কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় ভয়াবহ দাবানল বিস্তৃত হচ্ছে। তবে পূর্বদিকের প্রদেশ কিবেক জানিয়েছে, তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার প্রচেষ্টা শুরু করতে যাচ্ছে। এই পূর্বাঞ্চলের দাবানলের ধোঁয়াই মূলত উত্তর আমেরিকার অসংখ্য শহরে ছড়িয়ে পড়েছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
কানাডায় এবার তুলনামূলক অনেক আগেই দাবানলের মৌসুম শুরু হয়েছে; এ বছর এখন পর্যন্ত দেশটি দুই হাজার ৩৯২টি দাবানল দেখেছে এবং এক কোটি ৯ লাখ একর জমি পুড়েছে, যা গত এক দশকের গড়ের ১৫ গুণ বেশি, জানিয়েছে কানাডার ইন্টারএজেন্সি ফরেস্ট ফায়ার সেন্টার (সিআইএফএফসি) । তাদের হিসাবে এখন ৪২৪টি আগুন সক্রিয়, যার ২৩০টিই নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সাধারণত কানাডায় একই সময়ে পূর্ব ও পশ্চিমে সক্রিয় দাবানল দেখা যায় না। এবারের পরিস্থিতি দেশটির সম্পদের ওপর চাপ এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিপদ নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
দাবানলের কারণে বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলের টুম্বলার রিজের প্রায় আড়াই হাজার মানুষকে বাড়িঘর থেকে সরে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা প্রদেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম দাবানল ডনি ক্রিক ফায়ারের কারণে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া অঞ্চলের আওতাও বাড়িয়েছেন।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়া দমকল বাহিনীর দেওয়া একটি ভিডিওতে টুম্বলার রিজের জনমানবহীন সড়ক দেখানো হয়েছে, পাশেই জঙ্গল তখন দাউ দাউ করে জ্বলছিল। বাড়িঘর ছাড়া অনেকে শহরটির প্রায় ১২০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বের ডসন ক্রিকে আশ্রয় পেয়েছেন।
“এটা মারাত্মক, এটা একেবারে কলিজায় আঘাত হেনেছে। এটা ভীতিকর, কেননা কেবলই মৌসুম শুরু হয়েছে,” কানাডার গণমাধ্যমকে বলেছেন ডসন ক্রিকের মেয়র ডার্সি ডোবার।
এদিকে পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ কিবেকের বনমন্ত্রী মেইত ব্লঁচে ভেজিন বলেছেন, পর্যাপ্ত সহায়তা পাওয়ায় কর্তৃপক্ষ এখন আগুন ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবে। দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে গত কয়েকদিনে বিশ্বের বিভিন্ন অংশ থেকে কয়েকশ দমকলকর্মী কানাডায় গেছেন।
“দৌড়ঝাঁপের পর্ব শেষ, এখন ম্যারাথনের পর্বে আছি আমরা। তাই কয়েক দিন বা সপ্তাহের মধ্যেই আমরা সক্রিয় আগুনগুলে নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং পরে নিভিয়েও ফেলতে পারবো,” ব্রিফিংয়ে বলেছেন ভেজিন।
দুই-একদিনের মধ্যে কিবেক ও পার্শ্ববর্তী অন্টারিওতে সামান্য বৃষ্টি হতে পারে, তবে তা দাবানল নেভাতে সাহায্য করবে না বলেই মনে করছেন এনভায়রনমেন্ট কানাডার আবহাওয়াবিদ জেরাল্ড চেং।
“বৃষ্টি নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী হতে সাবধান করছি, কেননা বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হওয়ার আশঙ্কাও থাকে আর বৃষ্টিও বিচ্ছিন্ন আকারে হতে পারে,” অনলাইন ব্রিফিংয়ে বলেছেন তিনি।
চলতি সপ্তাহে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার কিছু অংশে তাপমাত্রাও ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গিয়েছিল, যা মৌসুমের গড় তাপমাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ ডিগ্রি বেশি। দুই-একদিনের মধ্যে এই প্রদেশেও বৃষ্টি হতে পারে, সঙ্গে বজ্রপাতের আশঙ্কাও আছে।
কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ অ্যালবার্টাতেও সাড়ে তিন হাজারের বেশি লোককে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে, প্রদেশটির মধ্যাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায় তাপমাত্রাজনিত সতর্কতা বহাল আছে।
রোববার বাতাসের দিক পরিবর্তিত হওয়ার আগ পর্যন্ত অটোয়া, টরন্টো, নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসিসহ উত্তর আমেরিকার অনেক শহরেই বাতাসের মান খুবই বাজে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দাবানলের ধোঁয়া নিউ ইয়র্ক অঞ্চলের অনেক বিমানবন্দরে পৌঁছালেও কানাডায় বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটার খবর পাওয়া যায়নি।
“এখন পর্যন্ত দাবানলের কারণে বাণিজ্যিক বিমান চলাচলে বড় ধরনের কোনো বিঘ্নের খবর পাওয়া যায়নি,” বলেছেন ট্রান্সপোর্ট কানাডার মুখপাত্র হিশাম আয়ুন।
