গত ৮ ডিসেম্বর বাশার আল-আসাদের দুই যুগ শাসনামলের অবসান হয়েছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের পলায়নে দেশটিতে স্বৈরতন্ত্রের ‘কবর’ রচিত হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটির ভবিষ্যৎ ও নিজেদের নিরাপত্তা শঙ্কা নিয়েই জন্মভূমিতে ফিরছেন বাস্তুচ্যুতরা। ধোঁয়াশা কাটছে না পট-পরিবর্তনে স্থিতিশীলতা ফেরা নিয়ে। পতিত বাশারের মিত্ররা যে সহজেই হাল ছেড়ে দেবেন না, তা এক রকম নিশ্চিত। আবার ‘পশ্চিমাশক্তিও’ সিরীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করার সুযোগ হাতছাড়া করতে নাছোড়বান্দা।
টালমাটাল পরিস্থিতিতে সিরিয়ার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি বাস্তুচ্যুত হওয়া লাখ লাখ মানুষের প্রত্যাবর্তন। ২০১১ সালের গৃহযুদ্ধ শুরুর আগে সিরিয়ার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ। পরের বছরগুলোতে কয়েক লাখ মানুষের প্রাণহানী হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। চলতি বছর জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিরিয়ার অভ্যন্তরেই কমপক্ষে ৭০ লাখ ৪০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। প্রায় ৪০ লাখ ৯০ হাজার সিরিয়ান প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে, যার মধ্যে তুরস্কেই বেশি। আর ১০ লাখ ৩০ হাজার সিরিয়ান বাসিন্দা বাড়িঘর ছেড়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পালিয়েছেন। বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ শরণার্থী আশ্রয়ের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। কারণ অনেক শরণার্থীই নাকি সিরিয়ায় ফিরবে না বলে জানিয়েছেন।
ইউরোপের দেশগুলোর এমন সিদ্ধান্তকে ‘অমানবিক’ এবং ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছেন ফ্রান্সে সিরিয়ান শরণার্থী ও মানবাধিকার কর্মী বুশরা আলজুবি। তার মতে, বেশিরভাগ সিরীয়রা একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে অনিশ্চতার মধ্যে বাস করছেন তারা। কী ঘটতে যাচ্ছে তাও এখনও ধোঁয়াশা।
তুরস্কে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীরা সীমান্তে ভিড় করছেন। স্বেচ্ছায় স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে উদগ্রীব। সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই প্রায় ৬০০-৭০০ জন সিলভেগোজু থেকে বাব আল-হাওয়াতে ইদলিবের দিকে যাচ্ছেন। যদিও তুরস্কে অবস্থানরত শরণার্থীদের তুলনায় এ সংখ্যা খুবই কম বলে জানাচ্ছে তুর্কি-সিরীয় সীমান্তে অবস্থানরত সংবাদকর্মীরা। বেশ কয়েকটি কারণে নিজ দেশে ফিরতে দ্বিধাগ্রস্থ সিরিয়ানরা।
প্রথমত, নিজ ভূখ-ে প্রবেশের আগে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ সিরীয়দের কাছে ‘মুচলেকা’ নিচ্ছেন এই শর্তে যে, পুনরায় যেন তারা তুরস্কে না ফেরেন। তাই এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অন্তত দুবার ভাবতে হচ্ছে তাদের। সিরীয়রা নিশ্চিত হতে চায় যে, নিজ দেশে তাদের জীবনমান তুরস্কের তুলনায় উন্নত হবে।
দ্বিতীয়ত, শরণার্থীরা তুরস্কে বসতি স্থাপন করেছে। তাদের সন্তানরা সেখানকার স্কুলেও যায়। ব্যবহৃত সব জিনিসপত্র এক-দুটি স্যুটকেসে নিয়ে সিলভেগোজু দিয়ে আলেপ্পো বা দামেস্কের দিকে হেঁটে যাওয়া অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। বিশেষ করে পরিবারের জন্য রীতিমতো এটি ‘আরেক যুদ্ধ’।
সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, শরণার্থীরা নিশ্চিত নয় যে সিরিয়ায় কী ঘটতে যাচ্ছে। যদিও আল-আসাদের পতনে তারা ভীষণ আনন্দিত। কিন্তু এখন নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। কে বা কারা হবেন পরবর্তী শাসক এবং কীভাবে সিরিয়া শাসন করতে যাচ্ছেন তারা? এসব প্রশ্নবাণে জর্জরিত তুরস্কের শরণার্থী সিরিয়ানরা।
আল-আসাদের সরকারের পতনের পর প্রতিবেশী ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া নিয়েও শঙ্কিত শরণার্থীরা। সিরিয়ার ভূখণ্ডে অন্তত পাঁচ শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে জায়োনবাদী সেনারা। সিরিয়া-নিয়ন্ত্রি গোলান মালভূমি দখলের পর রাজধানী দামেস্কের দিকে তাদের এগিয়ে যাওয়া উৎকণ্ঠা আরও বাড়াচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে সর্বশেষ স্বৈরাচারমুক্ত দেশটির সামরিক অবকাঠামোয় ব্যাপক বোমা হামলা স্পষ্ট করেছে কীভাবে ইসরায়েলের আঞ্চলিক ভূমিকা পরিবর্তিত হয়েছে।
ডারহাম ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার অধ্যাপক রব গেইস্ট পিনফোল্ডের মতে, ‘ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছে, তাই তারা আঞ্চলিক আগ্রাসন ও দখলদারিত্ব চালাচ্ছে। যা আমরা গাজা ও লেবাননে দেখেছি।’
