বাইটড্যান্সের শেয়ার বিক্রি না হলে ১৯ জানুয়ারির পর বন্ধ হওয়ার শঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের কার্যক্রম বন্ধ করার আইনি প্রক্রিয়া আরও একধাপ এগিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্সের করা আপিল খারিজ করে দিয়েছে, যা কার্যত টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পথ সুগম করেছে।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের নয় বিচারকের একটি প্যানেল সর্বসম্মতভাবে রায় দিয়ে বলে, ডিজিটাল যুগে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ অ্যাপ কোম্পানিগুলোর সাধারণ চর্চা হলেও টিকটক যে মাত্রায় তথ্য সংগ্রহ করে এবং এটি বিদেশি নিয়ন্ত্রণের ঝুঁকির মুখে, তা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক।
২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন "প্রটেকটিং আমেরিকানস ফ্রম ফরেন অ্যাডভারসারি কন্ট্রোলড অ্যাপলিকেশন অ্যাক্ট" নামে একটি আইনে সই করেছিলেন। ওই আইনে বলা হয়, চীনা মূল কোম্পানি বাইটড্যান্স ছয় মাসের মধ্যে টিকটকের শেয়ার কোনো আমেরিকান কোম্পানির কাছে বিক্রি না করলে যুক্তরাষ্ট্রে এই অ্যাপ নিষিদ্ধ হবে।
বাইটড্যান্স এই আইনকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী লঙ্ঘন দাবি করে আদালতে আপিল করেছিল। তবে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ফেডারেল আপিল আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। এবার সুপ্রিম কোর্ট একই পথে হেঁটেছে।
আইন অনুযায়ী, ১৯ জানুয়ারির মধ্যে বাইটড্যান্স টিকটকের মালিকানা হস্তান্তর না করলে অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সুপ্রিম কোর্টকে নিষেধাজ্ঞার তারিখ পেছানোর অনুরোধ করেছিলেন।
ট্রাম্প বলেছেন, “এই বিষয়টি সমাধানে আমার সময় পাওয়া উচিত। আমি খুব শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেব।”
প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প টিকটক নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি, মাইক্রোসফটের মাধ্যমে টিকটকের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসার বিষয়েও আলোচনা হয়েছিল। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি এই বিষয়ে আরও মিশ্র অবস্থান নিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তাদের অনেকে ইতোমধ্যে "রেডনোট" নামের আরেকটি চীনা অ্যাপের দিকে ঝুঁকেছেন। অ্যাপটির বৈশিষ্ট্য টিকটক ও ইনস্টাগ্রামের মিশ্রণের মতো এবং এটি আগে থেকেই চীন, তাইওয়ান এবং ম্যান্ডারিন ভাষাভাষী তরুণদের কাছে জনপ্রিয়।
অ্যাপলের মার্কিন অ্যাপ স্টোরে রেডনোট বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া অ্যাপগুলোর মধ্যে অন্যতম। ব্যবহারকারীরা নিজেদের "টিকটক রিফিউজি" বলে পরিচয় দিচ্ছেন।
টিকটক নিষিদ্ধ করার বিষয়টি বাস্তবে কীভাবে কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধ করার প্রথম নজির হতে পারে।
অ্যাপটির সংযোগ বন্ধ করতে পারে কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে নতুন ব্যবহারকারীরা টিকটক ডাউনলোড করতে পারবেন না, আর পুরোনো ব্যবহারকারীদের অ্যাপটি কার্যকর থাকবে না।
তবে এ পরিস্থিতি এড়াতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা এখনও রয়েছে। বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছে, তাদের মেয়াদ শেষে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের ইচ্ছা নেই। অন্যদিকে ট্রাম্প জানিয়েছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনায় টিকটকের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, টিকটক নিষিদ্ধ হলে এর ব্যবহারকারীদের স্বাধীনতার ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি নতুন প্রশাসনের নীতিগত অবস্থানও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
বাইটড্যান্সের শেয়ার বিক্রি না হলে ১৯ জানুয়ারির পর বন্ধ হওয়ার শঙ্কা
শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের কার্যক্রম বন্ধ করার আইনি প্রক্রিয়া আরও একধাপ এগিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্সের করা আপিল খারিজ করে দিয়েছে, যা কার্যত টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পথ সুগম করেছে।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের নয় বিচারকের একটি প্যানেল সর্বসম্মতভাবে রায় দিয়ে বলে, ডিজিটাল যুগে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ অ্যাপ কোম্পানিগুলোর সাধারণ চর্চা হলেও টিকটক যে মাত্রায় তথ্য সংগ্রহ করে এবং এটি বিদেশি নিয়ন্ত্রণের ঝুঁকির মুখে, তা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক।
২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন "প্রটেকটিং আমেরিকানস ফ্রম ফরেন অ্যাডভারসারি কন্ট্রোলড অ্যাপলিকেশন অ্যাক্ট" নামে একটি আইনে সই করেছিলেন। ওই আইনে বলা হয়, চীনা মূল কোম্পানি বাইটড্যান্স ছয় মাসের মধ্যে টিকটকের শেয়ার কোনো আমেরিকান কোম্পানির কাছে বিক্রি না করলে যুক্তরাষ্ট্রে এই অ্যাপ নিষিদ্ধ হবে।
বাইটড্যান্স এই আইনকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী লঙ্ঘন দাবি করে আদালতে আপিল করেছিল। তবে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ফেডারেল আপিল আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। এবার সুপ্রিম কোর্ট একই পথে হেঁটেছে।
আইন অনুযায়ী, ১৯ জানুয়ারির মধ্যে বাইটড্যান্স টিকটকের মালিকানা হস্তান্তর না করলে অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সুপ্রিম কোর্টকে নিষেধাজ্ঞার তারিখ পেছানোর অনুরোধ করেছিলেন।
ট্রাম্প বলেছেন, “এই বিষয়টি সমাধানে আমার সময় পাওয়া উচিত। আমি খুব শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেব।”
প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প টিকটক নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি, মাইক্রোসফটের মাধ্যমে টিকটকের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসার বিষয়েও আলোচনা হয়েছিল। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি এই বিষয়ে আরও মিশ্র অবস্থান নিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তাদের অনেকে ইতোমধ্যে "রেডনোট" নামের আরেকটি চীনা অ্যাপের দিকে ঝুঁকেছেন। অ্যাপটির বৈশিষ্ট্য টিকটক ও ইনস্টাগ্রামের মিশ্রণের মতো এবং এটি আগে থেকেই চীন, তাইওয়ান এবং ম্যান্ডারিন ভাষাভাষী তরুণদের কাছে জনপ্রিয়।
অ্যাপলের মার্কিন অ্যাপ স্টোরে রেডনোট বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া অ্যাপগুলোর মধ্যে অন্যতম। ব্যবহারকারীরা নিজেদের "টিকটক রিফিউজি" বলে পরিচয় দিচ্ছেন।
টিকটক নিষিদ্ধ করার বিষয়টি বাস্তবে কীভাবে কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধ করার প্রথম নজির হতে পারে।
অ্যাপটির সংযোগ বন্ধ করতে পারে কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে নতুন ব্যবহারকারীরা টিকটক ডাউনলোড করতে পারবেন না, আর পুরোনো ব্যবহারকারীদের অ্যাপটি কার্যকর থাকবে না।
তবে এ পরিস্থিতি এড়াতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা এখনও রয়েছে। বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছে, তাদের মেয়াদ শেষে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের ইচ্ছা নেই। অন্যদিকে ট্রাম্প জানিয়েছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনায় টিকটকের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, টিকটক নিষিদ্ধ হলে এর ব্যবহারকারীদের স্বাধীনতার ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি নতুন প্রশাসনের নীতিগত অবস্থানও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।