alt

আন্তর্জাতিক

জার্মানির জটিল সরকারি প্রচারমাধ্যম ব্যবস্থা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট ২০২২

জার্মানিতে ২১টি সরকারি টিভি চ্যানেল ও ৮৩টি রেডিও স্টেশন আছে৷ এগুলো মূলত নাগরিকদের টাকায় চলে৷ জার্মানির প্রতিটি পরিবার প্রচারমাধ্যম ফি হিসেবে মাসে ১৮.৩৬ ইউরো (১,৮০০ টাকা) দিতে বাধ্য৷ এ থেকে বছরে আয় হয় প্রায় ৭৭ হাজার কোটি টাকা৷

প্রচলিত ভাষায় ‘সরকারি’ বলা হলেও এগুলি ‘পাবলিক ব্রডকাস্টার’ হিসেবে পরিচিত৷ অর্থাৎ ক্ষমতাসীন সরকার এই সব নেটওয়ার্কের কাজকর্মের উপর সরাসরি প্রভাব বিস্তার করতে পারে না৷

ডয়চে ভেলেও সরকারি প্রচারমাধ্যম৷ তবে এর বাজেট সরাসরি সংসদের বাজেট থেকে আসে, নাগরিকদের দেয়া প্রচারমাধ্যম ফি থেকে নয়৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষের পর ব্রিটিশ, ফরাসি ও মার্কিনিরা তাদের দখলকৃত এলাকায় ছয়টি প্রচারমাধ্যম চালু করেছিল৷ এগুলো হলো ব্রিটিশদের দখলে থাকা নর্থ-রাইন ওয়েস্টফালিয়ায় এনডাব্লিউডিআর, দক্ষিণ-পশ্চিমে ফরাসিদের এলাকায় এসডাব্লিউএফ এবং মার্কিনিদের চারটি স্টেশন- বাভারিয়ায় বিআর, দক্ষিণ জার্মানিতে এসডিআর, হেসেতে এইচআর ও ব্রেমেনে আরবি৷

১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ এর মধ্যে এই ছয়টি প্রচারমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ ক্রমান্বয়ে জার্মানদের হাতে তুলে দেয়া হয়৷ ১৯৫০ সালের জুনে এই ছয় প্রচারমাধ্যম মিলে একটি সংগঠন গড়ে তোলে, যা ১৯৫৪ সালে সংক্ষেপে এআরডি নামে পরিচিত হয়ে ওঠে৷

এসব প্রচারমাধ্যম দিয়ে পশ্চিমা শক্তিরা জার্মানদের পুনরায় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে শিক্ষিত করে তুলতে চান৷ তারা চান, প্রচারমাধ্যমগুলো যেন জার্মান সরকার থেকে নিজেদের দূরে রাখে৷ সে কারণে এআরডিতে জার্মান সরকারের সমালোচনা হতো৷ বিষয়টি পছন্দ করেননি জার্মানির প্রথম চ্যান্সেলর কনরাড আডেনাউয়ার৷ ১৯৫০ সালে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ব্রিটিশদের কারণে এআরডির উপর বিরোধী দলের প্রভাব দেখা যাচ্ছে৷

১৯৫২ সালে এআরডি টিভি চ্যানেল (যেটি এখন ‘দ্যা ফার্স্ট’ বা প্রথম চ্যানেল নামে পরিচিত) আত্মপ্রকাশ করে৷ ছয়টি চ্যানেলের তৈরি অনুষ্ঠান সেখানে প্রচারিত হত৷ আর প্রতি ছয় মাস পরপর ঐ ছয় চ্যানেল এআরডির প্রধানের দায়িত্ব নিত৷

১৯৫৯ সালে আডেনাউয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা দিয়ে একটি দ্বিতীয় সরকারি প্রচারমাধ্যম চালুর উদ্যোগ নেন৷ তার এই উদ্যোগ অসাংবিধানিক বলে মনে করা হলেও ১৯৬১ সালে জেডডিএফ নামে দ্বিতীয় চ্যানেলের যাত্রা শুরু হয়৷

