বন্যা, জলবায়ু পরিবর্তন, লৈঙ্গিক সম্পর্কের মতো বিষয়গুলোর ওপর আলোকপাত করে আজ শুক্রবার শুরু হলো ৯ দিনের ঢাকা আর্ট সামিট। ঢাকা আর্ট সামিটের এটি ষষ্ঠ আয়োজন। সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে আজ সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে সামিটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।
সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত ঢাকা আর্ট সামিটে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৬০ জন শিল্পী অংশ গ্রহণ করছেন। সামিট চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পকলার চর্চা অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়েছে। বাংলাদেশের অনেক শিল্পী আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে খ্যাতি ও পরিচিতি লাভ করেছেন।
সালমান রহমান বলেন, বাংলাদেশের শিল্পকর্ম বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রদর্শনী এবং আয়োজনগুলোতে স্থান করে নিয়েছে। পাশাপাশি দেশেও এশিয়াসহ সারা বিশ্বের শিল্পীদের কাজের প্রদর্শনী হচ্ছে। ঢাকা আর্ট সামিট তেমনই একটি আয়োজন। এই প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে শিল্পীরা তাঁদের পারস্পরিক শিল্পচিন্তা ও অভিজ্ঞতার বিনিময় করতে পারবেন। অনেক নতুন নতুন মাধ্যম, উপকরণ, আধুনিক প্রযুক্তি সমসাময়িক শিল্পকর্মে যুক্ত হয়েছে। এই প্রদর্শনীতে তার প্রকাশ রয়েছে। তবে এসবের পাশাপাশি যে বিদেশি শিল্পীরা এখানে এসেছেন, তাঁরা বাংলাদেশে জলবায়ু, পরিবেশ, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন ধরনের বিপুল কাজ চলছে, সে সম্পর্কেও জানতে পারবেন। তাঁদের এই অভিজ্ঞতা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরতে সহায়ক হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে তাঁদের অদম্য মনোবলে যেভাবে জীবনযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন, এই আয়োজনের ভেতর দিয়ে শিল্পীরা তা তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি বাঙালির প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সংগ্রামের ইতিহাসও এতে উঠে এসেছে। বর্তমান সরকার যে উন্নয়নের পরিকল্পনা করে দেশ পরিচালনা করছে, তাতে কেবল অর্থনৈতিক উন্নয়নকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, ইতিহাস সংস্কৃতিসহ সুকুমারবৃত্তি ও মানবিক মূল্যবোধের ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সে কারণে এ ধরনের আয়োজনের প্রতি সরকারিভাবে সম্ভব সব সহায়তা দেওয়া হবে।
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান শিল্পীদের কাজ নিয়ে এ ধরনের আয়োজন আমাদের শিল্পকলার চর্চায়, বিশেষত নবীন শিল্পীদের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’
ঢাকা আর্ট সামিট আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ফারুক সোবহান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের খ্যাতনামা ও প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীদের শিল্পকর্মগুলো দেখা ও তাঁদের সরাসরি ভাববিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে ২০১২ সাল থেকে ঢাকা আর্ট সামিট আয়োজন শুরু হয়েছে। সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ অবাণিজ্যিক এই প্রদর্শনী প্রতি দুই বছর পরপর আয়োজিত হয়। সর্বশেষ সামিট হয়েছিল ২০২০ সালে। করোনা অতিমারির কারণে গত তিন বছর ঢাকা আর্ট সামিট অনুষ্ঠিত হয়নি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় এবার এই আয়োজন করা হয়েছে।
সূচনা বক্তব্যে সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট নাদিয়া সামদানী বলেন, ‘এবারই প্রথমবারের মতো বাংলায় সামিটের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিপাদ্য হলে “বন্যা”। বহুকাল থেকে বন্যা আমাদের জন্য প্রতি পদে জীবনযাত্রার ওপর গভীর প্রভাব রেখে চলেছে। একদিকে যেমন প্লাবন ও নদীর ভাঙনে ফসল, বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে; তেমনি বন্যায় ভেসে আসা পলিমাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করছে। মানুষ দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। এই দিকগুলো নানাভাবে প্রদর্শনীতে উঠে এসেছে। পাশাপাশি নারীর আর্থিক সক্ষমতার দিকটিকে গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
জাতীয় চিত্রশালার চারতলাজুড়ে চলবে প্রদর্শনী। এখানে বিভিন্ন মাধ্যমের চিত্রকলা, ভাস্কর্য, স্থাপনা, ভিডিও, লেজার শো, পারফরম্যান্স আর্ট মিলিয়ে বিপুল বৈচিত্র্যময় শিল্পকর্মের বিপুল সমাবেশে ঘটেছে এবারের ঢাকা আর্ট সামিটে। প্রদর্শনীর পাশাপাশি প্রতিদিনই থাকবে শিল্পকলা নিয়ে আলোচনা, কর্মশালা ইত্যাদি।
সামিটে দেশের শিল্পীদের মধ্যে এস এম সুলতান, সফিউদ্দিন আহমেদ, রফিকুন নবী, হামিদুজ্জামান খান, সৈয়দ আবুল বার্ক্ আলভী, নিসার হোসেন, ফরিদা জামান, জামাল আহমেদ, ঢালী আল মামুন, লালারুখ সেলিম, কনকচাঁপা চাকমাসহ অনেকের কাজ রয়েছে। এ ছাড়া ভারতে শিল্পীদের মধ্যে বিনোদবিহারী মুখার্জি, গণেশ পাইনের কাজ রয়েছে।