সিরিয়ার তিন-পঞ্চমাংশ বাস্তুচ্যুত জনসংখ্যাকে দেশে প্রত্যাবর্তন করা, নতুন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় তাদের সম্পৃক্ত করা বড় চ্যালেঞ্জ। এমনটাই মনে করেন সিরিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর সিটিজেনস ডিগনিটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টও লাবিব নাহহাস।
তার মতে, ‘যদিও আমরা আনন্দের মুহূর্তে আছি। কিন্তু যা ঘটতে যাচ্ছে তা নিয়ে বেশ চিন্তিতও। হঠাৎ করে তিন, চার বা পাঁচ মিলিয়ন শরণার্থীও প্রত্যাবর্তনের জন্য সিরিয়া দেশ হিসেবে এখনও প্রস্তুত নয়।’ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় উদ্বাস্তুদেও জড়িত করার জন্য ‘সুশীল সমাজকে অবশ্যই যুক্ত করতে হবে’।
দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের অধ্যাপক মোহাম্মদ এলমাসরির মতে, সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের উচিত দেশের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করা। সিরীয়রা এখন উচ্ছসিত। তারা উল্লাস করছে। তবে মৌলিক অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ না হলে সেই উল্লাস বিষাদে পরিণত হতে পারে।
২০১১ সালে তেল রপ্তানি করে এক-চতুর্থাংশ রাজস্ব আয় করেছিল সিরিয়া। কিন্তু উত্তর-পূর্বাঞ্চলে থাকা বেশিরভাগ তেলক্ষেত্র যুক্তরাষ্ট্র ও কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। এগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনা সিরিয়ান বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ দেশের কৃষিপণ্য রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা। সেক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশগুলোর মনোভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের ভাব-মর্জি দেখে ধারণা করা হচ্ছে যে, সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার যদি অন্তর্ভুক্তিমূলক, প্রতিনিধিত্বশীল এবং গণতান্ত্রিক হতে আগ্রহী হয়, তবেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা সংস্থাগুলো তাদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে।
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
গত ৮ ডিসেম্বর বাশার আল-আসাদের দুই যুগ শাসনামলের অবসান হয়েছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের পলায়নে দেশটিতে স্বৈরতন্ত্রের ‘কবর’ রচিত হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটির ভবিষ্যৎ ও নিজেদের নিরাপত্তা শঙ্কা নিয়েই জন্মভূমিতে ফিরছেন বাস্তুচ্যুতরা। ধোঁয়াশা কাটছে না পট-পরিবর্তনে স্থিতিশীলতা ফেরা নিয়ে। পতিত বাশারের মিত্ররা যে সহজেই হাল ছেড়ে দেবেন না, তা এক রকম নিশ্চিত। আবার ‘পশ্চিমাশক্তিও’ সিরীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করার সুযোগ হাতছাড়া করতে নাছোড়বান্দা।
টালমাটাল পরিস্থিতিতে সিরিয়ার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি বাস্তুচ্যুত হওয়া লাখ লাখ মানুষের প্রত্যাবর্তন। ২০১১ সালের গৃহযুদ্ধ শুরুর আগে সিরিয়ার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ। পরের বছরগুলোতে কয়েক লাখ মানুষের প্রাণহানী হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। চলতি বছর জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিরিয়ার অভ্যন্তরেই কমপক্ষে ৭০ লাখ ৪০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। প্রায় ৪০ লাখ ৯০ হাজার সিরিয়ান প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে, যার মধ্যে তুরস্কেই বেশি। আর ১০ লাখ ৩০ হাজার সিরিয়ান বাসিন্দা বাড়িঘর ছেড়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পালিয়েছেন। বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ শরণার্থী আশ্রয়ের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। কারণ অনেক শরণার্থীই নাকি সিরিয়ায় ফিরবে না বলে জানিয়েছেন।
ইউরোপের দেশগুলোর এমন সিদ্ধান্তকে ‘অমানবিক’ এবং ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছেন ফ্রান্সে সিরিয়ান শরণার্থী ও মানবাধিকার কর্মী বুশরা আলজুবি। তার মতে, বেশিরভাগ সিরীয়রা একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে অনিশ্চতার মধ্যে বাস করছেন তারা। কী ঘটতে যাচ্ছে তাও এখনও ধোঁয়াশা।