১৯৫৫ সালে এআরডির অংশ এনডাব্লিউডিআর ভেঙে এনডিআর ও ডাব্লিউডিআর নামে দুটি প্রচারমাধ্যম তৈরি হয়৷ ১৯৫৯ সালে এআরডিতে যুক্ত হয় জার্মান রাজ্য জারল্যান্ডের প্রচারমাধ্যম এসআর৷ আর ডয়চে ভেলে ও রেডিও স্টেশন ডয়েচলান্ডফুঙ্ক যুক্ত হয় ১৯৬২ সালে৷

১৯৯৮ সালে দক্ষিণ জার্মানির দুটি প্রচারমাধ্যম এক হয়ে এসডাব্লিউআর গঠন করে৷ ২০০৩ সালে বার্লিন ও ব্রান্ডেনবুর্গের দুটি প্রচারমাধ্যম মিলে আরবিবি গঠিত হয়৷

এআরডির অংশ কয়েকটি চ্যানেল আবার নিজেদের অধীনে কিছু চ্যানেল চালু করে৷ যেমন এনডিআরের নিউজ চ্যানেল ছাড়াও চারটি রেডিও স্টেশন আছে৷ এই চার স্টেশনের একটিতে শুধু পপ, একটিতে ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক বাজানো হয়৷ আর বাকি দুটির একটিতে তরুণ শ্রোতাদের জন্য, অন্যটিতে বিকল্প শ্রোতাদের অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়৷

১৯৯০ সালে দুই জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের কারণে ১৯৯১ ও ১৯৯২ সালে ওআরবি ও এমআর নামে আরও দুটি প্রচারমাধ্যম যাত্রা শুরু করে৷

২০২০ সালে মাইনৎস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে দেখা গেছে জার্মানির প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের সরকারি প্রচারমাধ্যমের উপর বিশ্বাস আছে৷ গত পাঁচ বছরে সংখ্যাটি ৬৫ থেকে ৭২ শতাংশের মধ্যে ছিল৷ - ডয়েচে ভেলে

ছবি

হামলার সময় ইসরায়েলকে রক্ষায় সহযোগিতা করেছে সৌদি!

ছবি

পশ্চিমবঙ্গের ৭ জায়গায় তাপমাত্রা ছাড়াল ৪০ ডিগ্রি

ছবি

ইরানে ‘শিগগিরই’ প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল

ছবি

ইরানে সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করল ইসরায়েলি বিমান বাহিনী

ইসরায়েলকে শান্ত থাকার আহ্বান করেছে পশ্চিমা মিত্রদেশগুলোর

ছবি

পর্নো তারকাকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় ট্রাম্পের বিচার শুরু

ছবি

অস্ট্রেলিয়ায় শপিংমলে হামলার লক্ষ্যই ছিল নারীরা: পুলিশ

ছবি

হামলার কারণ জাতিসংঘকে জানালেন ইরানি দূত

ছবি

ইরান-ইয়েমেনের ৮৬ ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি

৬.৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল পাপুয়া নিউগিনি

ছবি

হামলার আগে সতর্ক করেছিল ইরান, অস্বীকার যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি

ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসে ১৫ জনের মৃত্যু

ছবি

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিয়ে সর্বশেষ যা জানা যাচ্ছে

ছবি

রাতভর বন্ধ থাকা পর আকাশসীমা খুলে দিয়েছে ইসরায়েল ও জর্ডান

ছবি

ইসরায়েলে ইরানের হামলা, বাইডেনের সঙ্গে নেতানিয়াহুর ফোনালাপ

ছবি

অস্ট্রেলিয়ার শপিং মলে হামলাকারী শনাক্ত

ছবি

ইসরায়েলে হামলা ইরানের

ছবি

উত্তেজনার মধ্যে হরমুজ প্রণালিতে ইসরায়েলি মালবাহী জাহাজ জব্দ করল ইরান

ছবি

ভারতের আসন্ন নির্বাচনে ক্ষমতায় আবার মোদী: জরিপ

ছবি

অস্ট্রেলিয়ায় শপিংমলে হামলা, নিহত ৬

রমনা বটমূলে পুলিশ কমিশনারের ব্রিফিং, পয়লা বৈশাখে হামলার আশঙ্কা নেই

ছবি

ইরানকে বাইডেনের একশব্দের বার্তা, ইসরায়েলকে রক্ষায় ‘সবকিছু’ করবেন

ছবি

ইসরায়েলে ইরানের হামলার হুমকি বাস্তব: যুক্তরাষ্ট্র

গৃহযুদ্ধে মায়ানমারের অর্ধেক মানুষই দারিদ্র্যপীড়িত: জাতিসংঘ

মায়ানমারের সীমান্ত শহরের বাসিন্দারা থাইল্যান্ডে পালাচ্ছে

পুতিন সমালোচক নাভালনির স্মৃতিকথা প্রকাশিত হবে অক্টোবরে

ছবি

পেঁয়াজের দাম নিয়ে মন্তব্য করে ক্ষমতা হারালেন প্রেসিডেন্ট!

ছবি

আমরা ভালো নেই, বললো গাজার শিশুরা

ছবি

নোবেলবিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী পিটার হিগস মারা গেছেন

ছবি

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার ইঙ্গিত অস্ট্রেলিয়ার

ছবি

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নিস্ক্রিয়তা মানবাধিকার লঙ্ঘন: ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত

ছবি

জিবুতি উপকূলে নৌকাডুবি, নিহত ৩৮

যুক্তরাজ্যে সন্তানের সামনে স্ত্রীকে খুন করা সেই বাংলাদেশি হা‌বিবুর রহমান মাসুম গ্রেপ্তার

ছবি

পিটার হাসের গা ঢাকা দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয় বলছে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

ইসরায়েলের কাছে যুদ্ধ সরঞ্জাম বিক্রি, জার্মানির বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলা

ছবি

সৌদি আরব ও আশপাশের দেশে কবে ঈদ, কী বলছেন জ্যোতির্বিদরা

tab

আন্তর্জাতিক

জার্মানির জটিল সরকারি প্রচারমাধ্যম ব্যবস্থা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট ২০২২

জার্মানিতে ২১টি সরকারি টিভি চ্যানেল ও ৮৩টি রেডিও স্টেশন আছে৷ এগুলো মূলত নাগরিকদের টাকায় চলে৷ জার্মানির প্রতিটি পরিবার প্রচারমাধ্যম ফি হিসেবে মাসে ১৮.৩৬ ইউরো (১,৮০০ টাকা) দিতে বাধ্য৷ এ থেকে বছরে আয় হয় প্রায় ৭৭ হাজার কোটি টাকা৷

প্রচলিত ভাষায় ‘সরকারি’ বলা হলেও এগুলি ‘পাবলিক ব্রডকাস্টার’ হিসেবে পরিচিত৷ অর্থাৎ ক্ষমতাসীন সরকার এই সব নেটওয়ার্কের কাজকর্মের উপর সরাসরি প্রভাব বিস্তার করতে পারে না৷

ডয়চে ভেলেও সরকারি প্রচারমাধ্যম৷ তবে এর বাজেট সরাসরি সংসদের বাজেট থেকে আসে, নাগরিকদের দেয়া প্রচারমাধ্যম ফি থেকে নয়৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষের পর ব্রিটিশ, ফরাসি ও মার্কিনিরা তাদের দখলকৃত এলাকায় ছয়টি প্রচারমাধ্যম চালু করেছিল৷ এগুলো হলো ব্রিটিশদের দখলে থাকা নর্থ-রাইন ওয়েস্টফালিয়ায় এনডাব্লিউডিআর, দক্ষিণ-পশ্চিমে ফরাসিদের এলাকায় এসডাব্লিউএফ এবং মার্কিনিদের চারটি স্টেশন- বাভারিয়ায় বিআর, দক্ষিণ জার্মানিতে এসডিআর, হেসেতে এইচআর ও ব্রেমেনে আরবি৷

