অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার এক মাস হলো। এখনও নাগালের বাইরে নিত্যপণ্যের দাম। এ সময়ের মধ্যে বাজার সিন্ডিকেট, পরিবহনের চাঁদাবাজি না থাকায় পণ্যের দাম কমার আশা করছিলেন ক্রেতা সাধারণ। কিন্তু দাম তো কমেই নাই বরং বাজারে ডিমসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম আরও বেড়েছে। চাল-ডাল-তেল, পেঁয়াজ-রসুন-আদা, আলুসহ বেশিরভাগ পণ্য আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, গোড়ায় যদি দাম না কমে, আমরা কমাবো কিভাবে? ‘চারিদিকের অবস্থাটা খারাপ’, আর বাজারে আসা ক্রেতা বলছেন, ‘আমরা জন্মগতভাবে করাপটেড’।
রাজধানী শ্যামলী কাঁচাবাজারে দীর্ঘদিন ধরে ডিম বিক্রি করেন রুখসানা বেগম। দরদাম ও বেচা বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আজকে আরও ৫ টাকা বাড়ছে, ডজন ১৬০ টাকা। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ছিল ১৫৫ টাকা। আর গ্যাঞ্জামের (শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের) আগে ছিল ১৫০ টাকা।’
‘বেচা-বিক্রি অনেক কম’ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের কাছে টাকা থাকতে হবে না? আলুর কেজি ৬০-৭০ টাকা পেঁয়াজের কেজি ১২০-১৩০ টাকা। আগেও যা গেছে এখনো তাই। চারিদিকের অবস্থাটা খারাপ।’
এ বাজারে আলু-রসুন-পেঁয়াজের ব্যবসা করেন কামাল উদ্দিন। দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘গত সপ্তাহে যা ছিল এখনো তাই। পেঁয়াজের কেজি ১২০ থেকে ২৫ টাকা আর আলু ৬০ টাকা।’
এখন তো পরিবহনের চাঁদাবাজি নেই সিন্ডিকেট নাই তারপরও দাম একই কেন? জবাবে তিনি আরো বলেন, ‘মেইন হলো গোরাত। গেরেস্থরা (পণ্য উৎপাদনকারী চাষি) যদি কম দামে না বেচে, তাহলে তো দাম কমবে না।’
এ সময় এই দোকানে সদাই করতে আসেন বেসরকারি চাকরিজীবী সোহরাব হোসেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তো এক মাস হয়ে গেল, যারা সিন্ডিকেট করতো তারা তো আত্মগোপনে চলে গেছে, তারপরও পণ্যের দাম কমছে না কেন, কি বুঝতেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘এগুলো এত সহজে হবে না, অনেক কঠিন! বাঙালি আমরা জন্মগতভাবে করাপটেড। প্রত্যেকটা মানুষকে তৈরি হতে হয় তার বাড়ি থেকে, ঘর থেকে। আপনি আপনার সন্তানকে কি শিক্ষা দিলেন। আদব কায়দা ব্যবহার শিখাতে হয়। মানুষকে দেখলে সালাম দেয়া, স্কুলের শিক্ষককে সম্মান দেয়া, বাসায় হুজুর আসলে কিভাবে আদব কায়দা করতে হয়, প্রতিবেশীর সঙ্গে কি রকম ব্যবহার করতে হবে, বাজারে আসলে দোকানদারের সামনে কিভাবে কথা বলতে হবে, এগুলো শিক্ষা তো নাই।’
‘আপনি আপনার জীবন থেকে দেখতেছেন, আপনার অবস্থান থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করতে হবে, আর খেতে হবে। আমিও তাই দেখতেছি, আমার পরবর্তী প্রজন্ম তাই দেখবে।’
‘...আসলে কি হবে শেষ কেউ জানে না ভাই,’ বলেন তিনি।
কামালের দোকানের পাশেই সবজি বিক্রি করেন আশরাফুল। গত সপ্তাহে থেকে এ সপ্তাহে সবজির দাম কমছে না বাড়ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘একই। কাঁচা মরিচ কেজি ২৪০ টাকা টমেটো-গাজর ১৬০ টাকা, করোলা ৮০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, পটল ৬০ টাকা আর কচু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।’
এর আগে রাজধানীর শ্যামলীর আবু সাঈদের সবজির দোকানে সদাই করতে আসেন মোছা. তহুরা হোসাইন। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আমরা টিভিতে দেখি (পণ্যের দাম) কমছে। প্রাক্টিক্যালি যখন বাজারে কিনতে আসি, তখন দেখি এটার সঙ্গে অনেক পার্থক্য হয়ে দাঁড়ায়। একটা (তরকারি) কিনলে আর একটা যে নিবো সে সাহসেই পাই না।’