শনিবার, ১০ জুন ২০২৩
কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় ভয়াবহ দাবানল বিস্তৃত হচ্ছে। তবে পূর্বদিকের প্রদেশ কিবেক জানিয়েছে, তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার প্রচেষ্টা শুরু করতে যাচ্ছে। এই পূর্বাঞ্চলের দাবানলের ধোঁয়াই মূলত উত্তর আমেরিকার অসংখ্য শহরে ছড়িয়ে পড়েছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
কানাডায় এবার তুলনামূলক অনেক আগেই দাবানলের মৌসুম শুরু হয়েছে; এ বছর এখন পর্যন্ত দেশটি দুই হাজার ৩৯২টি দাবানল দেখেছে এবং এক কোটি ৯ লাখ একর জমি পুড়েছে, যা গত এক দশকের গড়ের ১৫ গুণ বেশি, জানিয়েছে কানাডার ইন্টারএজেন্সি ফরেস্ট ফায়ার সেন্টার (সিআইএফএফসি) । তাদের হিসাবে এখন ৪২৪টি আগুন সক্রিয়, যার ২৩০টিই নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সাধারণত কানাডায় একই সময়ে পূর্ব ও পশ্চিমে সক্রিয় দাবানল দেখা যায় না। এবারের পরিস্থিতি দেশটির সম্পদের ওপর চাপ এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিপদ নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
দাবানলের কারণে বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলের টুম্বলার রিজের প্রায় আড়াই হাজার মানুষকে বাড়িঘর থেকে সরে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা প্রদেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম দাবানল ডনি ক্রিক ফায়ারের কারণে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া অঞ্চলের আওতাও বাড়িয়েছেন।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়া দমকল বাহিনীর দেওয়া একটি ভিডিওতে টুম্বলার রিজের জনমানবহীন সড়ক দেখানো হয়েছে, পাশেই জঙ্গল তখন দাউ দাউ করে জ্বলছিল। বাড়িঘর ছাড়া অনেকে শহরটির প্রায় ১২০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বের ডসন ক্রিকে আশ্রয় পেয়েছেন।
“এটা মারাত্মক, এটা একেবারে কলিজায় আঘাত হেনেছে। এটা ভীতিকর, কেননা কেবলই মৌসুম শুরু হয়েছে,” কানাডার গণমাধ্যমকে বলেছেন ডসন ক্রিকের মেয়র ডার্সি ডোবার।
এদিকে পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ কিবেকের বনমন্ত্রী মেইত ব্লঁচে ভেজিন বলেছেন, পর্যাপ্ত সহায়তা পাওয়ায় কর্তৃপক্ষ এখন আগুন ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবে। দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে গত কয়েকদিনে বিশ্বের বিভিন্ন অংশ থেকে কয়েকশ দমকলকর্মী কানাডায় গেছেন।
“দৌড়ঝাঁপের পর্ব শেষ, এখন ম্যারাথনের পর্বে আছি আমরা। তাই কয়েক দিন বা সপ্তাহের মধ্যেই আমরা সক্রিয় আগুনগুলে নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং পরে নিভিয়েও ফেলতে পারবো,” ব্রিফিংয়ে বলেছেন ভেজিন।
দুই-একদিনের মধ্যে কিবেক ও পার্শ্ববর্তী অন্টারিওতে সামান্য বৃষ্টি হতে পারে, তবে তা দাবানল নেভাতে সাহায্য করবে না বলেই মনে করছেন এনভায়রনমেন্ট কানাডার আবহাওয়াবিদ জেরাল্ড চেং।
“বৃষ্টি নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী হতে সাবধান করছি, কেননা বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হওয়ার আশঙ্কাও থাকে আর বৃষ্টিও বিচ্ছিন্ন আকারে হতে পারে,” অনলাইন ব্রিফিংয়ে বলেছেন তিনি।
চলতি সপ্তাহে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার কিছু অংশে তাপমাত্রাও ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গিয়েছিল, যা মৌসুমের গড় তাপমাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ ডিগ্রি বেশি। দুই-একদিনের মধ্যে এই প্রদেশেও বৃষ্টি হতে পারে, সঙ্গে বজ্রপাতের আশঙ্কাও আছে।
কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ অ্যালবার্টাতেও সাড়ে তিন হাজারের বেশি লোককে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে, প্রদেশটির মধ্যাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায় তাপমাত্রাজনিত সতর্কতা বহাল আছে।
রোববার বাতাসের দিক পরিবর্তিত হওয়ার আগ পর্যন্ত অটোয়া, টরন্টো, নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসিসহ উত্তর আমেরিকার অনেক শহরেই বাতাসের মান খুবই বাজে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দাবানলের ধোঁয়া নিউ ইয়র্ক অঞ্চলের অনেক বিমানবন্দরে পৌঁছালেও কানাডায় বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটার খবর পাওয়া যায়নি।
“এখন পর্যন্ত দাবানলের কারণে বাণিজ্যিক বিমান চলাচলে বড় ধরনের কোনো বিঘ্নের খবর পাওয়া যায়নি,” বলেছেন ট্রান্সপোর্ট কানাডার মুখপাত্র হিশাম আয়ুন।