সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীন সরকারের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আর জনসমক্ষে দেখা যাচ্ছে না। তাঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিশ্বস্ত ও আশীর্বাদপুষ্ট।
কিন্তু হঠাৎ তাঁদের অদৃশ্য হয়ে যাওয়ায় গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশ্ন উঠছে, জিনপিং কি শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছেন, বিশেষ করে যাঁরা সামরিক বাহিনীতে আছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে। সর্বশেষ শির পছন্দের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফু।
কয়েক সপ্তাহ ধরে তাঁকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। অবশ্য তাঁকে জনসমক্ষে দেখা না যাওয়ার বিষয়টি অস্বাভাবিক বা এবারই প্রথম ঘটল এমন কিছু নয়; যুক্তরাষ্ট্রের একজন শীর্ষ কূটনীতিক বিষয়টি সামনে আনলে ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা শুরু হয়।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে রকেট ফোর্সের দুই শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা সরিয়ে দেওয়া। সামরিক বাহিনীর এই শাখার নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র। এ ছাড়া সামরিক আদালতের একজন বিচারককেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে বলে নতুন করে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। এই কমিশনই সশস্ত্র বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
এসব কর্মকর্তাকে অপসারণের কারণ হিসেবে শুধু ‘স্বাস্থ্যজনিত’ ছাড়া দাপ্তরিক আর কোনো ব্যাখ্যাই দেওয়া হচ্ছে না। এ তথ্যঘাটতির ফলে আরও বেশি ডালপালা মেলেছে গুঞ্জন। তবে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়া তত্ত্বটি হলো, পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ), তথা সশস্ত্র বাহিনীতে শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
সামরিক বাহিনীতে সতর্কতার মাত্রা বেড়েছে। বিগত পাঁচ বছরের দুর্নীতি নিয়ে গোপনে তথ্য দিতে গত জুলাইয়ে জনগণের প্রতি আহ্বান জানায় সামরিক বাহিনী, যা সচরাচর ঘটে না। শি নিজেও নতুন করে সামরিক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন বাড়িয়ে দেন। এপ্রিল থেকে তিনি পাঁচটি সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শন করেন।
সিসিপি ও চীনের সামরিক বাহিনী নিয়ে গবেষণা করে আসছেন সিঙ্গাপুরের নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির রিসার্চ ফেলো জেমস চার। তিনি বলেন, বিশেষ করে ১৯৭০-এর দশকে চীন দেশটির অর্থনীতি উদারীকরণ শুরু করার পর থেকে সামরিক বাহিনীতে দুর্নীতি দীর্ঘদিন ধরে একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চীন প্রতিবছর এক ট্রিলিয়ন (এক লাখ কোটি) ইউয়ানের বেশি অর্থ সামরিক খাতে ব্যয় করে থাকে। এসব অর্থের কিছু অংশ ব্যয় হয় কেনাকাটায়। জাতীয় নিরাপত্তার কারণে ব্যয়ের খাতগুলো পুরোটা প্রকাশ করা হয় না। চীনের একদলীয় কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থার কারণেও স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।
জেমস চার বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে দুর্নীতি কমাতে এবং এর সুনাম কিছুটা পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়েছেন শি। তবে প্রয়োজনীয় কাঠামোগত পুনর্বিন্যাস যদি সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে দুর্নীতির মূলোৎপাটন কঠিন একটি কাজ। আমার আশঙ্কার জায়গাটা হলো, কর্তৃত্ববাদী একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা এ ধরনের সংস্কারে বিপরীত।
শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীন সরকারের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আর জনসমক্ষে দেখা যাচ্ছে না। তাঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিশ্বস্ত ও আশীর্বাদপুষ্ট।
কিন্তু হঠাৎ তাঁদের অদৃশ্য হয়ে যাওয়ায় গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশ্ন উঠছে, জিনপিং কি শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছেন, বিশেষ করে যাঁরা সামরিক বাহিনীতে আছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে। সর্বশেষ শির পছন্দের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফু।
কয়েক সপ্তাহ ধরে তাঁকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। অবশ্য তাঁকে জনসমক্ষে দেখা না যাওয়ার বিষয়টি অস্বাভাবিক বা এবারই প্রথম ঘটল এমন কিছু নয়; যুক্তরাষ্ট্রের একজন শীর্ষ কূটনীতিক বিষয়টি সামনে আনলে ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা শুরু হয়।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে রকেট ফোর্সের দুই শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা সরিয়ে দেওয়া। সামরিক বাহিনীর এই শাখার নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র। এ ছাড়া সামরিক আদালতের একজন বিচারককেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে বলে নতুন করে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। এই কমিশনই সশস্ত্র বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
এসব কর্মকর্তাকে অপসারণের কারণ হিসেবে শুধু ‘স্বাস্থ্যজনিত’ ছাড়া দাপ্তরিক আর কোনো ব্যাখ্যাই দেওয়া হচ্ছে না। এ তথ্যঘাটতির ফলে আরও বেশি ডালপালা মেলেছে গুঞ্জন। তবে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়া তত্ত্বটি হলো, পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ), তথা সশস্ত্র বাহিনীতে শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
সামরিক বাহিনীতে সতর্কতার মাত্রা বেড়েছে। বিগত পাঁচ বছরের দুর্নীতি নিয়ে গোপনে তথ্য দিতে গত জুলাইয়ে জনগণের প্রতি আহ্বান জানায় সামরিক বাহিনী, যা সচরাচর ঘটে না। শি নিজেও নতুন করে সামরিক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন বাড়িয়ে দেন। এপ্রিল থেকে তিনি পাঁচটি সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শন করেন।
সিসিপি ও চীনের সামরিক বাহিনী নিয়ে গবেষণা করে আসছেন সিঙ্গাপুরের নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির রিসার্চ ফেলো জেমস চার। তিনি বলেন, বিশেষ করে ১৯৭০-এর দশকে চীন দেশটির অর্থনীতি উদারীকরণ শুরু করার পর থেকে সামরিক বাহিনীতে দুর্নীতি দীর্ঘদিন ধরে একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চীন প্রতিবছর এক ট্রিলিয়ন (এক লাখ কোটি) ইউয়ানের বেশি অর্থ সামরিক খাতে ব্যয় করে থাকে। এসব অর্থের কিছু অংশ ব্যয় হয় কেনাকাটায়। জাতীয় নিরাপত্তার কারণে ব্যয়ের খাতগুলো পুরোটা প্রকাশ করা হয় না। চীনের একদলীয় কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থার কারণেও স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।
জেমস চার বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে দুর্নীতি কমাতে এবং এর সুনাম কিছুটা পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়েছেন শি। তবে প্রয়োজনীয় কাঠামোগত পুনর্বিন্যাস যদি সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে দুর্নীতির মূলোৎপাটন কঠিন একটি কাজ। আমার আশঙ্কার জায়গাটা হলো, কর্তৃত্ববাদী একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা এ ধরনের সংস্কারে বিপরীত।