এক প্রশ্নের জবাবে উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দেন তহুরা। বলেন, ‘আমরা কার কাছে বলবো? বইলা লাভ কী? বইলা কিছু হয়? তিনি বলেন, ‘আশা সবাই দেখায়। বলির পাঁঠা আমরা, আর কিছু বললাম না।’
‘আপনি নিজেও তো এদেশের একজন নাগরিক। আপনি নিজেও তো বাজার করে খান। আপনিও তো সবি জানেন। আমরা তো ভুক্তভোগী। আমরা তো বেনিফিট পাই না,’ বলেন তিনি।
তহুরা বেগমের কথা শেষ না হতেই ওই সবজি দোকানি আবু সাঈদ সংবাদকে বলেন, ‘পাবলিক আসি বলে খবরে কয়া দিছে, পেঁয়াজের কেজি ৭০ টাকা, আলু ৪০ টাকা। আমাদের তো পেঁয়াজ কিনতেই পড়ে ১১০ টাকা, আর আলু ৫৫ টাকা কেজি। এইটার কি হবে? আমরা কি লস দিয়া বেচমু। এটার বিচারটা আপনি নিজে করেন।’
এ বাজারে ইলিশ মাছ বিক্রি করেন মহিদুল ইসলাম শেখ। দরদাম ও বেচা-বিক্রির বিষয় জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘এক কেজি ওজনের ১৬০০ টাকা।’
গত সপ্তাহের চেয়ে দাম কমেছে না বাড়ছে? জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘আরও বাড়ছে। বেচা-কেনা নাই। আপনি ফেইসবুকে দেখেন এই মাল ৭০০ টাকা কেজি, বাজারে ১৬০০ টাকা কেজি। ক্রেতারা দাম জিগাইয়া জিগাইয়া হাইটা যায়। তারা ভাবে ইন্ডিয়ায় ইলিশ মাছ যাবে না, মাগনা খাব।’
ইলিশ মাছের ভরামৌসুম, তারপরও চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট নেই আবার শোনা যাচ্ছে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানি হবে না তারপরও দাম কমছে না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে রাজধানী কারওয়ান বাজারের ইলিশ মাছ বিক্রেতা মিরু দাস সংবাদকে বলেন, ‘চিটাগাঙ্গে, চাঁদপুরে যদি ইলিশ মাছের দাম না কমে, আমরা কমাবো কিভাবে? যেখানে মাছ ধরা হয় ওইখানে মাছের সাইজ ভাগ করে দাম নির্ধারণ করে দেয়।’
এছাড়া বাজার ভেদে ২ কেজি ওজনের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা আর পাঙ্গাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।
পাশাপাশি খোলা বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৪০ থেকে ৫৫০ টাকায়। এক ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। বাজারে এক কেজি ডায়মন্ড জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। দেশি রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়।
শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ও মান ভেদে বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকা আর মিনিকেট নামক চাল বিক্রি হচ্ছে কেজি ৭২ থেকে ৭৫ টাকায়।
চালের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানী মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট এর চালের আড়ত মেসার্স কৃষি ভান্ডারের ম্যানেজার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন দেওয়ান সংবাদকে বলেন, ‘আমার কাছে যে গুটি স্বর্ণা মোটা চাল আছে পাইকারিতে তার কেজি ৫২ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৫৭ টাকা কেজি আর মিনিকেট চাল আছে ৬৯ টাকা পর্যন্ত।’
এক মাসের ব্যবধানে চালের দাম কমছে না বাড়ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত বাড়ছে।’
এতদিন শোনা যেত চালের দাম বাড়ে চাঁদাবাজি কারণে? এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সব ভুয়া কথা। দাম বাড়াইছে মিলাররা। মিলারের ভিতরে সব ...। চাঁন্দাবাজি একটা ইস্যু। এটাকে কেন্দ্র করে তারা (চালের মিলাররা) সিন্ডিকেট করে। শেখ হাসিনার ক্ষমতা থেকে নামার পরে কেজিতে চার টাকা (চালের দাম) বাড়াইছে।’
‘ওই সরকারের (আওয়ামী লীগ সরকার) আমলে চালের দামটা নিয়ন্ত্রণে ছিল,’ বলে জানান তিনি।
শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার এক মাস হলো। এখনও নাগালের বাইরে নিত্যপণ্যের দাম। এ সময়ের মধ্যে বাজার সিন্ডিকেট, পরিবহনের চাঁদাবাজি না থাকায় পণ্যের দাম কমার আশা করছিলেন ক্রেতা সাধারণ। কিন্তু দাম তো কমেই নাই বরং বাজারে ডিমসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম আরও বেড়েছে। চাল-ডাল-তেল, পেঁয়াজ-রসুন-আদা, আলুসহ বেশিরভাগ পণ্য আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, গোড়ায় যদি দাম না কমে, আমরা কমাবো কিভাবে? ‘চারিদিকের অবস্থাটা খারাপ’, আর বাজারে আসা ক্রেতা বলছেন, ‘আমরা জন্মগতভাবে করাপটেড’।
রাজধানী শ্যামলী কাঁচাবাজারে দীর্ঘদিন ধরে ডিম বিক্রি করেন রুখসানা বেগম। দরদাম ও বেচা বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আজকে আরও ৫ টাকা বাড়ছে, ডজন ১৬০ টাকা। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ছিল ১৫৫ টাকা। আর গ্যাঞ্জামের (শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের) আগে ছিল ১৫০ টাকা।’
‘বেচা-বিক্রি অনেক কম’ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের কাছে টাকা থাকতে হবে না? আলুর কেজি ৬০-৭০ টাকা পেঁয়াজের কেজি ১২০-১৩০ টাকা। আগেও যা গেছে এখনো তাই। চারিদিকের অবস্থাটা খারাপ।’
এ বাজারে আলু-রসুন-পেঁয়াজের ব্যবসা করেন কামাল উদ্দিন। দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘গত সপ্তাহে যা ছিল এখনো তাই। পেঁয়াজের কেজি ১২০ থেকে ২৫ টাকা আর আলু ৬০ টাকা।’
এখন তো পরিবহনের চাঁদাবাজি নেই সিন্ডিকেট নাই তারপরও দাম একই কেন? জবাবে তিনি আরো বলেন, ‘মেইন হলো গোরাত। গেরেস্থরা (পণ্য উৎপাদনকারী চাষি) যদি কম দামে না বেচে, তাহলে তো দাম কমবে না।’
এ সময় এই দোকানে সদাই করতে আসেন বেসরকারি চাকরিজীবী সোহরাব হোসেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তো এক মাস হয়ে গেল, যারা সিন্ডিকেট করতো তারা তো আত্মগোপনে চলে গেছে, তারপরও পণ্যের দাম কমছে না কেন, কি বুঝতেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘এগুলো এত সহজে হবে না, অনেক কঠিন! বাঙালি আমরা জন্মগতভাবে করাপটেড। প্রত্যেকটা মানুষকে তৈরি হতে হয় তার বাড়ি থেকে, ঘর থেকে। আপনি আপনার সন্তানকে কি শিক্ষা দিলেন। আদব কায়দা ব্যবহার শিখাতে হয়। মানুষকে দেখলে সালাম দেয়া, স্কুলের শিক্ষককে সম্মান দেয়া, বাসায় হুজুর আসলে কিভাবে আদব কায়দা করতে হয়, প্রতিবেশীর সঙ্গে কি রকম ব্যবহার করতে হবে, বাজারে আসলে দোকানদারের সামনে কিভাবে কথা বলতে হবে, এগুলো শিক্ষা তো নাই।’
‘আপনি আপনার জীবন থেকে দেখতেছেন, আপনার অবস্থান থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করতে হবে, আর খেতে হবে। আমিও তাই দেখতেছি, আমার পরবর্তী প্রজন্ম তাই দেখবে।’
‘...আসলে কি হবে শেষ কেউ জানে না ভাই,’ বলেন তিনি।
কামালের দোকানের পাশেই সবজি বিক্রি করেন আশরাফুল। গত সপ্তাহে থেকে এ সপ্তাহে সবজির দাম কমছে না বাড়ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘একই। কাঁচা মরিচ কেজি ২৪০ টাকা টমেটো-গাজর ১৬০ টাকা, করোলা ৮০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, পটল ৬০ টাকা আর কচু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।’
এর আগে রাজধানীর শ্যামলীর আবু সাঈদের সবজির দোকানে সদাই করতে আসেন মোছা. তহুরা হোসাইন। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আমরা টিভিতে দেখি (পণ্যের দাম) কমছে। প্রাক্টিক্যালি যখন বাজারে কিনতে আসি, তখন দেখি এটার সঙ্গে অনেক পার্থক্য হয়ে দাঁড়ায়। একটা (তরকারি) কিনলে আর একটা যে নিবো সে সাহসেই পাই না।’