১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ এর মধ্যে এই ছয়টি প্রচারমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ ক্রমান্বয়ে জার্মানদের হাতে তুলে দেয়া হয়৷ ১৯৫০ সালের জুনে এই ছয় প্রচারমাধ্যম মিলে একটি সংগঠন গড়ে তোলে, যা ১৯৫৪ সালে সংক্ষেপে এআরডি নামে পরিচিত হয়ে ওঠে৷

এসব প্রচারমাধ্যম দিয়ে পশ্চিমা শক্তিরা জার্মানদের পুনরায় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে শিক্ষিত করে তুলতে চান৷ তারা চান, প্রচারমাধ্যমগুলো যেন জার্মান সরকার থেকে নিজেদের দূরে রাখে৷ সে কারণে এআরডিতে জার্মান সরকারের সমালোচনা হতো৷ বিষয়টি পছন্দ করেননি জার্মানির প্রথম চ্যান্সেলর কনরাড আডেনাউয়ার৷ ১৯৫০ সালে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ব্রিটিশদের কারণে এআরডির উপর বিরোধী দলের প্রভাব দেখা যাচ্ছে৷

১৯৫২ সালে এআরডি টিভি চ্যানেল (যেটি এখন ‘দ্যা ফার্স্ট’ বা প্রথম চ্যানেল নামে পরিচিত) আত্মপ্রকাশ করে৷ ছয়টি চ্যানেলের তৈরি অনুষ্ঠান সেখানে প্রচারিত হত৷ আর প্রতি ছয় মাস পরপর ঐ ছয় চ্যানেল এআরডির প্রধানের দায়িত্ব নিত৷

১৯৫৯ সালে আডেনাউয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা দিয়ে একটি দ্বিতীয় সরকারি প্রচারমাধ্যম চালুর উদ্যোগ নেন৷ তার এই উদ্যোগ অসাংবিধানিক বলে মনে করা হলেও ১৯৬১ সালে জেডডিএফ নামে দ্বিতীয় চ্যানেলের যাত্রা শুরু হয়৷

১৯৫৫ সালে এআরডির অংশ এনডাব্লিউডিআর ভেঙে এনডিআর ও ডাব্লিউডিআর নামে দুটি প্রচারমাধ্যম তৈরি হয়৷ ১৯৫৯ সালে এআরডিতে যুক্ত হয় জার্মান রাজ্য জারল্যান্ডের প্রচারমাধ্যম এসআর৷ আর ডয়চে ভেলে ও রেডিও স্টেশন ডয়েচলান্ডফুঙ্ক যুক্ত হয় ১৯৬২ সালে৷

১৯৯৮ সালে দক্ষিণ জার্মানির দুটি প্রচারমাধ্যম এক হয়ে এসডাব্লিউআর গঠন করে৷ ২০০৩ সালে বার্লিন ও ব্রান্ডেনবুর্গের দুটি প্রচারমাধ্যম মিলে আরবিবি গঠিত হয়৷

এআরডির অংশ কয়েকটি চ্যানেল আবার নিজেদের অধীনে কিছু চ্যানেল চালু করে৷ যেমন এনডিআরের নিউজ চ্যানেল ছাড়াও চারটি রেডিও স্টেশন আছে৷ এই চার স্টেশনের একটিতে শুধু পপ, একটিতে ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক বাজানো হয়৷ আর বাকি দুটির একটিতে তরুণ শ্রোতাদের জন্য, অন্যটিতে বিকল্প শ্রোতাদের অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়৷

১৯৯০ সালে দুই জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের কারণে ১৯৯১ ও ১৯৯২ সালে ওআরবি ও এমআর নামে আরও দুটি প্রচারমাধ্যম যাত্রা শুরু করে৷

২০২০ সালে মাইনৎস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে দেখা গেছে জার্মানির প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের সরকারি প্রচারমাধ্যমের উপর বিশ্বাস আছে৷ গত পাঁচ বছরে সংখ্যাটি ৬৫ থেকে ৭২ শতাংশের মধ্যে ছিল৷ - ডয়েচে ভেলে

back to top