তুরস্কে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীরা সীমান্তে ভিড় করছেন। স্বেচ্ছায় স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে উদগ্রীব। সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই প্রায় ৬০০-৭০০ জন সিলভেগোজু থেকে বাব আল-হাওয়াতে ইদলিবের দিকে যাচ্ছেন। যদিও তুরস্কে অবস্থানরত শরণার্থীদের তুলনায় এ সংখ্যা খুবই কম বলে জানাচ্ছে তুর্কি-সিরীয় সীমান্তে অবস্থানরত সংবাদকর্মীরা। বেশ কয়েকটি কারণে নিজ দেশে ফিরতে দ্বিধাগ্রস্থ সিরিয়ানরা।
প্রথমত, নিজ ভূখ-ে প্রবেশের আগে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ সিরীয়দের কাছে ‘মুচলেকা’ নিচ্ছেন এই শর্তে যে, পুনরায় যেন তারা তুরস্কে না ফেরেন। তাই এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অন্তত দুবার ভাবতে হচ্ছে তাদের। সিরীয়রা নিশ্চিত হতে চায় যে, নিজ দেশে তাদের জীবনমান তুরস্কের তুলনায় উন্নত হবে।
দ্বিতীয়ত, শরণার্থীরা তুরস্কে বসতি স্থাপন করেছে। তাদের সন্তানরা সেখানকার স্কুলেও যায়। ব্যবহৃত সব জিনিসপত্র এক-দুটি স্যুটকেসে নিয়ে সিলভেগোজু দিয়ে আলেপ্পো বা দামেস্কের দিকে হেঁটে যাওয়া অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। বিশেষ করে পরিবারের জন্য রীতিমতো এটি ‘আরেক যুদ্ধ’।
সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, শরণার্থীরা নিশ্চিত নয় যে সিরিয়ায় কী ঘটতে যাচ্ছে। যদিও আল-আসাদের পতনে তারা ভীষণ আনন্দিত। কিন্তু এখন নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। কে বা কারা হবেন পরবর্তী শাসক এবং কীভাবে সিরিয়া শাসন করতে যাচ্ছেন তারা? এসব প্রশ্নবাণে জর্জরিত তুরস্কের শরণার্থী সিরিয়ানরা।
আল-আসাদের সরকারের পতনের পর প্রতিবেশী ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া নিয়েও শঙ্কিত শরণার্থীরা। সিরিয়ার ভূখণ্ডে অন্তত পাঁচ শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে জায়োনবাদী সেনারা। সিরিয়া-নিয়ন্ত্রি গোলান মালভূমি দখলের পর রাজধানী দামেস্কের দিকে তাদের এগিয়ে যাওয়া উৎকণ্ঠা আরও বাড়াচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে সর্বশেষ স্বৈরাচারমুক্ত দেশটির সামরিক অবকাঠামোয় ব্যাপক বোমা হামলা স্পষ্ট করেছে কীভাবে ইসরায়েলের আঞ্চলিক ভূমিকা পরিবর্তিত হয়েছে।
ডারহাম ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার অধ্যাপক রব গেইস্ট পিনফোল্ডের মতে, ‘ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছে, তাই তারা আঞ্চলিক আগ্রাসন ও দখলদারিত্ব চালাচ্ছে। যা আমরা গাজা ও লেবাননে দেখেছি।’
সিরিয়ার তিন-পঞ্চমাংশ বাস্তুচ্যুত জনসংখ্যাকে দেশে প্রত্যাবর্তন করা, নতুন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় তাদের সম্পৃক্ত করা বড় চ্যালেঞ্জ। এমনটাই মনে করেন সিরিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর সিটিজেনস ডিগনিটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টও লাবিব নাহহাস।
তার মতে, ‘যদিও আমরা আনন্দের মুহূর্তে আছি। কিন্তু যা ঘটতে যাচ্ছে তা নিয়ে বেশ চিন্তিতও। হঠাৎ করে তিন, চার বা পাঁচ মিলিয়ন শরণার্থীও প্রত্যাবর্তনের জন্য সিরিয়া দেশ হিসেবে এখনও প্রস্তুত নয়।’ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় উদ্বাস্তুদেও জড়িত করার জন্য ‘সুশীল সমাজকে অবশ্যই যুক্ত করতে হবে’।
দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের অধ্যাপক মোহাম্মদ এলমাসরির মতে, সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের উচিত দেশের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করা। সিরীয়রা এখন উচ্ছসিত। তারা উল্লাস করছে। তবে মৌলিক অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ না হলে সেই উল্লাস বিষাদে পরিণত হতে পারে।
২০১১ সালে তেল রপ্তানি করে এক-চতুর্থাংশ রাজস্ব আয় করেছিল সিরিয়া। কিন্তু উত্তর-পূর্বাঞ্চলে থাকা বেশিরভাগ তেলক্ষেত্র যুক্তরাষ্ট্র ও কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। এগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনা সিরিয়ান বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ দেশের কৃষিপণ্য রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা। সেক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশগুলোর মনোভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের ভাব-মর্জি দেখে ধারণা করা হচ্ছে যে, সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার যদি অন্তর্ভুক্তিমূলক, প্রতিনিধিত্বশীল এবং গণতান্ত্রিক হতে আগ্রহী হয়, তবেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা সংস্থাগুলো তাদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে।