তাদেরকে অবৈধ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীও বলা যাবেনা
ভারতের আসাম রাজ্যের মুসলমানের একটি বড় অংশকে রাজ্যের স্থায়ী মূলনিবাসী হিসেবে মেনে নিতেযাচ্ছে আসাম সরকার। ফলে আসামে বসবাসকারী প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মুসলমান মূল নিবাসীর মর্যাদা পাচ্ছে।
ভারতের আসাম রাজ্যের মোট জনসংখ্যা তিন কোটিরও কিছু বেশি, এর মধ্যে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখই মুসলমান। আসামে বসবাসকারী এই মুসলমানরা কি ওই অঞ্চলের বাসিন্দা, না বাইরে থেকে এসে আসামের বিভিন্ন স্থানে বসতি স্থাপন করেছে অর্থাৎ অসমিয়া এবং খিলিঞ্জিয়া কিংবা মূলনিবাসী মুসলমান কারা রাজ্যে এই বিতর্ক বহুদিনের।২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ও পরে আসামে মুসলমানদের নিবাস নিয়ে এই বিতর্ক আরও জোরদার হয়।
অমীমাংসিত এই বিষয়টি নিয়ে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা আবেগের ভিত্তিতে অসমিয়া চিহ্নিতকরণে কোনও সমস্যা নেই বলে জানান। তবে অসম চুক্তির ৬ নং ধারা রূপায়ণে আইনি দৃষ্টিভঙ্গিতে অসমিয়ার সংজ্ঞা নির্ধারণে কিছুটা জটিলতা আছে বলে তার মত। তবে তার সরকার এই কাজটি করবে বলে জানান তিনি।
আসামে মুসলমানদের নিবাসের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকার গঠিত এক প্যানেলের সুপারিশ ও মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির মধ্য দিয়ে বহুদিনের এই বিতর্কের অবসান হতে চলেছে বলে অনেকের ধারণা।
দুদিন আগে (২২ এপ্রিল) আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছে ওই প্যানেল কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয় । সেখানে তারা আসামের মুসলমানদের স্বতন্ত্র সত্তা ও আদিনিবাসী সম্প্রদায় হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান এবং তাদের জাতীয় তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে একটি আদমশুমারি চালু করার সুপারিশ করেছে।
রাজ্য সরকারের গঠিত সাতটি সাবকমিটি নিয়ে গঠিত ওই প্যানেল আসামের মুসলমানদের তালিকাভুক্ত করা এবং প্রত্যেককে পরিচয়পত্র দেওয়ার জন্য একটি পৃথক অধিদপ্তর বা কর্তৃপক্ষ গঠন করারও সুপারিশ করেছে। তা ছাড়া, আসামের বাংলাভাষী মুসলমানদের যেন আর কখনও ‘অবৈধ অভিবাসী’ বা ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করণ না করা হয়। ওই সুপারিশমালায় আসামের মুসলমানদের মধ্যে পাঁচ গোষ্ঠী সৈয়দ, গোরিয়া, মোরিয়া, দেশি ও জুলহাদের মূল নিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথাও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।
হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা এদিন বলেছেন, অসমিয়া কিংবা খিলঞ্জিয়া মুসলমান কারা সেই সংজ্ঞাটা পাওয়া গিয়েছে। এবং এই সংজ্ঞা মেনে নিচ্ছে সরকার। এ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘কোন্ গোষ্ঠীগুলোকে অসমিয়া মুসলমান হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে সেটা যেহেতু স্পষ্ট, তাই ‘টার্গেট গ্রুপ' বেছে নিতে অসুবিধে হবে না।’
‘পরবর্তী ধাপে কিছু আইনি, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কমিটিগুলোর সুপারিশগুলো দেখে মনে হয়েছে এসব রূপায়িত করা মোটেই অসম্ভব নয়। স্বল্পমেয়াদি, মাঝারি এবং দীর্ঘমেয়াদি, এই তিনটে ধাপে ভাগ করে সুপারিশগুলো কার্যকর করা হবে। কিছু সুপারিশ দ্রুত রূপায়ণ করা যেতে পারে | কী ধরনের ব্যবস্থা নেব, সেটা স্থির করতে ফের আমরা আলোচনায় বসব,’ বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে, সাংস্কৃতিক পরিচয় সংক্রান্ত সাব-কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াসবির হুসেন বলেছেন, সৈয়দ, গরিয়া, মরিয়া, দেশি এবং জলাহ, এই পাঁচটি গোষ্ঠী অসমের খিলঞ্জিয়া মুসলমান। তারা চান, অসমিয়া মুসলমানদের রাজ্যের খিলঞ্জিয়া সম্প্রদায় হিসেবে ঘোষণা করা হোক। ওই পাঁচটি গোষ্ঠীর উল্লেখ করা হোক সেই ঘোষণায়।
আইনজীবী নেকিবুর জামান বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী অসমিয়া মুসলমানদের জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন তার একটা সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। নেকিবুর, ওয়াসবিররা বলেছেন, উল্লিখিত পাঁচটি গোষ্ঠীর মানুষ কারা সেটা চিহ্নিত করার জন্য আদমসশুমারি করা উচিত। তাহলেই তথ্যের ভিত্তিতে সৈয়দ, গরিয়া, মরিয়া, দেশি, জলাহ জনগোষ্ঠীর মানুষরা নিজেদের খিলঞ্জিয়া মুসলমান বলে পরিচয় দিতে পারবে
তাদেরকে অবৈধ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীও বলা যাবেনা
সোমবার, ২৫ এপ্রিল ২০২২
ভারতের আসাম রাজ্যের মুসলমানের একটি বড় অংশকে রাজ্যের স্থায়ী মূলনিবাসী হিসেবে মেনে নিতেযাচ্ছে আসাম সরকার। ফলে আসামে বসবাসকারী প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মুসলমান মূল নিবাসীর মর্যাদা পাচ্ছে।
ভারতের আসাম রাজ্যের মোট জনসংখ্যা তিন কোটিরও কিছু বেশি, এর মধ্যে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখই মুসলমান। আসামে বসবাসকারী এই মুসলমানরা কি ওই অঞ্চলের বাসিন্দা, না বাইরে থেকে এসে আসামের বিভিন্ন স্থানে বসতি স্থাপন করেছে অর্থাৎ অসমিয়া এবং খিলিঞ্জিয়া কিংবা মূলনিবাসী মুসলমান কারা রাজ্যে এই বিতর্ক বহুদিনের।২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ও পরে আসামে মুসলমানদের নিবাস নিয়ে এই বিতর্ক আরও জোরদার হয়।
অমীমাংসিত এই বিষয়টি নিয়ে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা আবেগের ভিত্তিতে অসমিয়া চিহ্নিতকরণে কোনও সমস্যা নেই বলে জানান। তবে অসম চুক্তির ৬ নং ধারা রূপায়ণে আইনি দৃষ্টিভঙ্গিতে অসমিয়ার সংজ্ঞা নির্ধারণে কিছুটা জটিলতা আছে বলে তার মত। তবে তার সরকার এই কাজটি করবে বলে জানান তিনি।
আসামে মুসলমানদের নিবাসের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকার গঠিত এক প্যানেলের সুপারিশ ও মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির মধ্য দিয়ে বহুদিনের এই বিতর্কের অবসান হতে চলেছে বলে অনেকের ধারণা।
দুদিন আগে (২২ এপ্রিল) আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছে ওই প্যানেল কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয় । সেখানে তারা আসামের মুসলমানদের স্বতন্ত্র সত্তা ও আদিনিবাসী সম্প্রদায় হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান এবং তাদের জাতীয় তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে একটি আদমশুমারি চালু করার সুপারিশ করেছে।
রাজ্য সরকারের গঠিত সাতটি সাবকমিটি নিয়ে গঠিত ওই প্যানেল আসামের মুসলমানদের তালিকাভুক্ত করা এবং প্রত্যেককে পরিচয়পত্র দেওয়ার জন্য একটি পৃথক অধিদপ্তর বা কর্তৃপক্ষ গঠন করারও সুপারিশ করেছে। তা ছাড়া, আসামের বাংলাভাষী মুসলমানদের যেন আর কখনও ‘অবৈধ অভিবাসী’ বা ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করণ না করা হয়। ওই সুপারিশমালায় আসামের মুসলমানদের মধ্যে পাঁচ গোষ্ঠী সৈয়দ, গোরিয়া, মোরিয়া, দেশি ও জুলহাদের মূল নিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথাও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।
হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা এদিন বলেছেন, অসমিয়া কিংবা খিলঞ্জিয়া মুসলমান কারা সেই সংজ্ঞাটা পাওয়া গিয়েছে। এবং এই সংজ্ঞা মেনে নিচ্ছে সরকার। এ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘কোন্ গোষ্ঠীগুলোকে অসমিয়া মুসলমান হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে সেটা যেহেতু স্পষ্ট, তাই ‘টার্গেট গ্রুপ' বেছে নিতে অসুবিধে হবে না।’
‘পরবর্তী ধাপে কিছু আইনি, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কমিটিগুলোর সুপারিশগুলো দেখে মনে হয়েছে এসব রূপায়িত করা মোটেই অসম্ভব নয়। স্বল্পমেয়াদি, মাঝারি এবং দীর্ঘমেয়াদি, এই তিনটে ধাপে ভাগ করে সুপারিশগুলো কার্যকর করা হবে। কিছু সুপারিশ দ্রুত রূপায়ণ করা যেতে পারে | কী ধরনের ব্যবস্থা নেব, সেটা স্থির করতে ফের আমরা আলোচনায় বসব,’ বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে, সাংস্কৃতিক পরিচয় সংক্রান্ত সাব-কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াসবির হুসেন বলেছেন, সৈয়দ, গরিয়া, মরিয়া, দেশি এবং জলাহ, এই পাঁচটি গোষ্ঠী অসমের খিলঞ্জিয়া মুসলমান। তারা চান, অসমিয়া মুসলমানদের রাজ্যের খিলঞ্জিয়া সম্প্রদায় হিসেবে ঘোষণা করা হোক। ওই পাঁচটি গোষ্ঠীর উল্লেখ করা হোক সেই ঘোষণায়।
আইনজীবী নেকিবুর জামান বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী অসমিয়া মুসলমানদের জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন তার একটা সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। নেকিবুর, ওয়াসবিররা বলেছেন, উল্লিখিত পাঁচটি গোষ্ঠীর মানুষ কারা সেটা চিহ্নিত করার জন্য আদমসশুমারি করা উচিত। তাহলেই তথ্যের ভিত্তিতে সৈয়দ, গরিয়া, মরিয়া, দেশি, জলাহ জনগোষ্ঠীর মানুষরা নিজেদের খিলঞ্জিয়া মুসলমান বলে পরিচয় দিতে পারবে