োজক ‘পিপহোল’। পাল্টে যায় ‘ভেন্যু’।

ডিএমপির এমন সিদ্ধান্তে আয়োজকদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হলেও তারা দ্রুত বিষয়টি সমাধান করেন। গতকাল সন্ধ্যায় আয়োজক প্রতিষ্ঠান ‘পিপহোল’-এর কর্মকর্তা মীর আরিফ বিল্লাহ সংবাদকে বলেন, ‘রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হবে কবীর সুমনের গানের অনুষ্ঠান। আপাতত তেমন কিছু বলতে না পারলেও শুধু বলছি, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে গাইবেন কবীর সুমন। অনুমতি হয়ে গেছে। ’

আরিফ বিল্লাহ বলেন, ‘কবির সুমন চলে এসেছেন। এ এত আগ্রহ নিয়ে দর্শক শ্রোতা টিকেট কেটেছেন। তাদের জন্যই বেশি উত্তেজিত ছিলাম। মোট কথা আমরা কবীর সুমনের অনুষ্ঠানটি ভালোভাবে করতে চাই। এ জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’

এদিকে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়া না দেয়া নিয়ে আলোচনার মুখে পড়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার মুঠোফোনে জানান, ‘জাতীয় জাদুঘর অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। যাকে বলে কি পয়েন্ট ইনস্টলেশনে কেপিআইভুক্ত এলাকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে একজন জনপ্রিয় বিদেশি শিল্পী তিন দিন গান পরিবেশন করবেন। এখানে ভিড় হবেই। সাধারণ কোন অনুষ্ঠান হলে সমস্যা ছিল না, আমরা অনুমতি দিতাম।’

অনেক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আয়োজকদের দোষ নেই, আমাদেরও নেই। আসলে এ বিষয়গুলো সবার বুঝতে হবে। রাষ্ট্রের কিছু বিধিনিষেধ মানতে হবে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে তো অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।’ কমপক্ষে ৫শ’ দর্শকশ্রোতা একসঙ্গে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন এমন ভেন্যু হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনকে সবচেয়ে সুবিধাজনক মনে হওয়ায় পিপহোল যোগাযোগ শুরু করেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনও প্রথমে ভেন্যু দিতে চায়নি। কারণ হিসেবে তারা জানায়, গানের অনুষ্ঠান করার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ওই মিলনায়তনে নেই। সাউন্ড সিস্টেমও ভালো না। এর আগে দেশের একটি ব্যান্ডদল মিলনায়তন বরাদ্দ নিয়েও পরে সাউন্ড সিস্টেমের কারণে শো করেনি।

তবে আয়োজক সব অনুমতি নিয়ে নিয়ম মেনে অনুষ্ঠান করতে চাইলে মিলনায়তন বরাদ্দ দিতে আপত্তি নেই বলে জানায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন কর্তৃপক্ষ। এরপরই পিপহোল প্রচার করে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হচ্ছে অনুষ্ঠান।

১৯৯২ সালে প্রকাশ হয় কবীর সুমনের প্রথম আধুনিক গানের অ্যালবাম ‘তোমাকে চাই’। বাংলা গানের গতিপথ বদলে দেয়া এ অ্যালবাম প্রকাশের ৩০ বছর পূর্ণ হলো এ বছর। এ উপলক্ষেই এই আয়োজন বলে জানান আয়োজকরা। তাদের এই উদ্যাপনে শরিক হতেই আয়োজকদের আমন্ত্রণে কবীর সুমন এখন ঢাকায়।

গত শুক্রবার থেকে অনুষ্ঠানের টিকেট ছাড়া হয়েছে। টিকেট নিয়ে দর্শকদের মধ্যে তুমুল আগ্রহ বোঝা যায় মাত্র ৭২ ঘণ্টার ব্যবধানে আধুনিক বাংলা গানের দুই দিনের শোর সব টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। সুমন ১৫ ও ২১ তারিখে আধুনিক বাংলা গান এবং ১৮ তারিখে বাংলা খেয়াল পরিবেশন করবেন বলে এখন পর্যন্ত জানা গেছে।

জানা গেছে, তারিখ একই থাকলেও অনুষ্ঠান শুরুর সময় কিছুটা পিছিয়ে যাবে। আজ অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল সাড়ে চারটায়। আর মিলনায়তনের গেট খোলা হবে তিনটা ৪৫ মিনিটে।

করোনা মহামারীর পর দেশে এটাই প্রথম এত বড় অনুষ্ঠান হতে চলেছে, আবার প্রায় ১৩ বছর পর গান করতে এসেছেন সুমন। সব মিলিয়ে এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করছে বলে জানান অনুষ্ঠানে টিকেট হাতে পাওয়া একজন মাহবুব আহমেদ জয়।

জয় বলেন, ‘কবীর সুমন এমন একজন শিল্পী যার গান পুরোনো হয় না, হবে না। আর এতদিন তাকে শুধু শুনেছি এবার দেখবো এটা আমার জন্য খুবই এক্সাইটিং (উত্তেজনা)।’

এদিকে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া অনুষ্ঠানকে ঘিরে এক ভিডিও বার্তায় কবীর সুমন বলেন, ‘এ আয়োজন নিয়ে বাংলাদেশের নবীনদের মধ্যেও খুব উৎসাহ রয়েছে বলে জানালেন আয়োজকেরা। এটা আমার খুব ভালো লাগছে।’ ‘আমার ৭৩ বছর চলছে। আর বেশি দিন তো নেই। আরও অনেক বছরও যদি বাঁচি, এই গলাটা তো আর থাকবে না। সুর তো থাকবে না। তাই যতদিন আছি, সবাই যদি শোনেন আমার খুব ভালো লাগবে। এই বুড়োর গান শুনতে মানুষের আগ্রহ আমাকে আনন্দ দেয়’।

নব্বইয়ের দশকের শেষ ভাগে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে এসে গান করেছিলেন কবীর সুমন, তখন কোন পারিশ্রমিক নেননি তিনি। কবীর সুমন শেষবার ঢাকায় এসেছিলেন ২০০৯ সালের অক্টোবর। তখন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে গান পরিবেশনে বাধা পেয়ে কলকাতায় ফিরে গিয়েছিলেন। মাঝে এক যুগ কেটে গেলেও আর ঢাকায় আসেননি তিনি। এক সাক্ষাৎকারে কিছুটা অভিমানের সঙ্গে বলেছিলেন, বাংলাদেশে আর কখনো আসবেন না তিনি। সেই অভিমানকে সরিয়ে সুমন কবীর বাংলাদেশে এসেছেন তার ভক্ত শ্রোতাদের ভালোবেসে।

back to top