শুক্রবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
বন্যা, জলবায়ু পরিবর্তন, লৈঙ্গিক সম্পর্কের মতো বিষয়গুলোর ওপর আলোকপাত করে আজ শুক্রবার শুরু হলো ৯ দিনের ঢাকা আর্ট সামিট। ঢাকা আর্ট সামিটের এটি ষষ্ঠ আয়োজন। সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে আজ সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে সামিটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।
সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত ঢাকা আর্ট সামিটে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৬০ জন শিল্পী অংশ গ্রহণ করছেন। সামিট চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পকলার চর্চা অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়েছে। বাংলাদেশের অনেক শিল্পী আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে খ্যাতি ও পরিচিতি লাভ করেছেন।
সালমান রহমান বলেন, বাংলাদেশের শিল্পকর্ম বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রদর্শনী এবং আয়োজনগুলোতে স্থান করে নিয়েছে। পাশাপাশি দেশেও এশিয়াসহ সারা বিশ্বের শিল্পীদের কাজের প্রদর্শনী হচ্ছে। ঢাকা আর্ট সামিট তেমনই একটি আয়োজন। এই প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে শিল্পীরা তাঁদের পারস্পরিক শিল্পচিন্তা ও অভিজ্ঞতার বিনিময় করতে পারবেন। অনেক নতুন নতুন মাধ্যম, উপকরণ, আধুনিক প্রযুক্তি সমসাময়িক শিল্পকর্মে যুক্ত হয়েছে। এই প্রদর্শনীতে তার প্রকাশ রয়েছে। তবে এসবের পাশাপাশি যে বিদেশি শিল্পীরা এখানে এসেছেন, তাঁরা বাংলাদেশে জলবায়ু, পরিবেশ, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন ধরনের বিপুল কাজ চলছে, সে সম্পর্কেও জানতে পারবেন। তাঁদের এই অভিজ্ঞতা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরতে সহায়ক হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে তাঁদের অদম্য মনোবলে যেভাবে জীবনযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন, এই আয়োজনের ভেতর দিয়ে শিল্পীরা তা তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি বাঙালির প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সংগ্রামের ইতিহাসও এতে উঠে এসেছে। বর্তমান সরকার যে উন্নয়নের পরিকল্পনা করে দেশ পরিচালনা করছে, তাতে কেবল অর্থনৈতিক উন্নয়নকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, ইতিহাস সংস্কৃতিসহ সুকুমারবৃত্তি ও মানবিক মূল্যবোধের ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সে কারণে এ ধরনের আয়োজনের প্রতি সরকারিভাবে সম্ভব সব সহায়তা দেওয়া হবে।
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান শিল্পীদের কাজ নিয়ে এ ধরনের আয়োজন আমাদের শিল্পকলার চর্চায়, বিশেষত নবীন শিল্পীদের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’
ঢাকা আর্ট সামিট আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ফারুক সোবহান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের খ্যাতনামা ও প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীদের শিল্পকর্মগুলো দেখা ও তাঁদের সরাসরি ভাববিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে ২০১২ সাল থেকে ঢাকা আর্ট সামিট আয়োজন শুরু হয়েছে। সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ অবাণিজ্যিক এই প্রদর্শনী প্রতি দুই বছর পরপর আয়োজিত হয়। সর্বশেষ সামিট হয়েছিল ২০২০ সালে। করোনা অতিমারির কারণে গত তিন বছর ঢাকা আর্ট সামিট অনুষ্ঠিত হয়নি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় এবার এই আয়োজন করা হয়েছে।
সূচনা বক্তব্যে সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট নাদিয়া সামদানী বলেন, ‘এবারই প্রথমবারের মতো বাংলায় সামিটের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিপাদ্য হলে “বন্যা”। বহুকাল থেকে বন্যা আমাদের জন্য প্রতি পদে জীবনযাত্রার ওপর গভীর প্রভাব রেখে চলেছে। একদিকে যেমন প্লাবন ও নদীর ভাঙনে ফসল, বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে; তেমনি বন্যায় ভেসে আসা পলিমাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করছে। মানুষ দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। এই দিকগুলো নানাভাবে প্রদর্শনীতে উঠে এসেছে। পাশাপাশি নারীর আর্থিক সক্ষমতার দিকটিকে গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
জাতীয় চিত্রশালার চারতলাজুড়ে চলবে প্রদর্শনী। এখানে বিভিন্ন মাধ্যমের চিত্রকলা, ভাস্কর্য, স্থাপনা, ভিডিও, লেজার শো, পারফরম্যান্স আর্ট মিলিয়ে বিপুল বৈচিত্র্যময় শিল্পকর্মের বিপুল সমাবেশে ঘটেছে এবারের ঢাকা আর্ট সামিটে। প্রদর্শনীর পাশাপাশি প্রতিদিনই থাকবে শিল্পকলা নিয়ে আলোচনা, কর্মশালা ইত্যাদি।
সামিটে দেশের শিল্পীদের মধ্যে এস এম সুলতান, সফিউদ্দিন আহমেদ, রফিকুন নবী, হামিদুজ্জামান খান, সৈয়দ আবুল বার্ক্ আলভী, নিসার হোসেন, ফরিদা জামান, জামাল আহমেদ, ঢালী আল মামুন, লালারুখ সেলিম, কনকচাঁপা চাকমাসহ অনেকের কাজ রয়েছে। এ ছাড়া ভারতে শিল্পীদের মধ্যে বিনোদবিহারী মুখার্জি, গণেশ পাইনের কাজ রয়েছে।