এক প্রশ্নের জবাবে উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দেন তহুরা। বলেন, ‘আমরা কার কাছে বলবো? বইলা লাভ কী? বইলা কিছু হয়? তিনি বলেন, ‘আশা সবাই দেখায়। বলির পাঁঠা আমরা, আর কিছু বললাম না।’
‘আপনি নিজেও তো এদেশের একজন নাগরিক। আপনি নিজেও তো বাজার করে খান। আপনিও তো সবি জানেন। আমরা তো ভুক্তভোগী। আমরা তো বেনিফিট পাই না,’ বলেন তিনি।
তহুরা বেগমের কথা শেষ না হতেই ওই সবজি দোকানি আবু সাঈদ সংবাদকে বলেন, ‘পাবলিক আসি বলে খবরে কয়া দিছে, পেঁয়াজের কেজি ৭০ টাকা, আলু ৪০ টাকা। আমাদের তো পেঁয়াজ কিনতেই পড়ে ১১০ টাকা, আর আলু ৫৫ টাকা কেজি। এইটার কি হবে? আমরা কি লস দিয়া বেচমু। এটার বিচারটা আপনি নিজে করেন।’
এ বাজারে ইলিশ মাছ বিক্রি করেন মহিদুল ইসলাম শেখ। দরদাম ও বেচা-বিক্রির বিষয় জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘এক কেজি ওজনের ১৬০০ টাকা।’
গত সপ্তাহের চেয়ে দাম কমেছে না বাড়ছে? জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘আরও বাড়ছে। বেচা-কেনা নাই। আপনি ফেইসবুকে দেখেন এই মাল ৭০০ টাকা কেজি, বাজারে ১৬০০ টাকা কেজি। ক্রেতারা দাম জিগাইয়া জিগাইয়া হাইটা যায়। তারা ভাবে ইন্ডিয়ায় ইলিশ মাছ যাবে না, মাগনা খাব।’
ইলিশ মাছের ভরামৌসুম, তারপরও চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট নেই আবার শোনা যাচ্ছে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানি হবে না তারপরও দাম কমছে না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে রাজধানী কারওয়ান বাজারের ইলিশ মাছ বিক্রেতা মিরু দাস সংবাদকে বলেন, ‘চিটাগাঙ্গে, চাঁদপুরে যদি ইলিশ মাছের দাম না কমে, আমরা কমাবো কিভাবে? যেখানে মাছ ধরা হয় ওইখানে মাছের সাইজ ভাগ করে দাম নির্ধারণ করে দেয়।’
এছাড়া বাজার ভেদে ২ কেজি ওজনের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা আর পাঙ্গাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।
পাশাপাশি খোলা বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৪০ থেকে ৫৫০ টাকায়। এক ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। বাজারে এক কেজি ডায়মন্ড জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। দেশি রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়।
শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ও মান ভেদে বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকা আর মিনিকেট নামক চাল বিক্রি হচ্ছে কেজি ৭২ থেকে ৭৫ টাকায়।
চালের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানী মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট এর চালের আড়ত মেসার্স কৃষি ভান্ডারের ম্যানেজার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন দেওয়ান সংবাদকে বলেন, ‘আমার কাছে যে গুটি স্বর্ণা মোটা চাল আছে পাইকারিতে তার কেজি ৫২ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৫৭ টাকা কেজি আর মিনিকেট চাল আছে ৬৯ টাকা পর্যন্ত।’
এক মাসের ব্যবধানে চালের দাম কমছে না বাড়ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত বাড়ছে।’
এতদিন শোনা যেত চালের দাম বাড়ে চাঁদাবাজি কারণে? এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সব ভুয়া কথা। দাম বাড়াইছে মিলাররা। মিলারের ভিতরে সব ...। চাঁন্দাবাজি একটা ইস্যু। এটাকে কেন্দ্র করে তারা (চালের মিলাররা) সিন্ডিকেট করে। শেখ হাসিনার ক্ষমতা থেকে নামার পরে কেজিতে চার টাকা (চালের দাম) বাড়াইছে।’
‘ওই সরকারের (আওয়ামী লীগ সরকার) আমলে চালের দামটা নিয়ন্ত্রণে ছিল,’ বলে জানান তিনি।